পশ্চিমবঙ্গে ৪২টি আসনের অন্তত ২০টি জিতবেন বলে ঘোষণা করেছেন যে দলের নেতারা, তারা সব আসনে প্রার্থী দিতেই হিমশিম খাচ্ছেন এখন৷
বিজ্ঞাপন
বিজেপি নেতারা বলছেন, তাঁদের মতো বড় এবং সর্বভারতীয় একটি দলের ক্ষেত্রে প্রার্থী বাছাই নিয়ে সমস্যা হওয়া স্বাভাবিক৷ কিন্তু ঘটনা হলো, ভারতে আগামী লোকসভা ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণার পর দু সপ্তাহ কেটে গেলেও ৪২টি আসনের সবকটিতে এখনও প্রার্থীই দিতে পারল না বিজেপি৷
দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের পক্ষ থেকে ছয় দফায় প্রার্থী তালিকা ঘোষিত হয়েছে৷ তার পরেও পশ্চিমবঙ্গের ১৩টি আসনে প্রার্থীর নাম চূড়ান্ত হয়নি৷
যে কটিতে প্রার্থী ঘোষণা হয়ে গেছে, সেখানেও ব্যাপক ডামাডোল৷ শোনা যাচ্ছে, বিজেপি নেতৃত্ব নাকি প্রার্থী বাছাইয়ের আগে অন্তত ৬ দফায় সমীক্ষা করেছে৷ তার পরই ঘোষিত হয়েছে প্রার্থীদের নাম৷ কিন্তু বীরভূমের নেত্রীকে প্রার্থী করা হয়েছে হুগলিতে, পুরুলিয়ার নেতাকে দাঁড় করানো হয়েছে উত্তর ২৪ পরগণায়৷
বিজেপির রাজ্য মহিলা মোর্চার নেত্রী, অভিনেত্রী লকেট চ্যাটার্জি এতদিন মাটি কামড়ে পড়েছিলেন বীরভূমে৷ তাঁকে হুগলির প্রার্থী করা হয়েছে৷ সেই রাগে দলীয় পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন হুগলির বিজেপি নেতা রাজকমল পাঠক৷
ক্ষোভ রয়েছে বসিরহাট, বারাসাত, তমলুক নিয়ে৷ অনেক টালবাহানার পর আলিপুরদুয়ারের বিজেপির প্রার্থী হিসেবে অবশেষে যাঁর নাম ঘোষিত হয়েছে, সেই জন বারলার রাজনৈতিক অবস্থান নিয়েই প্রশ্ন আছে৷
ভারতে নির্বাচনের ময়দানে নারী
ভারতের আসন্ন নির্বাচনে মোট ভোটারদের প্রায় অর্ধেক নারী৷ তবে বর্তমান লোকসভায় নারী সাংসদের সংখ্যা মাত্র ১১.৬ ভাগ৷ নির্বাচনে নারীর অংশগ্রহণ ও ভূমিকা নিয়ে কিছু তথ্য থাকছে ছবিঘরে৷
ছবি: Reuters
ক্ষমতায় যে নারীরা...
১৯৬২ থেকে ২০১৪ পর্যন্ত প্রতিটি নির্বাচনেই নারী প্রার্থীরা লড়েছেন ও জয়ী হয়েছেন৷ ২০১৪ সালের ১৬তম লোকসভায় নারী সদস্য রয়েছেন ৫৯ জন৷ এর মধ্যে সুস্মিতা দেব ও পুনম মহাজনের মতো তরুণ অথচ ‘হেভিওয়েট’ নারী রাজনীতিক যেমন রয়েছেন, পাশাপাশি রয়েছেন উমা ভারতী, মেহবুবা মুফতি বা মানেকা গান্ধি’র মতো বরিষ্ঠ রাজনীতিকরাও৷ এছাড়া, নারী রাজনীতিকরা ভারতের বর্তমান কেবিনেটের বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রকও সামলাচ্ছেন৷
ছবি: Dominique Faget/AFP/Getty Images
নির্বাচনের ‘তিনকন্যা’
ভারতের সাধারণ নির্বাচনে অন্যতম বড় ‘ফ্যাক্টর’ হবেন তিন নারী৷ সব বিশেষজ্ঞদের একই মত, জনমত কোন পথে যাবে, তা নির্ধারণে কংগ্রেসের প্রিয়াঙ্কা গান্ধী, তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও বহুজন সমাজ পার্টির নেত্রী মায়াবতীর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকবে৷ ক্ষমতাসীন এনডিএ-জোট ছাড়া অন্যান্য দলগুলির ভূমিকা কেমন হবে, তার অনেকটাই নির্ভর করছে এই তিন নারীর প্রচারকার্য ও ক্যারিশমার ওপর৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/R.K. Singh
নারী ভোটার
নারী ভোটারদের জন্য ২০১৪ সালের নির্বাচন ব্যতিক্রমী ছিল৷ যুক্তরাষ্ট্রের গবেষণা সংস্থা কার্নেগি এনডাওমেন্ট বলছে, ভারতের ২৩টি রাজ্যে পুরুষ ভোটারদের সংখ্যায় পেছনে ফেলে দিয়েছেন নারী ভোটাররা৷ নথিভুক্ত ভোটারের সংখ্যায় পুরুষ এগিয়ে থাকলেও কেন্দ্রে গিয়ে ভোটদান করার ক্ষেত্রে নারীরা এগিয়ে, বলছে কার্নেগি’র একটি প্রতিবেদন৷
ছবি: Reuters
নারীর ক্ষমতায়ন?
