1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

পচা খাবার যখন শিল্পকর্ম

মার্কুস টিশার / এসবি৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৪

সারা বছর প্রায় সব খাবার পাওয়া যায়৷ ফলে কমছে আকর্ষণ, বাড়ছে তাচ্ছিল্য৷ বর্তমান এই খাদ্য সংস্কৃতি সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে অস্ট্রিয়ার এক ফটোগ্রাফার এমন এক পথ বেছে নিয়েছেন, যার পরিচয় পেলে খাবার হজম করা কঠিন হতে পারে৷

Bildergalerie Schimmelpilze
ছবি: imago/Gerhard Leber

ছিল খাদ্য, এখন অবশ্য আর খাবার যোগ্য নয়৷ এমন ছবি দেখলে কিছু মানুষের গা গুলিয়ে উঠবে৷ বাকিদের কাছে এর সৌন্দর্য কম নয়৷ কারো আবার দুটোই মনে হতে পারে৷ অস্ট্রিয়ার ফটোগ্রাফার ক্লাউস পিশলার-এর ছবি এমনই বিরক্তিকর৷ তিনি বলেন, ‘‘লুকানো বস্তু আমাকে আকর্ষণ করে৷ যা আমাদের চোখের আড়ালে থাকে ফটোগ্রাফার হিসেবে তাই আমাকে প্রেরণা দেয়৷ মানুষ এ সব দূরে সরিয়ে রাখে অথবা প্রতিদিন দেখেও দেখে না৷''

দৈনন্দিন জীবনে খাদ্যের প্রতি আমাদের মনোভাব ভিয়েনার এই ফটোগ্রাফারের বিষয়বস্তু৷ জাতিসংঘের এক রিপোর্ট তাঁকে বিষয়টির প্রতি আগ্রহী করে তুলেছিল৷ তাতে বলা হয়েছিল, বিশ্বব্যাপী খাদ্য উৎপাদনের প্রায় এক তৃতীয়াংশ হারিয়ে যায়, ফেলে দেয়া হয়৷ তার অর্ধেকই ঘটে সাধারণ গৃহস্থের সংসারে৷

ক্লাউস পিশলার অবশ্য আবর্জনার স্তূপ খোঁজেন না, তিনি অন্য ধরনের ছবি তোলেন৷ যেমন ছবির মতো সুন্দর বাসি তরমুজ৷ অথবা পচতে থাকা সালাদ যেন তুলি দিয়ে আঁকা৷ কখনো বা ভুলে যাওয়া সসেজ কেমন যেন নাটকীয় ভঙ্গিমায়৷

ক্লাউস যা বাজার করেন, তা ছবির স্বার্থে পচানো হয়৷ ভোক্তা হিসেবে আমাদের অস্তিত্বের অলীক রূপ তুলে ধরেন তিনি৷ যেমন শীতকালে স্ট্রবেরি অথবা বিশ্বের অন্য প্রান্ত থেকে আনা সবুজ পেপে৷ তিনি বলেন, ‘‘শুরুর দিকে আমি খোলা মনে ভাবতাম৷ যেমন একটি কমলা লেবু, স্পেনের কোনো প্লান্টেশনে বেড়ে উঠেছে৷ তারপর সেটি তুলে দূরে কোথাও পাঠানো হয়৷ তারপর আমরা সেটি ফেলে দেই৷ খুবই দুঃখজনক দৃষ্টান্ত৷''

মন দিয়ে বাজার করার পর ক্লাউস সেগুলি পচানোর নির্দিষ্ট জায়গায় রাখেন৷ তাঁর ফ্ল্যাটে মাসের পর মাস ধরে পচতে থাকে সেগুলি৷ যেমন মিশর থেকে আনা স্ট্রবেরির সপ্তাহ দুয়েক সময় লাগে৷ অন্য খাদ্য পচতে আরও অনেক সময় লাগে৷ অন্যদের বমি পাবে – এমন অবস্থা তাঁর কাছে কিন্তু খুবই আনন্দের বিষয়৷ তিনি বলেন, ‘‘নিজের প্রতি বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়াতে ভেবেছিলাম এমন পচা খাবার-দাবারের মধ্যেই বসবাস করবো৷ নিজের আস্তানার মধ্যেই সচেতনভাবে এটা করতে হবে, যাতে আমার কাজের প্রক্রিয়ায় গভীরতা আসে৷ যাতে আমি পরীক্ষা করে দেখতে পারি, আমি এটা পারি কি না৷''

ক্লাউস পিশলার একটি স্টুডিও খাড়া করে সেই পচা খাদ্যকে স্পটলাইটের সামনে নিয়ে আসেন৷ সাধারণত এ সব আবর্জনার পাত্রে স্থান পায়৷ কালো ব্যাকগ্রাউন্ডে ছত্রাকের প্রতিটি সূক্ষ্ম ফারাক ফুটিয়ে তোলা হয়৷ ঠিক যেন এক বিজ্ঞাপন৷ তিনি বলেন, ‘‘প্রত্যেকেই শীতকালে একবার না একবার স্ট্রবেরি খেয়েছে৷ কার্বন নির্গমন থেকে শুরু করে দীর্ঘ পরিবহন – কত কাঠখড় পুড়িয়ে অসময়ে এমন ফল আমাদের হাতে এলে একটু বিবেক দংশন হওয়াই স্বাভাবিক৷''

ছাতা ধরা বিস্কিট, ডালিম অথবা আনারস৷ ক্লাউস পিশলার তাদের মায়াবী করে তোলেন৷ কারণ অনেকের কাছেই খাদ্যের চেয়ে তার মোড়ক আর সাজসজ্জাই বেশি জরুরি৷ তবে ক্লাউস-এর মনে এখনো আশা রয়েছে৷ তিনি বলেন, ‘‘আমার মনে হয়, মানুষ আবার খাদ্যের সঙ্গে স্বাভাবিক, স্বাস্থ্যকর সম্পর্ক গড়ে তুলতে চায়৷ বিশাল আকারের খাদ্য উৎপাদন, দীর্ঘ পরিবহন – এ সব থেকে দূরে থাকতে চায়৷ প্লেটে যা পৌঁছয়, তা ভালো করে দেখতে চায়৷''

এমন গা-গুলানো বস্তুগুলি প্রায় প্রাচীন ছবির মতো দেখতে৷ শেষ পর্যন্ত অবশ্য সুন্দর ছত্রাককেও বিদায় নিতে হয়, কারণ এমন ‘সুন্দরী মডেল'-দেরও ফেলে দেন ক্লাউস পিশলার৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