পর্নোগ্রাফি দেখার মানসিক প্রস্তুতি শিশুদের থাকে না৷ নিয়মিত পর্নো ছবি দেখলে পড়ালেখা তো বটেই, অন্য কাজেও মনোযোগ দিতে পারে না তারা৷ এতে করে তাদের সুস্থ, স্বাভাবিক বিকাশ ব্যাহত হয়৷ তারা হয়ে ওঠে বিকৃত মননের৷
বিজ্ঞাপন
ডয়চে ভেলের সঙ্গে আলাপকালে এ কথাই বলেন জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের সহকারী অধ্যাপক ডা. জিল্লুর রহমান খান রতন৷ তাঁর কথায়, ‘‘শিশু বয়সে পর্নোগ্রাফি দেখলে পরবর্তীতে তার স্বাভাবিক যৌন সম্পর্ক নিয়ে ধারণা ক্ষতিগ্রস্ত হয়৷ অশ্রদ্ধাবোধ তৈরি হয় বিপরীত লিঙ্গের মানুষের প্রতি৷ এমনকি সামাজিকভাবে অপরাধেও জড়িয়ে পড়তে পারে শিশুরা৷''
ডয়চে ভেলে:পর্নোগ্রাফি কী – সেটা অনেকেই বোঝেন৷ কিন্তু শিশু পর্নোগ্রাফি সম্পর্কে নির্দিষ্ট করে বললে কী বলা যায়?
ডা. জিল্লুর রহমান খান রতন: শিশু পর্নোগ্রাফিতে শিশুদের ব্যবহার করা হয়ে থাকে৷ এটা একটি গর্হিত কাজ ও অস্বাভাবিক বিষয়৷ এটা বিকৃত মানসিকতার পরিচয়ও বটে৷ তবে শিশু পর্নোগ্রাফি বিভিন্ন ধরনের হতে পারে৷ ফটোগ্রাফি হতে পারে, আবার ভিডিও চিত্রের মাধ্যমেও হতে পারে৷
এই পর্নোগ্রাফিতে কি কেবল শিশুরাই অংশ নেয়? আর সেজন্যই কি শিশু পর্নোগ্রাফি বলা হয়? নাকি শিশুরা যে পর্নোগ্রাফি দেখে, সেগুলোকে শিশু পর্নোগ্রাফি বলে?
এই পর্নোগ্রাফিগুলো শিশুদের উপযোগী করে বানানোর প্রবণতা থাকতে পারে৷ তবে আজকাল যারা স্কুলে পড়ে, তারাও মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ছোট ছোট ভিডিও আদান-প্রদান করে৷ তাছাড়া শিশুরা যে শুধুমাত্র শিশুদের নিয়ে তৈরি পর্নোগ্রাফি দেখছে বিষয়টা তো তা নয়৷ তারা ‘অ্যাডাল্ট' বা প্রাপ্তবয়স্কদের নিয়ে তৈরি পর্নোগ্রাফিও দেখছে৷ সেই অর্থে শিশুদের ব্যবহার করা অথবা তাদের উপযোগী করে বানানো – শিশু পর্নোগ্রাফি এর যে কোনো একটা হতে পারে৷
Interview of Dr. Zillur Rahman Khan Ratan - MP3-Stereo
বাংলাদেশে শিশু পর্নোগ্রাফি বাড়ার মূল কারণ কী?