ভারতে মোট ভোটারের সংখ্যা ১৩০ কোটির কাছাকাছি৷ এর প্রায় অর্ধেক ভোটারই নারী৷ কিন্তু প্রতিনিধিত্বের হিসাবে সেভাবে নেই নারীর ক্ষমতা৷ ২০০৯ সালের নির্বাচনে প্রথমবারের মতো লোকসভা আসনের ১০ শতাংশের বেশি আসনে জয়ী হন নারী প্রার্থীরা৷ বর্তমানে সেই সংখ্যা দাঁড়িয়েছে মাত্র ১১.৬ ভাগ-এ৷
ছবি: picture alliance/NurPhoto/D. Chakraborty
শুধু নারীদের দল!
এবারের নির্বাচনে ভারতের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো লড়তে চলেছে শুধু নারীদের নিয়ে গঠিত রাজনৈতিক দল ‘ন্যাশনাল উইমেন্স পার্টি’ অর্থাৎ জাতীয় নারী দল৷ ডঃ শ্বেতা শেট্টি’র নেতৃত্বে এই দলটির মূল লক্ষ্য সংসদের অর্ধেক আসন নারীদের জন্য সংরক্ষিত করা৷ ‘মায়েদের রাজনৈতিক দল’ হিসাবে প্রচার চালানো এই দলটি লোকসভার ৫৪৩টি আসনের অর্ধেক আসনে লড়বে বলে জানা গেছে৷
ছবি: Getty Images/AFP/M. Kiran
‘আণ্ডারডগ’ কারা?
রাজনীতির ভাষায় ‘আণ্ডারডগ’ তাঁরা, যাঁরা সবার নজর এড়িয়ে শেষ মুহূর্তে জয় ছিনিয়ে নেন৷ রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এবারের নির্বাচনে এমন ভূমিকা রাখতে পারেন বেশ কয়েকজন নারী প্রার্থী৷ ‘আণ্ডারডগ’ হিসাবে উঠে আসছে আম আদমি পার্টির প্রার্থী আতিশি মারলেনা বা সম্ভাব্য প্রার্থী ছাত্রনেত্রী শেহলা রশিদের নাম৷
ছবি: Imago/Hindustan Times/S. Khanna
ভোটের মাঠেও গ্ল্যামার
নারী তারকাদের সাথে ভারতীয় সংসদের সম্পর্ক বেশ পুরোনো৷ হেমা মালিনী, কিরণ খের’এর মতো জনপ্রিয় অভিনেত্রীরা বর্তমান লোকসভার সদস্য৷ শুধু তাই নয়, তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থীতালিকাতেও রয়েছে বেশ কিছু অভিনেত্রীর নাম৷ গতবারের মতো এবারও মুনমুন সেনের নাম থাকলেও সংবাদমাধ্যম ও সোশ্যাল মিডিয়ায় আলোচনার ঝড় উঠছে নতুন প্রার্থী মিমি চক্রবর্তী ও নুসরত জাহান’কে নিয়ে৷
ছবি: DW/P. M. Tewari
২০১৯-এ বদলাবে কিছু?
