পশ্চিমবঙ্গের ষষ্ঠ পর্বের ভোটেও গুলি, বোমা, সহিংসতা
২২ এপ্রিল ২০২১
পশ্চিমবঙ্গে ষষ্ঠ পর্বের ভোটেও বোমা, গুলি, সহিংসতা। অন্যদিকে করোনার মধ্যে ভোট নিয়ে কমিশনের সমালোচনায় হাইকোর্ট।
বিজ্ঞাপন
করোনা যতই বাড়ুক না কেন, পশ্চিমবঙ্গের ভোটের চরিত্র একই থাকল। সেই সহিংসতা, বোমাবাজি, কর্মীদের মারধর, এজেন্টদের ভয় দেখানোর চেনা ছবি দেখা গেল ষষ্ঠ পর্বেও। সেই সঙ্গে দেখা গেল ভোট দেয়ার লম্বা লাইনও। বেলা একটার মধ্যেই চার জেলা পূর্ব বর্ধমান, উত্তর ২৪ পরগনা, নদিয়া এবং উত্তর দিনাজপুরের ৪৩টি আসনে ৫৭ শতাংশের বেশি ভোট পড়েছে।
এবারের ভোটেও বিভিন্ন জায়গা থেকে অশান্তির খবর এসেছে। টিটাগড়ে প্রবল বোমাবাজি হয়েছে। বিজেপি-র ক্যাম্প অফিস ভেঙে দেয়া হয়েছে। তিন বিজেপি কর্মী আহত। বীজপুরে বিজেপি কর্মীকে মারা হয়েছে। অভিযোগ তৃণমূলের দিকে। আবার কাঁচড়াপাড়ায় তৃণমূল কর্মীকে মারা হয়েছে। অভিযোগ বিজেপি-র দিকে।
অশোকনগরেও ব্যাপক বোমাবাজি হয়েছে। ভোটকর্মীদের বাস ভাঙচুর হয়েছে। গলসির সুজাপুরেও দফায় দফায় বোমাবাজি হয়েছে। প্রতিবাদে গ্রামবাসীদের একাংশ ভোট বয়কট করেছেন। আমডাঙ্গায় অশান্তি হয়েছে। এছাড়াও বেশ কয়েকটি জায়গা থেকে গোলমালের খবর এসেছে।
পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল, বিজেপি-র প্রতিশ্রুতি
পশ্চিমবঙ্গের জন্য ঢালাও প্রতিশ্রুতি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও নরেন্দ্র মোদীর। তৃণমূল ও বিজেপি-র ইস্তেহারে প্রতিশ্রুতির বন্যা।
ছবি: Syamantak Ghosh/DW
ক্ষমতায় এলেই সিএএ
বিজেপি-র ইস্তেহারের নাম হলো সোনার বাংলা-সংকল্পপত্র ২০২১। সেখানেই বলা হয়েছে, ক্ষমতায় এলেই রাজ্যে মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠকে সিএএ চালু করা হবে। বিজেপি-র এই ঘোষণা নিয়ে বিতর্কও হচ্ছে। কারণ, সিএএ হলো কেন্দ্রীয় আইন। তা চালু করার জন্য রাজ্য মন্ত্রিসভার অনুমোদনের দরকার হয় না। এমনিতেই তা চালু হবে। বিজেপি-র যুক্তি, মমতা এই আইন চালু করতে চাননি বলে এই প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে।
ছবি: DW/P. Samanta
কৃষকদের সহায়তা
নরেন্দ্র মোদীর দলের প্রতিশ্রুতি, কৃষকদের বছরে ১০ হাজার টাকা দেয়া হবে। তাছাড়া গত তিন বছরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রধানমন্ত্রী কিষান সম্মান নিধি চালু করেননি। তার বকেয়া ১৮ হাজার টাকা কৃষকদের একবারে দেয়া হবে। তৃণমূল অবশ্য বলছে, দিল্লির সীমানায় কৃষকরা কয়েক মাস ধরে বিক্ষোভ দেখাচ্ছে। তাদের কথা শুনছে না সরকার।
ছবি: Aditi Mukerji
মেয়েদের সংরক্ষণ
বিজেপি-র প্রতিশ্রুতি সরকারি চাকরিতে মেয়েদের জন্য ৩৩ শতাংশ সংরক্ষণ চালু করা হবে। প্রাথমিক থেকে স্নাতকোত্তর পর্যন্ত মেয়েরা বিনা পয়সায় পড়তে পারবেন।
ছবি: DW/P. Mani
