জার্মানির রাজধানী বার্লিনে বিশ্বের সবচেয়ে বড় পর্যটন মেলা আইটিবি ২০১৮-এ এমন আহ্বান জানান বিশ্বের ধনী দেশগুলোর পর্যটন খাতের নীতি-নির্ধারকরা৷
বিজ্ঞাপন
তাঁরা মনে করছেন, কার্বন নিঃসরণ কমানো, সম্পদের দক্ষ ব্যবহার ও সবাইকে সঙ্গে নিয়ে উন্নয়নবান্ধব পর্যটন খাত গড়ে তুলতে হলে ‘বিনিয়োগের' বড় ভূমিকা আছে৷
সারাবিশ্বে পর্যটনের বাজার বাড়ছে হু হু করে৷ আইটিবি-র এ বছরের প্রতিবেদন বলছে, বৈশ্বিক পর্যায়ে জিডিপি-র প্রবৃদ্ধির হারের চেয়ে তিনগুণ বেশি হারে বাড়ছে পর্যটন খাতের আয়৷
ইউএনডাব্লিউটিও-র বিশ্ব পর্যটন ব্যারোমিটার বলছে, ২০১৭ সালের জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত, এক দেশ থেকে আরেক দেশে ভ্রমণ করেছেন ৯০ কোটি ১০ লাখ মানুষ, যা আগের বছরের তুলনায় ৫ দশমিক ৬ কোটি বেশি৷ আর তাই পর্যটন খাতে আয় বাড়ছে গুণোত্তর হারে৷ ফলে বিনিয়োগও বাড়ছে একইভাবে৷
কিন্তু প্রশ্ন হলো, এই বাজারবৃদ্ধি কিংবা বিনিয়োগ কতটা পরিবেশকে মাথায় রেখে করা হচ্ছে? বিষয়টি এমন নয় যে, সব দেশে সমান পরিমাণ লোক যাচ্ছে, কিংবা সব দেশে সমান বিনিয়োগ হচ্ছে৷
দেখা যাচ্ছে, জনপ্রিয় জায়গাগুলোতে মানুষের আনাগোনা এতটাই বেড়ে যাচ্ছে যে, তা সেই জায়গার জন্য ঝুঁকি তৈরি করছে৷ আর তাই এবারের বার্লিন পর্যটন মেলায় এ বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হচ্ছে৷ পর্যটন খাতে বিনিয়োগ সতর্কতার নীতি অবলম্বন করা জরুরি হয়ে পড়েছে বলে অনেকের মত৷
বিশ্বের ৩৫টি ধনী দেশের অর্থনৈতিকও উন্নয়ন সম্পর্কিত জোট ওইসিডি-র সদস্য রাষ্ট্রগুলো বিষয়টি বুঝতে পেরেছে৷ তাই তাদের সর্বশেষ পলিসিতে পরিবর্তন আনা হচ্ছে৷ তারা বলছে, পর্যটন খাতে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে পরিবর্তন আনা দরকার৷ আর সেই পরিবর্তন অবশ্যই পরিবেশবান্ধব হতে হবে৷
জোটের আঞ্চলিক উন্নয়ন ও পর্যটন বিভাগের প্রধান অ্যালেন ডুপেরাস এক্ষেত্রে মেক্সিকোর উদাহরণ টেনে আনেন৷ তিনি বলেন, ‘‘মেক্সিকো এরই মধ্যে তাদের জ্বালানি খাতের বিনিয়োগ নীতি বদলেছে৷ তারা নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে বিনিয়োগে উৎসাহিত করার জন্য সহজ শর্তে ঋণও দিচ্ছে৷''
তিনি বলেন, ‘‘এটি একটি উদাহরণ মাত্র৷ সারাবিশ্বে এমন অনেক উদাহরণ পাওয়া যাবে৷''
অ্যালেন মনে করেন, শুধু পরিবেশ নয়, জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার সবগুলো অর্জন করার ক্ষেত্রে পর্যটন খাতের বিনিয়োগের ভূমিকা রয়েছে৷
তিনি তাঁর বক্তব্যে নীতি নির্ধারণের পর্যায়ে চারট দিক তুলে ধরেন৷ সেগুলো হলো, সবুজ বিনিয়োগ, দায়িত্বশীল ব্যবসা, সমন্বয় ও পরিসংখ্যান৷
