1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

পদ্মা সেতু কবে খুলে দেয়া হবে?

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
১০ ডিসেম্বর ২০২০

বৃহস্পতিবার ৪১তম স্প্যান বসানোর মধ্য দিয়ে ৬.১৫ কিলোমিটার পদ্মা সেতুর এখন পুরোটাই দৃশ্যমান৷ এখন বাকি রেল সংযোগ৷ মানুষের আগ্রহ আর প্রশ্ন, কবে এই সেতু দিয়ে পার হওয়া যাবে? এই সেতু অর্থনীতি আর যোগাযোগে কী ভূমিকা রাখবে৷

পদ্মা সেতু
ছবি: Mustafiz Mamun

সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের জানিয়েছেন, রেল সংযোগসহ আরো যে কাজ বাকি আছে তাতে কমপক্ষে ১০ মাস সময় লাগবে৷ তবে পদ্মা সেতু প্রকল্পের পরিচালক শফিকুল ইসলাম জানান, ‘‘২০২১ সালে পদ্মা সেতু চালুর সম্ভাবনা নেই৷ আমরা ছয় মাস পিছিয়ে আছি৷ ২০২০ সালের জুনের মধ্যে আমাদের আজকের অবস্থানে আসার কথা ছিলো কিন্তু সেই কাজ আমরা ছয় মাস পরে করেছি৷ ঠিক সময়ে কাজ শেষ করে ২০২০ সালের জুনে আমরা পদ্মা সেতু খুলে দেয়ার কথা বলেছিলাম৷ কিন্তু সেটা আর হচ্ছে৷ আরো বেশ কিছু কাজ বাকি আছে৷’’

তিনি জানান, রেল কবে চালু হবে তা বলা যাচ্ছেনা৷ সেতুর সাথে রেল লাইন এক সঙ্গেই করা হবে৷ কিন্তু সেতুর দুই পাশে তো রেল লাইন লাগবে৷

শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘‘আমরা সেতুর পরবর্তী কাজ নিয়ে ঠিকাদারদের সঙ্গে বসে এক মাস পরে জানাতে পারব আসলে ঠিক কবে পদ্মা সেতু যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দিতে পারব৷ দুই পাশে রেল লাইন স্থাপনের জন্য সেতু খুলে দেয়া আটকে থাকবে না৷’’

২০২১ সালে পদ্মা সেতু চালুর সম্ভাবনা নেই: পদ্মা সেতু প্রকল্পের পরিচালক শফিকুল ইসলাম

This browser does not support the audio element.

মূল সেতুর যেসব কাজ এখনো বাকি আছে তার মধ্যে রয়েছে রোডওয়ে স্ল্যাব, রেলওয়ে স্ল্যাব, সুপার-টি গার্ডার বসানো৷ স্ল্যাবের ওপর পিচ ঢালাইয়ের কাজ, আলোকসজ্জা, ল্যাম্পপোস্ট বসানোর প্রভৃতি৷

কংক্রিট আর স্টিলের তৈরি এই সেতুর নিচ দিয়ে চলবে ট্রেন এবং ওপর দিয়ে যানবাহন৷ ফলে সেতুর আকৃতি হবে দোতলা৷ তিন বছর দুই মাস ১০ দিনে পদ্মা সেতুর ৪১টি পিলারের ওপর ৪১টি স্প্যান বসানো হলো৷ আর এই প্রকল্পের প্রাথমিক যে খরচ ধরা হয়েছিল তার চেয়ে খরচ বেড়েছে তিন গুণ৷ সেতুর মোট বাজেট এখন ৩০ হাজার ১৯৩ দশমিক ৩৯ কোটি টাকা৷ বিশ্বব্যাংক ও উন্নয়ন সহযোগীরা দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ঋণ প্রত্যাহার করে নিলে বাংলাদেশের নিজম্ব অর্থায়নেই এই সেতু হচ্ছে৷ সেতুর কাজে এপর্যন্ত ব্যয় হয়েছে ২৪ হাজার ১১৫ দশমিক শুণ্য দুই কোটি টাকা৷ কাজ শেষ হয়েছে শতকরা ৮২ ভাগের একটু বেশি৷

