1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

পরিবেশ বাঁচাতে ঘাসের কাগজ!

২৯ মে ২০১৮

‘পেপারলেস’ বা কাগজহীন জীবনযাত্রার স্বপ্ন স্বপ্নই রয়ে গেছে৷ চারিদিকে কাগজের ব্যবহার যেন কমার বদলে বেড়েই চলেছে৷ পরিবেশের এই ক্ষতি এড়াতে জার্মানির এক উদ্ভাবক অভিনব পদ্ধতিতে ঘাস দিয়ে কাগজ সৃষ্টি করছেন৷

প্রতীকী ছবিছবি: Fotolia/Aleksandar Kosev

ইন্টারনেটে কেনাকাটা করা সহজ হলেও পরিবেশবান্ধব নয়৷ কারণ তার ফলে মোড়কের স্তূপ তৈরি হয়৷ রিসাইক্লিং করা কাগজ ব্যবহার করলেও তার মধ্যে কাঠ থাকে৷ উভে দাগনোন এর বিকল্প খুঁজে পেয়েছেন৷ তাঁর তৈরি মোড়কের উপাদান কাঠ নয় – তিনি খড় ব্যবহার করছেন! এর সুবিধা হলো, জঙ্গলে কাঠের তুলনায় মাঠে অনেক দ্রুত ঘাস জন্মায়৷ তা থেকে ফাইবার বা তন্তু বার করতে হলে অনেক কম পরিমাণ পানি, জ্বালানি ও রাসায়নিকের প্রয়োজন হয়৷ উভে বলেন, ‘‘কিছুকাল আগে আমি কাগজ নিয়ে অনেক ঘাঁটাঘাঁটি করে ভাবলাম, কীভাবে কম কার্বন-ডাই-অক্সাইড ব্যবহার করে আরও টেকসইপদ্ধতিতে কাগজ তৈরি করা যায়? লক্ষ্য করলাম, উপর দিকে বাড়ার কারণে গাছের মধ্যে অনেক আঠার প্রয়োজন হয়৷ লিগনিন নামের সেই আঠা রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় আলাদা করতে হয়৷ অন্যদিকে যে সব গাছপালা সমতলেই বেড়ে উঠে, তাদের অনেক কম লিগনিন লাগে৷ তাদের তন্তু অনেক দ্রুত আলাদা করা যায়৷’’

হাতির মল থেকে কাগজ তৈরি

01:30

This browser does not support the video element.

তার ফলে কাগজের ক্ষেত্রে টনপ্রতি প্রায় ৬,০০০ লিটার পানির সাশ্রয় হয়৷ শুকনো ঘাস ভালোভাবে পেষা হয়৷ প্রয়োজন অনুযায়ী তার মান স্থির করা হয়৷ তারপর সাধারণ কাগজ তৈরির প্রক্রিয়া প্রয়োগ করা হয়৷

উভে দাগনোন নানা ধরনের মোড়ক তৈরি করেছেন৷ ডাকে পাঠানোর জন্য সহজ ও হালকা মোড়ক থেকে শুরু করে শক্ত ও মজবুত পিচবোর্ডের বাক্সও তার মধ্যে রয়েছে৷ তিনি বলেন, ‘‘আমরা সাধারণত উপকরণের মধ্যে ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ ঘাসের তন্তু ব্যবহার করি৷ বাকিটা হয় পুরানো কাগজ অথবা কাঠের তাজা তন্তু৷ এই মুহূর্তে বড় আকারে আমরা উৎপাদন করতে পারছি৷ আমাদের ধারণা, ৭০ শতাংশ পর্যন্ত ঘাসের তন্তু ব্যবহার করা সম্ভব৷ কিন্তু সেটি প্রস্তুত করতে আরও সময় লাগবে৷’’

এরই মধ্যে বাজার করার ব্যাগ, ফল ও ডিম রাখার বাক্স তৈরি হয়ে গেছে৷ উভে বেশ কয়েকটি বড় সুপারমার্কেট কোম্পানিকে তাঁর আইডিয়া বেচতে পেরেছেন৷ ঠিক কোন ধরনের ঘাস এমন তন্তুর জন্য উপযুক্ত?

কফি খাও, কাপও খাও

01:20

This browser does not support the video element.

কোলন শহরের কাছে একটি খামার সেই ঘাস সরবরাহ করছে৷ অরগ্যানিক খাদ্যের চাষী গেয়র্গ হ্যোলার-এর গরুগুলি যে খড় খায় না, সেগুলি পেপার মিলে পাঠানো হয়৷ গেয়র্গ বলেন, ‘‘চাষের মরসুমের শেষে যে খড় তৈরি হয়, অনেক সময়ে প্রাণীদের সেটি চিবোতে বেগ পেতে হয়৷ সেই খড় কাগজ তৈরির কাজে লাগাতে পেরে আমরা খুশি৷ ঘাসের কাগজ উৎপাদনের লক্ষ্যে এই সহযোগিতা আমাদের কাছে দারুণ ব্যাপার৷’’

প্রাণীরা না খেলেও সেই খড় যত্ন করে বাছাই করে গুদামে রেখে শুকাতে হয়৷ উভে দাগনোন নিজে খড়ের মান পরখ করছেন৷ ১২ থেকে ১৩ শতাংশ আর্দ্রতা থেকে গেলে সবচেয়ে ভালো ফল পাওয়া যায়৷ এই ফসল পরীক্ষা পাস করেছে৷ তন্তুর মানও এ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়৷ ঘাস যতদিন মাঠে থাকে, তত বেশি তন্তু সৃষ্টি হয় এবং সেটি তত সহজে প্রক্রিয়াজাত করা যায়৷ তাছাড়া কাঠ সাধারণত দূর থেকে আনাতে হয়৷ অথচ ঘাস কম খরচে কাছাকাছি পাওয়া যায়৷ উভে বলেন, ‘‘বড়জোর ৫০ কিলোমিটারের মধ্যে কাঁচামাল সংগ্রহ করাই আমাদের লক্ষ্য৷ সেই কাঁচামাল কাছাকাছি প্রক্রিয়াজাত করতে হবে৷ আঞ্চলিক স্তরে উৎপাদনের এই নীতির আওতায় আমরা বিকেন্দ্রীকরণ করছি৷ মাঠ থেকে কাগজ তৈরির চূড়ান্ত প্রক্রিয়ার মধ্যে যত কম সম্ভব দূরত্ব রাখতে চাই৷’’

উভে-র সর্বশেষ উদ্ভাবন হলো ঘাসের কাগজ দিয়ে তৈরি কফির কাপ৷ সাধারণ কাগজের কাপের তুলনায় কফি পান করার পর এই পেয়ালা পুরোপুরি রিসাইকেল করা যায়৷ তার কাগজ যে মাঠে গজায়!

বরিস গাইগার/এসবি

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