গৌতম চট্টোপাধ্যায়ের হাত ধরে সত্তরের দশকে ‘মহীনের ঘোড়াগুলি’ যে লড়াই শুরু করেছিল, নব্বইয়ের দশকে একগুচ্ছ গায়ক এবং ব্যান্ডের হাত ধরে বাংলা গান সেই পূর্ণতা পায়৷ পশ্চিমবঙ্গে বাংলা ব্যান্ড একটা যুগ৷
বিজ্ঞাপন
‘আস্তাবল’
নকশাল আন্দোলনের জোয়ার তখন ক্রমশ স্তিমিত হয়ে আসছে৷ আন্দোলনের জেরেই একসময় কলকাতা ছাড়তে হয়েছিল ‘মহীনের ঘোড়াগুলি’র সৃষ্টিকর্তা গৌতম চট্টোপাধ্যায়কে৷ পুলিশের সঙ্গে রফা হয়েছিল এইরকম– হয় তাঁকে শহরের জেলে থাকতে হবে, নইলে রাজ্য ছেড়ে চলে যেতে হবে অনেক দূরে৷ মধ্যপ্রদেশের বিলাসপুরে বেশ কিছুদিন কাটিয়ে একমুঠো গান নিয়ে শহরে ফিরে এলেন গৌতম৷ শুরু হলো মহীনের ঘোড়াগুলির জার্নি৷ খুব সহজ যাত্রা নয়৷ ব্যান্ড নিয়ে তখনো পশ্চিমবঙ্গের বাঙালির কোনো ধারণাই নেই৷ পাশ্চাত্যের বিটলস, পিংক ফ্লয়েড, লেনন-ডিলান শুনছেন কেউ কেউ৷ কিন্তু তা যে বাংলাতেও হতে পারে, ভাবতে পারেননি কেউ৷ কিন্তু গৌতম একবগ্গা৷ গান তিনি গাইবেনই৷ এবং ব্যান্ড নিয়েই গাইবেন৷ কেনা হলো ড্রামস, গিটার, বাঁশি৷ ভাই বুলা, বন্ধু রঞ্জন, এব্রাহাম, বাপিকে নিয়ে শুরু হলো ‘মহীনের ঘোড়াগুলি’৷ রাতবিরেতে মহড়া বসতো দক্ষিণ কলাকাতায় গৌতম চট্টোপাধ্যায়ের বাড়িতে৷ প্রতি রাতে বিপ্লব হতো সুরের জাদুঘরে৷
বিশ্ববিখ্যাত ব্যান্ডগুলোর ভাঙা-গড়া
যশ, অর্থ ও প্রতিপত্তি যখন তুঙ্গে থাকে, তখন অনেকেই তা ঠিক সামাল দিতে পারেন না৷ সে কারণেই যুগে যুগে বিখ্যাত সব ব্যান্ড ভেঙেছে৷ অনেকে ব্যান্ডের ছায়ায় না থেকে নিজের আলাদা ক্যারিয়ার গড়েছেন৷ ছবিঘরে দেখে নিন তারই এক ঝলক৷
ছবি: Getty Images/AFP
দ্য বিটলস
১৯৬৯ সালেই ব্যান্ড ছেড়ে দেন লেজেন্ড গায়ক জন লেনন৷ তবে ১৯৭০ সালে সতীর্থ পল ম্যাককার্টনি একক অ্যালবামের ঘোষণা দেয়ার আগ পর্যন্ত বিষয়টি নিয়ে মুখ খোলেননি তিনি৷
ছবি: picture-alliance/AP
দ্য ঈগলস
১৯৮০ সাল নাগাদ যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় ব্যান্ডের তকমা দ্য ঈগলসের গায়ে৷ মূল দুই সদস্য বার্নি লেডন ও রেন্ডি মাইজনার ব্যান্ড ছেড়ে দেন৷ তাঁদের অভিযোগ ছিল, দলের ভেতরের পরিবেশ বিষাক্ত হয়ে উঠেছে৷ কর্তৃত্ব আর নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিজেদের দ্বন্দ্ব এতটাই চরমে পৌঁছে যায় যে, ১৪ বছর একসাথে থাকার পর ভেঙে যায় ব্যান্ডটি৷
ছবি: Imago/UnitedArchives
গানস অ্যান’ রোজেস
