পর্তুগালে পর্যটক বহনকারী একটি বাস দুর্ঘটনায় ২৯ জনের মৃত্যু হয়েছে, যাদের বেশিরভাগ জার্মান নাগরিক৷ আহতরা স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন৷
বিজ্ঞাপন
পর্তুগালের অন্যতম পর্যটন আকর্ষণ মাদেইরা দ্বীপে বুধবার একটি বাস দুর্ঘটনায় ২৯ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে কর্তৃপক্ষ, যাদের মধ্যে বেশিরভাগই ছিলেন জার্মান নাগরিক৷
বাসটিতে মোট ৫৫ জন যাত্রী ছিলেন৷ ক্যানিকো নামের একটি জায়গায় গতি হারিয়ে বাসটি খাড়া পাহাড় থেকে নীচে গড়িয়ে পড়ে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় মেয়র ফিলিপে সুজা৷ এসময় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, দুর্ঘটনায় ২৮ জন যাত্রী মারা গেছেন এবং ২২ জন আহত হয়েছেন৷ বাসের সব পর্যটকই জার্মানির নাগরিক ছিলেন৷ তবে কিছু পথচারীও এসময় আহত হয়েছেন বলে যোগ করেন সুজা৷
হাসপাতালে নেয়ার পর আরো একজনের মৃত্যু হয়েছে বলেও পরবর্তীতে নিশ্চিত করেন তিনি৷ বাসটির মালিক এসএএম নামের একটি পরিবহন প্রতিষ্ঠান৷ দুর্ঘটনার কারণ জানতে স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সাথে তারা কাজ করবে বলে জানিয়েছে৷
বিশ্বের সবচেয়ে বিপজ্জনক সড়ক
বিশ্বের সবচেয়ে বিপজ্জনক ১০টি রাস্তার তিনটিই ভারতে৷ ছবিগুলো দেখে নিজেরাই বুঝে নিন কেন এই রাস্তাগুলিতে গাড়ি চালাতে সবচেয়ে দক্ষ চালকেরও হৃৎকম্পন বেড়ে যায়৷
ছবি: picture-alliance/prisma
শ্রীনগর-লেহ মহাসড়ক
ভারতের ৪৪৩ কিলোমিটার দীর্ঘ এই মহাসড়ক লেহের সাথে কাশ্মীর উপত্যকাকে সংযুক্ত করেছে৷ জোজিলার মধ্য দিয়ে যাওয়া এই রাস্তাটি শীতকালে পুরোপুরি বরফে ডুবে যায়৷ গ্রীষ্মে বরফ গলে যাওয়ার পরও রাস্তা কাদায় পিচ্ছিল হয়ে থাকে৷ সেই সাথে পাথর গড়িয়ে পড়া এবং তুষার ঝড়ের ঝুঁকি তো আছেই৷
ছবি: Reuters/Danish Ismail
মাচু পিচু সড়ক
দক্ষিণ অ্যামেরিকার দেশ পেরুর এই সর্পিল রাস্তা মাচু পিচুর সাথে আগুসা ক্যালিওটেন্সান্সেকে যুক্ত করেছে৷ পাহাড়ের মধ্য দিয়ে যাওয়া এই সড়কটিতে ১১টি তীক্ষ্ণ বাঁক রয়েছে৷ ৮ দশমিক ৯ কিলোমিটার দীর্ঘ এই অংশটি অতিক্রম করার সময় রীতিমতো বুকে কাঁপুনি ধরে৷
ছবি: Picture-Alliance
রুট টোয়েন্টি
যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটনে ফেডারেল হাইওয়ে টোয়েন্টি অবস্থিত৷ বরফঢাকা পর্বতমালা এবং ভয়ঙ্কর পরিবেশে শীতকালে গাড়ি চালানো প্রায় অসম্ভব৷ বরফের কারণে, এ রাস্তায় বড় বড় ট্রাকের চাকাও পিছলে যেতে চায়৷
ছবি: picture-alliance/ B. Coleman
স্কিপারস ক্যানিয়ন
৪০ বছর আগে নিউজিল্যান্ডের কুইন্সটাউনে ভেড়া ও পালকদের চলাচলের জন্য এই রাস্তাটি নির্মিত হয়েছিল৷ পরে এ রাস্তায় ট্রেনও চলতে শুরু করে৷ এই রাস্তা খুব চাপা৷ ফলে একদিকে চরতে থাকা মেষের পাল এবং অন্যদিকে চলতে থাকা ট্রেন সড়কে গাড়ি চলাচলকে আরো কঠিন করে তোলে৷
ছবি: picture-alliance/All Canada Photos
কিন্নুর উপত্যকা