পর্যটনে সবুজ বিনিয়োগকে তিনি ব্যাখা করেছেন -পর্যটনের জন্য যেসব আবাসন তৈরি করা হচ্ছে সেগুলোকে জ্বালানি দক্ষ করে গড়ে তোলা, সম্পদের সর্বোচ্চ ব্যবহারের জন্য বর্জ্য ব্যবস্থাপনা উন্নত করা, পানি ব্যবস্থাপনা ও জীববৈচিত্র্য রক্ষা হিসেবে৷ এমনকি সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য রক্ষাকেও এর মধ্যে ধরেছেন তিনি৷
২০১৭ সালে পর্যটনের প্রবণতা বেড়েছে
বিদায়ী বছরে ১১০ কোটি টুরিস্ট দুনিয়া দেখতে বেরিয়েছেন, বলে বিশ্ব পর্যটন সংস্থা ইউএনডাব্লিউটিও-র বিবরণে প্রকাশ৷ অর্থাৎ পর্যটন শিল্প ২০১৬ সালের মন্দা কাটিয়ে উঠতে পেরেছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/F. Rumpenhorst
পর্যটকদের চুম্বক জার্মানি
এই প্রথমবার জার্মানিতে অতিথিদের হোটেলে রাত্রিবাসের সংখ্যা ৪৫ কোটি ছাড়িয়েছে, বলে জার্মান পর্যটন সমিতি ডিটিভি জানিয়েছে৷ দক্ষিণের বাভেরিয়া রাজ্যে টুরিস্টদের ভিড় জার্মানির সর্বোচ্চ পাহাড় সুগস্পিৎসে অবধি নতুন কেবল কারের কল্যাণে আরো বাড়বে, বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/A. Warmuth
চীনা পর্যটকরা আবার ইউরোপে আসছেন
ইউরোপিয়ান ট্রাভেল কমিশনের বিবৃতি অনুযায়ী ২০১৭ সালে ইউরোপে আন্তর্জাতিক পর্যটকদের সংখ্যা তার আগের বছরের তুলনায় আট শতাংশ বেড়েছে৷ ২০১৬ সাল সন্ত্রাসের ছায়ায় কাটার পর বিশেষ করে চীনা পর্যটকরা দৃশ্যত তাদের দ্বিধা কাটিয়ে উঠেছেন৷ ২০১৭ সালে চীন ও জাপান থেকে ইউরোপমুখী পর্যটকদের সংখ্যা বাড়ে ১৭ শতাংশ, যার পরেই আসে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ভারত – উভয় দেশ থেকে আগত টুরিস্টদের সংখ্যা বাড়ে ১৪ শতাংশ করে৷
ছবি: Getty Images/P. Le Segretain
ইউরোপে সবার সেরা আইসল্যান্ড
মাত্র তিন লাখ মানুষের দেশে আন্তর্জাতিক পর্যটকদের সংখ্যা এই নিয়ে তৃতীয় বার বাড়ল বছরে ৩০ শতাংশ হারে, যা কিনা ইউরোপে একটা রেকর্ড৷ আগ্নেয়গিরি, উষ্ণ প্রস্রবণ, জলপ্রপাত, কি নেই দেশটিতে৷ তাই ২০১৭ সালে ২৩ লাখ পর্যটক এসেছিলেন তিন লাখের মানুষের দেশটিতে৷
ছবি: picture-alliance/blickwinkel/M. Lohmann
ইউরোপে দ্বিতীয় স্থানে তুরস্ক
২০১৭ সালে তুরস্কে পর্যটকদের সংখ্যা বেড়েছে মোট ২৬ শতাংশ! অথচ ২০১৬ সালে তুর্কি পর্যটন শিল্প প্রায় ভেঙে পড়তে বসেছিল৷ কিন্তু নতুন পুটিন-এর্দোয়ান সখ্যতার পর রুশি পর্যটকরা দলে দলে তুরস্কে আসতে শুরু করেছেন৷ পশ্চিম ইউরোপ থেকে টুরিস্টদের আসা কমলে কী হবে, চীন ২০১৮ সালকে তুরস্ক পর্যটন বছর বলে ঘোষণা করেছে৷
ছবি: picture alliance/Arco Images
স্পেনে কোনোদিনই টুরিস্টের অভাব ছিল না
গত গ্রীষ্মে স্পেনে যেন আর টুরিস্ট ধরছিল না! কিন্তু তা সত্ত্বেও স্পেনে টুরিস্টদের সংখ্যা আবার বেড়েছে ১১ শতাংশ৷ ওদিকে মালর্কা কিংবা বার্সেলোনায় মানুষজন টুরিজমের বাড়াবাড়ির বিরুদ্ধে পথে নামতে শুরু করেছেন: তারা আর সমুদ্রসৈকতে ভিড়, সর্বত্র মাতাল টুরিস্ট, রাস্তাঘাটে যানজট আর পানীয় জলের সংকট চান না৷
