২০১১ সালের এপ্রিলে বিস্ময়কর একটি চশমার ধারণা দিয়ে বিশ্বে হৈচৈ ফেলে দিয়েছিল গুগল৷ এখন পর্যন্ত ‘গুগল গ্লাস’ নামে পরিচিত এই বস্তুটি আসলে মোবাইল কম্পিউটার আর চশমার মিলিত এক রূপ৷
গুগলের এই চশমাটি এখন ব্যবহার করছেন নির্বাচিত কিছু ব্যক্তি, যার মধ্যে রয়েছেন সফটওয়্যার ডেভেলপার, প্রোগ্রামার ইত্যাদি৷ তাদের দেয়া বিভিন্ন পরামর্শের ভিত্তিতে তৈরি হবে সাধারণ ব্যবহারকারীদের জন্য চশমা৷ নির্বাচিত এই ব্যক্তিরা দেড় হাজার ডলার দিয়ে চশমাটি কিনেছেন৷
উত্তর কোরিয়ার মানচিত্র এবার গুগল-এর নাগালে
মার্কিন ইন্টারনেট সংস্থা গুগল তাদের মানচিত্র পরিষেবায় এবার উত্তর কোরিয়াও যোগ করলো৷ বহু বছর ধরে সেই সব তথ্য সংগ্রহ করেছেন শখের মানচিত্রবিদরা৷
ছবি: dapd
বিচ্ছিন্ন দেশের নতুন চিত্র
রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা কেসিএনএ প্রচারণার উদ্দেশ্যে আকাশ থেকে ছবি তুলেছে৷ আছে বহিরাগতদের তোলা কিছু ছবিও৷ এই সব বিচ্ছিন্ন ছবি ছাড়া অন্য কোনো উৎস নেই৷ ফলে সামগ্রিক চিত্র পাওয়া কঠিন৷ গুগল এই সব খণ্ডচিত্রগুলি জুড়ে এক সার্বিক চিত্র দিতে চাইছে৷
ছবি: Google
সীমান্তের এপার-ওপার
গুগল ম্যাপস-এর পুরানো একটি মানচিত্রে দুই কোরিয়ার সীমান্ত অঞ্চল দেখা যাচ্ছে৷ তাতে উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যে পার্থক্য একেবারে স্পষ্ট৷ দক্ষিণে অসংখ্য এলাকার নাম শোভা পাচ্ছে, উত্তরে প্রায় সবকিছুই খালি৷
ছবি: 2013 Google
সরকারি ভবন, পার্ক বা মেট্রো স্টেশন
শখের মানচিত্রবিদরা বহু বছর ধরে যে সব ছবি সংগ্রহ করেছেন, তার ভিত্তিতেই গুগল উত্তর কোরিয়ার মানচিত্র ভরানোর চেষ্টা করেছে৷ রাজধানী পিয়ং ইয়ং অবশ্যই সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পেয়েছে৷ সেখানে হাসপাতাল ও স্কুলও চিহ্নিত করা হয়েছে৷ পার্ক ও মেট্রো স্টেশনও দেখা যাচ্ছে৷
ছবি: 2013 Google
রাজধানীর বাইরে অজানা জগত
পিয়ং ইয়ং শহরের বাইরের জগত এখনো প্রায় অজানা৷ কয়েকটি শহর ও বিমানবন্দর ছাড়া আর প্রায় কোনো তথ্য নেই৷ আছে একটি রাসায়নিক কারখানা ও পরমাণু গবেষণা কেন্দ্রও৷ ধূসর রঙের কিছু এলাকা নাকি লেবার ক্যাম্প৷ উত্তর কোরিয়ায় আনুমানিক প্রায় দুই লক্ষ মানুষ এমন সব শিবিরে বন্দি৷
ছবি: 2013 Google
ইন্টারনেট সংযোগ বিরল
গুগলের বিভিন্ন পরিষেবা উত্তর কোরিয়ার প্রায় সব মানুষেরই নাগালের বাইরে৷ হাতে গোনা এলিট শ্রেণির কিছু মানুষই ইন্টারনেটে প্রবেশের সুযোগ পান৷ বিশেষজ্ঞদের মতে, তাদের সংখ্যা কয়েক’শো থেকে বড়জোর হাজার খানেকের মতো৷
ছবি: dapd
তথ্য সবার ধরাছোঁয়ার বাইরে
উত্তর কোরিয়ার মানুষ শুধু দেশের কিছু ওয়েবসাইটের নাগাল পেতে পারেন৷ তবে বাকি বিশ্বের থেকে বিচ্ছিন্ন সেই পরিষেবা৷ তা দিয়ে রাষ্ট্রের সম্মতি নিয়ে কিছু তথ্য চালাচালি করা হয়ে থাকে৷ কিম জং উন-এর নেতৃত্বেও অবস্থা বদলায় নি৷ তরুণ রাষ্ট্রপ্রধান তাঁর পিতা ও পিতামহের পথে চলেছেন৷
