1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মনমোহন সিং সরকার দিশাহীন

অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুন দিল্লি২০ আগস্ট ২০১৩

পররাষ্ট্রনীতির ক্ষেত্রে মনমোহন সিং-এর জোট সরকারের এখন কিংকর্তব্যবিমূঢ় অবস্থা৷ চীন, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, এমন কি বাংলাদেশের সঙ্গেও ভৌগলিক সীমান্ত ইস্যু নিয়ে আস্থার ঘাটতি প্রকট হয়ে উঠছে ক্রমশই৷

ছবি: AFP/Getty Images

প্রতিবেশী দেশগুলির সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারতের পররাষ্ট্রনীতির দুর্বলতা ক্রমশই প্রকট হয়ে উঠছে৷ জাতীয় স্বার্থের কথা চিন্তা করে মনমোহন সিং-এর কংগ্রেস-জোট সরকার বলিষ্ট পদক্ষেপ না নিয়ে রাজ্য সরকারগুলির কাছে বারংবার নতমস্তক হচ্ছে৷ তামিলনাড়ুর চাপে শ্রীলঙ্কা সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট নীতি অনুসরণ করতে পারছে না৷ বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও তাই৷ পশ্চিমবঙ্গের মমতা বন্দোপাধ্যায় সরকারের রক্তচক্ষুর কাছে মনমোহন সিং সরকারের হালে পানি না পাওয়ার মতো অবস্থা৷ ফলে রাজনৈতিক ঐকমত্য গড়ে তুলতে পারছে না বাংলাদেশের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ দ্বিপাক্ষিক চুক্তি বাস্তবায়নে৷

কিন্ত কেন? বৃহত্তর জাতীয় স্বার্থে রাজ্য সরকারের রক্তচক্ষুকে আমল না দেবার সাংবিধানিক ক্ষমতা কেন্দ্রের আছে৷ পররাষ্ট্রনীতিতে রাজ্য সরকারের ফতোয়া মানতে বাধ্য নয় কেন্দ্র৷ তাহলে সেই ক্ষমতা প্রয়োগ করতে এত দ্বিধা কেন? ভারতে মনমোহন সিং সরকার এবং বাংলাদেশে শেখ হাসিনা সরকারের শাসনকালের মেয়াদ শেষ হতে দেরি নেই৷ এই সময়ে বাংলাদেশের সঙ্গে সার্বিক স্থলসীমা চুক্তি এবং তিস্তা জল বণ্টন চুক্তির বাস্তবায়ন উভয়দেশের পক্ষে যে কত জরুরি, সেটা রাজ্য সরকারের চেয়ে ভালো বুঝবে কেন্দ্রীয় সরকার৷

দীর্ঘদিন গড়িমসি করার পর স্থলসীমা চুক্তি অনুমোদনের জন্য সংবিধান সংশোধনী বিল পেশ করা হয় সংসদের গত অধিবেশনে৷ আসম গণ পরিষদের সরব প্রতিবাদ ও হৈ হট্টগোলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী সলমান খুরশিদকে পিছু হটতে হয়৷ আশা করা যায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী চলতি অধিবেশনে আরো দৃঢ় অবস্থান নেবেন এবং প্রধানমন্ত্রী এর রাজনৈতিক অপরিহার্যতা তুলে ধরে তা পাশ করাতে পারবেন৷

পাশাপাশি, প্রধান বিরোধী দল বিজেপি-কেও বুঝতে হবে অভ্যন্তরীণ রাজনীতির লুকোচুরি খেলা এই ইস্যুতে খাটে না৷ এটা ভারতের মিলিত দায়দ্ধতা৷ কারণ এর সঙ্গে জড়িত ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা ও বিশ্বাসযোগ্যতা৷ তাই এই বিল পাশ করা বিজেপির পক্ষে ততটাই গুরুত্বপূর্ণ, যতটা কংগ্রেস-জোট সরকারের৷

চীন, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার সঙ্গে ভারতে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক যখন তলানিতে তখন ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর বাংলাদেশের হাসিনা সরকারের দিক থেকে ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের সার্বিক উন্নতির ধারাবাহিকতায় কোনো খামতি নেই৷ শুধু তাই নয়, অন্যতম বৃহৎ ইসলামিক দেশ হয়েও শেখ হাসিনা ধর্মকে রাষ্ট্রনীতি এবং আঞ্চলিক অর্থনীতি থেকে পৃথক করার চ্যালেঞ্জ নিয়েছেন৷ এই প্রয়াসে ভারতের উচিত সর্বান্তঃকরণে শেখ হাসিনার পাশে দাঁড়ানো৷

ভুলে গেলে চলবে না, আফগানিস্তান ও পাকিস্তানে জেহাদি রাজনীতি যেভাবে মাথা চাড়া দিয়ে উঠছে, তাতে বাংলাদেশকে হাতে না রাখলে জঙ্গিবাদের সংক্রমণ বাংলাদেশ থেকে আবারো ছড়িয়ে পড়তে পারে ভারতের মাটিতে৷ এর সঙ্গে এটাও মনে রাখতে হবে যে, বাংলাদেশের ভূখণ্ড থেকে ভারত-বিরোধী সন্ত্রাস অনেকটাই দমন করতে পেরেছে হাসিনা সরকার৷ ভারতের রাজনৈতিক দলগুলিকে সেটা বুঝতে হবে, ভারতের পত্র-পত্রিকার রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের এমনটাই অভিমত৷

ভারত ভাগের সময় বাংলা ভাগ ঠিকমতো হয়নি৷ অনেক ত্রুটিবিচ্যুত থেকে যায়৷ যেমন, ছিটমহল যা অন্য দেশের সীমানা বেষ্টিত৷ ১৯৯৭ সালে ভারত-বাংলাদেশের যৌথ সমীক্ষায় দেখা যায়, এই রকম ১১১টি ভারতীয় ছিটমহল আছে বাংলাদেশে এবং ৫১টি বাংলাদেশি ছিটমহল আছে ভারতে৷ এসব ছিটমহলের বাসিন্দারা কার্যত ঘরবন্দি৷ কারণ ছিটমহলের সীমানার বাইরে তাঁরা যেতে পারেন না, যেহেতু সেটা অন্য সার্বভৌম দেশ৷

উল্লেখ্য, গোয়ায় পর্তুগিজ কলোনি দাদরা ও নগর হাবেলিকে মুক্ত করার সময় পর্তুগিজ সরকার ভারতীয় ভূখণ্ডের ভেতর দিয়ে ঐ দুটি ছিটমহলে যাবার সার্বভৌম অধিকারের দাবি জানিয়ে আন্তর্জাতিক আদালতে গিয়েছিল, কিন্তু আদালতে তা নাকচ হয়ে যায়৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