‘‘একজন মানুষের সঙ্গে মানুষের আচরণ যেমন হওয়া উচিত, একটি পশুর প্রতি মানুষের আচরণও ঠিক সেই রকমই হওয়া উচিত৷'' ডয়চে ভেলের সঙ্গে আলাপকালে এ কথাগুলো বলেন বাংলাদেশ প্রাণী কল্যাণ ফাউন্ডেশন ‘অভয়ারণ্য’-এর প্রতিষ্ঠাতা রুবাইয়া আহমেদ৷
বিজ্ঞাপন
[No title]
তাঁর কথায়, ‘‘যারা পশুকে ভালোবাসে না, তারা কখনও পশুদের সঙ্গে মেশেনি বা সময় কাটায়নি৷''
রুবাইয়া আহমেদের সংগঠন ‘অভয় আরণ্য' ২০১২ সাল থেকে ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের সঙ্গে যৌথভাবে কুকুরের বন্ধ্যাকরণ ও টিকা দেয়ার কাজ করেছে৷ এ পর্যন্ত ৩৬টি ওয়ার্ডে ১০ হাজারেরও বেশি কুকুরকে টিকা দেয়া ও বন্ধ্যা করেছে তারা৷ শুধু তাই নয়, গত বছরের জুন মাসে একটি কুকুরকে হত্যার দায়ে তিনজন ছেলেকে ধরে পুলিশেও দিয়েছিল সংগঠনটি৷ সেই মামলাটি এখনও চলছে৷
ডয়চে ভেলে: ‘অ্যানিমেল রাইটস' বা ‘অ্যানিমেল ওয়েলফেয়ার' – যেভাবেই বলি না কেন, বাংলাদেশে এটা নিয়ে তো আইন আছে৷ তা আইনটা কি পর্যাপ্ত না এক্ষেত্রে নতুন কিছু করা দরকার?
রুবাইয়া আহমেদ: যেটা আছে, সেটা ১৯২০ সালের আইন৷ ১৯২০ সালের আইন অনুযায়ী যে জরিমানার কথা বলা আছে, সেটা তখনকার সময়ে অনেক ছিল৷ কিন্তু ১৯২০ সালে যদি ১০০ টাকা জরিমানা হয়ে থাকে, ২০১৬ সালে এসে তো সেটা কিছুই না৷ এ কারণেই এখন এর সংশোধন দরকার৷ পাশাপাশি অনেকগুলো ‘পয়েন্ট' এর সঙ্গে যুক্ত করা দরকার, যেগুলো ঐ আইনে নেই৷ আসলে আইনটা যে খুব খারাপ তা নয়, কিন্তু অনেক পুরনো৷ তাছাড়া আইনটা সুনির্দিষ্ট না৷ তাই আমার মনে হয়, আইনটাকে সুনির্দিষ্ট করতে হবে এবং ২০১৬ সালের উপযোগী করে তুলতে হবে৷
আমাদের দেশে তো ‘অ্যানিমেল' বা প্রাণী কয়েক ধরনের আছে, আপনারা কোন ধরনের প্রাণী নিয়ে কাজ করেন?
