1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

পশ্চিমবঙ্গে নির্বাচন কমিশনের নানা উদ্যোগ

২১ মার্চ ২০২১

ভারতের পশ্চিমবঙ্গে মানুষকে ভোটাধিকার প্রয়োগে উদ্বুদ্ধ করতে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে নির্বাচন কমিশন৷ পথনাটিকা থেকে লোকসংস্কৃতি, নানা আয়োজনের মাধ্যমে সব ধরনের মানুষের কাছে বার্তা পৌঁছে দেয়া হচ্ছে৷

বাংলার প্রাচীন লোকশিল্প ‘খন পালাগান’ চরিত্র খনদাদু ও খনাদিদাকে প্রচারে নামানো হয়েছে৷ছবি: Payel Samanta/DW

আর কিছুদিন পরই বিধানসভার ভোট হবে পশ্চিমবঙ্গে৷ এবার আট দফার এ ভোটাভুটি শুরু হবে ২৭ মার্চ, শেষ হবে ২৯ এপ্রিল৷ ফলাফল প্রকাশ হবে ২ মে৷ এবার ভোটার সংখ্যা প্রায় সাত কোটি৷ এত বিপুল ভোটার যেন ভোটকেন্দ্রে আসেন এবং নিজের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন সেজন্য নানা উদ্যোগ নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন৷ সেক্ষেত্রে বাদ পড়ছেন না কেউই৷ বরং বিশেষ বিশেষ গোষ্ঠীর জন্য বিশেষ উদ্যোগ চোখে পড়ছে৷

তৃতীয় লিঙ্গের মানুষের জন্য বিশেষ উদ্যোগ

সবার মত তৃতীয় লিঙ্গের ভোটও যে মূল্যবান, এবার সেই সচেতনতা অন্যদের মধ্যে প্রচার করতে উদ্যোগী হয়েছে প্রশাসন৷ উত্তর চব্বিশ পরগনার বারাসতের ১ নম্বর ব্লকের নির্বাচন কমিশনের আধিকারিক মঞ্জুলা বসুর উদ্দেশ্য ছিল তৃতীয় লিঙ্গের প্রতিনিধিদের মধ্যে ভোটাধিকার নিয়ে সচেতনতা প্রচার৷

হেমা

This browser does not support the audio element.

নির্বাচনী আধিকারিকের এমন অভিনব উদ্যোগ হিজড়াদের কাছেও বেশ অন্যরকম৷ মঞ্জুলার তিন বছরের একরত্তি মেয়ের জন্মদিনও তিনি এখানেই পালন করলেন৷ ভোটাধিকারের প্রচারের মাঝে কেক কাটার আনন্দ! হিজড়া দলের একজন হেমা ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘পঞ্চাশ বছর ধরে ভোট দিচ্ছি, কেউ ভোটদান নিয়ে বোঝাতে এর আগে আসেনি৷ কোনও প্রার্থীও এসে বলেনি কিছু৷ এই চেষ্টা ভালই লেগেছে৷’’

জগদিঘাটা কাজিপাড়ায় হেমার মতো আরো ১৮-১৯ জন একসঙ্গে থাকেন বহুদিন ধরে৷ ভোটও দিয়ে আসছেন অনেক দিন থেকে৷ হেমার দলের কাজল, সাথী, বাঁশী, মেঘনা, মধু সমাজের অংশ, স্বাধীন ভারতের নাগরিক৷ সমাজ বহু দিন ব্রাত্য রেখেছে তাঁদের৷ তাঁরা কিন্তু নিজেদের ব্রাত্য ভাবেননি৷ বরং তাঁরা স্পষ্ট করে বলেন, ‘‘নিজের ভোট নিজে দেব৷’’