কার্নেগি এনডাওমেন্টের গবেষকরা বলছেন, ‘উজ্জ্বলা’ ও ‘স্বচ্ছ ভারত’ এর মতো সামাজিক প্রকল্পের হাত ধরে নারী ভোটাররা ঝুঁকতে পারেন ক্ষমতাসীন দল ভারতীয় জনতা পার্টির দিকেই৷ এতে সাহায্য করবে ‘তিন তালাক’-কে ঘিরে বিজেপি’র আন্দোলনও৷ কিন্তু প্রিয়াঙ্কা গান্ধী ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দেশব্যাপী বাড়ন্ত জনপ্রিয়তা টলাতে পারে বিজেপি’র একাধিপত্য, এমনটাও মনে করছেন তাঁরা৷
ছবি: picture-alliance/Pacific Press/S. Purkait
8 ছবি1 | 8
বসিরহাট দক্ষিণ বিধানসভা কেন্দ্রের নির্বাচিত বিধায়ক ছিলেন বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্য৷ পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় তিনিই ছিলেন বিজেপির একমাত্র নির্বাচিত প্রতিনিধি৷ সেই শমীক এবার দমদম লোকসভা কেন্দ্র থেকে দলের প্রার্থী৷ তাঁকে কেন বসিরহাট কেন্দ্রে প্রার্থী করা হলো না, সেই নিয়ে দলের মধ্যে প্রশ্ন উঠেছে৷ কারণ তৃণমূল কংগ্রেস এবার বসিরহাটে প্রার্থী করেছে জনপ্রিয় অভিনেত্রী নুসরতকে৷ মমতা ব্যানার্জির নিজস্ব জনসমর্থন এবং রাজনীতিতে নেহাত অনভিজ্ঞ হলেও নুসরতের গ্ল্যামারের বিরুদ্ধে হেভিওয়েট কোনো নেতাকে প্রার্থী করা হোক, নিদেনপক্ষে শমীককে, যাঁর বসিরহাট অঞ্চলে রাজনৈতিক পরিচিতি এবং প্রভাব রয়েছে, এটাই ছিল স্থানীয় বিজেপি কর্মীদের বক্তব্য৷ সেখানে বসিরহাটের বিজেপি প্রার্থী হয়েছেন রাজ্যে দলের অন্যতম সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু, যিনি এতদিন মূলত পুরুলিয়া অঞ্চলে সংগঠনের কাজে যুক্ত ছিলেন৷ নাম ঘোষণার প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই বসিরহাটে পোস্টার পড়েছে সায়ন্তনের বিরুদ্ধে!
শমীক ভট্টাচার্য নিজে কিন্তু মানতে চাইলেন না যে প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে বিজেপির উচ্চতর নেতৃত্বের সঙ্গে দলের নীচু তলার কর্মীদের যোগাযোগের অভাব, বা ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে বলে৷ তাঁর বক্তব্য, কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা তৈরি করে রাজ্যের সুপারিশের ভিত্তিতে৷ রাজ্যের নেতারা যেসব নাম সুপারিশ করেন, সেগুলো কোনোটাই অগ্রাহ্য করা হয় না৷ সব সম্ভাব্য প্রার্থীকেই বিবেচনা করা হয়, তার পর একজনের নাম চূড়ান্ত হয়৷ শমীক ডয়চে ভেলেকে বললেন, ‘‘দেখুন, (পশ্চিমবঙ্গে) দল তো বাড়ছে, স্বাভাবিকভাবেই আমাদেরও রাজনৈতিক অবস্থানগত একটা বার্তা দেওয়ার প্রশ্ন আছে৷ যে তৃণমূল কংগ্রেস ভাঙছে, বা সিপিআইএম-এর যাঁরা কর্মী ছিলেন, বাম দৃষ্টিভঙ্গী যাঁদের মধ্যে ছিল, তাঁরাও বুঝতে পেরেছেন যে সমাজকল্যাণ মূলক রাষ্ট্রের ধারণায় যা করার কথা, বা যে ইস্যুগুলোর দিকে নজর দেওয়া দরকার ছিল, মৌলিক ইস্যু, সেগুলো বিজেপি করতে পারছে৷''
যে মৌলিক ইস্যুগুলোর দিকে নজর দেওয়া দরকার ছিল, সেগুলো বিজেপি করতে পারছে: শমীক ভট্টাচার্য