প্রাণী কল্যাণের আওতাভুক্ত সব ধরনের ‘অ্যানিম্যাল', মানে চতুষ্পদী-দ্বিপদী সব ধরনের প্রাণী নিয়ে আমরা কাজ করি৷ একটা জায়গা থেকে তো শুরু করতে হয়৷ তাই আমরা সবচেয়ে অবহেলিত, কুকুর নিয়ে কাজ শুরু করেছি৷ এর পাশাপাশি আমরা গৃহপালিত পশু, যেমন গরু, ছাগল, হাস, মুরগি নিয়েও কাজ করছি৷ কারণ এদের আমরা খাবার ছাড়া আর কিছুই ভাবি না৷ তাদের প্রতি আচরণ কেমন হবে, তা নিয়েও আমাদের কাজ শুরু হয়েছে৷ সব প্রাণীই আমাদের কাজের আওতাভুক্ত, কিন্তু এই মুহূর্তে আমাদের ‘ফোকাস' হচ্ছে কুকুর৷
পোষা প্রাণী মানুষের সুখ ও আত্মবিশ্বাস বাড়ায়
হোক কুকুর, বেড়াল কিংবা খরগোশ – এরা ছোট, বড় বা প্রবীণ – সকলেরই বিশ্বাসী বন্ধু৷ পোষা প্রাণী ছোটদের যেমন দায়িত্ব নিতে শেখায় ও আত্মবিশ্বাসী করে, প্রবীণদের তেমনি রাখে ‘ফিট’৷ বিস্তারিত দেখুন ছবিঘরে৷
ছবি: DW/P. Rösler
শিশুদের জন্য পোষা প্রাণী
অনেক শিশু অস্থির বা অশান্ত প্রকৃতির হয়, লেখাপড়ায় মন বসে না বা অন্য কিছুতেও তেমন আগ্রহ নেই তাদের৷ এ সব ক্ষেত্রে শিশু বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ, শিশুকে যে কোনো একটি পোষা প্রাণী দিন৷ দেখবেন তাকে যত্ন, খাওয়া-দাওয়া, বাইরে ঘুরতে নিয়ে যাওয়া – এ সব করার মধ্য দিয়ে সে দায়িত্বশীল হয়ে উঠবে৷ দায়িত্ববোধ থেকেই বাড়ে মানুষের আত্মবিশ্বাস৷ তাই পোষ্য থাকলে তাদের দেখাশোনা করতে করতে পড়াশোনা, খেলাধুলাতেও ভালো করবে শিশুরা৷
ছবি: Fotolia/otisthewolf
হাঁস, মুরগি
পোষা প্রাণী বলতে যে শুধু বিদেশি কুকুর, বেড়াল বোঝায় – তা নয় কিন্তু! আমাদের দেশেও দেখা যায়, যেসব মানুষ মুরগি, হাঁস বা অন্য কোনো প্রাণী পোষেন, তাঁরা স্বাভাবিকভাবেই দায়িত্বশীল হন৷ পোষা প্রাণীর প্রতি মালিকের অনেক দায়িত্ব থাকে৷ ভোরে ঘুম থেকে উঠেই ওদের খাওয়াতে, স্নান করাতে হয়৷ আবার পোষ্য হাঁস, মুরগিরা ডিম দিলে সে ডিম শুধু খাওয়াই হয় না, আনন্দও দেয়৷ আর ডিম ফুটে বচ্চা যখন হয়, তখন তো আনন্দের সীমা থাকে না৷
ছবি: Monika Wüllner
পাখি
অনেকেরই বেড়াল বা কুকুরের লোম থেকে অ্যালার্জি হয়৷ তাই ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও তাঁরা কুকুর বা বেড়াল পুষতে পারেন না৷ তবে ইচ্ছে করলে তাঁরা বাড়িতে পাখি পুষতে পারেন, পরামর্শ ডাক্তারদের৷ খাঁচায় বন্দি পাখিও কিন্তু আপনাকে দিতে পারে অনেক সুখ আর আনন্দ৷ বিশেষ করে সেটা যদি কথা বলা পাখি হয়৷
ছবি: Proaves
মস্তিষ্কের বিশ্রাম
