অভিযোগ উঠেছে, বোমাটা যে তামান্নার বাড়ির দিকে ফেলা হয়েছিল, তার কারণ বিপক্ষ শিবিরের রাজনৈতিক কর্মীকে শিক্ষা দিতে। বাবা-মার একমাত্র সন্তানকে তাদের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়েছে ওই বোমা। তারপর তার বাড়ি গিয়ে কী করে টাকাভর্তি একটা খাম মায়ের হাতে তুলে দেন বিধায়ক? তিনি কি এটুকুও বোঝেন না, এই কাজ তিনি করতে পারেন না!
নাকি, এটাই এখন পশ্চিমবঙ্গের দস্তুর। অন্যায় হবে, সহিংসতা হবে, প্রাণ যাবে। তারপর তাদের বাড়ি গিয়ে খামে করে টাকা দিয়ে আসলেই সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে! টাকা দিলেই কি সব অন্যায় থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে?
তামান্নার মা সোচ্চারে সেই খাম প্রত্যাখান করেছেন। তিনি বলেছেন, ''কীসের জন্য এই খাম দিচ্ছেন? আমার সঙ্গে এসব করবেন না। আমি আর ধৈর্য রাখতে পারছি না। আমার আর কেউ নেই। এই টাকা দিয়ে আমি কী করব?'' চিৎকার করে তিনি বলেন, ''এই বুকের মাঝে আঘাত লেগেছে। আমার মেয়ে এই বুক খুলে চলে গেছে। আমি জানতে চাই কেন ওই বোমা উদ্ধার হলো না।'' এর জবাব না দিয়ে টাকার খাম কি মায়ের হাতে তুলে দেয়া যায়?
নবনির্বাচিত বিধায়ক আলিফা আহমেদ সম্পর্কে তামান্নার মা হুমায়ুন কবিরকে বলেন, ''ওর উপর কী করে ভরসা থাকে? একবারও আসেনি। একবার আসার দরকার নেই? দুনিয়া কেঁদে যাচ্ছে, তার কানে পৌঁছাচ্ছে না। তার জন্য আমার মেয়ে চলে গেলো।''
পরে তিনি এবিপি আনন্দকে বলেছেন, ''আমার মুখ বন্ধ করতে টাকা দিতে এসেছিল। আমি জানতে চাইলাম, ওই বোমা কেন উদ্ধার হলো না, জবাব না দিয়ে চলে গেলো।''
হুমায়ুন কবিরের যুক্তি, তিনি রাজনীতিক হিসেবে যাননি। ব্যক্তিগতভাবে গেছেন, একটি অরাজনৈতিক সংগঠন আছে, তার হয়ে। ব্যক্তিগতভাবে কিছু সাহায্য করতে চেয়েছিলেন। পরিবার নিতে চায়নি।
রোববার সকালে উত্তর ২৪ পরগনার দত্তপুকুরে বেআইনি বাজি কারখানায় বিস্ফোরণে সাতজনের মৃত্যু হয়েছে।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
ভয়াবহ বিস্ফোরণ
দত্তপুকুরের মোচপোল গ্রামে কারখানায় বিস্ফোরণে পুরো এলাকা কেঁপে ওঠে। এমনকী বারাসত থেকেও বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। পুরো বাড়িটি ভেঙে পড়ে গেছে।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
মৃত সাত
বিস্ফোরণের পর ছয়জনকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতালে একজনের মৃত্যু হয়েছে। দশজন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। স্থানীয় মানুষদের দাবি, শুধু বাজির কারখানায় যারা ছিলেন, তারাই নন, বাইরে পথচারীদেরও মৃত্যু হয়েছে।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
কী হয়েছিল?