যুবদের চাকরি
বিজেপি-র প্রতিশ্রুতি, প্রতিটি পরিবার থেকে একজন করে যুবকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হবে। প্রতিটি ব্লকে নেতাজি বিপিও স্থাপন করা হবে।
ছবি: DW/P. Tewari
রবীন্দ্রনাথের নামে
রবীন্দ্রনাথের নামে আন্তর্জাতিক মানের পুরস্কার চালু করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বিজেপি। তাছাড়া গুরুদেব রুরাল অ্যাডভান্সমেন্ট মিশন চালু করার কথাও বলা হয়েছে। সত্যজিৎ রায়ের নামেও পুরস্কার দেয়ার কথা জানিয়েছে বিজেপি।
ছবি: DW/P. Samanta
তৃণমূলের আশ্বাস
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলের প্রতিশ্রুতি, প্রতি বছর পাঁচ লাখ যুবকে চাকরি দেয়া হবে। তফসিলি জাতি ও উপজাতি পরিবারের প্রধান নারী সদস্যকে মাসে হাজার টাকা দেয়া হবে। অন্যরা পাবেন ৫০০ টাকা করে। বিধবারাও মাসে ৫০০ টাকা করে পাবেন। বয়স্করাও।
ছবি: Payel Samanta/DW
বাড়িতে রেশন
দেড় কোটি মানুষকে বাড়িতেই রেশন পৌঁছে দেয়ার প্রতিশ্রুতি মমতার। বিজেপি বলছে, সেই পরিকাঠামোই রাজ্যে নেই।
ছবি: Syamantak Ghosh/DW
পাঁচ টাকায়
ছোট-বড় ৫০টি শহরে আড়াই হাজার মা ক্যান্টিন করা হবে। সেখানে পাঁচ টাকায় ডিম-ভাত দেয়া হবে। কলকাতায় এই ক্যান্টিন চালু করা হয়েছে।
ছবি: Sirsha Bandyopadhyay/DW
বাড়ি দেয়া হবে
তৃণমূলের প্রতিশ্রুতি, পাঁচ বছরে পাঁচ লাখ আবাসন ও পঁচিশ লাখ বাড়ি বানিয়ে গরিবদের দেয়া হবে।
ছবি: Syamantak Ghosh/DW
দুয়ারে সরকার
বছরে চার মাস দুয়ারে সরকার প্রকল্প চলবে। সরকার পৌঁছাবে মানুষের কাছে। সব প্রকল্পের সুবিধা নিতে পারবেন সাধারণ মানুষ। মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের দলের প্রতিশ্রুতি।
ছবি: Payel Samanta/DW
10 ছবি1 | 10
বাগদায় পুলিশ গুলি চালিয়েছে বলে গ্রামবাসীদের অভিযোগ। তিনজনের গুলি লেগেছে বলে এবিপি আনন্দ জানিয়েছে।
কমিশনের সমালোচনায় হাইকোর্ট
করোনা পরিস্থিতিতে যেভাবে পশ্চিমবঙ্গে ভোট করছে কমিশন, তাতে একেবারেই খুশি নয় কলকাতা হাইকোর্ট। প্রধান বিচারপতি থোট্টাথিল ভাস্করণ নায়ার রাধাকৃষ্ণনের বেঞ্চ জানিয়েছে, নির্বাচন কমিশন অত্যন্ত দায়সারা ভাবে কাজ করছে। অনেক ক্ষেত্রেই তারা শুধুমাত্র নির্দেশিকা জারি করছে মাত্র। ঠিক ভাবে করোনা বিধি মানা হচ্ছে কি না, সেটা তারা দেখছে না। এই ভাবে মানুষের উপর সব দায়িত্ব ছেড়ে দিয়ে কমিশন দায়মুক্ত হতে পারে না বলে তারা জানিয়েছেন।
চন্দ্রিলের চোখে ভোটরঙ্গ
22:56
হাইকোর্টের মতে, কমিশনের হাতে প্রচুর ক্ষমতা রয়েছে। তারা তা কাজে লাগাচ্ছে না। টি এন শেসন দেখিয়ে দিয়েছেন, কীভাবে ক্ষমতার ব্যবহার করতে হয়। তার দশ শতাংশও এই কমিশন করতে পারছে না। হাইকোর্ট চায়, শুধু সার্কুলার নয়, করোনা পরিস্থিতিতে ভোটগ্রহণের ক্ষেত্রে উপযুক্ত পদক্ষেপও নিতে হবে কমিশনকে।