যাঁদের কর্মস্থলে প্রচণ্ড চাপের মধ্যে থাকতে হয়, বিশেষ করে মস্তিষ্কের চাপ যাঁদের খুব বেশি হয়, তাঁদের জন্যও পোষা প্রাণী বেশ উপকারী৷ কারণ পোষা প্রাণী ব্রেন বা মস্তিষ্ককে পুরোপুরি অন্যদিকে ঘুরিয়ে দিতে সাহায্য করতে পারে, অর্থাৎ এক্ষেত্রে মস্তিষ্কের বিশ্রাম হতে পারে সহজেই – যা সুস্থ থাকার জন্য খুবই প্রয়োজন৷
ছবি: Fotolia/Ljupco Smokovski
প্রবীণদের বন্ধু কুকুর
কুকুর যে প্রভুভক্ত প্রাণী – সেকথা সকলেই জানেন৷ জার্মানিতে কুকুরের মালিকরা তাই গর্ব করেই বলেন, তাঁরা বাড়ি ফেরার আগেই দরজায় ঘাপটি মেরে বসে থাকে কুকুরটি, প্রিয় মালিককে লেজ নেড়ে সম্ভাষণ জানানোর জন্য৷ জার্মানিতে পোষা কুকুর রয়েছে পাঁচ মিলিয়নেরও বেশি৷ কারণ কুকুরকে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে দিনে অন্তত পাঁচবার বাড়ির বাইরে নিয়ে যেতে৷ এভাবেই কুকুর তার মালিককে মুক্ত বাতাসে হাঁটিয়ে ‘ফিট’ রাখে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Landov Mike Cardew
নিঃসঙ্গতা দূর করে
বেশ কয়েকটি সমীক্ষার ফলাফলে দেখা গেছে, যাঁদের বাড়িতে পোষা প্রাণী আছে তাঁরা সাধারণত স্থিতিশীল ও সুখী হন, একাকিত্বে ভোগেন না৷ পশ্চিমা বিশ্বে অনেক জায়গায় দেখা যায় যে, কুকুরের মালিকদের মধ্যে একটা বন্ধুত্ব ও আন্তরিকতা তৈরি হয়েছে, শুধুমাত্র কুকুরকে বাড়ির বাইরে নিয়ে যাওয়ার মধ্য দিয়ে৷ ইউরোপে প্রবীণদের মধ্যে নিঃসঙ্গতা অসুস্থ থাকার একটি বড় কারণ৷একটা কুকুর বা বেড়াল থাকলে সেই নিঃসঙ্গতা থেকেও মুক্তি!
ছবি: picture-alliance/dpa
সন্তানের সাধ
নিঃসন্তান অনেক নারীই প্রাণী পোষেন এবং এর মধ্য দিয়ে তাঁরা খানিকটা হলেও মায়ের দায়িত্ব পালন করেন৷ পোষা প্রাণীটিকে ভালোবাসা দেন একং অনেকক্ষেত্রে সেটা ফেরতও পান৷ পোষা প্রাণী তাই নিঃসন্তান বাবা-মায়ের নিঃসঙ্গতাও দূর করে৷ বলা যেতে পারে, দুধের স্বাদ ঘোলে মেটানোর একটা উপায় অবশ্যই প্রাণী পোষা৷
ছবি: picture-alliance/dpa
মৃত্যুর পরও একসাথে
জার্মানিতে কুকুরদের জন্য আলাদা কবরস্থান আছে৷ তবে সম্প্রতি জার্মানির রাইনলান্ড-ফালৎস রাজ্যে এমন একটি কবরস্থান তৈরির পর উদ্বোধন হয়েছে, যেখানে কুকুর এবং কুকুরের মালিক মৃত্যুর পর একসাথে চিরনিদ্রায় থাকতে পরেন৷ অর্থাৎ যাঁরা জীবিত অবস্থায় কুকুরের সঙ্গ উপভোগ করেছেন এবং মৃত্যুর পরও একসাথে থাকতে চান, এমন মানুষদের জন্যই এ কবরস্থান৷
ছবি: DW/P. Rösler
8 ছবি1 | 8
পশুর প্রতি মানুষের আচরণ কেমন হওয়া উচিত?
