1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রস্তুত রাখছে জার্মানি

৬ সেপ্টেম্বর ২০২২

আসন্ন শীতকালে বিদ্যুৎ ঘাটতি এড়াতে জার্মানি দুটি পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রস্তুত রাখতে চায়৷ বছরের শেষে পরমাণু শক্তি পুরোপুরি বন্ধ করার সিদ্ধান্ত সত্ত্বেও এমন সিদ্ধান্ত জোরালো বিতর্ক সৃষ্টি করছে৷

Deutschland I Kernkraftwerke Isar
ছবি: Armin Weigel/dpaZpicture alliance

জাপানের ফুকুশিমা পরমাণু কেন্দ্রে বিপর্যয়ের পর জার্মানি ২০২২ সালের মধ্যে সব পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল৷ কিন্তু চলতি বছর ইউক্রেনের উপর রাশিয়ার হামলার জের ধরে রাশিয়া থেকে জ্বালানি সরবরাহ অনিশ্চিত হয়ে পড়ায় গোটা হিসেব গোলমাল হয়ে গেছে৷ বিশেষ করে শীতের মাসগুলিতে জার্মানিতে বিদ্যুৎ সরবরাহ ও ঘর গরম রাখার ব্যবস্থায় বিঘ্ন ঘটতে পারে, এমন আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না৷ এই অবস্থায় সব রকম উৎস থেকে জ্বালানির জোগান চালু রাখার জন্য চাপ বাড়ছে৷ এমনকি বৃহত্তর স্বার্থে পরমাণু বিদ্যুৎ নিয়ে ছুৎমার্গও ত্যাগ করার ডাক জোরালো হয়ে উঠছে৷

এমনই প্রেক্ষাপটে জার্মানির জোট সরকার অবশিষ্ট তিনটি পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রের মধ্যে দুটিকে পুরোপুরি বন্ধ না করে ২০২৩ সালের এপ্রিল মাস পর্যন্ত ‘স্ট্যান্ডবাই' অর্থাৎ প্রস্তুত রাখার সিদ্ধান্ত নিলো৷ অর্থাৎ ‘সাপও মরবে, লাঠিও ভাঙবে না' – এমন এক আপোশের পথ বেছে নেওয়া হলো৷  একমাত্র জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বর্ধিত এই মেয়াদে সেই দুটি কেন্দ্রে কোনো বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হবে না৷ উল্লেখ্য, এই দুটি কেন্দ্রের ১,৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্ষমতা রয়েছে৷ নির্ধারিত সময়ের পরেও স্থাপনাদুটুকে চালু রাখার ক্ষতিপূরণ হিসেবে সরকার দুই বেসরকারি সংস্থাকে আর্থিক সহায়তা দেবে৷

সরকারের সিদ্ধান্ত বাস্তবে কতটা কার্যকর করা সম্ভব হবে, সে বিষয়েও সংশয় দেখা যাচ্ছে৷ একটি পরমাণু কেন্দ্রের বেসরকারি মালিক সংস্থা সরকারের কাছে এক আইনি কাঠামো সৃষ্টির ডাক দিয়েছে৷ সেইসঙ্গে মেয়াদ বাড়ানোর পরিকল্পনার খুঁটিনাটী বিষয়গুলিও পেশ করার অনুরোধ করেছে সেই সংস্থা৷ তারপরেই ‘স্ট্যান্ডবাই' অবস্থায় রাখার সম্ভাবনা খতিয়ে দেখা সম্ভব হবে৷ অন্য সংস্থাটিও জানিয়েছে, যে প্রযুক্তিগত ও ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত চ্যালেঞ্জ খতিয়ে দেখে তবেই এমন সিদ্ধান্ত কার্যকর করার বিষয়ে নিশ্চয়তা পাওয়া যাবে৷ তাদের মতে, পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র খেয়ালখুশিমতো বন্ধ বা চালু করা সহজ নয়৷

বলা বাহুল্য সরকারের এমন সিদ্ধান্তকে ঘিরে জার্মানিতে জোরালো বিতর্ক শুরু হয়ে গেছে৷ বিরোধী রক্ষণশীল শিবির অভিযোগ করেছে, যে সবুজ দলের গোঁড়া আদর্শগত অবস্থানের কারণে এ ক্ষেত্রে যথেষ্ট সাহসি পদক্ষেপ নেওয়া হলো না৷ শিবিরের এক নেতা বলেন, জার্মানি ইউরোপের কাছে গ্যাস সরবরাহের প্রশ্নে সংহতির ডাক দিচ্ছে৷ অথচ জার্মানিই বিদ্যুৎ উৎপাদন না বাড়িয়ে কোনো অবদান রাখছে না৷ এমনকি সরকারের শরিক উদারপন্থি এফডিপি দলও তিনটি পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র আরও কিছুদিন পুরোপুরি চালু রাখার পক্ষে সওয়াল করেছিল৷

সরকারের শরিক সবুজ দলের পক্ষে পরমাণু বিদ্যুৎ অত্যন্ত স্পর্শকাতর বিষয়৷ গত কয়েক দশক ধরে লাগাতার বিরোধিতার পর সেই দলেরই ভাইস চ্যান্সেলর এবং অর্থনীতি বিষয়ক মন্ত্রী রোব্যার্ট হাবেকের পক্ষে এমন কঠিন সিদ্ধান্ত নেওয়া মোটেই সহজ ছিল না৷ আত্মপক্ষ সমর্থনে তিনি বলেন, জার্মানির বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলিতে এক ‘স্ট্রেস টেস্ট' চালিয়ে দেখা গেছে যে আসন্ন শীতকালে বিদ্যুৎ সরবরাহ পুরোপুরি নিশ্চিত করা সম্ভব হবে না৷ তাই বিঘ্ন এড়াতে এই সিদ্ধান্ত ছিল অপরিহার্য৷ হাবেক বলেন, তাঁর সরকার এখনো পরমাণু শক্তিকে উচ্চ ঝুঁকিসম্পন্ন প্রযুক্তি হিসেবে গণ্য করছে৷ এমন কেন্দ্রের তেজস্ক্রিয় বর্জ্য ভবিষ্যৎ প্রজন্মের মাথাব্যথা হয়ে থাকবে৷

এসবি/কেএম (রয়টার্স, এএফপি)

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