ছবি: picture alliance/dpa/epa/M. Bruque
স্লোভেনিয়ায় মেলানিয়া এফেক্ট
শুধু মেলানিয়া ট্রাম্পের কল্যাণে ২০১৭ সালে স্লোভেনিয়ায় টুরিস্টদের সংখ্যা বেড়েছে ১৫ শতাংশ, অ্যামেরিকার ফার্স্ট লেডি সেদেশের মেয়ে কিনা৷ প্লেট, কাপ, টি-শার্ট, সব কিছুর উপর মেলানিয়ার মুখ৷ মেলানিয়া ওয়াইন, মেলানিয়া কেক, মেলানিয়া চটি – কোনো কিছুর অভাব নেই৷
ছবি: picture-alliance/dpa/R.Kaufhold
মার্কিন মুলুকে ট্রাম্প ‘এফেক্ট’
নভেম্বর মাসে মার্কিণ বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জানায় যে, ২০১৭ সালের প্রথমার্ধে তার আগের বছরের তুলনায় ৩ দশমিক ৯ শতাংশ কম টুরিস্ট মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এসেছেন৷ বিশেষ করে মেক্সিকো থেকে টুরিস্টদের আসা কমেছে ৯ দশমিক ৪ শতাংশ, আর আরব দেশগুলি থেকে ৩০ শতাংশ৷ আশ্চর্য হলেন?
ছবি: Imago/Westend61
বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হংকং
ইউরোমনিটর ইন্টারন্যাশনালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী ২০১৭ সালে দু’কোটি ৬৬ লাখ মানুষ হংকং যাত্রা করেন৷ দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে রয়েছে ব্যাংকক (দু’কোটি ১০ লাখ) ও লন্ডন (এক কোটি ৯০ লাখ)৷ সারা বিশ্বে এই ‘আর্বান টুরিজম’ বা শহর দেখার প্রবণতা বেড়েছে ১৬ শতাংশ৷
ছবি: Getty Images/AFP/A. Wallace
ক্রুজ শিপ
ক্রুজ জাহাজে চড়ে দুনিয়া দেখার প্রবণতা বেড়েছে ৪ দশমিক ৫ শতাংশ৷ এক্ষেত্রেও এই সব সুবিশাল জাহাজ ছোট ছোট বন্দরে নোঙর ফেলে পরিবেশের, বা ভেনিসের মতো ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন শহরের যে ক্ষতি করে, তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ দেখা দেওয়া স্বাভাবিক৷ কাজেই পর্যটনের ক্ষেত্রে ২০১৭ সালের বার্তা হলো: প্রবৃদ্ধি ভালো, কিন্তু যে কোনো মূল্যে নয়৷
ছবি: picture-alliance/dpa/B. Marks
9 ছবি1 | 9
‘‘সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য টিকিয়ে রাখতে হবে৷ সাংস্কৃতিক ধারা যেন অব্যাহত থাকে তেমন উদ্যোগ নিতে হবে৷'' বলছিলেন অ্যালেন৷
পর্যটন খাতে একটি দেশের সরকারের দায়িত্ব সরাসরি সবুজ বিনিয়োগ করা বা তার পরিবেশ তৈরি করা বলে মনে করেন অ্যালেন৷ তবে বেসরকারি খাতও এ দায়িত্ব এড়াতে পারে না বলে মনে করেন তিনি৷
এছাড়া, সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ের মধ্যে সমন্বয় এবং ডাটা বা পরিসংখ্যানের ওপর নির্ভর করে সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রয়োজনীয়তা দেখেন তিনি৷
ডাটানির্ভর পলিসির প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরেন স্পেনভিত্তিক পর্যটন, জ্বালানি ও শিল্প খাতের সরকারি থিংকট্যাংক সেগিটুর-এর প্রধান ফার্নান্দো দে পাবলো মার্টিনও৷
তিনি বলেন, ২০১৭ সালে স্পেনে ৮ কোটি ২ লাখ পর্যটক এসেছেন৷ এ খাতের আয় জিডিপির ১১ শতাংশ এবং দেশের ১৩ ভাগ কর্মসংস্থান করে দিচ্ছে এ খাত৷
‘‘আমরা খরচ করেছি ৮ হাজার ৭শ' কোটি ইউরো৷ ২০১৭ সালের শেষে আমাদের ট্রেড ব্যালান্স ৪ হাজার ২শ' কোটি ইউরো৷''
ওয়ার্ল্ড ইকনোমিক ফোরামের রিপোর্টেও পর্যটন খাত থেকে দেশের অভ্যন্তরীণ অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাবের ক্ষেত্রে সবগুলো দেশের শীর্ষে রয়েছে স্পেন৷
২০০৮ সাল থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত ইউরোপজুড়ে যে অর্থনৈতিক মন্দা ছিল তা কেবল এই পর্যটনের জোরেই কাটিয়ে উঠেছে স্পেন, জানান পাবলো মার্টিন৷
তবে পর্যটন খাতে বিনিয়োগ যেন স্থানীয় মানুষকে বাদ দিয়ে না হয়, সেদিকে দৃষ্টি রাখার পরামর্শ দেন তিনি৷
‘‘স্থানীয় জনগণের কথা ভুলে গেলে চলবে না৷ বিনিয়োগ এমনভাবে করতে হবে, যেন তারাও এর আওতায় পড়েন৷''
পাবলো জানান, শুধু তাই নয়, পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করার জন্য প্রাথমিকভাবে আরো ৬ কোটি ইউরো বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্পেন৷ কয়েকটি প্রকল্পও হাতে নেয়া হয়েছে৷
ওইসিডি-র নীতি-নির্ধারকরা প্রযুক্তি ও পরিবেশবান্ধব পর্যটনকেন্দ্র গড়ে তুলতে সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন৷ তাই যদি হয়, অচিরেই হয়ত বিশ্বের অনেক জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্রের চেহারাই পালটে যাবে৷
২০১৮ সালে যে ১০টি শহরে যেতে পারেন
দিন দিন সিটি ট্যুরের জনপ্রিয়তা বাড়ছে৷ আর সে কথা মাথায় রেখেই পর্যটন সাইট ‘লোনলি প্ল্যানেট’ নতুন তালিকা প্রকাশ করেছে৷ ভ্রমণের জন্য আগামী বছর সেই জায়গাগুলোকে মানুষ কেন বাছাই করবেন, সেকথাই বলা হয়েছে৷ চলুন দেখে আসি শহরগুলো৷
ছবি: Imago/INSADCO
স্পেনের সেভিয়া
‘লোনলি প্ল্যানেট’ তাদের সুপারিশ তালিকার একেবারে শীর্ষে রেখেছে সেভিয়াকে৷ ভীষণ শৈল্পিক এই শহরে গেলেই মানুষ টেলিভিশনের তুমুল জনপ্রিয় সিরিজ ‘গেইম অফ থ্রোনস-’এর অসংখ্য সেট যেন চোখের সামনে দেখতে পাবেন৷ তার ওপর ট্রাফিক জ্যামে জর্জরিত এই শহর গত কয়েক বছরে সাইকেলের শহরে পরিণত হওয়ায়, পর্যটকরা এখন আরামেই ঘুরতে পারবেন৷
ছবি: Colourbox/A. Bogacki
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ডেট্রয়েট
এক সময়ের ‘মোটর শহর’ খ্যাত ডেট্রয়েট কয়েক দশকের অবহেলার পর আবারও ঘুরে দাঁড়িয়েছে৷ সৃজনশীল তরুণরা যখন সাইকেলের দোকান আর গ্যালারির দিকে মনোযোগ দিতে শুরু করে তখন থেকেই এই পরিবর্তন আসা আরম্ভ হয়৷ লোনলি প্ল্যানেটের ভাষ্য মতে, ব্যাকপ্যাকারদের মধ্যে এই শহর বিশেষভাবে জনপ্রিয়৷
ছবি: picture-alliance/Oliver Lang
অস্ট্রেলিয়ার ক্যানবেরা