পশুর প্রতি মানুষের আচরণ হওয়া উচিত – একজন মানুষের প্রতি মানুষের আচরণ যেমন, ঠিক তেমন৷ প্রাণীরা আমাদের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত৷ আপনি যদি পশু-পাখির প্রতি সহানুভূতি না দেখাতে পারেন, তাহলে আপনি মানুষের প্রতিও সহানুভূতি দেখাতে পারবেন না৷ পশু-পাখি এত নিষ্পাপ, এত ‘ইনোসেন্ট', যা আপনি মানুষের মধ্যেও পাবেন না৷ পশু-পাখি তো কোনো পাপ করতে পারে না৷ এত নিষ্পাপ প্রাণীর প্রতি যদি আমরা মমতা দেখাতে না পারি, তাহলে মানুষের প্রতি মমত্ব দেখানোর কোনো বিষয় তৈরি হয় না৷ সারা বিশ্বে স্বীকৃত যে, মানুষের প্রতি মানুষের ‘ভায়োলেন্স' বা সহিংসতার সূত্রপাত হয় পশু-পাখির প্রতি ‘ভায়োলেন্স' থেকে৷ যুক্তরাষ্ট্রের এফবিআই একটা রিপোর্ট করেছিল যে, তাদের দেশের অধিকাংশ সিরিয়াল কিলারদের ‘অ্যানিমেল অ্যাবিউজ' করার ‘ব্যাকগ্রাউন্ড' আছে৷ ছোটবেলা থেকে প্রাণীদের ওপর নির্যাতন করার প্রবণতা থাকলে এবং সেটা নিয়ে কেউ যদি কিছু না বলে, তাহলে তারা বড় হয়ে মানুষের প্রতিও অমানবিক আচরণ করে৷ একটার সঙ্গে অন্যটা ওতপ্রোতভাবে জড়িত৷ তাই ‘অ্যানিমেল ওয়েলফেয়ার' ছাড়া ‘হিউম্যান ওয়েলফেয়ার' সম্ভব না৷ একটাকে বাদ দিয়ে একটা করতে হবে, এমনটাও না৷ সব একসঙ্গে করতে হবে, করা সম্ভবও৷ আর সেটাই একটা জাতির লক্ষ্য হওয়া উচিত৷
আপনি কিভাবে ‘অ্যানিমেল ওয়েলফেয়ার'-এর সঙ্গে যুক্ত হলেন? বা আপনার ভালোবাসাটা কিভাবে তৈরি হলো?
বিড়াল সম্পর্কে কিছু অবাক করা তথ্য
জার্মানিতে অনেকেই বিড়াল পোষে৷ প্রায় ৮২ লাখ পোষা বিড়াল আছে জার্মানিতে৷ অনেক ধরনের বিড়ালই আছে৷ তাদের স্বভাব-প্রকৃতিতেও আছে বৈচিত্র্য৷ অনেকেরই প্রিয় এই পোষা প্রাণী সম্পর্কে মজার কিছু তথ্য থাকছে আজকের ছবিঘরে৷
ছবি: Fotolia/Forewer
মাপযন্ত্র গোঁফ
গোঁফহীন বিড়াল দেখেছেন কখনো? গোঁফহীন বিড়াল হয়ইনা, দেখবেন কি করে! গোঁফ দিয়ে খুব গুরুত্বপূর্ণ কাজও করে বিড়াল৷ ছোট্ট গর্ত দিয়ে যেতে চাইলে বিড়াল কিন্তু ওই গোঁফ দিয়েই মেপে নেয়, তারপর ঠিক করে যাওয়ার চেষ্টা করবে কিনা৷ একটা বিশেষ সুবিধাও আছে ওদের৷ কলারবোন নেই বলে মাথাটা গলিয়ে দিলেই হলো, তারপর অনায়াসে চলে যায় গর্তের ওপারে৷
ছবি: picture-alliance/Asian News Network
নাক করে জিভের কাজ
মানুষের জিভে ৯ হাজার এমন ধরনের ‘সেন্সর’ আছে যেসবের কাজই হলো খাবারের স্বাদ পরীক্ষা করা৷ বিড়ালের জিভে সেরকম সেন্সর মাত্র ৪৭৩টি৷ ফলে স্বাদ বোঝার কাজে তাদের জিভ অনেক কম কার্যকর৷ বিড়াল তাই বাধ্য হয়ে খাবারে স্বাদ বোঝে নাক দিয়ে গন্ধ শুঁকে৷
ছবি: Fotolia/darkbird
বিড়ালের নাকের ছাপ....
বিড়াল নাকি গোঁফ দিয়ে চেনা যায়? যারা বলেন, ভুল বলেন৷ প্রতিটি মানুষের ফিঙ্গারপ্রিন্ট বা আঙুলের ছাপ যেমন একেবারে আলাদা, সেরকমই বিড়ালের নাক৷ একেক বিড়ালের একেকরকম নাক৷ সুতরাং সব কিছু কাকতালীয়ভাবে যদি কখনো মিলেও যায়, তবু দুটো বিড়ালের নাক কখনো হুবহু একরকম হতে পারেনা৷ কিছু না কিছু পার্থক্য থাকবেই৷
ছবি: picture-alliance/chromorange/S. Metzner
মানুষের রক্তচাপ কমায় বিড়াল!
