1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

পদক দিচ্ছেটা কে!

১৩ মার্চ ২০২০

পদক নিয়ে বিতর্ক যে কেবল বাংলাদেশেই হয়, তা না৷ নোবেল থেকে শুরু করে অস্কার, বিশ্বজুড়ে সমাদৃত সব পদকের ক্ষেত্রেই কতটা যোগ্যতা আর কতটা অন্য বিবেচনায় দেয়া হয়, তর্ক বরাবরই চলে আসছে৷ এর সবশেষ সংস্করণ বাংলাদেশের স্বাধীনতা পদক৷

Befreiungskrieg Denkmäler
ছবি: DW/M. M. Rahman

করোনা ভাইরাস নিয়ে আতঙ্কে পুরো বিশ্ব৷ এর বাইরে নেই বাংলাদেশও৷ আতঙ্কের সঙ্গে অবিশ্বাস, গুজব, ক্লিক পাওয়ার জন্য সাংবাদিকতা, সব মিলেমিশে একাকার হয়ে দমবন্ধ পরিস্থিতি সুদূর জার্মানিতে বসেও টের পাওয়া যায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কল্যাণে৷ কিন্তু করোনা থেকে আমরা একটু ইতিহাসের দিকে চোখ ফেরাই, ফিরে দেখি ১৯৪৩ সালকে৷

পৃথিবীতে তখনও চলছে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ৷ বিশ্বের ক্ষমতাধররা যখন কে কোন দেশ দখল করলো সে যুদ্ধে ব্যস্ত৷ ব্রিটিশ ভারতও মিত্রশক্তির অংশ হিসেবে যুদ্ধ চালাচ্ছে বিশ্বজুড়ে৷ কিন্তু এরই মধ্যে হারিয়ে গেল ‘বাংলার দুর্ভিক্ষ' বা ‘বেঙ্গল ফেমিন'৷ ভারতের পূর্বাঞ্চলে এ দুর্ভিক্ষে কেবল অবিভক্ত বাংলাতেই মারা যান ২০ থেকে ৩০ লাখ মানুষ৷

অনেক বিশ্লেষকই বলেন, ভারত বিষয়ে ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী উইনস্টন চার্চিলের নীতির কারণেই এমন দুর্ভিক্ষ হতে পেরেছে৷ এমনকি এই দুর্ভিক্ষের জন্য উলটো ভারতীয়দেরই দায়ী করেন চার্চিল৷ বলেন ভারতীয়রা ‘‘খরগোশের মতো দ্রুত সন্তান জন্ম দেয়৷''

যুদ্ধে জয়ী হয় মিত্রশক্তি, স্বাধীন হয় ভারত৷ সবচেয়ে মজার বিষয় হলো ১৯৫৩ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার দেয়া হয় চার্চিলকে৷ কারণ হিসেবে বলা হয়, ‘সাহিত্যের মধ্য দিয়ে উন্নত মানবিক মূল্যবোধ রক্ষা৷'

হাস্যকর, তাই না?

নোবেল ও অস্কারকে বরাবরই রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহারের হাতিয়ার হিসেবে বিবেচনা করার অভিযোগ উঠেছে বিভিন্ন মহল থেকে৷ বিশ্ব বাদ দিলে বাংলাদেশটাও কম যায় না৷

শ্রেষ্ঠ কাউকে বিবেচনায় নিলে বাদপড়াদের মধ্য থেকে সমালোচনা উঠবেই৷ কিন্তু তাই বলে এর একেবারেই কোনো মান থাকবে না­? রইজউদ্দিন নামে একজন ‘কবি'কে স্বাধীনতা পুরস্কার দেয়া নিয়ে শুরু হলো ব্যাপক বিতর্ক৷ সমালোচনার পরিপ্রেক্ষিতে তা প্রত্যাহারও করা হলো৷ কিন্তু যে বিশাল কর্মযজ্ঞের পর ধাপে ধাপে বাছাই ও নীরিক্ষার পর একেকজনের নাম ঘোষণা হওয়ার কথা, সেটি কোথায়? যারা সাহিত্যের পুরস্কার দেন, তাদের কি সাহিত্য সম্পর্কে ন্যূনতম জ্ঞান রয়েছে?

অনুপম দেব কানুনজ্ঞ, ডয়চে ভেলেছবি: DW/P. Böll

২০০৩ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের মন্ত্রিসভা জিয়াউর রহমান ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে মরণোত্তর স্বাধীনতা পদক দেয়৷ বঙ্গবন্ধু ও জিয়াউর রহমানকে সমপর্যায়ে উপস্থাপনের ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্য' এর পেছনে স্পষ্ট৷ কিন্তু এরপর ২০১৬ সালে জিয়াউর রহমানকে দেয়া পদক প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তও চরম রাজনৈতিক বৈ কিছু নয়৷

জিয়ার পদক প্রত্যাহারের পেছনে কারণ দেখানো হয়, আদালত তার শাসনামলকে ‘অবৈধ ও অসাংবিধানিক' বলে ঘোষণা করেছে৷ অথচ এই স্বাধীনতা পদকও তো তারই প্রবর্তন করা, সেটা কি অবৈধ ঘোষণা করা হয়েছে? স্বাধীনতাবিরোধী শর্ষীনার পীরকে জিয়াউর রহমানের দিয়ে যাওয়া স্বাধীনতা পদক কি প্রত্যাহার করা হয়েছে?  না, কারণ এর পেছনে ধর্মীয় ও রাজনৈতিক ফায়দা নেয়ার সুযোগ রয়েছে৷

কয়েক লাইন কবিতার মধ্যে তার চেয়েও বেশি বানান ভুল করা রইজউদ্দিন পুরস্কার প্রত্যাহার প্রসঙ্গে প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন৷ গণমাধ্যমে বলেছেন, তাকে এভাবে অপমান করার কোনো প্রয়োজন ছিল না৷ আমি একমত৷ এই লেখাটির জন্য পুরস্কার আমিও চাইতে পারি৷ আপনি দেবেন কেন? এই প্রশ্নের সহজ উত্তর- আপনার পুরস্কার দেয়ারও যোগ্যতা নেই৷ যোগ্য পদকদাতা বাছাই করুন, যোগ্যরাই পদক পাবেন৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