রোববার সকাল আটটা নাগাদ দোতলা একটি বাড়িতে বিস্ফোরণ হয়। পুরো বাড়িটি ভেঙে পড়ে। অভিযোগ, এখানে বেআইনিভাবে বাজি তৈরি হতো। মজুত করে রাখা বাজিতে আগুন লেগে বিস্ফোরণ হয়। আশপাশের কয়েকটি বাড়িও ভেঙে পড়ে। ওই বাড়ির ছাদের একটা অংশ পাশের বাড়িতে গিয়ে পড়ে।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
বাজি না বোমা?
পশ্চিমবঙ্গ আতসবাজি ব্যবয়াসী সমিতির পক্ষ থেকে ঘটনাস্থল ঘুরে এসে দাবি করা হয়েছে, বাজি নয়, বোমা বিস্ফোরণ হয়েছে। সমিতির নেতা বাবলা রায় অভিযোগ করেছেন, ''এখানে বাজি তৈরি হতো না। বোমা তৈরি হতো। আতসবাজির মশলা তারা পাননি। বোমার মশলা পেয়েছেন ''
ছবি: Satyajit Shaw/DW
তদন্তকারীরা কী পেলেন?
তদন্তকারী অফিসাররা ঘটনাস্থলে স্টোন চিপস পেয়েছেন, চকচকে জিনিস পেয়েছেন, যেটা অ্যালুমিনিয়াম বা ম্য়াগনেশিয়াম জাতীয় কিছু। এই সব জিনিস বাজি ও বোমা দুটোতেই লাগে। পরিমাণগত তফাৎ থাকে। এগুলি পরীক্ষার জন্য পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়েছে।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
গ্রামবাসীর বক্তব্য
গ্রামবাসী শেখ মেকেয়ার আলি বলেছেন, ওই কারখানায় যারা কাজ করতো সবাই মুর্শিদাবাদের মানুষ। স্থানীয় মানুষকে কারখানায় ঢুকতে দেয়া হতো না। তাই কারখানার ভিতরে কী হতো, তা তারা জানেন না।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
গাড়ি ভাঙা হলো
একটা বাড়ি ভাড়া নিয়ে বাজি কারখানা চলত। এর মালিক ছিল কেরামত আলি। বিস্ফোরণে তার ছেলে রবিউল আলি মারা গেছেন। কেরামতের গাড়ি ভেঙে দিয়েছে গ্রামবাসীরা।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
গ্রেপ্তার এক
পুলিশ এখনো পর্যন্ত একজনকে গ্রেপ্তার করেছে। তার নাম সফিকুল। বাজি কারখানায় তার অংশীদারি ছিল বলে মনে করা হচ্ছে। বিস্ফোরণ এতটাই তীব্র ছিল যে, পাশের অনেক বাড়িই ভেঙে গেছে।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
তৃণমূলের অভিযোগ
তৃণমূলের নেতা ও রাজ্য়ের মন্ত্রী রথীন ঘোষ বলেছেন, ''ওই বুথে আইএসএফ জিতেছে। সেই দলের নেতা রামজান আলি মুর্শিদাবাদ থেকে মানুষ এনে বোমা বানাচ্ছিল। আমরা এই বাজির কারখানার কথা জানতাম না। পুলিশও জানত না।''
ছবি: Satyajit Shaw/DW
আইএসএফের পাল্টা অভিযোগ
আইএসএফ নেতা নওসাদ সিদ্দিকি ঘটনাস্থলে গেছিলেন। তিনি বলেছেন, আইএসএফ বেআইনি বাজি কারখানা চালালে কি পুলিশ চুপ করে বসে থাকত? এই বাজি কারখানা ছিল তৃণমূলের দুই নেতা কেয়ামত আলি, আজিবর আলির। তারা এখন পালিয়ে বাঁচার চেষ্টা করছে। যারা আইএসএফের বিরুদ্ধে অভিযোগ করছে, তারাই বাজি কারখানা থেকে টাকা পেত।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
বিজেপি-র দাবি
বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে চিঠি লিখে বলেছেন. এই ঘটনার তদন্ত এনআইএ-কে দিয়ে করানো হোক। তার সন্দেহ, এর পিছনে জঙ্গিরা আছে।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
একের পর এক বাজি কারখানায়
এর আগে বজবজ, এগরা, মহেশতলা, পিংলায় বাজি কারখানায় বিস্ফোরণ হয়েছে। সেখানেও বোমা তৈরির অভিযোগ উঠেছে। ওই বিস্ফোরণ নিয়ে সোরগোল থামার পরই আবার যে কে সেই অবস্থা। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে যখন সমানে বোমাবৃষ্টি দেখেছে পশ্চিমবঙ্গ, তখন প্রশ্ন উঠেছিল, এত বোমা আসছে কোথা থেকে?
