1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বিকল্প জ্বালানির খোঁজে

গেরো রুয়েটার/এসি১ ফেব্রুয়ারি ২০১৩

বলেছেন বিকল্প নোবেল পুরস্কার বিজয়ী মিউক্লে স্নাইডের৷ ১৯৯৭ সালে তিনি রাইট লাইভলিহুড অ্যাওয়ার্ড পান৷ তাঁর মতে বিশ্বে পরমাণু শক্তি তার তাৎপর্য হারাচ্ছে, সঙ্গে হয়ে উঠছে লোকসানের ব্যবসা৷ কিন্তু রাজনীতিকরা তা বোঝেন নি৷

ছবি: dapd

পরমাণু বিশেষজ্ঞ মুইক্লে স্নাইডার প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী পরমাণু শিল্পের পরিস্থিতি নিয়ে একটি রিপোর্ট বার করেন৷ ফুকুশিমার পর সেই পরিস্থিতি কতটা বদলেছে, এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ফুকুশিমার পর অবশ্যই পরমাণু শিল্পের অধোগতি দ্রুততর হয়েছে৷

সারা বিশ্বে চালু আণবিক চুল্লিগুলির সংখ্যা কমছে৷ আণবিক চুল্লির সংখ্যা সর্বোচ্চে দাঁড়িয়েছিল ২০০২ সালে, দশ বছর আগে৷ বিশ্বের সামগ্রিক বিদ্যুৎ উৎপাদনে তথাকথিত পরমাণু বিদ্যুতের অনুপাতও কমছে৷ ১৯৯৩ সালে, অর্থাৎ বিশ বছর আগে, সেটা ছিল সর্বোচ্চ পর্যায়ে, ১৭ শতাংশে৷ বর্তমানে সেটা কমে দাঁড়িয়েছে ১১ শতাংশে৷

স্নাইডার-এর মতে এর দু'টি মূল কারণ হলো, জনমতের পরিবর্তন ও অর্থনৈতিক বাস্তব: বিদ্যুৎ উৎপাদনের অপরাপর পন্থা আরো সক্ষম ও সাশ্রয়ী হবার ফলে তারা পরমাণু বিদ্যুতের সঙ্গে পাল্লা দিতে পারছে৷ বিশেষ করে আণবিক চুল্লিতে যে পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ করতে হয়, তার পরিপ্রেক্ষিতে জ্বালানি কোম্পানিগুলি তাদের নীতি পুনর্বিবেচনা করছে৷

নোবেল পুরস্কার বিজয়ী মিউক্লে স্নাইডেরছবি: CC-BY-SA Stephan Roehl/Heinrich-Böll-Stiftung

একটি আণবিক চুল্লি নির্মাণ ও চালানোর খরচ ক্রমাগত বেড়েই চলেছে, অপরদিকে জ্বালানি সংক্রান্ত অন্যান্য প্রযুক্তিতে বিনিয়োগ ও চালানোর খরচ কমে চলেছে৷ এর একটি কারণ, আণবিক চুল্লিগুলি ক্রমেই আরো বেশি জটিল হয়ে পড়ছে৷ তাছাড়া নিরাপত্তা, দুর্ঘটনা কিংবা সন্ত্রাসী আক্রমণের বিরুদ্ধে সুরক্ষার মাত্রাও বাড়াতে হচ্ছে৷ যার ফলে বহু দেশে যে ধরণের আণবিক চুল্লি চালানো হয়, তা আজ তৈরি করতে গেলে, সরকারি অনুমতিই পাওয়া যেত না৷

কিলোওয়াট প্রতি আণবিক বিদ্যুতের দাম কত হওয়া উচিত, তাও আজ বলা সম্ভব নয়, কেন না পারমাণবিক বর্জ্য জমানো, ফেলা কিংবা বিনষ্ট করার খরচ আছে৷ সারা বিশ্বে বস্তুত তেজস্ক্রিয় বর্জ্য ফেলার কোনো স্থান নেই৷ যার ফলে পরমাণু শক্তির ব্যবহার শুরু হবার ৫০ বছর পরেও তার আসল খরচ যে কি, তা আমাদের জানা নেই৷ সঙ্গে রয়েছে পরমাণু দুর্ঘটনার বিরুদ্ধে বীমার খরচ: ফুকুশিমা বিপর্যয়ে ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়াবে ১৩০ থেকে ৬৫০ বিলিয়ন ডলার, বলে বীমা কোম্পানিগুলির ধারণা৷

একটি আণবিক চুল্লি নির্মাণ করতে ঠিক কতোটা খরচ পড়বে, তা আগে থেকে বলা শক্ত৷ অথচ ঋণ পাবার জন্য অর্থপ্রতিষ্ঠানগুলি ঠিক তাই জানতে চায়৷ বলতে কি, একটি আণবিক চুল্লির নির্মাণের চূড়ান্ত খরচ কোনোদিনই বলা সম্ভব হবে না৷ ফিনল্যান্ড ও ফ্রান্সে এখন যে আণবিক চুল্লিগুলি নির্মিত হচ্ছে, তার খরচ ইতিমধ্যেই চারগুণ হয়ে দাঁড়িয়েছে৷

জাপান, জার্মানি সহ অনেক দেশেই পরমাণু শক্তির বিরুদ্ধে জনমত বাড়ছেছবি: Reuters

স্নাইডার-এর ধারণা, আজ আর এমন কোনো আণবিক চুল্লি বানানো সম্ভব নয়, যা থেকে মুনাফা হবে৷ কাজেই রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত ও গ্যারান্টি ছাড়া আজ আর কোনো দেশে আণবিক চুল্লি নির্মিত হবার সম্ভাবনা কম৷ চীন অথবা রাশিয়ায় যেটা সম্ভব, সেটা আর জার্মানিতে সম্ভব নয়৷ ব্রিটেনের মতো দেশ এখনও আণবিক চুল্লি নির্মাণের কথা ভাবছে৷ কিন্তু সেটা এই কারণে যে, ব্রিটেন জার্মানির মতো বিকল্প জ্বালানিতে বিনিয়োগ করেনি, এগিয়ে যায়নি৷

জাপান সম্পর্কে মুইক্লে স্নাইডার-এর বক্তব্য, সেখানে সরকার পরমাণু শক্তির সপক্ষে কিন্তু জনসাধারণ পরমাণু শক্তির বিপক্ষে৷ স্নাইডার এটাকে বলেন ‘‘প্রাক-বিপ্লব'' পরিস্থিতি৷ ফুকুশিমা জাপানের মানুষের মনে ট্রমা হিসেবে কাজ করছে, তাদের গোটা বিশ্বাসের কাঠামো ধরে নাড়া দিয়েছে৷ পরমাণু প্রযুক্তি, সরকার ও টেকনোক্র্যাটদের উপর তাদের আর আগেকার আস্থা নেই৷

জাপানের ৫০টি আণবিক চুল্লির মধ্যে মাত্র দু'টি এখন বিদ্যুৎ উৎপাদন করছে৷ তা বলে বিশ্বের অন্যত্র আণবিক চুল্লি নির্মাণ থেমে নেই৷ পোল্যান্ডে কোনো আণবিক চুল্লি নেই, তাই তারা একটি নির্মাণ করছে৷ চেক গণরাজ্য কিংবা হাঙ্গেরির মতো দেশ এখনও পরমাণু শক্তিতে বিশ্বাসী৷ রুশিরা তুরস্কে একটি আণবিক চুল্লি বানাচ্ছে, এবং গোটা প্রকল্পটির অর্থও যোগাচ্ছে৷

সবার আগে রয়েছে চীন: সেখানে এখন ২৯টি নতুন আণবিক চুল্লি নির্মাণ করা হচ্ছে৷ ভারতে তৈরি হচ্ছে সাতটি নতুন আণবিক চুল্লি৷ তফাৎটা এই যে, চীন নবায়নযোগ্য জ্বালানিগুলিতেও বিপুলভাবে বিনিয়োগ করেছে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