1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

পঞ্চায়েতে কুড়মি ও মতুয়া ভোট পাবে তৃণমূল?

পায়েল সামন্ত কলকাতা
১৩ জুন ২০২৩

জঙ্গলমহলে কুড়মি সমাজ। কয়েকটি জেলায় মতুয়া জনগোষ্ঠী। এই দুয়ের সমর্থন কি পঞ্চায়েত ভোটে পাবে তৃণমূল? সংশয় বাড়ছে।

কুড়মি গ্রামে বাড়ির দেওয়ালে লেখা পোস্টার।
কুড়মি গ্রামে বাড়ির দেওয়ালে লেখা পোস্টার। ছবি: Payel Samanta/DW

রাজ্যের নমঃশূদ্র জনগোষ্ঠীর মধ্যে অধিকাংশই মতুয়া। প্রায় তিন কোটি ভোটার অনেকগুলি বিধানসভা আসনের ভাগ্য নির্ধারণ করেন। পঞ্চায়েত ভোটেও মতুয়াদের সমর্থন তাই গুরুত্বপূর্ণ। ২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি ভালো ফল করেছিল মতুয়া অধ্যুষিত এলাকায়। ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনে কিছুটা জমি পুনরুদ্ধার করে তৃণমূল কংগ্রেস।

আগামী বছরের লোকসভা ভোটের আগে এই পঞ্চায়েত নির্বাচনে আরও কিছুটা জমি উদ্ধারের লক্ষ্য ছিল তৃণমূলের। কিন্তু ঠাকুরনগরের অশান্তি পরিস্থিতি ঘোরালো করে তুলেছে। অভিযোগ, বিজেপি সাংসদ ও কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুরের নেতৃত্বে মতুয়াদের একটা অংশ অভিষেককে মূল মন্দিরে প্রবেশে বাধা দেয়। মতুয়াদের আর একটা অংশ এর প্রতিবাদ করে। এ নিয়ে তুমুল গন্ডগোল হয়। 

তরজার কেন্দ্রে ঠাকুরবাড়ি

এই ঘটনা ঘিরে চাপানউতোর এখনও চলছে। শান্তনুর নিরাপত্তায় থাকা কেন্দ্রীয় বাহিনীর বিরুদ্ধে ভক্তদের নিগ্রহের অভিযোগে মামলা রুজু করেছে রাজ্য পুলিশ। বনগাঁর সাবেক তৃণমূল সাংসদ মমতাবালা ঠাকুরের দাবি, ''জুতো পরে মন্দিরে উঠেছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। নিরাপত্তার নামে নিগ্রহ করেছে। আমি প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়েছি।'' তার পাল্টা শান্তনু ঠাকুরের দাবি, ''এই ঘটনার সিবিআই তদন্ত হোক। মতুয়াদের অপমান করেছে তৃণমূল।''

মতুয়া রাজধানীতে মতুয়া রাজনীতির অঙ্ক

13:54

This browser does not support the video element.

এই পরিস্থিতিতে তৃণমূলের জমি উদ্ধারের কাজটা কঠিন হয়ে গেল? বিজেপি নেতা ও রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক বিমলশঙ্কর নন্দ ডয়চে ভেলেকে বলেন, ''তৃণমূলের ক্যাপটিভ ভোটার নেই, সবই ফ্লোটিং ভোট। যদি সাধারণ মানুষ ভোট দিতে পারে, তা হলে শাসক দলের বিপদ আছে। বিশেষত মতুয়া অধ্যুষিত এলাকায় বিজেপির ফল খুবই ভালো হবে। সিপিএম, কংগ্রেস এখানে ফ্যাক্টর নয়।'' যদিও তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেছেন, ''ঠাকুরবাড়িতে গুন্ডামি করেছে বিজেপি। মানুষ সবই দেখেছে তারা এর জবাব ব্যালটে দেবে।''

জঙ্গলমহলের কুড়মি ভোট

মতুয়াদের মতো শাসকদলের চিন্তা রয়েছে কুড়মিদের ঘিরে। জঙ্গলমহলের বড় জনগোষ্ঠী কুড়মিরা গত দুটি নির্বাচনে তৃণমূলের প্রতি সদয় ছিলেন না। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ই বলেছেন, ''কুড়মিরা তৃণমূলকে ভোট দেন না!''

তফসিলি উপজাতি সম্প্রদায়ের স্বীকৃতি পেতে আন্দোলন চালাচ্ছে কুড়মি সমাজ। দফায় দফায় অবরোধ আন্দোলনে তারা সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করেছে। জঙ্গলমহলে  অভিষেকের 'নবজোয়ার' কর্মসূচির সময় অশান্তির জেরে সংঘাত চরমে পৌঁছেছে। এই ঘটনায় ১২ জন কুড়মি নেতা-কর্মী এখন জেলে।

এরই মধ্যে পঞ্চায়েত ভোটের ঘোষণা হয়েছে। কুড়মি নেতৃত্বও ঘোষণা করেছেন, তৃণমূলকে একটিও ভোট দেয়া হবে না, 'নো ভোট টু টিএমসি'। অন্য দলকেও সমর্থনের কথা বলেননি তারা। কুড়মি সংগঠন ঘাগরাঘেরা কেন্দ্রীয় কমিটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তাদের সমাজের প্রতিনিধিরা নিজেরাই ভোটে লড়বেন।

''তৃণমূলের ক্যাপটিভ ভোটার নেই, সবই ফ্লোটিং ভোট’’

This browser does not support the audio element.

কোন দিকে কুড়মিরা 

তবে কুড়মি নেতৃত্বের আর একটা অংশ সরাসরি ভোটে লড়ার কথা বলছেন না। এবার আগে থেকেই জঙ্গলমহলের কুড়মি অধ্যুষিত গ্রামগুলিতে দেয়াল লেখা হয়। তাতে বলা হচ্ছে, কোনও রাজনৈতিক দল এবার কুড়মি পাড়ায় দেয়ালে প্রচার করতে পারবেন না।

তৃণমূলপন্থী পর্যবেক্ষক ভাস্কর সিংহরায় ডয়চে ভেলেকে বলেন, ''দুই-একজন নেতা কী অবস্থান নিলেন, তাতে সাধারণ মানুষ ভাবিত নয়। তারা নিজেদের অভিজ্ঞতা থেকে ভোট দেবেন। মতুয়াদের ক্ষেত্রেও একই কথা বলা চলে। সেদিন সাধারণ ভক্তরা অভিষেকের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেননি।''

সার্বিক পরিস্থিতি শাসক দলের পক্ষে চিন্তার বলে মনে করেন রাজনৈতিক  বিশ্লেষক অমল মুখোপাধ্যায়। তিনি ডয়চে ভেলেকে বলেন, ''এই নির্বাচন তৃণমূলের পক্ষে সহজ হবে না। কুড়মি নেতৃত্ব কোনো নির্দিষ্ট দলকে ভোট দিতে বলেননি। কিন্তু এই সমাজের সমর্থন শাসকের পক্ষে যাবে না। মতুয়াদের ক্ষেত্রেও তৃণমূলের খুব বেশি আশা দেখছি না।''

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