ছবি: Satyajit Shaw/DW
গ্রামবাসীর কথায়
শাহানারা বিবি জানিয়েছেন, ''আমাদের ছেলেরা বারণ করত। কিন্তু পুলিশ তাদের কেস দিয়ে থানায় ঢুকিয়ে দিত।''
ছবি: Satyajit Shaw/DW
13 ছবি1 | 13
পশ্চিমবঙ্গে একের পর এক ঘটনা ঘটে। তার সঙ্গে যদি রাজনীতি জড়িত থাকে, তারপর সুবিচার পাওয়া নিয়ে বারবার প্রশ্ন ওঠে। আরজি কর হাসপাতালে ধর্যণের পর খুন হয়ে যাওয়া চিকিৎসকের বাবা-মা সমানে প্রশ্ন করে যান, তার জবাব পাওয়া যায় না। বীরভূমে পুলিশ কর্মীকে অকথ্য ভাষায় ভয় দেখানোর পর তৃণমূল নেতার কিছু হয় না। শিক্ষকের চাকরি বিক্রি হয়, মন্ত্রীর নিকটজনের কাছ থেকে টাকার পাহাড় উদ্ধার হয়, ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের টাকা নেয়ার দৃশ্যের ভিডিও সামনে আসার পরেও কিছু হয় না, সারদার মতো কেলেঙ্কারিও একদিন ধামাচাপা পড়ে যায়। রাজ্যে একের পর এক সহিংসতা হয়, কিন্তু তারপর? এই প্রশ্ন উঠতে থাকে, উঠতেই থাকে।
এই পরিপ্রেক্ষিতে কালীগঞ্জে মৃত নাবালিকার মায়ের হাতে ক্ষমতাসীন দলের এক বিধায়কের টাকার খাম দেওয়ার কথা ভাবতে পারেন কি করে? তর্কের খাতিয়ে ধরে নিলাম, সমবেদনা থেকে, কষ্ট থেকে এই কাজ করেছেন তিনি। কিন্তু তিনি একবারও ভাববেন না, এর প্রতিক্রিয়া সদ্যসন্তান হারানো মায়ের কাছে কী হতে পারে? নাকি তারা মনে করেন, পশ্চিমবঙ্গে হয় তারা যা খুশি তাই করতে পারেন, অথবা কিছুদিন পরেই তো মানুষ সবকিছু ভুলে যাবেন, তাদেরই ভোট দেবেন, তাই তারাও এরকম অমানবিক কাজ করতে পারবেন। তারা আসল কাজ অর্থাৎ দোষীদের শাস্তি দেয়ার কাজ ছেড়ে দিয়ে শুধু টাকা দিয়েই দায় শেষ করে দিতে পারবেন। হুমায়ুন কবির তো সাবেক আইপিএস অফিসার। তিনি তো আরো ভালোভাবে জানেন, এই ধরনের ঘটনার ক্ষেত্রে আগে দোষীদের গ্রেপ্তার করতে হয়, মানুষ যাতে ন্যায় পায়, তার ব্যবস্থা করতে হয়। টাকার খাম নিয়ে যাওয়ার পর তামান্নার মা যদি বলেন, 'আমার মুখ বন্ধ করতে এসেছিল', তাহলে কি তাকে কোনো দোষ দেয়া যায়।
বিস্ফোরণের গ্রাম বলছে, বোমা তৈরি হতো বাজি কারখানায়
এগরা থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরে খাদিকুল গ্রাম। সেখানেই বাজি তৈরির কারখানায় মঙ্গলবার ভয়ংকর বিস্ফোরণ হয়েছে। কারখানাটি ভানু বাগের। অভিযোগ, তিনি তৃণমূলের সঙ্গে যুক্ত। উপরের ছবিটি ভানু বাগের কারখানার। এই কারখানায় বেআইনিভাবে বাজি বানানো হতো বলে অভিযোগ।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
মৃতদেহ ছিটকে পড়ে রাস্তায়
বিস্ফোরণের তীব্রতা এতটাই বেশি ছিল যে, মৃতদেহগুলি ছড়িয়ে পড়ে রাস্তায়। কারখানা থেকে বেশ কিছুটা দূরে।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
বাজি না বোমা?
