1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

পরিবেশবান্ধব জ্বালানি ‘সবুজ’ হাইড্রোজেন

২২ মার্চ ২০২১

বিকল্প ও পরিষ্কার জ্বালানির উৎস হিসেবে হাইড্রোজেনের গুরুত্ব বাড়ছে৷ কিন্তু সেই জ্বালানি উৎপাদন প্রক্রিয়ায় কার্বন ফুটপ্রিন্ট বিতর্কিত বিষয়৷ সবুজ হাইড্রোজেন উৎপাদন প্রক্রিয়া এখনো জটিল ও ব্যয়বহুল৷

Grüner Wasserstoff
ছবি: Imago Images/F. Schuh

হাইড্রোজেন কি ভবিষ্যতের প্রধান জ্বালানি হয়ে উঠতে পারে? ইউরোপে জীবাশ্মভিত্তিক জ্বালানির বিকল্প হিসেবে হাইড্রোজেন বিশেষ গুরুত্ব পাচ্ছে৷ রটারডাম শহরের এই বন্দরে সেই দিশায় কাজ চলছে৷ অপারেটর কোম্পানি গোটা বন্দর জুড়ে বিশাল এক হাইড্রোজেন-ভিত্তিক নেটওয়ার্ক গড়ে তোলার পরিকল্পনা করছে৷

এই উদ্যোগের মাধ্যমে রটারডামকে এক আন্তর্জাতিক হাব হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা চলছে৷ সেখান থেকেই ইউরোপের অন্যান্য দেশে হাইড্রোজেন উৎপাদন, আমদানি ও পরিবহণের ব্যবস্থা  করা হবে৷

কিন্তু জ্বালানি হিসেবে হাইড্রোজেন কি সত্যি পরিবেশবান্ধব? আসলে হাইড্রোজেনের নিজস্ব কোনো রং নেই৷ তবে উৎপাদন প্রক্রিয়া অনুযায়ী সেটিকে ধূসর, নীল অথবা সবুজ রংয়ে চিহ্নিত করা হয়৷

বর্তমানে উৎপাদিত হাইড্রোজেনের বেশিরভাগ অংশই ধূসর৷ প্রাকৃতিক গ্যাস এবং কয়লার মতো জীবাশ্মভিত্তিক জ্বালানি থেকেই সেটি উদ্ধার করা হয়৷ নোংরা এই উপাদান উৎপাদনের সময়েও বিশাল পরিমাণে কার্বন নির্গমন হয়৷

নীল হাইড্রোজেনও আসলে ধূসর৷ এটির উৎসও জীবাশ্মভিত্তিক জ্বালানি৷ তবে উৎপাদনের সময় জলবায়ুর জন্য ক্ষতিকর কার্বন-ডাই-অক্সাইড গ্যাস আলাদা করে গ্যাসের আধারে জমা রাখা হয়৷ ফলে এ ক্ষেত্রে কার্বন ফুটপ্রিন্ট অনেক কম৷

পানি থেকে যে হাইড্রোজেন উদ্ধার করা হয়, সেটিকে সবুজ রংয়ে চিহ্নিত করা হয়৷ এই উৎপাদন প্রক্রিয়াকে টেকসই বলা চলে৷ অরোরা এনার্জি রিসার্চ সংস্থার আলেক্সান্ডার এসার এ বিষয়ে বলেন, ‘‘অণু এইচটু হওয়ার কারণে সব হাইড্রোজেনই আসলে এক৷ তবে ভিন্ন উৎপাদন প্রক্রিয়ার উপর গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমনের মাত্রা এবং সেইসঙ্গে হাইড্রোজেনর পরিচ্ছন্নতা নির্ভর করে৷’’

হাইড্রোজেন থেকে জ্বালানি

04:36

This browser does not support the video element.

ইলেকট্রোলিসিস প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রে পানিকে অক্সিজেন ও হাইড্রোজেনে ভাগ করা হয়৷ বিদ্যুতের সাহায্যে সেটা সম্ভব হয়৷ সেই বিদ্যুতও কিন্তু সব ক্ষেত্রে নির্গমনমুক্ত প্রক্রিয়ায় উৎপাদিত হয় না৷ বিদ্যুতের উৎস বায়ু বা সূর্যের মতো বিকল্প জ্বালানি হলে তবেই হাইড্রোজেনকে টেকসই বলা চলে৷ 

অর্থাৎ উৎপাদন প্রক্রিয়ার সময় একেবারেই কোনো কার্বন-ডাই-অক্সাইড নির্গমন চলবে না৷ পুনর্ব্যবহারযোগ্য জ্বালানি ব্যবহার করে উৎপাদন করলে তবেই সেই হাইড্রোজেনকে পরিবেশবান্ধব ও টেকসই বলা চলে৷

কিন্তু কোনো দেশ নিজস্ব শক্তিতে সবুজ হাইড্রোজেনের চাহিদা মেটাতে না পারলে কী হবে? জার্মানিতে বায়ু ও সৌরশক্তি কাজে লাগিয়ে যথেষ্ট জ্বালানি উৎপাদন করা হচ্ছে৷ লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী ২০৫০ সাল পর্যন্ত দেশটিকে প্রায় সাড়ে চার কোটি টন হাইড্রোজেন আমদানি করতে হবে৷ অথচ জাহাজ বা পাইপলাইনের মাধ্যমে দূর থেকে সরবরাহের সময় পরিবেশের বাড়তি ক্ষতি হলে চলবে না৷ আলেক্সান্ডার এসার মনে করেন, ‘‘আমাদের এক আন্তর্জাতিক সার্টিফিকেশন প্রণালীর প্রয়োজন রয়েছে, যাতে সবুজ জ্বালানি ব্যবহার করে হাইড্রোজেন উৎপাদনের স্পষ্ট প্রমাণ দেখানো যায়৷ এখনো এমন কোনো ব্যবস্থা নেই৷ এ ক্ষেত্রে ঐকমত্যের অভাব রয়েছে৷’’

দ্রুত সবুজ হাইড্রোজেনের পথে অগ্রসর হবার ক্ষেত্রে বিপুল ব্যয়ভারও একটা বড় সমস্যা বটে৷ ‘নাউ’ উদ্যোগের প্রধান কুয়র্ট-ক্রিস্টফ ফন ক্নোবেল্সডর্ফ বলেন, ‘‘প্রচলিত জীবাশ্মভিত্তিক জ্বালানি নিয়ন্ত্রণের কাঠামোর সঙ্গে পুনর্ব্যবহারযোগ্য সবুজ অথবা নীল হাইড্রোজেনের তুলনা করলে দেখা যাচ্ছে, এ ক্ষেত্রে ব্যয়ের মাত্রা অত্যন্ত বেশি৷’’

অন্যদিকে পুনর্ব্যবহারযোগ্য জ্বালানি উৎপাদন বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সবুজ হাইড্রোজেনের মূল্যও কমে যাবে৷ পূর্বাভাস অনুযায়ী ২০৩০ সাল পর্যন্ত সেই মূল্য অর্ধেকের বেশি কমে যাবার কথা৷

এখনো পর্যন্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলিতে বড় আকারে সবুজ হাইড্রোজেন উৎপাদিত হচ্ছে না৷ কার্বন-ডাই-অক্সাইড জমা রেখে নীল হাইড্রোজেন উৎপাদন প্রক্রিয়া বহু বছর ধরে গুরুত্বপূর্ণ থাকবে বলে বিশেষজ্ঞদের ধারণা৷

আনা সাভচুক/এসবি

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