করোনা সংক্রমণ ধরা পড়লে নিজের পোষ্যদের দূরে রাখুন৷ এমনটাই প্রস্তাব করছেন নেদারল্যান্ডসের উটরেশট বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা৷ ৪৮টি বিড়াল ও ৫৪টি কুকুরের মালিকদের করোনা হওয়ায় ঐ প্রাণীদের নিয়ে গবেষণা করেছিলেন তারা৷ গবেষকরা ১৭ দশমিক ৪ শতাংশ প্রাণীর শরীরে সংক্রমণ দেখতে পান৷ এছাড়া চার শতাংশ প্রাণীর মধ্যে করোনার উপসর্গ দেখা গেছে৷

যদিও প্রাণীদের মধ্যে মানুষের তুলনায় রোগের প্রভাব কম থাকে, কিছু কিছু ক্ষেত্রে গুরুতর হতে পারে প্রাণীর করোনা৷

২০২০ সালের মার্চ মাসের তথ্য জানায় যে বিড়ালের শরীরেও জীবিত থাকে করোনা ভাইরাস৷ সেই সময়ে চীনের একটি গবেষণা সংস্থা জানায় যে বিড়াল আরেক প্রাণীকে এই ভাইরাস দিতে পারে৷ কিন্তু এতে উদ্বিগ্ন হবার কিছু নেই কারণ তারা খুব দ্রুত অ্যান্টিবডিও তৈরি করে নিতে পারে৷

চার বছর বয়সি মালয়েশিয়ান বাঘ নাদিয়ার শরীরে শনাক্ত হয় করোনা ভাইরাস৷ সেটাই ছিল মানুষ ছাড়া অন্য কোনো প্রাণীর শরীরে প্রথম সংক্রমণের ঘটনা৷ নাদিয়ার বাসস্থান নিউইয়র্ক চিড়িয়াখানার কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করে যে, এক্ষেত্রে মানুষ থেকেই ভাইরাসটি এসেছে নাদিয়ার শরীরে৷

প্রাথমিকভাবে ধারনা করা হয়েছিল যে এই ভাইরাসটি মানুষের শরীরে আসে বাদুড়ের মাধ্যমে৷ কিন্তু গবেষকরা সাম্প্রতিককালে জানিয়েছেন যে তা হয়ত পুরোপুরি ঠিক নয়৷ বাদুড় থেকে মানুষের শরীরে যাওয়ার মাঝে থাকতে পারে আরো কিছু প্রাণীর ভূমিকা৷ কিন্তু সেগুলি কী, তা এখনও নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না বিজ্ঞানীরা৷

জার্মান ভাইরাস বিশেষজ্ঞ ক্রিস্টিয়ান ড্রোস্টেনের মতে, র‍্যাকুন কুকুর এই সংক্রমণের বাহক হতে পারে৷ চীনে ঢালাও আকারে চলে এই প্রজাতির কুকুরের কেনাবেচা, যার বেশিরভাগই হয় সবরকম স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করে৷ ফলে এই সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছেন না তিনি৷

হংকং, চীন ও অস্ট্রেলিয়ার গবেষকরা প্যাঙ্গোলিনের শরীরে একটি ভাইরাস চিহ্নিত করেছেন, যার সাথে ব্যাপক মিল রয়েছে করোনা ভাইরাসের৷ ফলে সন্দেহের তালিকায় এই প্রাণীটিও রয়েছে৷

২০১৯ সালে প্রথম করোনা ভাইরাসের নিদর্শন দেখা গিয়েছিল চীনের উহান শহরে যেখানে অন্য বহু প্রাণীর মতোই রয়েছে মুরগির বড় বড় খামার৷ কিন্তু মুরগিরা করোনা সংক্রমণ থেকে সুরক্ষিত বা ইমিউন, ঘোষণা করেছেন বিজ্ঞানীরা৷ ফলে মুরগি, হাঁস বা অন্য কোনো পাখি থেকে মানুষের শরীরে আসবে না করোনা, তা নিশ্চিত করে বলছেন বিজ্ঞানীরা৷