বিস্ফোরণের তীব্রতা দেখে সাবেক পুলিশ কর্তা সলিল ভট্টাচার্য জানিয়েছিলেন, বাজি থেকে এরকম হয় না। বোমা থেকে হয়।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
'বোমা তৈরি হতো'
স্বামী শক্তিপদ বাগের সঙ্গে মালতী বাগ ওই কারখানায় কাজ করতেন। স্বামী মারা গেছেন। সেদিন মালতী দেরি করে যাবেন ঠিক করেছিলেন বলে বেঁচে গেছেন। ডিডাব্লিউকে তিনি বলেছেন, ''ওরা সবরকম বোমা বানাতো। অভিযুক্ত ভানু বাগও আগে বোমা বানাতো। আমি চাই দোষীদের শাস্তি হোক।''
ছবি: Satyajit Shaw/DW
একই কথা প্রাণকৃষ্ণের
গ্রামবাসী প্রাণকৃষ্ণ মাইতি ডিডাব্লিউকে বলেছেন, বিশাল আওয়াজ হয়। আমরা তো প্রথমে ঢুকতে পারিনি। পরে দেখি, পুকুরে দেহ ভাসছে। তার দাবি, এখানে আগেও তিনবার আগুন লেগেছে। মানুষ মারা গেছে। কারখানায় বোমা বানানো হতো।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
চৈতন্য ভুইঞাঁর অভিযোগ
গ্রামবাসী চৈতন্য ভুইঞাঁ ডিডাব্লিউকে বলেছেন, পুকুরে দেহ পড়ে। এক দেড় ঘণ্টা পরে পুলিশ আসে।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
বেলারানি যা বললেন
গ্রামের বাসিন্দা বেলারানি মাইতি ডয়চে ভেলেকে বলেছেন, আমাদের বাড়ির কাচ ভেঙেছে। প্রচণ্ড শব্দের পর শুধু কালো ধোঁয়া দেখতে পাই। আমরা বাড়ি ছেড়ে চলে আসি।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
ভানু বাগ গ্রেপ্তার
বিস্ফোরণ-কাণ্ডের মূল অভিযুক্ত ভানু বাগকে ওড়িশার কটক থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তার করা হয়েছে তার ভাইপো এবং ছেলেকেও। গত ৩০ বছর ধরে সে বাজি বানাতো। ২০১১-র পর থেকে তার সঙ্গে তৃণমূলের সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ হয় বলে অভিযোগ।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
বাংলাদেশে যেত ভানুর বাজি
ভানু বাগ সম্পর্কে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, ভানু বাগকে কালীপুজোর সময় গ্রেপ্তার করা হয়। কিন্তু সে জামিন পেয়ে যায়। ওড়িশা সীমানার কাছে সে বেআইনিভাবে বাজি কারখানা চালাত। মমতা বলেছেন, আমি শুনেছি, ও বাংলাদেশে এবং ওড়িশাতে বাজি সরবরাহ করতো। উপরের ছবিতে ভানু বাগের বাড়ি।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
রাজনীতি চলছে