শিশুদের পর্নোগ্রাফির প্রতি বেশি আসক্তির প্রধান কারণ হলো – তারা এখন চাইলেই যে কোনো ওয়েবসাইটে ঢুকে যেতে পারে৷ যদিও এ ব্যাপারে সরকার কড়াকড়ি আরোপ করেছে৷ অনেক সাইট বন্ধ করে দিয়েছে এবং এমন অনেক সাইট বন্ধ করতে কার্যকর পদক্ষেপ নিয়েছে, নিচ্ছে৷ এটা আসলে সামাজিক অবক্ষয়৷ আর এই সামাজিক অবক্ষয় হওয়ার মূল কারণ হচ্ছে, বাচ্চাদের খেলার মাঠ নেই, আত্মীয়-স্বজনদের বাসায় আসা-যাওয়া প্রায় বন্ধই হয়ে গেছে৷ তাই তারা ফ্লাটবন্দি হয়ে ‘আরবান' সংস্কৃতিতে বড় হচ্ছে৷ এক ধরনের বিচ্ছিন্নতার মধ্যে বড় হচ্ছে আজকের শিশুরা৷ তাই আমার মনে হয়, তাদের সুস্থভাবে বেড়ে উঠার জন্য খেলার মাঠ, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে অংশ নেয়ার সুযোগ করে দিতে হবে৷ প্রযুক্তির যেমন ভালো দিক থাকে, আবার খারাপ দিকও থাকে৷ ইন্টারনেট সহজলভ্য হওয়ায় বাচ্চারা সেটা ব্যবহার করছে৷ তাই সেটাও আর নিয়ন্ত্রণও করা যাচ্ছে না৷ ফলে তারা ইন্টারনেটে খারাপ জিনিস দেখছে৷
ইংরেজি মাধ্যম স্কুল, বিশেষ করে পশ্চিমা ধাঁচের স্কুলগুলো কি শিশু পর্নোগ্রাফি বাড়াতে কোনো ভূমিকা রাখছে?
আমাদের দেশে যে ‘মেইনস্ট্রিম' স্কুলগুলি আছে, সেখানে দিনের শুরুতে জাতীয় সংগীত গাওয়া হয়৷ জাতীয় দিবসগুলো পালন করা হয়৷ কিন্তু দেশীয় সংস্কৃতির বাইরে যেসব স্কুল পরিচালিত হয়, সেসব স্কুলে মূল্যবোধের অবক্ষয় হচ্ছে৷ সেখানে প্রতিযোগিতা করে বাচ্চারা ইন্টারনেট ব্যবহার করে৷ সেখানে তাদের দেশীয় সংস্কৃতির কিছুই শেখানো হয় না৷ আমি এমন স্কুলও চিনি, যেখানে একুশে ফেব্রুয়ারিতে ভাষা দিবস পালন করা হয় না৷ পরবর্তী সাপ্তাহিক ছুটির দিনে ভাষা দিবস পালন করা হয়৷
বাংলাদেশে পর্নোগ্রাফি: শুরু থেকে বিস্তার
স্কুলগামী শিশুদের প্রায় ৭৭ শতাংশ নিয়মিত পর্নগ্রাফি দেখছে – এই তথ্যে উদ্বিগ্ন সবাই৷ তা কেমন করে এত শিশু পর্নোগ্রাফির দিকে ঝুঁকল? কবে থেকে, কী কী উপায়ে পর্নোগ্রাফি জাল বিস্তার করছে বাংলাদেশে? সেই উত্তরই থাকছে ছবিঘরে...
ছবি: picture-alliance/blickwinkel
দেশি চটি বই থেকে বিদেশি ‘প্লেবয়’
একটা সময় পর্যন্ত ঢাকায় তো বটেই, দেশের প্রায় সব মফঃস্বল শহরেও গোপনে বিক্রি হতো ‘চটি বই’৷ আদিরসাত্মক গল্পের সেই বইগুলো লেখা হতো ছদ্মনামে৷ চটি বইয়ের বাইরে ‘জলসা’, ‘নাট্যরাজ-’এর মতো নিরীহ নামের কিছু ‘পিনআপ’ ম্যাগাজিনও ছিল, যেগুলো প্রকাশের উদ্দেশ্যই ছিল নারীদেহ এবং যৌনকর্মের পুঙ্খানুপুঙ্খ বর্ণনা দিয়ে পাঠক মনে যৌন উদ্দীপনা জাগানো৷ এছাড়া বড় শহরগুলোয় ‘প্লেবয়’ ম্যাগাজিনও পাওয়া যেত৷
ভিডিও ক্যাসেট রেকর্ডার, অর্থাৎ ভিসিআরের কয়েক বছর পর হয়ত কোনো চিহ্নই থাকবে না৷ গত বছরের জুনেজাপানে তৈরি হলো বিশ্বের সর্বশেষ ভিসিআর৷ মানে বিশ্বের কোথাও আর কখনো ভিসিআর তৈরি হবে না৷ বাংলাদেশে পর্নোগ্রাফির বিস্তারে এই ভিসিআর একসময় খুব বড় ভূমিকা রেখেছে৷ প্রেক্ষাগৃহে না গিয়ে ঘরে বসে হিন্দি, ইংরেজি ছবি দেখা শুরু হয়েছিল ভিসিআর দিয়ে৷ একটি চক্র তখন নানা জায়গায় গোপনে ‘ব্লু ফিল্ম’-ও দেখাতে শুরু করে৷
ছবি: Getty Images/AFP/K. Nogi
সিনেমা হলে ‘কাটপিস’
দেশের কিছু প্রেক্ষাগৃহে হলিউডের মুভি দেখানো হতো৷ এক সময় ঘোষিত মুভির ফাঁকে ফাঁকে দেখানো শুরু হয় ‘ব্লু ফিল্ম’৷ এই প্রবণতা অন্য হলগুলোতেও ছড়িয়ে পড়ে৷ বাংলা ছবির ফাঁকে ফাঁকে দেখানো শুরু হয় ‘কাট পিস’, অর্থাৎ পর্নো ছবির অংশ বিশেষ৷
ছবি: picture-alliance/dpa/K. Nietfeld
সিডি থেকে ডিভিডি
কম্পিউটারের আগমনের পর থেকে অল্প অল্প করে কমপ্যাক্ট ডিস্ক, অর্থাৎ সিডিতেও ঢুকে পড়ে পর্নো ছবি৷ সেই ছবি পৌঁছে যায় ঘরে ঘরে৷ সিডির পর এলো ডিজিটাল ভার্সেটাইল ডিস্ক, অর্থাৎ ডিভিডি৷ ভার্সেটাইল ডিস্ক দেশে জ্ঞান এবং সংস্কৃতির চর্চা ও বিকাশে নিঃসন্দেহে ‘ভার্সেটাইল’ ভূমিকাই রাখছে, তবে পাশাপাশি যে পর্নোগ্রাফির ধারক, বাহক হিসেবেও এর একটা পরিচিতি গড়ে উঠেছে তা-ও অস্কীকার করা যাবে না৷
ছবি: picture alliance / A. Pisacreta
অন্তর্জালে পর্নোজাল
গত কয়েক বছরে দেশে ইন্টারনেট ও তথ্য-প্রযুক্তির ব্যবহার বিষ্ময়কর হারে বেড়েছে৷ সর্বশেষ হিসেব অনুযায়ী, বাংলাদেশে মোট ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৬ দশমিক ৬৮ কোটি৷ ইন্টারনেটের অপব্যবহার আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে৷ পর্নোসাইটের দৌরাত্ম এত ভয়াবহভাবে যে, সম্প্রতি পর্নোগ্রাফি ও আপত্তিকর কন্টেন্ট প্রকাশ বন্ধের উদ্যোগ হিসেবে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা (বিটিআরসি) পাঁচশ’রও বেশি পর্নোসাইট বন্ধ করেছে৷
ছবি: bdnews24.com
মোবাইল ফোনে পর্নোগ্রাফি
দেশের ৬ দশমিক ৬৮ কোটি ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর ৯৪ দশমিক ১৮ শতাংশই মোবাইল ফোনে ইন্টারনেট ব্রাউজ করে৷ ফলে মোবাইলই হয়ে উঠেছে পর্নোগ্রাফির সবচেয়ে বড় উৎস৷ হাতে হাতে মোবাইল, তাই পর্নোগ্রাফি ও আপত্তিকর কন্টেন্টও হয়ে উঠেছে সহজলভ্য৷
সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক একবার জাতীয় সংসদে জানিয়েছেন, ‘‘দেশে প্রতি ১২ সেকেন্ডে অন্তত একটি করে নতুন ফেসবুক অ্যাকাউন্ট খোলা হচ্ছে৷’’ নতুন অ্যাকাউন্টগুলোর উল্লেখযোগ্য একটি অংশই ‘ভুয়া’৷ এভাবে কিছু লোক ফেসবুক, টুইটারেও নানা ধরণের অপতৎপরতা চালাচ্ছে৷ এর ফলে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমেও পর্নোগ্রাফির বিস্তার বাড়ছে৷
ছবি: Reuters/D. Ruvic
7 ছবি1 | 7
পর্নোগ্রাফি দেখার কারণে আমাদের শিশুদের কী পরিমাণ সামাজিক, শারীরিক বা মানসিক ক্ষতি হচ্ছে?