ছবি: dapd
ভরে উঠছে মানচিত্র
উত্তরের মানুষ মানচিত্রের নাগাল না পেলেও দক্ষিণ কোরিয়ার মানুষের কাছে এই তথ্য বেশ আগ্রহের সৃষ্টি করেছে৷ অনেকের পূর্বপুরুষ উত্তর থেকে এসেছেন৷ অনেকের আত্মীয়-স্বজন এখনো সেখানে থাকেন৷
ছবি: 2013 Google
পিয়ং ইয়ং-এ গুগলের প্রধান
গুগলের প্রধান এরিক স্মিট-এর উত্তর কোরিয়া সফরের কয়েক সপ্তাহ পরেই গুগল সে দেশের মানচিত্র প্রকাশ করলো৷ স্মিট জানুয়ারি মাসের শুরুতে দিন তিনেকের জন্য সে দেশ গিয়েছিলেন৷ ব্যক্তিগত সফর বললেও মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এর সমালোচনা করেছে৷ তারা বলেছে, বিশেষ করে সাম্প্রতিক রকেট পরীক্ষার প্রেক্ষাপটে এমন সফর মোটেই ‘গঠনমূলক’ নয়৷
ছবি: dapd
8 ছবি1 | 8
গুগলের নির্বাহী চেয়ারম্যান এরিক স্মিডট বলেছেন, ‘কিছুদিন' এর মধ্যেই চশমাটি বাজারে আসতে পারে৷ আর দামটা স্মার্টফোনের চেয়ে বেশিই হবে বলে আগেই জানিয়েছিল গুগল৷
গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রে গুগলের একটি সম্মেলনে এই বিস্ময় চশমা নিয়ে অনেক আলোচনা হয়েছে৷ প্রোগ্রামারদের এই সম্মেলনে অনেকেই চশমা পরে উপস্থিত হয়েছিলেন৷ সেখানেই ফেসবুক আর টুইটার গুগল গ্লাসের জন্য তৈরি অ্যাপ এর উদ্বোধনী ঘোষণা দেয়৷ এর ফলে ব্যবহারকারীরা চশমা দিয়ে ছবি তুলে সঙ্গে সঙ্গে সেটা ফেসুবকে দিয়ে দিতে পারবেন৷ তেমনি সেটা পোস্ট করা যাবে টুইটারেও৷
কিছু বিষয়ে আপত্তি
গুগল গ্লাস এখনো সাধারণের কাছে না এলেও আইন প্রণেতা থেকে শুরু করে অনেকেই এর কিছু বিষয় নিয়ে আপত্তি তুলেছেন৷ যেমন ভিডিও রেকর্ডিং সুবিধা থাকার কারণে যত্রতত্র এর ব্যবহার ঠিক হবে কিনা, সেটা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে৷ যেমন গুগলের সম্মেলনেই অনেককে এই চশমা পরে টয়লেটে যেতে দেখা গেছে৷ যদিও তারা বলছেন ভুল করেই তারা ভিডিও ক্ষমতা সম্পন্ন এই চশমা পরে টয়লেটে চলে গিয়েছিলেন, তবুও সেটা ঠিক হয়নি বলেই মনে করছেন অনেকে৷
এ কারণে যুক্তরাষ্ট্রে অনেক ক্যাসিনো ও বার এ গুগল গ্লাস নিয়ে ঢোকাটা নিষিদ্ধ করা হয়েছে৷
গুগলের বক্তব্য
গুগল কর্তৃপক্ষের দাবি, যেহেতু কম্পিউটারের ক্ষমতাসম্পন্ন চশমার ব্যবহার এখনো নতুন পর্যায়ে রয়েছে তাই টুকটাক ভুল হতে পারে৷ যেমনটা হয়েছিল মোবাইল ফোন আসার সময়৷ কিন্তু যখন মোবাইলের ব্যবহার বেড়ে গেল তখন ব্যবহারকারীরা নিজে থেকেই কিছু নিয়ম মেনে চলা শুরু করে৷ যেমন বাসে থাকার সময় মোবাইলে জোরে কথা না বলা, বৈঠকে থাকার সময় রিংটোন বন্ধ করে রাখা ইত্যাদি৷ গুগল গ্লাসের ব্যবহারও যখন বাড়বে তখনো মানুষ নিজের মতো করে নিয়ম বানিয়ে নেবে বলেই মনে করছে গুগল কর্তৃপক্ষ৷