বিস্ফোরণের পরেই রাজনৈতিক নেতারা আসছেন এই গ্রামে। বিরোধী নেতা শুভেন্দু অধিকারী বুধবার এগরায় যান। তিনি অভিযোগ করেছেন, ভানু তৃণমূলের বড় নেতা। ২০১৩ সালে পঞ্চায়েত সদস্য ছিল। ২০১৮ সালে বৌমাকে সদস্য করে সে। শুভেন্দু এনআইএ তদন্ত দাবি করেন। বৃহস্পতিবার খাদিকুল যেতে পারেন দিলীপ ঘোষ, সুকান্ত মজুমদারেরা। উপরের ছবিতে এগরা হাসপাতাল। আহতদের নিয়ে আসা হয়েছে এখানে।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
তৃণমূলের নেতারা
বিজেপি-র পরেই তৃণমূলের নেতারা গ্রামে যান। মন্ত্রী মানস ভুইঞাঁ, বিপ্লব রায়চৌধুরী, বিধায়ক তরুণ মাইতি, দোলা সেন, সৌমেন মহাপাত্ররা যেতেই তাদের ঘিরে বিক্ষোভ দেখানো হয়। মানস জানান, দোষীদের শাস্তি দেয়া হবে। ক্ষতিপূরণও দেয়া হবে। উপরের ছবিতে দেখা যাচ্ছে, বিস্ফোরণের পর গ্রামের বাড়ির কাচ ভেঙে গেছে।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
কেমন করে চলে বেআইনি কারখানা?
মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, কারখানাটি বেআইনি ছিল। স্থানীয় মানুষের প্রশ্ন, তাহলে কী করে এই কারখানা চলতো? কোনো লাইসেন্স ছিল না। তারা বাজি না বোমা বানাচ্ছে, সেটা দেখার জন্যও কোনো নজরদারি ছিল না। উপরে থানার ছবি।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
আরো আছে
স্থানীয় মানুষের অভিযোগ, এরকম বাজি কারখানা ওই এলাকায় আরো আছে। বাজির চাহিদা আছে। এখন প্রায় সব উৎসবেই বাজি ফাটে। গ্রামের ভিতরে প্রায় কোনো কারখানাতেই লাইসেন্স নেই। এগরার বিস্ফোরণের পর কি এইসব কারখানা বন্ধ হবে? উপরের ছবিতে খাদিকুল গ্রাম।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
13 ছবি1 | 13
সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেছেন, ''ওরা বলছে, টাকা নাও, সব ভুলে যাও। কিন্তু মেয়ের শোক টাকা দিয়ে ভোলা যায় না। টাকা পেলেও মেয়েকে ফেরত পাওয়া যায় না। আমি মেয়েটির মাকে স্যালুট জানাই।''
আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকি বলেছেন, ''এই সময় এমনভাবে টাকা দেয়া উচিত নয়। উনি বলেছেন, নিজের পক্ষ থেকে দিচ্ছি। সেটা ঠিক, নাকি সরকার তাকে পাঠিয়েছিল ম্যানেজ করার জন্য, সেটা দেখার বিষয়। একটা প্রাণের দাম টাকা দিয়ে হয় না।''
পশ্চিমবঙ্গে ভোট হবে, সহিংসতা হবে, প্রচুর মানুষ মারা যাবেন এটাই যেন স্বাভাবিক ঘটনা। ভোটের পর আবার সহিংসতা হবে, মানুষ মারা যাবেন। ভোটে জিতে বিজয়মিছিল থেকে বোমা ছোড়া হবে। মাঝেমাঝেই বাজির কারখানায় বিস্ফোরণ হবে, অভিযোগ উঠবে, বোমা বাঁধা হচ্ছিল। তারপর আবার সবকিছু সহজ স্বাভাবিক হয়ে যাবে। নিজেদের গায়ে তো আঁচ লাগছে না মনে করে এবং আপাতত শান্তিকল্যাণ ভেবে আমরা হয় তরজায় অথবা মেলায় বা উৎসবে মেতে উঠব।