গায়ে হাত বোলালে বা কোলে নিয়ে আদর করলে বিড়াল যে আহ্লাদ করে ঘরঘর আওয়াজ করে, সেই আওয়াজ শুনলে নাকি মানুষের উচ্চ রক্তচাপ কমে যায়৷ এক গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে এটা৷
ছবি: picture-alliance/dpa
অন্ধকারে দেখে ভালো
অন্ধকারে খুব ভালো দেখে বিড়াল৷ কোনো কিছু পরিষ্কার দেখার জন্য মানুষের যতটা আলোর প্রয়োজন তার ছয় ভাগের একভাগ আলোতেই সেই বস্তুটি পরিষ্কার দেখতে পারে বিড়াল৷
ছবি: picture-alliance/dpa
সবচেয়ে বড় চোখ
পৃথিবীর সব প্রাণীর মধ্যে শরীরের অনুপাতে বিড়ালের চোখই সবচেয়ে বড়৷ হাতি খুব বড়, তিমি মাছও বিশাল, তাদের চোখ কিন্তু শরীরের অনুপাতে বিড়ালের তুলনায় অনেক ছোট৷
ছবি: Fotolia/R. Schramm
বিড়ালের যত ডাক
মানুষের মতো বিড়ালও কিন্তু একেক দেশে একেক ভাষায় কথা বলে, অর্থাৎ বিড়ালের ‘মিঁউ, মিঁউ’ নাকি সবদেশেই একরকম নয়৷ তাই কাটালুনিয়া বিড়ালরা ডাকলে সেই ডাক শোনায় ‘মিঁউ’-এর মতো, ক্যান্টনের বিড়াল ডাকে ‘মাও, মাও’, ডেনমার্কের ‘মিয়াভ’, নেদারল্যান্ডসের ‘মিয়াউ’, ইংল্যান্ডের ‘মিয়ো’, ফ্রান্সের ‘মিয়াও’, গ্রিসের ‘নাইউ’ এবং জাপানের বিড়ালের ডাক নাকি ‘ন্যায়ান, ন্যায়ান’-এর মতো শোনায়৷
ছবি: Fotolia/Forewer
7 ছবি1 | 7
আমার ভালোবাসাটা দুঃখের জায়গা থেকে তৈরি হয়েছে৷ আমার পোষা কুকুরটাকে ২০০৯ সালে সিটি কর্পোরেশন মেরে ফেলে৷ রাগ করে বসে থেকে তো লাভ নেই...৷ তা সেই রাগটাকে কাজে লাগাতে পারার সৌভাগ্য আমার হয়েছে৷ যারা কুকুর-বিড়াল ভালোবাসে না বলে, বা পশু-পাখি ভালোবাসে না বলে, তারা কখনও ওদের সঙ্গে সময় কাটায়নি৷
আপনার প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ প্রাণী কল্যাণ ফাউন্ডেশন৷ সিটি কর্পোরেশনের সঙ্গে আপনারা যৌথভাবে কুকুরের ‘বার্থ কন্ট্রোল' নিয়ে কাজ করছেন৷ সেটা কতদূর এগুলো বা কী পরিমাণ কাজ ইতিমধ্যে হয়েছে?
২০১২ সাল থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত আমরা ঢাকা সিটি কর্পোরেশন এলাকায় ৩৬টি ওয়ার্ডে ১০ হাজারেরও বেশি কুকুরকে বন্ধ্যাকরণ ও টিকা দিয়েছি৷ গত বছরই এই ‘প্রোগ্রামটা' গোটা ঢাকা শহরে প্রসারিত হওয়ার কথা ছিল৷ কিন্তু নির্বাচনসহ নানা জটিলতার কারণে এগোয়নি৷ এখন নির্বাচিত দুই মেয়র আমাদের অসম্ভব রকম সহযোগিতা করছেন৷ আশা করছি, শিগগিরই আমরা নতুন করে আবার কাজ শুরু করবো৷
আমরা জানি যে, গত বছরের জুনে একটি কুকুরকে হত্যার দায়ে তিনটি ছেলেকে ধরে আপনারা পুলিশে দিয়েছিলেন৷ সেই মামলার সর্বশেষ অবস্থা কী?