হিমাচল প্রদেশের কিন্নুর উপত্যকায় যাওয়ার পথটি ভয়াবহ৷ অনেক জায়গায় শক্ত পাথর কেটে তৈরি করা হয়েছে রাস্তা৷ কিছু জায়গায় ভূমিধসের ফলে রাস্তা আরো সরু হয়ে গেছে৷ তাছাড়া রাস্তাটির বড় একটি অংশ এক লেনের৷ কয়েক সেকেন্ডের অমনোযোগে ঘটতে পারে ভয়াবহ দুর্ঘটনা৷
ছবি: picture-alliance/imageBROKER
সা কোলোব্রা রোড
স্পেনের বিখ্যাত দ্বীপ মায়োরকার কোলোব্রা গ্রামে যাওয়ার রাস্তা খুবই বিপজ্জনক৷ ১৩ কিলোমিটার দীর্ঘ এই রাস্তায় বেশ কিছু তীক্ষ্ম বাঁক রয়েছে৷ বড় বাস বা ট্রাক একবার এই রাস্তায় ঢুকলে আর পেছনে ফেরার জায়গা থাকে না৷ কিছু মোড়ে এই সড়ক এতটাই সরু যে, মুখোমুখি দুটো গাড়ি এলেও পাশ কাটাতে বেশ বিপদেই পড়তে হয়৷
ছবি: picture-alliance/prisma
জর্জ দে গালামু
ফ্রান্সের চালকদের জন্য এই সড়ক বিশাল এক চ্যালেঞ্জ৷ উলটো দিক থেকে আসা গাড়ি পাশ কাটানোর জন্য জায়গা থাকলেও তা অনেক দূরে দূরে৷ ফলে মুখোমুখি হলে একটি গাড়িকে পেছাতে হয় বেশ খানিকটা জায়গা৷
ছবি: picture-alliance/imageBROKER
গুওলিয়াং সুড়ঙ্গ
শক্ত পাথর কেটে তৈরি করা হয়েছে চীনের সিনচিয়ান প্রদেশের এই রাস্তা৷ এই রাস্তা তৈরি করে গুওলিয়াং গ্রামকে সংযুক্ত করার কজটা সহজ ছিল না৷ ১৯৭০-এর দশকে যখন কাজ শুরু করা হয়, তখন এক মিটার রাস্তা তৈরি করতেও লেগে যেতো তিন দিন৷ এক পাশে খাড়া পাহাড়, অন্যপাশে গভীর খাদ তো আছেই, সেই সাথে একটু পর পর সংকীর্ণ মোড় রাস্তাটিকে করে তুলেছে আরো ভয়াবহ৷
ছবি: picture-alliance/H. Jianxun
গ্র্যান্ড ট্রাঙ্ক রোড
ভারতের অমৃতসরের সাথে একদিকে কলকাতা ও চট্টগ্রামকে এবং অন্যপাশে লাহোর ও পেশোয়ারকে সংযুক্ত করা গ্র্যান্ড ট্রাঙ্ক রোড এশিয়ার প্রাচীনতম সড়ক৷ প্রায় ২৭০০ কিলোমিটার জুড়ে ভিন্ন ধরনের ভৌগোলিক বৈচিত্র্য এবং কোথাও কোথাও ব্যস্ত যান চলাচল এই সড়ককেও অন্তর্ভূক্ত করেছে বিপজ্জনক সড়কের তালিকায়৷
ছবি: picture-alliance/Y. Travert
মৃত্যুর সড়ক
বলিভিয়ার এই সড়ককে ‘রোড অফ ডেথ’ বলা হয়৷ সংকীর্ণ এই রাস্তা ৪০০ কিলোমিটার দীর্ঘ৷ চার কিলোমিটার উচ্চতায় অবস্থিত পর্বতমালার মধ্য দিয়ে চলে গেছে এই সড়ক৷ রাজধানী লা পাজের সাথে করুয়েরোকে যুক্ত করা রাস্তাটির ৫০ কিলোমিটার অংশ অত্যন্ত বিপজ্জনক বলে মনে করা হয়৷
ছবি: cc-Ilosuna-sa 3.0
10 ছবি1 | 10
‘‘দুর্ঘটনার পেছনে সমস্ত তথ্য, কারণ ও দায় সম্পর্কে জানতে এবং তদন্ত করার বিষয়ে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ,'' বিবৃতিতে বলেছে এসএএম৷
এদিকে দুর্ঘটনায় নিহতদের মধ্যে জার্মানির নাগরিক রয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী৷ এক টুইট বার্তায় তিনি বলেন, ‘‘মাদেরার বাস দুর্ঘটনার খবরে আমরা শোকাহত৷ দুর্ভাগ্যজনকভাবে হতাহতদের মধ্যে জার্মান নাগরিকরা রয়েছেন৷ তাঁদের পরিবার ও বন্ধুদের প্রতি আমরা সমবেদনা জানাচ্ছি৷''
৪ টি দ্বীপ নিয়ে মাদেইরা দ্বীপপুঞ্জটি মরক্কো উপকূল থেকে ৯৩৫ কিলোমিটার দুরুত্বে অবস্থিত৷ এটি পর্তুগালের দুটি স্বায়ত্ত্বশাসিত অঞ্চলের একটি৷ প্রতি বছর কয়েক লাখ পর্যটকের পা পড়ে সেখানে৷