1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান
পরিবেশনরওয়ে

পরিবেশবান্ধব পদ্ধতিতে ইস্পাত উৎপাদনের উদ্যোগ

১১ সেপ্টেম্বর ২০২৩

জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা করতে যানবাহন বা বাড়িঘর পরিবেশবান্ধব করার অনেক উদ্যোগ চলছে৷ কিন্তু ইস্পাত উৎপাদনের মতো মহাযজ্ঞে বিশাল পরিমাণ কার্বন নির্গমন এড়ানো সহজ নয়৷ নরওয়ের এক কোম্পানি সেই অসাধ্যসাধন করার পথে এগোচ্ছে৷

সুইডেনের উত্তরাঞ্চলে সুমেরু বৃত্তের দক্ষিণে বাল্টিক সাগর উপকূলে এসএসএবি কোম্পানির ইস্পাত কারখানা অবস্থিত৷ কারখানার ব্লাস্ট ফারনেস এককালে কোম্পানির গর্বের বিষয় ছিল৷
এসএসএবির ইস্পাত কারখানা (ফাইল ফটো)ছবি: Åsa Bäcklin/SSAB

সুইডেনের উত্তরাঞ্চলে সুমেরু বৃত্তের দক্ষিণে বাল্টিক সাগর উপকূলে এসএসএবি কোম্পানির ইস্পাত কারখানা অবস্থিত৷ কারখানার ব্লাস্ট ফারনেস এককালে কোম্পানির গর্বের বিষয় ছিল৷ সেখানে প্রথাগত পদ্ধতিতে ইস্পাত উৎপাদন করা হয়৷ সেখানে দিনে ৬,০০০ টন ইস্পাত উৎপাদন করা হয়৷ কয়লা ব্যবহার কর- ব্লাস্ট ফারনেস চালানো হয়৷

ইস্পাত উৎপাদনের প্রচলিত পদ্ধতিতে বিশাল পরিমাণ কার্বন-ডাই-অক্সাইড নির্গমন করা হয়৷ বিশেষ করে ব্লাস্ট ফারনেসে সবচেয়ে বেশি নির্গমন ঘটে৷ কারণ কয়লা জ্বালিয়ে ১,৩০০ ডিগ্রি সেলসিয়াসেরও বেশি তাপমাত্রায় লৌহ আকরিক গরম করা হয়৷ 

ইস্পাত উৎপাদনে পরিবেশবান্ধব হতে চায় নরওয়ে

04:14

This browser does not support the video element.

কোম্পানি এবার সে ক্ষেত্রে পরিবর্তন আনতে চাইছে৷ গোটা বিশ্বে জলবায়ুর জন্য ক্ষতিকর নির্গমনের প্রায় ছয় শতাংশের উৎস ইস্পাত উৎপাদন৷ এসএসএবি কোম্পানির মুখপাত্র লটা ইয়াকবসন বলেন, ‘‘লৌহ আকরিক ও কয়লা ব্যবহার করে ইস্পাত উৎপাদনের সময় আমরা অবশ্যই কার্বন-ডাই-অক্সাইড নির্গমন ঘটাই৷ সে কারণেই আমরা ব্লাস্ট ফারনেস সরিয়ে ‘হাইব্রিট' প্রক্রিয়া চালু করতে চাই৷''

ব্লাস্ট ফারনেসের কাছে একটি পরীক্ষামূলক কারখানা তৈরি করা হয়েছে৷ গোটা বিশ্বে এই প্রথম পরিবেশবান্ধব প্রক্রিয়ায় তৈরি হাইড্রোজেন কাজে লাগিয়ে ইস্পাত উৎপাদনের প্রচেষ্টা সফল হয়েছে৷ একটি জায়গায় ইস্পাত উৎপাদনের আগের পর্যায়ের পণ্য হিসেবে ছোট পেলেট মজুত করা হয়৷ লৌহ আকরিক থেকেই সেগুলি পাওয়া যায়৷ এক রোটারি ফারনেসে লৌহ আকরিকের পাথর পেলেটে রূপান্তরিত করা হয়৷

