পরিবেশ রক্ষার বিযয়টি সংবিধানে রাখা নিয়ে ফ্রান্সে গণভোট হবে। সিদ্ধান্ত প্রেসিডেন্ট মাক্রোঁর।
বিজ্ঞাপন
তাঁর বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরেই অভিযোগ, পরিবেশ রক্ষার বিষয়টিকে তিনি সমানে অবহেলা করেছেন। তার খেসারত দিতে হচ্ছে ফ্রান্সকে। এ বার সেই প্রেসিডেন্ট মাক্রোঁই পরিবেশ রক্ষাকে সংবিধানে ঢোকাতে চান। সে জন্য তিনি গণভোটের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
মাক্রোঁ স্বীকার করে নিয়েছেন, পরিবেশ রক্ষার জন্য ফ্রান্স প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেয়নি। সিটিজেনস ক্লাইমেট কাউন্সিলে তিনি বলেছেন, ''আমাদের কি আরো কিছু করতে হবে? উত্তর হলো, হ্যাঁ। আমি চাই জীববৈচিত্র, পরিবেশ রক্ষা ও জলবায়ু পরিবর্তন রোধ করার বিষয়টি সংবিধানের এক নম্বর অনুচ্ছেদে রাখা হোক। সে জন্য প্রাথমিক ভোট ও গণভোট জরুরি।'' মাক্রোঁর ঘোষণা, ''আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। দ্রুত এ নিয়ে কাজ করতে হবে।''
ফরাসি প্রেসিডেন্টের উপর পরিবেশ রক্ষার জন্য অবিলম্বে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য প্রবল চাপ তৈরি করেছে তাঁর দলের ভিতরেই বাম মনোভাবাপন্ন গোষ্ঠীগুলি। তাঁদের মত হলো, মাক্রোঁ পরিবেশ রক্ষার জন্য ও জলবায়ু পরিবর্তন রুখতে যথেষ্ট ব্যবস্থা নিচ্ছেন না। অবিলম্বে সেটা তাঁর নেয়া দরকার।
পরিবেশ রক্ষায় নারী
পরিবেশ রক্ষায় কাজ করছেন বিশ্বের অনেক নারী৷ আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষ্যে কয়েকজন নেতৃস্থানীয় নারী পরিবেশবাদী সম্পর্কে জানুন এখানে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান
বাংলাদেশের পরিবেশ আইনজীবী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান পরিবেশ রক্ষায় অবদানের জন্য প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে ‘‘গোল্ডম্যান এনভায়রনমেন্টাল প্রাইজ’’ পান৷ এছাড়া ২০০৯ সালে টাইম সাময়িকী তাঁকে ‘‘হিরোজ অফ এনভায়রনমেন্ট’’ খেতাব দেয়৷ এরপর ২০১২ সালে ‘রামন ম্যাগসেসে’ পুরস্কারও পান তিনি৷
ছবি: picture-alliance/dpa
বন্দনা শিবা
দিল্লির এই পরিবেশকর্মী জিএম খাবারের বিরোধী৷ এমনকি বিশ্বের যেসব কোম্পানি জিএম খাবারের প্রচারণা চালায় তাদেরও বিপক্ষে বন্দনা শিবা - যিনি একজন পদার্থবিদ ও ‘নবদন্য’ নামে একটি এনজিও’র প্রধান৷ জীববৈচিত্র্য রক্ষা, অর্গানিক খাবার এবং কৃষক অধিকার নিয়ে কাজ করে বেসরকারি এই সংস্থাটি৷
ছবি: picture-alliance/dpa
হাবিবা সরাবি
আফগানিস্তানের বামিয়ান প্রদেশের গভর্নর হাবিবা সরাবি যুদ্ধ বিধ্বস্ত এই দেশটির প্রথম ন্যাশনাল পার্ক গড়ে তুলেছেন৷ ব্যান্ড-ই-আমির নামের এই পার্কে ছয়টি গভীর নীল হ্রদ রয়েছে৷ যুদ্ধ পরিস্থিতিতে হ্রদগুলো রক্ষায় কাজ করেছেন তিনি৷
