1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

পরিবেশ সংরক্ষেণ করছেন ইমাম

বাস্টিয়ান হার্টিশ/এসবি৩১ আগস্ট ২০১৬

পেটের দায়ে গাছ কেটে জঙ্গল সাফ করলে পরিবেশের যে ক্ষতি হয়, তা পূরণ করা মোটেই সহজ নয়৷ থাইল্যান্ডে এক প্রকল্পের মাধ্যমে এমন পাপের প্রায়শ্চিত্ত করার চেষ্টা চলছে৷ সেই কাজে সাহায্য করছেন এক ইমাম৷

globalideas Teaser – Mangroves2_ohneLogo
ছবি: Tim Plowden/Mangrove Action Project (MAP)

থাইল্যান্ডের দক্ষিণ পশ্চিমে ক্রাবি উপকূলে ম্যানগ্রোভ বন আবার ফুলেফেঁপে উঠছে৷ মাছ, কাঁকড়া ও অন্যান্য সামুদ্রিক জীব শক্ত শিকড়ের আশেপাশেই বসবাস করে৷ সেখানকার মাকাক বানরগুলিও জঙ্গলে বেশ বহাল তবিয়েতে আছে বলে মনে হয়৷

কয়েক কিলোমিটার দূরেই কো ক্লাং নামের ছোট্ট দ্বীপ৷ সেখানে কিন্তু সবুজের সমারোহের কোনো চিহ্ন নেই৷ ধ্বংসলীলার ফলে প্রাণের চিহ্ন প্রায় লোপ পেয়ে গেছে৷ পুকুর খুঁড়তে ম্যানগ্রোভ জঙ্গল সাফ করা হয়েছে৷ কয়েক দশক আগেই দ্বীপের অনেক অংশে চিংড়ি চাষের জন্য এমন পুকুর খোঁড়া হয়েছিল৷ সে সময়ে এই ব্যবসা বেশ লাভজনক ছিল৷

আজ থাইল্যান্ডের চিংড়ি চাষের ব্যবসা মূল ভূখণ্ডে বড় বড় ফার্মের হাতে চলে গেছে৷ দ্বীপের অনেক পুকুর তাই পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে৷ ঠিক সে কারণেই পরিবেশকর্মী জারুওয়ান এনরাইট বিপুল সম্ভাবনা দেখতে পাচ্ছেন৷ দ্বীপবাসীদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে তিনি একের পর এক পুকুরকে আবার ম্যানগ্রোভ অরণ্যে রূপান্তরিত করছেন৷ এর জন্য মাটি অতি শুকনা বা অতি ভিজে থাকলে চলবে না৷ এ কাজে প্রায়ই বাইরের সাহায্য লাগে৷ জারুওয়ান বলেন, ‘‘কিছু এলাকায় জল জমে আছে৷ তাই আমরা জল বার করার চেষ্টা করি৷ এমনকি ভাটার সময়েও জল জমা হতে দেই না৷ কারণ খুব ভিজে অবস্থায় ম্যানগ্রোভ বাড়তে পারে না৷''

একেই বলে বোধহয় ‘পাপের প্রায়শ্চিত্ত’ করা

05:47

This browser does not support the video element.

‘ম্যানগ্রোভ অ্যাকশন প্রজেক্ট' নামের এক এনজিও-র হয়ে জারুওয়ান এনরাইট, ৪ বছর ধরে অক্লান্ত পরিশ্রম করে চলেছেন৷ পুকুর বুজিয়ে ম্যানগ্রোভ এলাকা গড়ে তোলাই তাঁর লক্ষ্য৷ অনেক জমি মালিকের কাছেই এমন প্রচেষ্টা অদ্ভুত৷ তাই তারা বিলম্ব করছেন৷ জারুয়ান বলেন, ‘‘এক্ষেত্রে তিনি মৎসপালন করছেন৷ তাই অপেক্ষা করে দেখবেন, এতে তাঁর ভালো হয় কিনা৷ তারপর হয়ত সিদ্ধান্ত বিবেচনা করবেন৷''