পদ্মা সেতু চালু হলে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলা সরাসরি সড়ক পথে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশের সঙ্গে যুক্ত হবে৷ আসবে রেল যোগাযোগের আওতায় ৷ চার কোটিরও বেশি মানুষ সরাসরি এর সুবিধা পাবে৷ আর দেশের অর্থনীতিতেও এর ইতিবাচক প্রভাব পড়বে৷ বিশ্বব্যাংক বলেছিল, সেতু হলে জিডিপিতে দুই ভাগ বাড়তি প্রবৃদ্ধি হবে৷ কিন্তু সিপিডির অর্থনীতিবিদ ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম মনে করেন, ‘‘সেতুর খরচ বেড়ে যাওয়ায় সেটা নাও হতে পারে৷ তবে অর্থনীতিতে এর ইতিবাচক প্রভাব পড়বে৷ এখন দক্ষিণাঞ্চল কানেকটিভিটির আওতায় আসায় ইকোনোমিক জোন গড়ে উঠবে৷ কারণ গ্যাস ও বন্দর সুবিধা আছে৷’’ তিনি বলেন, ‘‘নতুন নতুন সমস্যার কারণে ব্যয় বৃদ্ধি হয়েছে৷ বিশ্বব্যাংকের সাথে জটিলতার কারণে সময়ক্ষেপণ হয়েছে৷ নদী শাসনের ক্ষেত্রে সমস্যা হয়েছিল, কোভিড আরেকটি সমস্যা৷ আমাদের কাছে মনে হয়েছে তারপরও ব্যয় আরো একটু যৌক্তিক করার সুযোগ ছিলো৷ কিন্তু এখন এটা যত দ্রুত খুলে দেয়া যায় ততই ভাল৷’’

অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে: অর্থনীতিবিদ ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম

This browser does not support the audio element.

তিনি মনে করেন এই সেতুর কারণে অভ্যন্তরীণ ও বিদেশি বিনিয়োগ বাড়বে৷ এশিয়ান দেশগুলো যারা পায়রা এবং মংলা বন্দর ব্যবহার করতে চান তারা ব্যবহার করতে পারবেন৷ এশিয়ান হাইওয়ে এবং ট্রান্স এশিয়ান রেলওয়ে নেটওয়ার্কে যুক্ত হবে এই সেতু যা আঞ্চলিক যোগাযোগে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে৷

সেতু নির্মাণের জন্য কাজ করছে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না রেলওয়ে মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি লিমিটেড (এমবিইসি) ৷ নদী শাসনের কাজ করেছে চীনেরই আরেকটি প্রতিষ্ঠান সিনো হাইড্রো কর্পোরেশন৷

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুনাজ আহমেদ বলেন, ‘‘পদ্মা সেতু কোনো জটিল ডিজাইনের ব্রিজ নয়৷ সিম্পল স্প্যান ট্রাস্ট ব্রিজ৷ এটা সম্পর্কে বাংলাদেশের প্রকৌশলীদের আগে থেকেই জ্ঞান আছে৷ এটা এখানে পড়ানোও হয়৷ কিন্তু এর বিশেষত্ব হলো বিশালতা৷ আমাদের টেকনোলজি ছিলো না৷ যা আনতে হয়েছে৷ আর নিজস্ব অর্থায়নে এত বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন হওয়ায় টেকনোলজির ট্রান্সফার হয়েছে৷ বিদেশি অর্থায়নে হলে এটা সম্ভব ছিল না৷ এটা আমাদের সেতুর বাইরেও বড় আরেকটি লাভ হয়েছে৷ ভবিষ্যতে আমােেদর প্রকৌশলীরা নিজেরাই এ ধরনের সেতু বানাতে পারবেন৷’’

তার মতে, ‘‘খরস্রোতা নদী ও পলিমাটির কারণে এই সেতুর একমাত্র চ্যালেঞ্জ ছিলো এর ফাউন্ডেশন৷ এই সেতু শত বছরেও ব্যবহার উপযোগী থাকবে৷’’

২২ নভেম্বরের ছবিঘরটি দেখুন...

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