প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক দলগুলিতে ভাঙন নিয়ে রাজনৈতিক অবস্থানগত বার্তা দেয়ার যে কথা শমীক ভট্টাচার্য বলতে চাইলেন, সেটা মূলত এবারের পাঁচ বিজেপি প্রার্থীর কথা মাথায় রেখে৷ পাঁচজনই অন্য দল থেকে এসে প্রার্থী হলেন এবার৷
সিপিএম ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়া বিধায়ক খগেন মুর্মু টিকিট পেয়েছেন মালদা উত্তর লোকসভা কেন্দ্রে, তৃণমূল ছেড়ে আসা বিধায়ক অর্জুন সিং বিজেপির প্রার্থী হচ্ছেন ব্যারাকপুরে, তৃণমূলের প্রভাবশালী নেতা ও বিদায়ী সাংসাদ সৌমিত্র খাঁ বিজেপির টিকিট পেয়েছেন বিষ্ণুপুরে এবং মেদিনীপুরের ঘাটালে গতবারের বিজয়ী তৃণমূল প্রার্থী, বাংলা ছবির জনপ্রিয় অভিনেতা দেব ওরফে দীপক অধিকারীর বিরুদ্ধে বিজেপির প্রার্থী হচ্ছেন জঙ্গলমহলের প্রাক্তন পুলিস সুপার, পদত্যাগী আইপিএস অফিসার ভারতী ঘোষ, যিনি একসময় খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির অতি ঘনিষ্ঠ এবং বিশ্বস্ত ছিলেন৷
দলত্যাগী তৃণমূল নেতা, একদা মমতার ডান হাত বলে পরিচিত মুকুল রায়ের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলার কারণে ভারতী ঘোষ রাজ্য প্রশাসনের বিষ নজরে পড়েন৷ কার্যত তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অসংখ্য বেনিয়মের অভিযোগের থেকে আড়াল খুঁজতেই ভারতী বিজেপিতে যোগ দেন এবং এখন সরাসরি ভোটপ্রার্থী৷ স্বাভাবিকভাবেই বিজেপি এই দলত্যাগীদের এখন সামনে তুলে ধরতে তৎপর৷ যেমন বোলপুরের বিদায়ী তৃণমূল সাংসদ, অধ্যাপক অনুপম হাজরা তিনি এবার যাদবপুর লোকসভা কেন্দ্রে বিজেপির প্রার্থী৷
ভারতের লোকসভা নির্বাচনের খুঁটিনাটি
ভারতে লোকসভা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে৷ ১১ এপ্রিল থেকে শুরু হয়ে সাত ধাপে ১৯ মে পর্যন্ত ভোটগ্রহণ চলবে৷
ছবি: Getty Images/AFP/A. Dey
আসনসংখ্যা
সাধারণ নির্বাচন মানে ভারতের লোকসভা সদস্যদের নির্বাচন করার পদ্ধতি৷ লোকসভায় মোট আসন সংখ্যা ৫৪৫ হলেও নির্বাচন হয় ৫৪৩টি আসনে৷ বাকি দুটি আসন ভারতের অ্যাংলো-ইন্ডিয়ান সম্প্রদায়ের জন্য সংরক্ষিত৷ তাদের দুই প্রতিনিধি কে হবেন, তা ঠিক করেন ভারতের রাষ্ট্রপতি৷
ছবি: picture alliance/dpa
ভোটার সংখ্যা
২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে মোট ভোটার ছিল ৮৩ কোটিরও বেশি, যা বর্তমান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মোট জনসংখ্যার দ্বিগুণেরও বেশি! বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এবারের নির্বাচনে বাড়বে এই সংখ্যা৷ নতুন ভোটারের সংখ্যা এবছর প্রায় সাড়ে চার কোটি হতে চলেছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
কয়টি দল?
গত নির্বাচনে মোট ৮,২৫১ জন প্রার্থী নির্বাচনে লড়েছিলেন৷ সেবার মোট ৪৬০টি রাজনৈতিক দল ভোটের ময়দানে নেমেছিল৷ ভারতের জাতীয় নির্বাচন কমিশনই জানাচ্ছে এই তথ্য৷
ছবি: Reuters/A. Abidi
মোট প্রার্থী
জাতীয় নির্বাচন কমিশনের তথ্য বলছে, প্রতিটি আসনে গড়ে ১৪ জন প্রার্থী থাকে ভারতে৷ এখন পর্যন্ত একটি আসনে সর্বোচ্চ ৪২ জন প্রার্থী হয়েছেন!
ছবি: DW/M. Krishnan
ভোটকেন্দ্র কতগুলি?