আপনি যদি ক্যানবেরাতে যান তবে অস্ট্রেলিয়াকে সবচেয়ে ভালোভাবে জানতে পারবেন৷ ন্যাশনাল গ্যালারি, ন্যাশনাল লাইব্রেরি এবং অস্ট্রেলিয়ান ওয়ার মিউজিয়াম থেকে অনেক নতুন কিছু জানতে পারবেন৷ ন্যাশনাল আরবোরেটামও ভ্রমণের এক অসাধারণ জায়গা৷ ২৫০ হেক্টর এলাকার এই পার্কে হাইকিং ও সাইকেল চালানোর ব্যবস্থা আছে৷ অস্ট্রেলিয়া ও বিশ্বের চারপাশের ৯৪টি বিরল বন, বিপন্ন এবং প্রতীকী গাছপালা আছে এই পার্কে৷
ছবি: AFP/Getty Images/C. Bennetts
জার্মানির হামবুর্গ
কেবল নতুন এল্বফিলহারমনিক কনসার্ট হলের কারণেই ভ্রমণকারীদের কাছে জার্মানির হামবুর্গ এতটা আকর্ষণীয় হয়ে ওঠেনি৷ লোনলি প্ল্যানেট বলছে, রক্ষণশীল নয় এমন মানসিকতা আর নাইট লাইফের কারণেও হামবুর্গ ইউরোপের সেরাদের মধ্যে জায়গা করে নিয়েছে৷
ছবি: picture alliance/dpa
তাইওয়ানের কাওহসিউং
লোনলি প্ল্যানেটের শীর্ষ দশে জায়গা পাওয়া একমাত্র এশীয় শহর তাইওয়ানের কাওহসিউং৷ এই বন্দরনগরীতে ঐতিহ্যবাহী মন্দির, উঁচু ভবনে থাকা ক্যাফে, প্রশস্ত সড়ক, জলাভূমির পাশের পার্ক, গণপরিবহন, সাইকেল লেন এবং বিভিন্ন সাংস্কৃতিক ভেন্যু খুব আকর্ষণীয়৷
এক সময়ের ইউরোপের সবচেয়ে বড় শহর অ্যান্টওয়ার্প ক্লাসিক্যাল আর আধুনিক সৌন্দর্যের এক অপূর্ব সংমিশ্রণ৷
ছবি: picture-alliance/Sergi Reboredo
ইতালির মাতেরা
মানুষ বাস করে, পৃথিবীর সবচেয়ে পুরনো এমন শহরগুলোর মধ্যে একটি হলো মাতেরা৷ ৯ হাজার বছরের পুরনো গুহার মতো ঘরবাড়ি, গীর্জা ও মঠ আছে এই শহরে৷ ইউরোপীয় সংস্কৃতির রাজধানী হিসেবে ২০১৯ সালে বিভিন্ন ধরনের ইভেন্টের আগাম পরিকল্পনাও তারা করেছে৷ কাজেই এমন সময়কেই বেছে নেয়া উচিত ভ্রমণের জন্য৷
ছবি: picture-alliance/dpa/R. Esposti
পুয়ের্তো রিকোর সান জুয়ান
সান জুয়ান হলো সেই শহর যেখানে ঔপনিবেশিক আর আধুনিক নগরজীবনের দারুণ মিশেল ঘটেছে৷ সেপ্টেম্বরে এই দ্বীপটিতে গত ৮৯ বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ হারিকেন ‘মারিয়া’র আঘাতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়৷ সান জুয়ানও হারিকেনের আঘাত থেকে রক্ষা পায়নি৷ তবে তারপরও এ কথা নিশ্চিত করেই বলা যায় যে, এই শহর আবারও নিজেদের আগের চেহারায় ফিরে যেতে পারবে৷
ছবি: Miriam Braun
মেক্সিকোর গুয়ানাজুয়াতো
ভীষণ সুন্দর এক টুকরা রুপার আস্তরণের ওপর দিয়ে কোনো কিছু দেখতে যেমন লাগে এই শহরের কারুকাজময় গীর্জা, চমত্কার স্কয়ার আর রংবেরংয়ের বাড়িঘরও ঠিক তেমন৷
ছবি: Fotolia/ALCE
নরওয়ের অসলো
শীর্ষ দশে জায়গা করে নেয়া পঞ্চম ইউরোপীয় শহর অসলো৷ ২০১৮তে এই শহর নানা আয়োজন নিয়ে ব্যস্ত থাকবে৷ এ বছর নরওয়েজিয়ানরা তাঁদের প্রিয় রাজা- রাণীর ৫০তম বিবাহবার্ষিকী উৎযাপন করবে, একইসাথে অসলোতে কনসার্ট আর পারফরমেন্সের ল্যান্ডমার্ক অপেরা হাউস তাদের প্রতিষ্ঠার দশম বছর পালন করবে৷ কাজেই অসলো ভ্রমনের জন্য এর চেয়ে ভালো সময় আর হতেই পারে না৷