1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

পঞ্চায়েতে রক্তপাত নিয়ে বিশিষ্টদের একাংশের নীরবতায় প্রশ্ন

পায়েল সামন্ত কলকাতা
১৫ জুলাই ২০২৩

পঞ্চায়েত নির্বাচন ঘিরে ব্যাপক সহিংসতা সত্ত্বেও বিদ্বজ্জনদের একাংশের নীরবতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তবে সরকার ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত শিল্পী শুভাপ্রসন্ন কঠোর ভাষায় নিন্দা করেছেন রক্তপাতের।

সদ্যসমাপ্ত পঞ্চায়েত ভোট ঘোষণার পর থেকে জেলায় জেলায় সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে
সদ্যসমাপ্ত পঞ্চায়েত ভোট ঘোষণার পর থেকে জেলায় জেলায় সহিংসতার ঘটনা ঘটেছেছবি: Payel Samanta/DW

সহিংস নির্বাচন

সদ্যসমাপ্ত পঞ্চায়েত ভোট ঘোষণার পর থেকে জেলায় জেলায় সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। মাসখানেকের কিছু বেশি সময় ধরে নির্বাচনী প্রক্রিয়া চলছে। ভোট ঘিরে মৃতের সংখ্যা ৫৫ পার করেছে। শাসক ও বিরোধীদের মধ্যে এ নিয়ে চাপানউতোর তুঙ্গে

পরিস্থিতি সরগরম হলেও বিদ্বজ্জনদের একাংশ মুখ খুলছেন না। বিশেষত সরকারপন্থি হিসেবে পরিচিত যারা, তাদের নীরবতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এর মধ্যে ব্যতিক্রম চিত্রশিল্পী শুভাপ্রসন্ন ভট্টাচার্য। বামফ্রন্ট সরকার পরিবর্তনের ডাক দিয়ে যে বিশিষ্টজনেরা মিছিল করেছিলেন ২০১১ সালে, তাদের মধ্যে অন্যতম এই শিল্পী।

শুভাপ্রসন্নের আহ্বান

চলতি সহিংসতার আবহে শুভাপ্রসন্নের ডয়চে ভেলেকে বলেন, "কেন এত হিংসা হবে? যে মায়ের কোল খালি হল, সেখানে তার সন্তান আর ফিরবে না। তাই বিবেকবান মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে। যারা নিজেদের ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত, তাদের ডাক মানুষ শুনবে।"

শুভাপ্রসন্নের পাশাপাশি তৃণমূল বিধায়ক ও লেখক হুমায়ুন কবীর সহিংসতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। মমতা সরকারের সাবেক মন্ত্রী বলেন, "অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন সন্ত্রাসহীন, রক্তপাতহীন ভোট হবে। তা হল কোথায়? মাথা হেঁট হয়ে যাচ্ছে।"

বিজেপি নেতা ও অভিনেতা রুদ্রনীল ঘোষ  বুদ্ধিজীবীদের নীরব অংশকে আক্রমণ করে কবিতা লিখেছেন। তার রচনা, "জানেন যদি, মানেন যদি কেন আছেন চুপ/ যান মানবতার চিতায় গিয়ে লাগিয়ে আসুন ধূপ।" নির্বাচনের সময় বিজেপির বিরুদ্ধেও সহিংসতার অভিযোগ উঠছে। রুদ্রনীল কেন নিজের দলের সমালোচনা করছেন না, তা নিয়েও অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন।

সরব একাংশ

পশ্চিমবঙ্গে নির্বাচন ঘিরে অশান্তি, হত্যা, ভয় দেখানোর পরম্পরাঅনেকদিনের। এর বিরুদ্ধে বিদ্বজ্জনদের একটা অংশ সরব হয়েছেন।

বামমনস্ক ও প্রগতিশীল হিসেবে পরিচিত বিদ্বজ্জনেরা সহিংসতা নিয়ে ভোটগ্রহণের অনেক আগেই বিবৃতি দিয়েছেন। তাদের বক্তব্য, "পঞ্চায়েত নির্বাচনকে কেন্দ্র করে যে হিংস্র অরাজকতার সৃষ্টি হয়েছে তাতে আমরা নাগরিক হিসেবে আতঙ্কিত বোধ করছি।"