জনপ্রিয়তা আর বাণিজ্যিক সাফল্যের শিখরে থাকা অবস্থাতেই ভেঙে যায় গানস অ্যান’ রোজেস৷ গায়ক রোজ ও গিটরিস্ট স্ল্যাশের মধ্যকার দ্বন্দ্ব চরমে পৌঁছে৷ দু’জনেই আধিপত্য বজায় রাখতে গিয়ে ব্যান্ডটা ভেঙ্গে ফেলেন৷
ছবি: Imago/ZUMA Press
পিংক ফ্লয়েড
১৯৮৩ সালে প্রথম ভাঙে এই বিখ্যাত দলটি৷ দু’বছর পর আবার দলকে এক করার চেষ্টা করেন ডেভিড গিলমোর ও নিক মেসন৷ কিন্তু ব্যান্ডটির অমর সৃষ্টি ‘দ্য ওয়াল’ গানের মূল নায়ক রজার ওয়াটার্স নিজের একক ক্যারিয়ার নিয়েই ব্যস্ত ছিলেন৷ শুধু তাই নয়, তিনি ব্যান্ডটি আবার একত্রিত হচ্ছে, তা-ও মেনে নিতে পারেননি৷ মামলা ঠুকে দেন অন্য সদস্যদের বিরুদ্ধে৷ পরে অবশ্য কোর্টের বাইরেই ফয়সালা হয়৷
ছবি: Reuters/S. Wermuth
স্পাইস গার্লস
গান ও মিউজিক ভিডিও দিয়ে লাখো তরুণের মন মাতানো স্পাইস গার্লসও এক থাকতে পারেনি৷ ১৯৮৮ সালে গ্যারি হ্যালিওয়েল (জিনজার স্পাইস) ঘোষণা দেন যে, তিনি বিশেষ কারণে দল ছেড়ে দিচ্ছেন৷ এরপর কিছুদিন একক ক্যারিয়ার চালিয়ে গেলেও দলটি বেশিদিন আর টিকতে পারেনি৷
ছবি: picture-alliance/dpa/M. Owen
দ্য এভারলি ব্রাদার্স
প্রায় দুই দশক গান গেয়ে পুরো পৃথিবী মাতান৷ এরপর তাঁদের মধ্যে কে বড়, তাই নিয়ে বাঁধে ঝগড়া৷ সেই ঝগড়ার কারণে দলটিই ভেঙে দিয়ে আলাদা আলাদা ক্যারিয়ার নিয়ে এগিয়ে যান৷
ছবি: Getty Images
ওয়েসিস
ব্যান্ডের দুই সহোদর গীতিকার নোয়েল ও লিয়াম গ্যালাঘারের মধ্যে দ্বন্দ্ব প্রায়ই সহিংস হয়ে উঠতো৷ যখন নোয়েল নিজের নাম ‘অলসো লিয়াম’-এ পরিবর্তন করলেন, তখন ব্যান্ডটিকে ধরে রাখা গেল না৷ ভেঙ্গে গেল৷
ছবি: AP
এন সিঙ্ক
ব্যান্ডটি বেশ ভালোই নাম কুড়িয়েছিল৷ কিন্তু অন্যতম সদস্য জাস্টিন টিম্বারলেক যখন ২০০২ সালে তাঁর প্রথম একক অ্যালবাম বের করলেন, তখনই শঙ্কায় পড়লো ব্যান্ডের ভবিষ্যৎ৷ এরপর ২০০৪ সালে ঘোষণা দিয়েই ব্যান্ড ছেড়ে বেরিয়ে এলেন টিম্বারলেক৷
ছবি: Getty Images/Liaison
8 ছবি1 | 8
তেমনই এক রাতে ঘটল ঘটনাটা৷ সদ্য বাড়ি রং হয়েছে গৌতমের৷ সারা রাত মহড়া করার পর সকালে বাড়ি থেকে বেরনোর সময় দেখেন, আলকাতরা দিয়ে বড় বড় করে কেউ পাঁচিলের গায়ে লিখে দিয়ে গেছেন ‘আস্তাবল’৷ ড্রাম, গিটারের আওয়াজে রাতে ঘুমাতে না পেরে কাজটা করেছিলেন কোনো এক প্রতিবেশী৷ গৌতম রেগে যেতে পারতেন৷ সাঙ্গপাঙ্গদের নিয়ে লেখা মুছে দিতে পারতেন৷ সেটাই স্বাভাবিক৷ কিন্তু গৌতম মোছেননি৷ দীর্ঘদিন তাঁর বাড়ির বাইরে লেখা ছিল কথাটা৷ গৌতম বলেছিলেন, বিষয়টিকে তিনি কমপ্লিমেন্ট হিসেবেই দেখছেন৷ বাংলা ব্যান্ডের গান শুনে কেউ তো অন্তত তাঁর অভিব্যক্তি জানিয়েছেন! সেই বা কম কী? মহীনের ঘোড়া আস্তাবল পেলো৷
