সুপ্রিম কোর্টের আবেদনের পর দিল্লি-সহ অধিকাংশ রাজ্যেই কাজে ফিরেছেন জুনিয়র ডাক্তাররা। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে তারা কর্মবিরতি চালিয়ে যাবেন।
বিজ্ঞাপন
কলকাতায় জুনিয়র ডক্টর্স ফ্রন্ট জানিয়েছে, তারা এখন কর্মবিরতির আন্দোলন প্রত্যাহার করছেন না। কারণ, সিবিআইয়ের তদন্তের গতিপ্রকৃতি তাদের কাছে এখনো স্পষ্ট হয়নি। নতুন করে কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। আরজি করের সাবেক অধ্যক্ষর ভূমিকা নিয়েও স্পষ্টতা নেই। তাই তাদের আন্দোলন চলতে থাকবে।
আরজি কর হাসপাতালে চিকিৎসককে ধর্ষণ ও হত্যার পর জুনিয়র ডাক্তাররা কর্মবিরতি শুরু করেন। তারা কলকাতার বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজে বিক্ষোভও দেখাচ্ছেন। একদিন আগেই তারা স্বাস্থ্যভবনে গিয়ে তাদের দাবি জানিয়ে এসেছেন। তাদের দাবি মেনে আরজি কর থেকে চারজনকে বদলি করা হয়েছে। সন্দীপ ঘোষকেও ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ পদে আর নিয়োগ করা হচ্ছে না। তাকে স্বাস্থ্য দপ্তরে অফিসার অন স্পেশ্যাল ডিউটি করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বে তিন বিচারপিত বেঞ্চ আন্দোলনরত ডাক্তারদের কাজে যোগ দেয়ার অনুরোধ করেন। তারা বলেন, চিকিৎসকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য সর্বোচ্চ আদালত পদক্ষেপ নিয়েছে। কোনো চিকিৎসককে আন্দোলনের জন্য শাস্তি দেয়া যাবে না। শান্তিপূর্ণ আন্দোলন বন্ধও করা যাবে না। কিন্তু রোগী ও চিকিৎসা ব্যবস্থার স্বার্থে তাদের কাজে ফেরার অনুরোধ করেছিলেন বিচারপতিরা।
আন্দোলনকারীদের দাবি মেনে চার কর্তার অপসারণ, সন্দীপ স্বাস্থ্য দপ্তরে
আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তারদের সব দাবি মানা হলো। আরজি করের চার কর্তাকে সরানো হলো। সন্দীপ ঘোষকে স্বাস্থ্য দপ্তরে বদলি।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্ত
আরজি করের নতুন অধ্যক্ষ, সুপার, অ্যাসিস্টেন্ট সুপার ও চেস্ট মেডিসিন বিভাগের প্রধানকে সরিয়ে দেয়া হলো। সন্দীপ ঘোষকে সরিয়ে সুহৃতা পালকে অধ্যক্ষ করা হয়েছিল। তাকে বারাসত মেডিক্যাল কলেজে পাঠানো হয়েছে। নতুন অধ্যক্ষ করা হয়েছে মানস বন্দ্যোপাধ্যায়কে। জুনিয়র ডাক্তাররা এই বদল চেয়েছিল।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
আরো বদল
বুলবুল মুখোপাধ্যায়কে ডিন অফ স্টুডেন্টস ও এমএসভিপি পদ থেকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে। তিনি শুধু ফিজিওলজির অধ্যাপক হিসাবে থাকবেন। চেস্ট মেডিসিন বিভাগের প্রধান অরুণাভ দত্ত চৌধুরীকে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে বদলি করা হয়েছে। এই সব বদলই জুনিয়র ডাক্তাররা চেয়েছিলেন। বুধবার তারা স্বাস্থ্যভবনে মিছিল করে যায় ও অবস্থান করে।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
বিতর্কিত সন্দীপ ঘোষকে
সাবেক অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষকে আরজি কর থেকে সরিয়ে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ করা হয়েছিল। তার প্রতিবাদ জানাচ্ছিলেন জুনিয়র ডাক্তাররা। সন্দীপ ঘোষকে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ পদ থেকে সরিয়ে স্বাস্থ্য দপ্তরে অফিসার অন স্পেশাল ডিউটি করা হয়েছে।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলন
জুনিয়র ডাক্তাররা বুধবার মিছিল করে স্বাস্থ্য ভবনে যান। সেখানে এক প্রতিনিধিদল স্বাস্থ্য দপ্তরে তাদের দাবিদাওয়া পেশ করে। সেখানে এই কর্মকর্তাদের সরানোর দাবি ছিল। তাদের দাবি মানা হয়েছে। তারপরও আন্দোলন প্রত্যাহারের কথা জানাননি তারা। জুনিয়র ডাক্তাররা বলেছেন, আগে তারা সরকারের বিজ্ঞপ্তি দেখবেন। তারপর আন্দোলন নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
শান্তিপূর্ণ আন্দোলন
জুনিয়র ডাক্তারদের মিছিল ছিল শান্তিপূর্ণ। তারা স্বাস্থ্যভবনের কাছে রাস্তায় বসে পড়েন। অবস্থান করেন। পরে স্বাস্থ বিভাগের কর্তাদের সঙ্গে প্রতিনিধিদলের আলোচনার পর তারা ফিরে যান।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
আদালতের অনুরোধ
সুপ্রিম কোর্টও চিকিৎসকদের আন্দোলন প্রত্যাহার করে কাজে ফেরার অনুরোধ করেছে। তারা জানিয়েছে, চিকিৎসকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে উদ্য়োগী হয়েছে সর্বোচ্চ আদালত। টাস্ক ফোর্স গঠিত হয়েছে। এবার তারা কাজে ফিরুন।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
6 ছবি1 | 6
এরপরই এমস ও দিল্লির জুনিয়র ডাক্তারদের সংগঠন সিদ্ধান্ত নেয়, তারা কর্মবিরতি তুলে নিচ্ছেন। শুক্রবার থেকে তারা কাজে যোগ দিয়েছেন। দেশের অন্য রাজ্যেও জুনিয়র ডাক্তারদের সংগঠন একই সিদ্ধান্ত নেয়।
কিন্তু কলকাতায় কর্মবিরতি উঠছে না। আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, চক্রান্তের পিছনে অনেকে আছেন। সব অপরাধীকে খুঁজে বের করে যথাযথ শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।