পর্নোগ্রাফি দেখার মানসিক প্রস্তুতি শিশুদের থাকে না৷ এসব দেখলে সারাক্ষণ তাদের মাথায় তা ঘুরতে থাকে, কোনো কাজে বা পড়াশোনায় মনোযোগ দিতে পারে না৷ ফলে তাদের মানসিক মনোবৈকল্য দেখা দেয়, ব্যাহত হয় সুস্থ, স্বাভাবিক বিকাশ৷ আর সবচেয়ে ভয়াবহ ব্যাপার হলো, শিশু বয়সে পর্নোগ্রাফি দেখার ফলে পরবর্তীতে তার স্বাভাবিক যৌন সম্পর্ক নিয়ে ধারণা ক্ষতিগ্রস্ত হয়৷ বিপরীত লিঙ্গের মানুষের প্রতি অশ্রদ্ধাবোধ তৈরি হয়৷ শিশুটি বিকৃত যৌনাচারে অভ্যস্ত হতে পারে৷ এমনকি সামাজিকভাবে অপরাধেও জড়িয়ে পড়তে পারে৷
আপনাদের কাছে কি এমন রোগী আসে?
চিকিৎসার ক্ষেত্রে আমি নিজেই পর্নোগ্রাফি দেখে মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে গেছে এমন রোগী পেয়েছি৷ সর্বশেষ ১২ বছরের একটি কিশোর স্কুলে বন্ধুর মাধ্যমে প্রথম পর্নোগ্রাফি দেখে৷ এরপর তার আগ্রহ বেড়ে যায়৷ এক পর্যায়ে সে পর্নোগ্রাফিতে আসক্ত হয়ে পড়ে৷ এর ফলে তার স্বাভাবিক লেখাপড়া দারুণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়৷ পরে ওই কিশোর সামাজিক অপরাধেও জড়িয়ে পড়ে৷ এ সব কারণে তার স্বাভাবিক জীবন ব্যাহত হয়৷ একটা সময় তার অভিভাবকরা আমার কাছে তাকে নিয়ে এসেছিলেন৷ আসলে তরুণ ও কিশোরদের এ ব্যাপারে ‘ওরিয়েন্টেশন' দরকার৷
শিশু পর্নোগ্রাফি আমাদের দেশে যেমন আছে, উন্নত দেশেও আছে৷ তারা তো এটা নিয়ে খুব বেশি মাথা ঘামায় না৷ আমাদের মতো দেশে কেন তাহলে এ নিয়ে এত হৈচৈ হয়?