আগামী মার্চ মাসে মামলার একটা ‘হিয়ারিং' আছে৷ আমরা যাবো, আমাদের দিকটা বলবো৷ এই ধরনের কাজকে আমরা ‘এনকারেজ' করি না৷ আমাদের সমাজে এই ছেলেগুলোকে হয়ত কেউ এ সব হাতে ধরে শেখায়নি যে, কুকুরকে বা প্রাণীদের এভাবে আঘাত করতে হয় না৷ আমরা কোর্টের কাছে আবেদন করবো যেন ঐ ছেলেগুলোর ‘পার্মানেন্ট রিহ্যাবিলিটেশন' হয়৷ শুধু এরা না, যারা পশু নির্যাতন করবে, তাদের সবার ‘রিহ্যাবিলিটেশন' দরকার৷ কারণ এটা একটা ভয়াবহ মানসিক বিকৃতি৷ এটা সমাজে ছড়িয়ে গেলে, তা ভয়ংকর হবে৷
বন্ধু, পশুর প্রতি মানুষের আচরণ কেমন হওয়া উচিত বলে আপনি মনে করেন? জানান নীচের ঘরে৷
পশুদের ‘সেলফি’!
এটা সেলফির যুগ৷ তা মানুষ কোটি কোটি সেলফি তুললে পশুদের থাকবে না কেন? তানজানিয়ার সেরেংগাতি ন্যাশনাল পার্কে বিজ্ঞানীরা একটা-দুটো নয়, ৩ লাখ ২২ হাজার ‘সেলফি’ হাতে পেয়েছেন৷ সবই পশুদের! দেখুন পশুদের মজার কিছু ছবি৷
ছবি: DLCcovert.com/Snapshot Serengeti
হরিণ, হাসো তো দেখি...
সেরেংগেটিতে পশুদের ছবি তোলার আয়োজনটা ছিল ব্যাপক৷ ‘স্ন্যাপশট সেরেংগেটি’ নামের এই প্রকল্পে কাজ করেছেন ২৮ হাজার স্বেচ্ছাসেবী৷ পশুদের ৩ লাখ ২২ হাজার ছবি নিয়ে কাজ করতে হয়েছে তাঁদের৷ তাঁদের বেছে নেয়া ছবিগুলোর মধ্যে গোমড়ামুখো এই অ্যান্টিলোপের ছবিটিও ছিল৷ লুকানো ক্যামেরার একেবারে সামনে এসে দাঁড়িয়েছিল হরিণটি৷ খুবই গম্ভীর এক হরিণ৷ ‘স্মাইল, প্লিজ’ বললেও হাসতো কিনা কে জানে!
ছবি: DLCcovert.com/Snapshot Serengeti
এত কাছে!
১ হাজার ১২৫ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের সেরেংগেটির আনাচে-কানাচে ২৫৫টি ক্যামেরা লুকিয়ে রেখেছিলেন বিজ্ঞানীরা৷ একটি ক্যামেরায় ধরা পড়ে এই শকুন৷ ‘ভদ্রলোক’, ক্যামেরার এত কাছে চলে এসেছিলেন যে তার মাথায় উকুন থাকলে সেই উকুনটাও দেখা যেত৷
ছবি: DLCcovert.com/Snapshot Serengeti
বন্ধুতা
গণ্ডারের পিঠে পাখি৷ বন-জঙ্গলে এমন দৃশ্য বিরল না হলেও এই ছবিটি কিছুটা বিরল৷ পাখিটির নাম অক্সপেকার৷ এরা মূলত পোকামাকড় খায়৷ গণ্ডারের পিঠের পোকা খুব প্রিয় ওদের৷ ছবির এই পাখিটিও গণ্ডারটির পিঠের পোকা খাচ্ছে৷
ছবি: DLCcovert.com/Snapshot Serengeti
হায়েনার শিকারের মুহূর্ত
৩ লাখ ২০ হাজার ছবির জন্য নিতে হয়েছে ১২ লাখ স্ন্যাপ৷ বিরল অনেক দৃশ্য ধরা পড়েছে ক্যামেরায়৷ হায়েনার এই পাখি শিকার মুহূর্তটিও কিন্তু বলে-কয়ে ছবি তুলতে গেলে ফ্রেমবন্দি করা যেত না৷