২৬ দিন পর বুধবার কারাগার থেকে বের হয়েছেন চিত্রনায়িকা পরীমনি৷ সকাল সাড়ে ৯টায় তাকে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় মহিলা কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হয় বলে কারা সুপার হালিমা আক্তার জানান৷

গত ৪ আগস্ট ঢাকার বনানীর বাসায় অভিযান চালিয়ে পরীমনিকে গ্রেপ্তার করেছিল র‌্যাব৷ সেই সময় মদ ছাড়াও এলএসডি ও আইসের মতো মাদক উদ্ধার করা হয়েছে বলে দাবি করেছিল র‍্যাব৷ পরদিন বনানী থানায় তার বিরুদ্ধে মাদক আইনে মামলা করা হয়৷

তিন দফায় মোট সাত দিনের রিমান্ডে নিয়ে পরীমনিকে জিজ্ঞাসাবাদ করে সিআইডি৷ তৃতীয় দফা রিমান্ড শেষে ২১ আগস্ট তাকে আদালতে হাজির করা হলে বিচারক পরীমনিকে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় মহিলা কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন৷

পরীমনিকে তিনবার রিমান্ডে পাঠানোর ক্ষেত্রে ‘ক্ষমতার অপব্যবহার’ করা হয়েছে বলে মনে করছে হাইকোর্ট৷ পরীমনির রিমান্ডের বৈধতা প্রশ্নে স্বতঃপ্রণোদিত রুল জারির আবেদনের শুনানিতে বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি কে এম জাহিদ সারওয়ার কাজলের ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ বুধবার এ পর্যবেক্ষণ দেয়৷ মোস্তফা জামান ইসলাম বলেন, তৃতীয় দফায় পরীমনির রিমান্ড মঞ্জুর করে ম্যাজিস্টেট ‘রিমান্ড ক্ষমতার অপ্যবহার’ করেছেন৷

মঙ্গলবার তার জামিনের আদেশ হয়৷ সেই সময় রাষ্ট্রপক্ষের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর তাপস পাল ডয়চে ভেলের কন্টেন্ট পার্টনার বিডিনিউজকে বলেছিলেন, ‘‘আদালত ২০ হাজার টাকা মুচলেকায় জামিন মঞ্জুর করেছেন৷ পুলিশ প্রতিবেদন হওয়া পর্যন্ত অন্তর্বর্তীকালীন জামিন হয়েছে৷’’ কারা সুপার হালিমা আক্তার বলেন, রাত ১০টার দিকে পরীমনির জামিনের কাগজপত্র কারাগারে আসে৷ যাচাই-বাছাই শেষে বুধবার সকাল সাড়ে ৯টায় তাকে মুক্তি দেওয়া হয়৷

পরীমনিকে নিতে সকাল সোয়া ৮টার দিকে তার আইনজীবী নীলাঞ্জনা রিফাত সুরভী ও খালু মো. জসিমউদ্দিনসহ কয়েকজন স্বজন কারাফটকে যান৷ কারাগার থেকে বের হয়ে পরীমনি উপস্থিত সবার উদ্দেশ্যে হাত নাড়েন৷

কারাগার থেকে বের হওয়ার সময় পরীমনির মাথায় সাদা কাপড় বাঁধা ছিল৷ আর ডান হাতে লেখা ছিল ‘ডোন্ট লাভ মি বিচ’৷ ঢাকার প্রথম আলো পত্রিকাকে তিনি বলেছেন, ‘‘যারা বিচ তাদের উদ্দেশ্যে এমন কথা বলেছি। লেখাটা পড়ে যাদের মনে হবে, আল্লাহ, আমাকে নিয়ে এটা লিখল—তাদের উদ্দেশ্যেই এই লেখা৷’’

নিজে গ্রেপ্তার হওয়ার আগে জুন মাসে পরীমনি তার ফেসবুক পাতায় এক ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও হত্যা চেষ্টার অভিযোগ করেছিলেন৷ ফেসবুক পোস্টে তিনি বিচার চেয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাহায্য কামনা করেছিলেন৷ এ ঘটনার জেরে মামলা হওয়ার পর ব্যবসায়ী নাসির ইউ মাহমুদকে আটক করা হয়েছিল৷ তিনি বর্তমানে জামিনে মুক্ত আছেন৷