শিশু পর্নোগ্রাফি পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে যেমন নিষিদ্ধ, বাংলাদেশেও নিষিদ্ধ৷ এর বিরুদ্ধে ঐ সব দেশেও আইন আছে, আমাদেরও আছে৷ পর্নোগ্রাফিতে শিশুদের ব্যবহার করা সেই সব দেশেও অপরাধ, আমাদের দেশেও অপরাধ৷ এমনকি আমাদের দেশে এটা একটা ফৌজদারি অপরাধ৷ আমাদের সরকার এ ব্যাপারে কার্যকর পদক্ষেপ নিয়েছে৷ জনসচেতনতা তৈরি করতে কাজ করছে৷ আমরা চাই, আমাদের শিশুরা সুস্থভাবে বেড়ে উঠুক৷
শিশু পর্নোগ্রাফি পুরোপুরি মুক্ত করতে হলে সরকার এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে কী ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া দরকার? এ ব্যাপারে আপনার পরামর্শ কী?
আমাদের বাচ্চাদের খেলার মাঠ নেই, সাংস্কৃতিক কোনো কর্মকাণ্ড নেই৷ শিশুদের জন্য সুস্থ বিনোদনের ক্ষেত্র প্রস্তুত করতে হবে আমাদেরই৷ বাচ্চাদের খেলার মাঠ দিতে হবে৷ সামাজিকভাবে সচেতনতা তৈরি করতে হবে৷ ধর্মীয় মূল্যবোধ এখানে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়৷ শিশুদের যদি ধর্মীয় মূল্যবোধে বিশ্বাসী করে বড় করা যায়, তাহলে তাদের মধ্যে অপরাধ প্রবণতাও কমে যাবে৷ তাহলে এই ধরনের অপরাধ নির্মূল সম্ভব বলে আমি মনে করি৷
এ বিষয়ে আপনার কিছু বলার থাকলে লিখুন নীচে, মন্তব্যের ঘরে৷
যৌনমিলনের দশ সুফল
মানসিক চাপ কমানো থেকে শুরু করে হৃদযন্ত্র ভালো রাখা – নিয়মিত যৌনমিলন এমন নানা সুফল বয়ে আনে৷ স্বাস্থ্য বিষয়ক ওয়েবসাইট ওয়েবএমডি এবং ম্যান’সে হেলথ জানিয়েছে এই তথ্য৷ চলুন জেনে নেই সঙ্গমের দশটি সুফলের কথা৷
ছবি: picture alliance/Bildagentur-online
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে
যারা যৌনজীবনে সক্রিয়, তারা নাকি অসুস্থতাজনিত ছুটি কম নেন৷ হ্যাঁ, এমনটাই মনে করেন যৌনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ইভোন কে. ফুলব্রাইট৷ তাঁর কথায়, নিয়মিত যৌনসঙ্গম করলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে৷ পেনসেলভেনিয়ার উইল্কস বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরাও দেখান যে, যেসব শিক্ষার্থী সপ্তাহে এক বা দু’দিন যৌনমিলনে লিপ্ত হন তাদের রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা যারা এর চেয়ে কম ‘সেক্স’ করেন তাদের তুলনায় বেশি৷
ছবি: picture-alliance/blickwinkel
যৌনকামনা বাড়ায়
নিয়মিত যৌনজীবন যৌনতার প্রতি মানুষের আগ্রহ বাড়িয়ে তোলে৷ বিশেষ করে নারীদের যোনিপথ পিচ্ছিল রাখতে, সেখানে রক্তচলাচল বাড়াতে এবং নমনীয়তা ঠিক রাখতে নিয়মিত যৌন জীবনের বিকল্প নেই, মনে করেন শিকাগোর একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক লওরেন স্ট্রাইচার৷