অন্য একটি প্রক্রিয়ায় পেলেটে লোহার মাত্রা আরো একবার বাড়ানো হয়৷ সেই লক্ষ্যে হাইড্রোজেনের সাহায্যে পেলেট গরম করে গলিয়ে দেওয়া হয়৷ ভাটেনফাল কোম্পানির মিকায়েল নর্ডলান্ডার বলেন, ‘‘আমরা এখানে এমন এক প্রযুক্তি পরীক্ষা করছি, যা ব্লাস্ট ফারনেসের বিকল্প হয়ে উঠতে পারে৷ ব্লাস্ট ফারনেসে কয়লা ব্যবহার করা হয়৷ আর আমরা এখানে হাইড্রোজেনের সাহায্যে লৌহ আকরিক থেকে বিশুদ্ধ লোহা বার করি৷'' 

কোম্পানির গোপনীয়তার কারণে সেই প্রক্রিয়ার ছবি তোলা নিষিদ্ধ৷ কিন্তু এভাবে সেই প্রক্রিয়ার বর্ণনা দেওয়া যায়৷ সবার আগে পরিবেশবান্ধব ‘গ্রিন হাইড্রোজেন' উৎপাদন করা হয়৷ সেই লক্ষ্যে বায়ু বা সৌরশক্তির মতো পুনর্ব্যবহারযোগ্য জ্বালানি কাজে লাগানো হয়৷ ইলেকট্রোলিসিস প্রক্রিয়ায় পানি বিভক্ত করা হয়৷ তখন অক্সিজেনের পাশাপাশি পরিবেশবান্ধব উপায়ে হাইড্রোজেনও সৃষ্টি হয়৷

সেই হাইড্রোজেন হাইব্রিট ফারনেসে চালনা করা হয় এবং লৌহ আকরিকের পেলেটে লোহার মাত্রা আরো বাড়ানোর কাজে লাগানো হয়৷ তারপর দ্বিতীয় পর্যায়ে ইলেকট্রিক আর্ক ফারনেসে তরল ইস্পাত সৃষ্টি হয়৷ এই উদ্যোগ সফল হলে শিল্পজগতে যুগান্তকারী পরিবর্তন আসবে এবং নতুন যুগের সূচনা ঘটাবে৷

ইস্পাত কারখানায় পুরোপুরি এই নতুন প্রযুক্তি কাজে লাগানোর পরিকল্পনা রয়েছে৷ ভবিষ্যতে পরিবেশবান্ধব উপায়ে তৈরি বিদ্যুতের মাধ্যমে সব কাজ করা হবে৷ সব ফারনেস ও নতুন রোলিং মিল বিদ্যুতে চলবে৷

কয়েক বছরের মধ্যেই কাজ শেষ হবার কথা৷ নতুন এই প্রযুক্তি অনেক পরিমাণ সিওটু নির্গমন কমাবে৷ তাছাড়া সবকিছু আরো দ্রুত ঘটবে৷ লটা ইয়াকবসন বলেন, ‘‘লৌহ আকরিক গলানো, ইলেকট্রিক আর্ক ওভেনে স্পঞ্জ আয়রন হয়ে আমাদের ক্রেতাদের পাঠানোর উপযুক্ত চূড়ান্ত কয়েল তৈরি করতে মাত্র তিন ঘণ্টার মতো সময় লাগবে৷''

বর্তমানে গোটা উৎপাদন প্রক্রিয়ার জন্য কয়েক দিন সময় লাগে৷ নতুন প্রযুক্তির দৌলতে গ্রিন স্টিল ব্যয়ও কমাবে৷ চাহিদাও বেড়ে যাবে৷

ক্রিস্টিয়ান প্রিসেলিউস/এসবি

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