ছবি: STEPHEN JAFFE/AFP/Getty Images
ইভা মেন্ডেস
পশু রক্ষায় নগ্ন! পশুর লোম দিয়ে পোশাক তৈরি করে অনেক কোম্পানি৷ সেটা বন্ধ করতে পেটা নামের একটি সংস্থা প্রচারণা শুরু করে৷ কিন্তু সেটা জোরালো হয় যখন বিখ্যাত অভিনেত্রীরা নগ্ন হয়ে পোজ দেন৷ এর মাধ্যমে অভিনেত্রীরা বোঝাতে চেয়েছেন যে, পশুর লোমের পোশাকের চেয়ে বরং নগ্ন থাকাই ভাল৷ মার্কিন অভিনেত্রী ইভা মেন্ডেস তাঁদেরই একজন৷
ছবি: picture-alliance/dpa
কারেন ক্রিস্টিয়ানা ফিগেরেস ওলসেন
জাতিসংঘের প্রধান জলবায়ু বিষয়ক কর্মকর্তা থাকাকালীন গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন কমাতে একটা বৈশ্বিক চুক্তির জন্য কাজ করেন তিনি৷ এছাড়া কোস্টারিকার এই নারী তাঁর মহাদেশ দক্ষিণ অ্যামেরিকার বিভিন্ন দেশের জাতীয় জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলা বিষয়ক কর্মসূচি তৈরিতে ভূমিকা রেখেছেন৷
ছবি: picture-alliance/dpa
ব্রিটানি ট্রিলফোর্ড
নিউজিল্যান্ডের এই তরুণী গত বছর রিও+২০ সম্মেলনে পরিবেশ রক্ষা বিষয়ে উৎসাহমূলক বক্তব্য দেন৷ সেসময় তার বয়স ছিল মাত্র ১৭৷ বিশ্ব নেতৃবৃন্দের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘‘আজ এই মুহূর্তে আমি একজন শিশু – আপনাদের শিশু৷ আমরা সবাই জানি যে সময় চলে যাচ্ছে, দ্রুত চলে যাচ্ছে৷’’
ছবি: REUTERS
ওয়াঙ্গারি মাথাই
কেনিয়ার নোবেলজয়ী এই নারী ৩০ বছর ধরে পরিবেশ রক্ষায় কাজ করেছেন৷ এ সময় আফ্রিকা মহাদেশের অসংখ্য নারীকে দিয়ে তিনি প্রায় ৩০ মিলিয়ন গাছ লাগিয়েছেন৷ ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে তিনি ২০১১ সালে মারা যান৷
ছবি: picture-alliance/dpa
বারবারা উনম্যুসিশ
জার্মানির বারবারা উনম্যুসিশ একাধারে লেখক, রাজনীতিক ও পরিবেশকর্মী৷ পরিবেশ রক্ষায় তিনি ‘ওয়ার্ল্ড ইকোনমি, ইকোলজি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট’ নামে একটি বেসরকারি সংস্থা গড়ে তুলেছেন৷ এই সংস্থা ‘সবুজ ইউরোপ’ গড়ে তোলার পক্ষে কাজ করছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
8 ছবি1 | 8
২০২২ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। তার আগে এখন গ্রিন পার্টিও অত্যন্ত সক্রিয়। তারা মাক্রোঁর সমর্থকদের পাশে পেতে চাইছে। এভাবেই তারা নিজেদের জনপ্রিয়তা বাড়াতে চায়। সেটাও মাক্রেঁর চিন্তার কারণ। সে জন্য তিনি পরিবেশ রক্ষা নিয়ে উদ্যোগী হতে চান।
গত সপ্তাহেই ইইউ নেতারা ঠিক করেছেন, ২০৩০ সালের মধ্যে গ্রিনহাউস গ্যাসের পরিমাণ অন্তত ৪০ শতাংশ কমানো হবে। ফলে সবদিক থেকেই মাক্রোঁর উপর চাপ তৈরি হয়েছে। তারই ফল হলো, পরিবেশ রক্ষার বিষয়টিকে সংবিধানে রাখতে গণভোটের ঘোষণা।