নারীর মূত্রাশয়ের উপর নিয়ন্ত্রণ রাখতে ‘পেলভিক ফ্লোর’ শক্তিশালী হওয়া প্রয়োজন৷ আর ভালো যৌনজীবন নারীর মূত্রাশয়ের মাংসপেশীকে সক্রিয় রাখে৷ বিশেষ করে ‘অরগ্যাসমের’ সময় ‘পেলভিক ফ্লোরের’ মাংসপেশী সংকুচিত হয়, যা একটি ভালো ব্যায়ামও বটে৷ জেনে রাখা ভালো, প্রায় ৩০ শতাংশ নারীর কোনো না কোনো সময় মূত্রাশয়ের উপর নিয়ন্ত্রণ রাখা কঠিন হয়ে পড়ে৷
ছবি: Colourbox
রক্তচাপ কমায়
নিয়মিত যৌনজীবনের সঙ্গে রক্তচাপ কম থাকার একটি সম্পর্ক রয়েছে, মনে করেন গবেষক জোসেফ জে. পিনসন৷ তিনি জানান, গবেষণা বলছে যৌনমিলন (হস্তমৈথুন নয়) ‘সিস্টোলিক’ রক্তচাপ কমায়৷
ছবি: Colourbox
এটাও ব্যায়াম
যৌনমিলন একটা ভালো ব্যায়াম, বলেন পিনসন৷ কেননা এতে প্রতি মিনিটে পাঁচটি ক্যালোরি খরচ হয়, যা টিভি দেখার চেয়ে চার ক্যালোরি বেশি৷ তিনি জানান, যৌনমিলনে দু’ধরনের সুবিধা মেলে৷ এটি আপনার হৃদ কম্পনে গতি আনে এবং একইসঙ্গে অনেকগুলো মাংসপেশীকে সক্রিয় করে৷
ছবি: picture-alliance/maxppp/
হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমায়
সুস্থ যৌনজীবন আপনার হৃদপিণ্ডের জন্যও ভালো৷ হার্ট রেট ভালো রাখার পাশাপাশি এটি আপনার ‘এস্ট্রোজেন’ এবং ‘টেস্টোস্টেরনের’ মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে৷ গবেষণা বলছে, যারা সপ্তাহে অন্তত দু’দিন যৌনমিলনে লিপ্ত হন তাদের হার্ট অ্যাটাকে মৃত্যুর শঙ্কা, যারা খুব কম ‘সেক্স’ করেন তাদের চেয়ে অর্ধেক কম৷
ছবি: nebari/Fotolia
ব্যথা কমায়
ব্যথা কমাতে অ্যাসপিরিনের চেয়ে ‘অরগ্যাসম’ বেশি কার্যকর হতে পারে৷ নিউ জার্সি স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক বেরি আর. কমিসারুক বলেন, ‘‘অরগ্যাসম ব্যথা বন্ধ করতে পারে৷ কেননা এতে যে হরমোন নিঃসৃত হয়, তা শরীরের ব্যথা প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়৷’’
ছবি: Colourbox
প্রোস্টেট ক্যানসারের ঝুঁকি কমায়
যেসব পুরুষের মাসে অন্তত ২১ বার ‘ইজেকুলেট’ হয় তাদের প্রোস্টেট ক্যানসারের ঝুঁকি অন্যদের তুলনায় কম, বলছে এক গবেষণা৷ তবে এই হিসেবে শুধু যৌনমিলন নয়, হস্তমৈথুনও অন্তর্ভুক্ত৷ তবে শুধু ‘সেক্স’ করলেই ক্যানসার মুক্ত থাকা যাবে কিনা, তা অবশ্য পুরোপুরি নিশ্চিত নয়৷ প্রোস্টেট ক্যানসারের পেছনে আরো অনেক কারণ থাকে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
ঘুমে সহায়ক
যৌনমিলনের পর আপনি দ্রুত ঘুমাতে পারেন৷ কেননা ‘অরগ্যাসমের’ সময় যে হরমোন নিঃসৃত হয় তা দেহকে শিথিল করে এবং ঘুম ঘুম ভাব নিয়ে আসে৷
ছবি: Colourbox
মানসিক চাপ কমায়
আপনার সঙ্গীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে থাকলে আপনার মানসিক চাপ এবং উদ্বেগ কমতে পারে৷ গবেষকরা মনে করেন, সুস্থ জীবনের জন্য ‘সেক্স’ এবং ঘনিষ্ঠতা অত্যন্ত জরুরি৷