এই উদ্যোগের সার্থকতা বোঝাতে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হবে৷ চাই অনেক ধৈর্য্য৷ কাজ মাঝে মাঝে বেশ কঠিন হয়ে উঠতে পারে৷ সে কারণেই হাতেনাতে সাফল্য পাওয়া জরুরি৷ দ্বীপের সংখ্যাগুরু মুসলিম সম্প্রদায়ের ইমাম সানে ক্লংরুয়া বহু বছর ধরে কাঁকড়া ধরে আসছেন৷

বছর দুয়েক আগেই তিনি তাঁর পুকুরটি জারুওয়ান এনরাইট-এর প্রকল্পের কাজে উৎসর্গ করেছেন৷ তাঁর পছন্দের কাঁকড়া ম্যানগ্রোভ এলাকায়ই বেশি দেখা যায়৷ সুস্বাদু খাবার হিসেবে সেগুলি ভালোই বিক্রিও হয়৷ সানে ক্লংরুয়া বলেন, ‘‘আমি বেশি কাঁকড়া ধরি না, কারণ তাদের বাঁচিয়ে রাখতে চাই৷ মাঝে মাঝে চা-কফি কেনার জন্য টাকার দরকার হলে ধরি৷ তবে দরকার ছাড়া এ কাজ করি না৷''

পুনর্বনানিকরণের উদ্যোগ শুরু হবার পর আবার নতুন করে কিছু গাছ গজাচ্ছে৷ ঘন ম্যানগ্রোভ জঙ্গল সৃষ্টি হতে অনেক বছর লেগে যাবে৷ কিন্তু সূচনা তো হয়েছে! জারুওয়ান এনরাইট প্রায়ই পরিদর্শন করতে আসেন৷ কিন্তু এবার যা দেখলেন, তা তাঁর মোটেই ভালো লাগলো না৷ তাঁর মনে হয় ছাগল চারাগাছের গোড়া খেয়ে ফেলছে৷

কিছুক্ষণ পরেই তিনি ছাগলদের হাতেনাতে ধরে ফেললেন৷ বেড়ার একটা জায়গায় গর্ত করে তাদের প্রবেশের ব্যবস্থা করা হয়েছে৷ কো ক্লা-এ পরিবেশ সংরক্ষণ তাই সহজ কাজ নয়৷ ইমাম নিজে কাঁটাতারের বেড়া ও সিমেন্ট পাঠিয়ে দেন৷ চারাগাছ বাঁচাতে বেড়া মেরামত করে ভবিষ্যতে ছাগল ঢোকা বন্ধ করার চেষ্টা চলছে৷

কারণ একমাত্র এভাবেই ম্যানগ্রোভ বেড়ে ওঠার সুযোগ পাবে৷ জারুওয়ান এনরাইট এই পুকুরকে আদর্শ হিসেবে তুলে ধরতে চান৷ বাকি দ্বীপবাসী ইমামের দৃষ্টান্ত অনুসরণ করে একই পথে চলেন – এমনটাই তাঁর ইচ্ছা৷

একদিন কো ক্লাং দ্বীপ উপকূলের মতে সবুজ হয়ে উঠবে – পরিবেশ সংরক্ষণকারীরা এমন স্বপ্ন দেখেন৷ আজই সেখানে ঘন জঙ্গল দেখা যায়৷ অথচ কয়েক দশক আগে পর্যন্ত স্থানীয় মানুষ গাছ কেটে অনেক এলাকা সাফ করে দিয়েছিল৷ এখন সেখানে আবার ম্যানগ্রোভ বন ফিরে এসেছে৷ ফলে অনেকের উপকার হচ্ছে৷ শখের মাছ শিকারি সুরাদেত নিমকাটিআইয়ং বলেন, ‘‘এখানে যখন কোনো বন ছিল না, মাছও উধাও হয়ে গিয়েছিল৷ এখন অনেক মাঝ আর কাঁকড়া পাওয়া যায়৷ তারা ফিরে এসেছে৷ আমরাও বেশি করে ধরছি৷ আগে যেখানে দিনে তিনটি মাছ ধরতাম, আজ সেখানে ১০ কিলো পাই৷ অনেক ভালো হয়েছে৷''

অক্ষত ম্যানগ্রোভ এলাকা রাজ্যের অনেক মানুষের কাছে রুজি-রোজগারের অন্যতম উৎস হয়ে উঠেছে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