1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‌পশ্চিমবঙ্গে আইনের শাসনের অবস্থা

৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

এবার পদত্যাগ করলেন অ্যাটর্নি জেনারেল জয়ন্ত মিত্র এবং অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল লক্ষ্মী গুপ্তা৷ গত ৬ বছরে এটা পশ্চিমবঙ্গের তৃতীয় অ্যাটর্নি জেনারেলের পদত্যাগ৷ প্রশ্ন উঠেছে- রাজ্যে কি আইনের শাসন নেই?

Kalkutta High Court
কলকাতা হাইকোর্টছবি: picture-alliance/dpa

পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেস ক্ষমতায় আসার পর থেকে এই তৃতীয়বার কোনও অ্যাটর্নি জেনারেল পদত্যাগ করলেন৷ কারণটা সেই একই৷ রাজ্য সরকারের সঙ্গে মতে মিলছে না৷ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মামলায় সরকারের আইনি অবস্থান নিয়ে লাগাতার মতবিরোধ৷ মঙ্গলবার পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠীর কাছে নিজের পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দেন রাজ্যের অ্যাটর্নি জেনারেল জয়ন্ত মিত্র৷ তারপর তিনি সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, বিভিন্ন ক্ষেত্রে তাঁর আইনি পরামর্শ রাজ্য সরকার মানছিল না, অগ্রাহ্য করছিল এবং সরাসরি জানিয়েও দিচ্ছিল যে তাঁর প্রস্তাব ‘‌গ্রহণযোগ্য নয়’৷ প্রবীণ আইনজীবীর কাছে তা অত্যন্ত অসম্মানজনক মনে হয়েছে৷ তা ছাড়া তাঁর সুচিন্তিত আইনি অবস্থানের সঙ্গে রাজ্য সরকারের চিন্তা-ভাবনারও লাগাতার বিরোধ চলছিল৷ এভাবে অ্যাটর্নি জেনারেলের দায়িত্ব পালন করা সম্ভব হচ্ছিল না বলেও তিনি জানিয়েছেন৷ পশ্চিমবঙ্গের অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল লক্ষ্মী গুপ্তাও একই সঙ্গে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছেন৷ তিনি অবশ্য জানিয়েছেন, তাঁর ক্ষেত্রে আইনি পরামর্শ বা সুপারিশ রাজ্য সরকারের না মানার কোনও ঘটনা ঘটেনি৷ কিন্তু যেহেতু জয়ন্ত মিত্রের নেতৃত্বে একটি দল হিসেবে তাঁরা কাজ করতেন, জয়ন্তবাবু পদত্যাগ করার পর তাঁর পক্ষেও আর কাজ চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে না৷

তবে সাধারণ ধারণা হলো, সরকারের রাজনৈতিক স্বার্থের সঙ্গে আইনি অবস্থানের বিরোধের কারণেই এভাবে একের পর এক অ্যাটর্নি জেনারেল দায়িত্ব থেকে সরে যাচ্ছেন৷ ২০১১ সালে তৃণমূল কংগ্রেস ক্ষমতায় আসার পর প্রথম ইস্তফা দিয়েছিলেন তৎকালীন অ্যাটর্নি জেনারেল এবং দেশের প্রথম সারির আইনজীবীদের অন্যতম, অনিন্দ্য মিত্র৷ এরপর আরেক অ্যাটর্নি জেনারেল বিমল চ্যাটার্জিও একইভাবে ইস্তফা দেন৷ সেই তালিকায় জয়ন্ত মিত্র হলেন তৃতীয় নাম, যিনি দায়িত্ব নিয়েছিলেন মাত্র দু’বছর আগে৷

মঙ্গলবার বিধানসভায় বিরোধী দলনেতা আবদুল মান্নান এবং বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তী জয়ন্তবাবুর পদত্যাগ নিয়ে আইনমন্ত্রীর বিবৃতি দাবি করেন৷ সুজন চক্রবর্তী বলেন, ৬ বছরে ৩ জন অ্যাটর্নি জেনারেলের ইস্তফা থেকেই পরিস্কার, রাজ্যে আইনের শাসন নেই৷ এবং সরকারের একের পর ভুল সিদ্ধান্ত এবং পদক্ষেপকে আইনত বৈধ প্রমাণ করতে গিয়ে আদালতে কার্যত অপদস্থ হচ্ছেন  আইনজীবীরা৷ এ প্রসঙ্গে ত্রিপুরার প্রাক্তন অ্যাটর্নি জেনারেল, আইনজীবী বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্যর মন্তব্য, অ্যাটর্নি জেনারেল একটি সাংবিধানিক পদ৷ যে পদে সরাসরি নিয়োগ করেন রাজ্যপাল৷ সেই পদে থেকে কোনও সরকার বা ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের হয়ে কাজ করা সম্ভব নয়৷

প্রসঙ্গত, রাজ্য সরকারের মুখ্য কৌঁসুলি, অর্থাৎ চিফ পাবলিক প্রসিকিউটর মনজিৎ সিংও মাসখানেক আগেই পদত্যাগ করেছেন৷ বিভিন্ন মামলায় বারবার কলকাতা হাইকোর্টের কাছে তিরস্কৃত রাজ্য সরকার এখন সব শূন্য পদ ভরাটের জন্যই যোগ্য লোক খুঁজছে৷ আইনজীবী জয়ন্ত মিত্র অ্যাটর্নি জেনারেলের পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার পর বলেছেন, ‘‌‘‌চিরকাল শিরদাঁড়া সোজা রেখে চলেছি৷ যা ঠিক নয়, তার কাছে নত হতে শিখিনি৷’’ নিজের কথা বললেও, আসলে পশ্চিমবঙ্গের বেহাল পরিস্থিতির কথাই বলে গেলেন তিনি৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