এই বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন শিক্ষাবিদ পবিত্র সরকার, অভিনেতা সব্যসাচী চক্রবর্তী, পরিচালক অনীক দত্ত, কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়, নাট্যকার চন্দন সেন প্রমুখ।

চন্দন সেন ডয়চে ভেলেকে বলেন, "যে কোনো নির্বাচনে হিংসা অনিবার্য বলে মনে হয় সাধারণ মানুষের কাছে, এর পিছনে শাসকের বড় ভূমিকা থাকে। তারা যতটা পেশি স্বার্থের কথা ভাবেন, ততটা গণতন্ত্রের কথা ভাবেন না। এর বিরুদ্ধে কথা না বলা যে কোনো মানুষের পক্ষে অপরাধ।"

জাতীয় পুরস্কারজয়ী অভিনেতা ঋদ্ধি সেন ফেসবুকে লিখেছেন, "পড়ে থাক গণতন্ত্রের লাশ, পচুক, গন্ধ বেরোক, সেই গন্ধ নাকে নিয়ে মাংস ভাত খাক রাজনৈতিক শিবিরগুলো, দুপুরবেলা আমরাও খাই পেট ভরে।"

কেন এত হিংসা হবে: শুভাপ্রসন্ন

This browser does not support the audio element.

অতীতেও সরব

গত এপ্রিলে রামনবমী উদযাপনকে কেন্দ্র করে রাজ্যের একাধিক জায়গায় অশান্তি ছড়িয়েছিল। সেই সময় বিভিন্ন ক্ষেত্রের বিশিষ্ট মানুষেরা মুখ খুলেছিলেন। অভিনেতা, পরিচালক অপর্ণা সেন, অনির্বাণ ভট্টাচার্য, কৌশিক সেন উদ্বেগ প্রকাশ করেন।

গেরুয়া শিবিরের ঘনিষ্ঠ সাংস্কৃতিক জগতের মানুষজন সেই সময় রাজপথে মিছিলও করেছিলেন। সেই তুলনায় চলতি অশান্তিকে কেন্দ্র করে রাজনীতির বাইরের মানুষদের তেমন প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে না। রাজনৈতিক স্তরে প্রতিবাদ হচ্ছে। বিরোধী বিজেপি, বাম, কংগ্রেস, আইএসএফ মিছিল করেছে। পথে নেমেছেন সরকারি কর্মচারীরা।

নীরবতা কেন?

সহিংসতার বিরুদ্ধে শুভাপ্রসন্ন বুদ্ধিজীবীদের সরব হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। সরকার ঘনিষ্ঠরা কি সাড়া দিলেন? ২০১১ সালে বাম সরকার বদলের অন্যতম মুখ, চিত্রশিল্পী সমীর আইচ ডয়চে ভেলেকে বলেন, "শুভাদার ডাকে যারা সাড়া দেননি, তারা হয়তো কিছু দেখতে পাচ্ছেন না। বয়সের জন্য কারো চোখের সমস্যা থাকতে পারে। আমি দেখতে পাচ্ছি, তাই বলছি।"

পঞ্চায়েত ভোট ঘিরে অশান্তির কারণ হিসেবে অৰ্থনীতির দিকটি বারবার আলোচনায় উঠে আসে। শুভাপ্রসন্ন বলেন, "ভোটে জিতলেই রোজগারের ব্যবস্থা হবে, এর জন্য মারামারি। যার কাজ নেই, সে এসবে জড়িয়ে পড়ে।"

অভিনেতা কৌশিক সেন ডয়চে ভেলেকে বলেন, "এমন মধুভাণ্ড তৈরি হয়েছে যে তৃণমূলই মারছে তৃণমূলকে। এর দায়িত্ব সরকারকে নিতে হবে।" পবিত্র সরকার ডয়চে ভেলেকে বলেন, "সরকার ঘনিষ্ঠরা বললেন কি না, তা নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছি না। যত দিন পঞ্চায়েত রোজগারের জায়গা হয়ে থাকবে, এই রক্তপাত বন্ধ হবে না।"

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