ইরানের পরমাণুবিজ্ঞানী হত্যার ঘটনার নিন্দা জানিয়েছে তুরস্ক৷ ঘটনাটিকে ‘ঘৃণ্য হত্যাকাণ্ড' উল্লেখ করে সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান জানায় দেশটি৷
বিজ্ঞাপন
আর হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধির আশঙ্কা করে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে যুক্তরাজ্য৷
শনিবার ইরানের রাজধানী তেহরানের পাশে আবসারদ শহরে দেশটির পরমাণুবিজ্ঞানী মোহসেন ফখরিজাদেহের উপর হামলার ঘটনা ঘটে৷ হামলায় আহত হওয়ার পর হাসপাতালে তিনি মারা যান৷ ইরানের রেভ্যুলেশনারি গার্ডেসের সদস্য ফখরিজাদেহ দেশটির ‘আশা' নামের পরমাণু প্রকল্পের প্রধান ছিলেন৷
হত্যার এ ঘটনায় ইসরায়েলকে দায়ী করে ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি ‘প্রতিশোধের' হুমকি দেন৷
তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, ‘‘আমরা এ ঘৃণ্য হত্যাকাণ্ডের নিন্দা জানাই৷ ইরান সরকার এবং নিহতের পরিবারের প্রতি সহমর্মিতা জানাচ্ছি৷''
এ ঘটনায় দোষীদের বিচারের আওতায় আনা হবে এমন প্রত্যাশার কথা জানিয়ে বিবৃতিতে সবাইকে এ অঞ্চলে অস্থিরতা বৃদ্ধি পায় এমন পদক্ষেপ নেওয়া থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানানো হয়৷
এদিকে যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডমিনিক রাব সাংবাদিকদের জানান, যুক্তরাজ্য ইরানের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন৷ যুক্তরাজ্য এ অঞ্চলে অস্থিরতা কমে আসছে এমন পরিস্থিতি দেখতে চায় জানান ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী৷ তিনি বলেন, ‘‘ইরানে যা ঘটেছে তার বিস্তারিত জানার অপেক্ষায় আছি আমরা৷ তবে আমরা কঠোরভাবে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন মেনে চলি যা সাধারণ নাগরিকদের উপর হামলার বিরোধী৷''
আরআর/এডিকে (ডিপিএ, এএফপি)
ইরান-চীন সম্ভাব্য চুক্তি: সরকার খুশি, জনগণ অখুশি?
চীনের সঙ্গে ২৫ বছরের এক চুক্তি করতে চলেছে ইরান৷ মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য সদা সমালোচিত এই দুই দেশের চুক্তি ইরানের জনগণ সানন্দে গ্রহণ করবে কিনা সেটাও এখন প্রশ্ন৷ ছবিঘরে বিস্তারিত...
ছবি: Getty Images/AFP/T. A. Clary
চুক্তির খুব কাছাকাছি
কয়েকদিন আগে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মাদ জাভেদ জারিফ জানান, চীনের সঙ্গে ইরানের ২৫ বছরের একটা কৌশলগত চুক্তির বিষয়ে আলোচনা চলছে৷ তবে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক টাইমসের দাবি, তারা চীন-ইরান আলোচনার কিছু ডকুমেন্ট পেয়েছে৷ ফার্সি ভাষায় লেখা সেই কাগজপত্রের তথ্য অনুযায়ী, দেশ দুটি এখন চুক্তি সম্পাদনের দ্বারপ্রান্তে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/T. Hase
কী থাকবে চুক্তিতে?
নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদন বলছে, শুধু অর্থনৈতিক বিষয় নয়, সামরিক সহযোগিতার বিষয়াদিও থাকবে দ্বিপাক্ষিক এই চুক্তিতে৷
ছবি: picture-alliance/zumapress.com/R. Fouladi
পারস্পরিক স্বার্থ
চীন ইরানকে দেখছে নিজস্ব পণ্যের গুরুত্বপূর্ণ বাজার এবং তেলের উৎস হিসেবে৷ ইরান মনে করে, এই চুক্তির ফলে ইরানে চীনের বিনিয়োগ বাড়বে এবং দেশটির অর্থনীতিতে যুক্তরাষ্ট্রের আরোপ করা অর্থনৈতিক অবরোধের চাপ কমবে৷
ছবি: Reuters/T. Peter
পারস্পরিক মিল
মানবাধিকারের প্রশ্নে চীন আর ইরান সবসময়ই সমালোচিত৷ ধারণা করা হয়, সারা বিশ্বে সবচেয়ে বেশি মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয় চীনে, বিরোধীদের কণ্ঠরোধেও সে দেশের সরকার সবসময় তৎপর৷ সাম্প্রতিক সময়ে উইগুর মুসলমানদের ব্যাপক নির্যাতনের অভিযোগের মুখেও রয়েছে চীন৷ ইরানেও মানবাধিকার পরিস্থিতি খুব খারাপ৷ রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের দমন-পীড়ন সেখানে প্রায় স্বাভাবিক ঘটনা৷
ছবি: Reuters/F. Bensch
চীনের প্রতি ইরানি জনগণের মনোভাব
চীনের পণ্য ইরানি শিল্পোদ্যোগকে ব্যর্থ করে দিচ্ছে৷ এছাড়া করোনা ভাইরাস সারা বিশ্বে ছড়ানোর জন্য চীনকে দায়ী মনে করেন অনেক ইরানী৷ ট্যুবিঙ্গেন বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যপ্রাচ্য ও তুলনামূলক রাজনীতির সিনিয়র প্রভাষক আলী ফাতোল্লাহ-নেজাদ মনে করেন, এসব কারণে চীনের সঙ্গে চুক্তিকে ইরানের জনগণের বড় একটা অংশ ভালো চোখে না-ও দেখতে পারে৷ এর ফলে ইরান সরকারের সঙ্গে জনগণের সম্পর্কের অবনতি হতে পারে বলেও মনে করেন তিনি৷