২০১৪ সালের নির্বাচনে মোট ভোটকেন্দ্র ছিল ৯,২৭,৫৫৩টি৷ কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, প্রতিটি বুথে গড়ে ৯০০ জন ভোটার ভোট দেন৷ উল্লেখ্য, ভারতের নির্বাচনি আইন বলে, যে-কোনো ভোটারের বাসস্থানের দুই কিলোমিটার দূরত্বের মধ্যে অন্তত একটি ভোটকেন্দ্র থাকতে হবে৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo
নির্বাচনি দায়িত্ব পালন
ভারতের সাধারণ নির্বাচন যাতে সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়, তার দায়িত্ব পড়ে সরকারী কর্মচারীদের ওপর৷ গত নির্বাচনে এই দায়িত্ব পান প্রায় ৫০ লক্ষ আধিকারিক ও নিরাপত্তাকর্মী৷ শুধু তাই নয়, এই কর্মীরা পায়ে হেঁটে, বাসে-ট্রামে-ট্রেনে-নৌকায়, এমনকি হাতির পিঠে চড়েও ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে পৌঁছেছেন বলে জানাচ্ছে নির্বাচন কমিশন৷
ছবি: Reuters/A. Abidi
একজন ভোটারের জন্যও রয়েছে বুথ!
২০০৯ সালের নির্বাচনের সময় গুজরাটের গির অঞ্চলের জঙ্গলেও ছিল ভোটগ্রহণ কেন্দ্র৷ এই ভোটকেন্দ্রের আওতায় যদিও ছিলেন মাত্র একজন ভোটার৷ তবুও বুথ চালু রাখা হয় নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে৷ (প্রতীকী ছবি)
ছবি: Reuters/Danish Siddiqui
ভোটের পর...
২০১৯ সালের নির্বাচন মোট সাতটি পর্যায়ে সম্পন্ন হবে৷ এই প্রক্রিয়া শেষ হতে সময় লেগে যাবে একমাসেরও বেশি৷ ২০১৯ সালের নির্বাচন হবে ১১ এপ্রিল থেকে ১৯ মে পর্যন্ত৷ আগে যদিও ব্যালট পেপারে ভোট হবার ফলে ফলপ্রকাশ হতে কয়েকদিন লেগে যেত, আজকাল ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন বা ইভিএম আসার ফলে ফলাফল বেরোতে সময় লাগে মাত্র একদিন৷
ছবি: picture alliance/AP Photo/P. Gill
কত খরচ?
ভারতের মতো বিশালাকারের দেশের নির্বাচন যে খরচসাপেক্ষ হবে, তা বলাই বাহুল্য৷ নির্বাচন কমিশন প্রকাশিত তথ্য বলছে, ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে খরচ হয় প্রায় সাড়ে পাঁচ কোটি মার্কিন ডলার সমান অর্থ, ভারতীয় মুদ্রায় যা দাঁড়ায় ৩,৮৭০ কোটি রুপির কাছাকাছি৷
ছবি: Fotolia/ARTEKI
কতগুলি ইভিএম?
২০১৪ সালের নির্বাচনে আনুমানিক ১৮ লক্ষ ইভিএম ব্যবহৃত হয়েছিল৷ ইভিএম আসায় নির্বাচনের কাজ দ্রুত শেষ করা গেলেও অনেক রাজনৈতিক দল মনে করে যে এখানেও কারচুপি সম্ভব৷ বিভিন্ন মহল থেকে ব্যালট পেপার ফিরিয়ে আনার দাবি থাকলেও আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে তা হবার সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ৷
ছবি: picture alliance/NurPhoto/D. Chakraborty
10 ছবি1 | 10
কিন্তু রাজনৈতিক কৌশল হিসেবে বিজেপির এই কৌশল এবং বিরোধী শিবিরে বার্তা পৌঁছনো যদিও বা কুশলী চাল হয়, নিচুতলার কর্মীদের কিন্তু এই চাপিয়ে দেওয়া সিদ্ধান্ত ঠিক হজম হচ্ছে না৷ গোপনে এবং প্রকাশ্যে বিরোধিতা হচ্ছে, দলীয় কার্যালয় ভাঙচুর, নেতাদের নিগ্রহের ঘটনাও ঘটছে৷ কোচবিহারে নিশীথ প্রামাণিককে প্রার্থী করায় যেমন পোস্টার পড়েছিল, দিনহাটার স্মাগলারকে একটিও ভোট নয়৷ হয় যোগ্যতর প্রার্থী, অথবা নোটায় ভোট দিন৷ শমীক ভট্টাচার্য যদিও দাবি করেছেন, শুরুতে কিছু সমস্যা হলেও অনেক জায়গাতেই দলীয় কর্মীদের বোঝানো সম্ভব হয়েছে৷ বিরোধ ভুলে ভোটের প্রচারে সামিলও হয়েছেন তাঁরা৷