1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

পরিবেশের ক্ষতি না করে ক্রিপ্টো মুদ্রা লেনদেন

২৭ জুন ২০২২

বিটকয়েন, ক্রিপ্টোকারেন্সি, ব্লকচেন আর্থিক বাজারে বিশাল পরিবর্তন এনেছে৷ কিন্তু ডিজিটাল পদ্ধতিতে বিনিয়োগের এই মঞ্চ বাস্তবে কিন্তু পরিবেশের ক্ষতি করছে৷ সেই ‘পাপের' প্রায়শ্চিত্ত করতেও ডিজিটাল সমাধানসূত্র উঠে আসছে৷

DW Made in Germany Vorschaubilder - Green Crypto
ছবি: DW

ক্রিপ্টো কারেন্সি আমাদের পরিচিত আর্থিক জগতে বেশ বিঘ্ন ঘটাচ্ছে৷ অনেক নবাগত বিনিয়োগকারী সেই হুজুগের সুযোগ নিয়ে যথেষ্ট টাকা কামাচ্ছেন৷ কিন্তু এই জগত শুধু শ্যাম্পেন ও দামি ইয়টের মতো চাকচিক্যের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়৷ নতুন ক্রিপ্টো কারেন্সি, বিশেষ করে বিটকয়েন মাইনিং করা পরিবেশের জন্য দুঃস্বপ্ন বটে৷ সেই প্রক্রিয়ায় প্রচুর বিদ্যুৎ খরচ হয় ও হাজার হাজার টন ইলেকট্রনিক আবর্জনা সৃষ্টি হয়৷

কিন্তু ক্রিপ্টো জগতের নতুন কয়েকজন সদস্য সেই পরিস্থিতি বদলাতে চাইছেন৷ শুধু ২০২১ সালেই বিটকয়েন মাইনিং প্রক্রিয়ায় যত বিদ্যুৎ খরচ হয়েছে, তা থাইল্যান্ডের বাৎসরিক বিদ্যুৎ ব্যবহারের সমান৷ সেই বিদ্যুতের সিংহভাগই সস্তার জীবাশ্মভিত্তিক জ্বালানি থেকে আসে৷ সেই শক্তি মোটেই নির্মল বা পরিবেশবান্ধব নয়৷

এই মুহূর্তে নিউ ইয়র্ক থেকে আমস্টারডামগামী প্রায় ছয় ঘণ্টার এক উড়ালের কারণে বায়ুমণ্ডলে যে পরিমাণ কার্বন-ডাই-অক্সাইড নির্গত হয়, একটি বিটকয়েন লেনদেনে সেই নির্গমনের মাত্রা তার থেকেও বেশি৷ যা ভিসা ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে একটি লেনদেনের কারণে কার্বন নির্গমনের প্রায় ২০ লাখ গুণ বেশি৷

সেই সঙ্গে ই-ওয়েস্ট বা ইলেকট্রনিক বর্জ্যও সৃষ্টি হয়৷ কারণ, মাইনিং কম্পিউটারগুলি হয় বিকল হয়ে পড়ে অথবা প্রতি ১২ থেকে ১৮ মাস অন্তর সেগুলি আপগ্রেড করতে হয়৷ পুনর্ব্যবহারযোগ্য জ্বালানি যত সস্তা হচ্ছে, সেই সঙ্গে তাল মিলিয়ে মিশ্র জ্বালানির মডেল বিটকয়েন মাইনারদের মধ্যেও তত জনপ্রিয় হচ্ছে৷ ২০২০ সালে বিটকয়েনের বিশ্বব্যাপী জ্বালানি ব্যবহারের ৩৯ শতাংশ পুনর্ব্যবহারযোগ্য উৎস থেকে এসেছে৷

বিটকয়েন ব্যবহার সত্ত্বেও কার্বন নির্গমন নিয়ে মনে দুশ্চিন্তা থাকলে সেই প্রক্রিয়ার অন্তর্নিহিত ব্লকচেন প্রযুক্তি এমন বিবেক দংশন দূর করার ক্ষেত্রে সহায়ক হতে পারে৷ ব্লকচেন প্রক্রিয়ায় যাচাই করা কার্বন ক্রেডিট টোকেন কিনলে নিজের কার্বন ফুটপ্রিন্ট কমানো সম্ভব৷ বিনিয়োগের সেই অর্থ সরাসরি পরিবেশ সংরক্ষণের উদ্যোগে ব্যয় করা হয়৷ যেমন ক্রিপ্টো জগতের বিখ্যাত বিনিয়োগকারী ‘উইংকেলভস টুইনস' ক্রিপ্টো এক্সচেঞ্জে নিজেদের বিটকয়েন ভাণ্ডারের পাপের ‘প্রায়শ্চিত্ত' করতে ৪০ লাখ ডলার ঢেলেছেন৷

কিন্তু ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বা ক্রিপ্টো ওয়ালেটে কয়েক লাখ ডলার পড়ে না থাকলেও কি এমন কাজ করা সম্ভব?

পরিবেশবান্ধব ক্রিপ্টো মুদ্রা

04:10

This browser does not support the video element.

মস ডট আর্থ নামের ব্রাজিলের এক পরিবেশ প্রযুক্তি কোম্পানি জলবায়ু সচেতন ক্রিপ্টো অনুরাগীদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে৷ কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা লুইস ফেলিপে আডাইমে বলেন, তিনি আমরা ক্রিপ্টো বিনিয়োগকে সবুজ বিনিয়োগে রূপান্তরিত করছি৷

লুইস আডাইমে মস ডট আর্থের প্রতিষ্ঠাতা৷ একবার বোতাম টিপে যে কেউ এই কোম্পানির ‘ভেরিফাইড কার্বন ক্রেডিট' কিনতে পারে৷ সেগুলির নাম ‘এম সিওটু টোকেন'৷

ব্লকচেন টোকেন ব্যবহার করলে সবার সবুজ বিনিয়োগ সংক্রান্ত লেনদেনের স্পষ্ট রেকর্ড সৃষ্টি হয়৷ সেই অর্থ সরাসরি অ্যামাজন অরণ্য সংরক্ষণের কাজে লাগানো হয় বলে এই কোম্পানি দাবি করে৷

কোম্পানির মতে, এম সিওটু টোকেন বিক্রির মাধ্যমে অরণ্যে দেড় কোটি ডলার মূল্যের প্রকল্প চালানো সম্ভব হয়েছে এবং প্রায় ৫০ কোটি গাছ বাঁচানো গেছে৷

ফলে ভবিষ্যতে সম্ভবত আমাদের সব দূষণ সংক্রান্ত লেনদেনের সঙ্গে এমন প্রায়শ্চিত্ত বাধ্যতামূলকও করা হতে হবে৷

এমন কয়েকজন পথিকৃৎ ক্রিপ্টো জগতের পাপের প্রায়শ্চিত্তের ব্যবস্থা করছেন৷ কিন্তু এখনো তাদের সংখ্যা কম৷ মোটকথা বিটকয়েন ও ডিজিটাল মুদ্রা মোটেই ক্ষণস্থায়ী হবে না৷ ফলে সেগুলিকে টেকসই করতে চাইলে বিনিয়োগকারী, কোম্পানি ও সরকারকে এই খেলার নিয়ম বদলানোর কাজ শুরু করতে হবে৷

আমেলিয়া হেমফিল/এসবি

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