বৃদ্ধাশ্রমে কমিশন

প্রবীণ মানুষদের ভোটাধিকার প্রয়োগ নিশ্চিত করতে বাড়ি বাড়ি পৌঁছে যাচ্ছে কমিশন৷ বিশেষভাবে সক্ষম এবং আশি বছরের বেশি বয়স হলে পোস্টাল ব্যালটে ভোট দেওয়া যাবে৷ বাড়ি থেকে বেরিয়ে বুথে হাজির হতে হবে না৷ জেলায় ইতিমধ্যে শুরু হয়ে গিয়েছে নয়া পদ্ধতিতে ভোটগ্রহণ পর্ব৷ প্রথম দফায় (২৭ মার্চ) রাজ্যের যেসব আসনে ভোট রয়েছে, সেখানে বাড়ি গিয়ে অশীতিপর এবং বিশেষভাবে সক্ষমদের ভোট নেওয়া হয়েছে৷ দ্বিতীয় দফায় (১ এপ্রিল) যেসব আসনে ভোট রয়েছে, সেখানে এই প্রক্রিয়া চালু হল গতকাল থেকে৷ কমিশন চাইছে, প্রবীণদের ভোটদানের হার বাড়ুক৷ তাই বৃহস্পতিবার উত্তর ২৪ পরগনার দত্তপুকুরে একটি বৃদ্ধাশ্রমে পৌঁছে গিয়েছিলেন বারাসাত ১ ব্লকের বিডিও সৌগত পাত্র৷ তিনি কথা বলেন প্রবীণদের সঙ্গে৷ ভোট দেওয়ার ক্ষেত্রে আবাসিকদের সমস্যার কথা উঠে আসে৷

অতিরিক্ত মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক সঞ্জয় বসু ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘নির্বাচন কমিশনের যা নির্দেশ আছে, সেই অনুযায়ী কাজ হচ্ছে৷ আমরাও সেই অনুযায়ী কাজ করছি৷’’

ভাস্বতী মুখোপাধ্যায়

This browser does not support the audio element.

জনসংযোগে পথনাটিকা, লোকসংস্কৃতি

আবালবৃদ্ধবনিতার কাছে পৌঁছতে সোশ্যাল মিডিয়ার পাশে পথনাটিকা আর লোকসংস্কৃতিকে পুরোদমে ব্যবহার করতে চাইছে কমিশন৷ ‘সিস্টেমেটিক ভোটার্স এডুকেশন অ্যান্ড পার্টিসিপেশন’ (এসভিইইপি) নামে সোশ্যাল মিডিয়ায় অ্যাকাউন্ট খুলে নির্বাচন সংক্রান্ত নানা বিষয় পোস্টার বা ভিডিও পোস্ট সহযোগে তুলে ধরা হচ্ছে ভোটারদের সামনে৷ পাশাপাশি জেলার প্রত্যন্ত এলাকায় লোকশিল্পের মাধ্যমে কমিশন ভোটের বার্তা ছড়িয়ে দিচ্ছে৷ এ জন্য বাংলার প্রাচীন লোকশিল্প ‘খন পালাগান’ চরিত্র খনদাদু ও খনাদিদাকে প্রচারে নামানো হয়েছে৷ একইসঙ্গে কমিশনের হাত ধরে মাস্ক, স্যানিটাইজার নিয়ে নদিয়ার নির্বাচনী ম্যাসকট তথা রাজবিদূষক গোপালভাঁড়ও বার্তা দিচ্ছে, ‘‘মগজাস্ত্রে দিয়ে শান, সপরিবারে ভোট দান৷’’ এমনকি ভোটারদের ভোটসংক্রান্ত নানা প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হচ্ছে পথনাটিকার সাহায্যে৷ কলকাতার ‘কও কথা’ নাট্যগোষ্ঠীর সেক্রেটারি ভাস্বতী মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘কলকাতার বিভিন্ন জায়গায় নাটক দেখানো হচ্ছে৷ মানুষের খুব ভাল সাড়া পাচ্ছি৷ মানুষের কোনো কনফিউশন থাকলে নাটকের পরে আমাদের জিজ্ঞাসা করছেন৷’’

বাড়তি চাপ করোনার

কেরালা-মহারাষ্ট্রের পর এ রাজ্যে অতিমারীর দ্বিতীয় ঢেউ আসতে চলেছে৷ তাই নির্বাচন কমিশনের কাছে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ এই নিউ নর্মালে নির্বাচনকে অবাধ ও সুষ্ঠু করে তোলা৷ রাজনৈতিক দলগুলির প্রচার, সভা, মিছিলে করোনা বিধি মানা হচ্ছে না কিছুই৷ ইতোমধ্যে করোনা পরিস্থিতিতে নতুন ভোটারদের অনলাইনে ভোটার কার্ড দেওয়া শুরু হয়েছে৷ পরিবেশকর্মী থেকে চিকিৎসকেরা চিঠি দিয়েছেন কমিশনে৷ কমিশনের কাছে ওয়েস্ট বেঙ্গল ডক্টর্স ফোরামের দাবি, করোনাবিধি নিয়ে কোনোরকম আপোস নয়৷ ভোটপ্রচারে বিধি লঙ্ঘিত হলে প্রার্থীপদ বাতিল করা হোক৷ কিন্তু কতটা সফল হবে কমিশন সেটা সময়ই বলবে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান