1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

পর্যটনকে কেন্দ্র করে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে বান্দা আচে

২৪ জানুয়ারি ২০১২

২০০৪ সালের প্রলয়ংকরী সুনামিতে ইন্দোনেশিয়ার বান্দা আচে শহরটি একেবারে মাটির সাথে মিশে যায়৷ ধ্বংসযজ্ঞের সে স্মৃতিচিহ্নগুলো ঘিরেই সেখানে তৈরি হয়েছে পর্যটন বাণিজ্য৷

Boat on the House - View of the Bow (1) PHOTOGRAPHER - Niall Macaulay DATE - 27 / 07 / 2011 LOCATION - Northern Banda Aceh - Kapal Lam Pulo DESCRIPTION IN DETAIL - The fishing boat which was washed along with the tsunami wave and came to rest on top of a house. It has now been secured there permanently as a reminder of the event. As many as 50 people survived the waves by staying onboard or clinging to the sides of this boat
সুনামির ধাক্কায় বাড়ির উপরে উঠে যাওয়া একটি বড় নৌকাছবি: Niall Macaulay

ঝড়ে তাদের পাল ছিঁড়েছে, দিক হয়েছে ভুল৷ ভয়ে তারা নীল হয়েছে, স্বজন হারিয়ে বেদনায় মন হয়েছে ভার৷ তবু তারা হাল ছাড়ে নি৷ ভাঙা তরী জোড়া দিয়ে আবার তারা উঠে দাঁড়িয়েছে, গাইছে জীবন জয়ের গান৷

বলছি ইন্দোনেশিয়ার কথা৷ ২০০৪ সালের ২৬ ডিসেম্বর ৯.১ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানে ভারত মহাসাগরীয় এলাকায়৷ এই ভূমিকম্পের প্রভাবে সৃষ্টি ইতিহাসের ভয়াবহ এক সুনামি৷ সুনামির তাণ্ডবে মারা যায় প্রায় ২ লাখ ৩০ হাজার মানুষ৷ প্রলয়ংকরী এ সুনামির আঘাতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতবিক্ষত হয় ইন্দোনেশিয়া৷

ইন্দোনেশিয়ারই একটি শহর বান্দা আচে৷ সুনামির জল নিষ্ঠুরের মতো নিশ্চিহ্ন করে দিয়ে গেছে সে শহরের মাটি, প্রসাদ, বন ও জন জীবন৷ সব হারিয়ে নিঃস্ব হওয়া অজস্র মানুষ ভিখিরির মতো নেমেছে পথে৷ কিন্তু সেই পথের জীবনই শেষ নয়৷ তারা আবার ঘুরে দাঁড়িয়েছে৷ অর্থনৈতিক স্থিতি আনতেও কঠিন পরিশ্রম করে যাচ্ছে তারা৷

বান্দা আচে শহরের এই দুর্দিনে ‘শাপে বর' হয়ে দেখা দিয়েছে সুনামির ধ্বংস ও বিনাশের স্মৃতিগুলো৷ সুনামির আঘাতে প্রায় মাটির সাথে মিশে যাওয়া এ শহরটিকে দেখতে প্রতিদিনই আসছে অসংখ্য পর্যটক৷ দেশি বিদেশি পর্যটকদের ধ্বংসস্তূপগুলো দেখানোর জন্য গাইড হিসেবে কাজ করছে অনেকেই৷ এছাড়া পর্যটকদের আকর্ষণ করার জন্য তৈরি হচ্ছে নতুন নতুন ট্যুরিজম কোম্পানিও ৷ আর পর্যটকদের কাছে সুভেনির, খাদ্য, পানীয় ও হাতে বানানো ছোটো ছোটো উপহার বিক্রি করার পেশাও বেছে নিয়েছে অনেকে মানুষ৷ অর্থাৎ পর্যটকদের এই আগমনকে ঘিরে বান্দা আচে শহরে নতুন কিছু কাজ তৈরি হয়েছে, বাণিজ্যিক একটা আবহ তৈরি হয়েছে এবং সুযোগ তৈরি হয়েছে মানুষের হাতে কিছু অর্থ পাবার৷

সুনামির শিকার একটি মসজিদছবি: DW/Robina

সুনামির ধ্বংসযজ্ঞের স্মৃতি ধরে রাখতে বান্দা আচে শহরে তৈরি হয়েছে জাদুঘর৷ ধ্বংসের আগের, পরের এবং ধ্বংসলীলার অজস্র ছবি রাখা আছে সে জাদুঘরে৷ এছাড়া ইলেক্ট্রনিক মাধ্যমের সহায়তায় সুনামির একটি কৃত্রিম পরিস্থিতি সৃষ্টি করেও দেখানো হয় সেখানে৷ এই সব অভিনব বিষয়গুলোও পযর্টকদের নজর কাড়ছে৷

ধ্বংসের কিছু চিহ্ন এখনো অবিকল রয়ে গেছে বান্দা আচে শহরে৷ ৪০ ফুট দীর্ঘ একটি নৌকাকে সুনামির জল ভাসিয়ে নিয়ে ফেলেছিলো এক বাড়ির ছাদে৷ সেটি আজো সেভাবেই আছে৷

ধ্বংসের এই চিহ্নগুলো পর্যটকরা বিস্ময়ের সাথে দেখেন৷ পর্যটকদেরই কেউ কেউ মন্তব্য করেছেন যে, এ বিধাতারই লীলা৷ তিনি ছাড়া কোনো মানুষের পক্ষে এমন বিনাশ সম্ভব নয়৷ আর স্থানীয়দের অনেকেই বলছেন, এই ধ্বংসও তাঁর একধরণের পরীক্ষা৷

এই যে পর্যটকরা আসছে বান্দা আচে শহরে এটিকে স্থানীয়রা বলছেন আধ্যাত্মিক ভ্রমণ বা স্পিরিচুয়াল ট্যুরিজম৷ তারা বলছেন, বিধাতাকে ধন্যবাদ কারণ আমরা পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন হয়ে যাই নি, বরং আমরা আবারো ঘুরে দাঁড়িয়েছি৷

প্রতিবেদন: আফরোজা সোমা
সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