সমালোচনার ঝড়
মহীনের ঘোড়ার শুরুর দিনগুলো ছিল এরকমই৷ দু-একজন হাতেগোনা মানুষ ছাড়া অধিকাংশই গালাগাল করে ভূত ভাগিয়ে দিয়েছিল প্রথম বাংলা ব্যান্ডের৷ প্রথম শ্রেণির প্রচলিত দৈনিক কাগজগুলিতে একের পর এক সমালোচনামূলক লেখা প্রকাশিত হচ্ছিল৷ কিন্তু মহীন থামেনি৷ চালিয়ে গেছে তাদের নতুন গানের ধারা৷ প্রায় তিন দশক পর বাংলার মানুষ যে গানকে কুর্নিশ জানাবে৷ যে গান রচনা করবে একটা নতুন অধ্যায়৷ আর তারই পাশাপাশি গিটার হাতে, কি-বোর্ড নিয়ে একাই মঞ্চ কাঁপাবেন আরেক যুগপুরুষ, সুমন চট্টোপাধ্যায়৷ অধুনা কবীর সুমন৷ একাই হয়ে উঠবেন একলা ব্যান্ড৷ বলবেন সময়ের কথা৷ গড়িয়াহাটার মোড়ের গল্প৷ আর মহীন-সুমনের সেই ঘরানাকে সঙ্গে নিয়ে বাংলার একদল তরুণ গিটার হাতে নেমে পড়বেন মাঠে ময়দানে৷ একা গাইবে না, একসাথে গাইবেন৷ বাজাবেন৷ স্টেজ জুড়ে কার্নিভাল ছড়িয়ে দেবেন৷
বাংলা ব্যান্ড৷
আশির গল্প
আশির দশকে বাংলা গান থেকে কার্যত মুখ ঘুরিয়ে নিয়েছিল তরুণ প্রজন্ম৷ নতুন গান কই? যে গান সময়ের কথা বলবে? পঞ্চাশ-ষাটের বাংলা গানে বিপ্লব এনেছিলেন সলিল চৌধুরীরা৷ সময়কে ধরার চেষ্টা করেছিলেন কথায় সুরে৷ তৈরি হয়েছিল কয়্যার৷ ক্যালকাটা ইউথ কয়্যার অন্য ধারার সংগীত উপস্থাপন করেছিল৷ যুক্ত হয়েছিল গণসংগীত৷ কিন্তু আশির দশকে এসে সবই হারিয়ে যাচ্ছিল৷ গান বলতে বাঙালি বুঝছিল ‘স্বর্ণযুগে’র গান অথবা সময়ের হিন্দি ছবির গান৷ বাংলা ছবি তখন প্রায় দেখছেনই না মধ্যবিত্ত বাঙালি৷ ছবির গান শোনা তো অনেক পরের কথা৷ ইতিমধ্যেই বাঙালির ঘরে ঘরে ঢুকে পড়েছে টেলিভিশন৷ তরুণের কানে তখন ‘সুপারহিট মুকাবিলা’ কিংবা ‘চিত্রহার’৷ মূলত বলিউডের বাণিজ্যিক ছবির গান নিয়ে তৈরি অনুষ্ঠান৷
‘আমাদের গান যে এত লোক শুনবে, ভাবিনি কোনোদিন’
তোমাকে চাই
এমনই এক সময়, নব্বইয়ের প্রারম্ভে ‘তোমাকে চাই’ নিয়ে সকলের মন জিতে নিলেন সুমন চট্টোপাধ্যায়৷ শুধু গাইছেন না, স্টেজের ওপর পারফর্ম করছেন৷ একাই বাজাচ্ছেন কি-বোর্ড, গিটার, মাউথঅর্গান৷ গাইছেন, কথা বলছেন, স্লোগান দিচ্ছেন মঞ্চ কাঁপিয়ে৷ বলছেন সময়ের কথা৷ গানের সুরে চলে আসছে এক কাপ চা কিংবা পাগল৷ বলছেন, দশ ফুট বাই দশ ফুটে মধ্যবিত্ত যাপনের কথা, নাবালক রিকশা ছোঁড়ার কথা৷ পেটকাটি চাঁদিয়াল, বসে আঁকো প্রতিযোগিতা, সুনীলের কবিতা কিংবা পান্নালালের বাঁশির কথা ঢুকে পড়ছে গানের কথায়৷
সময় বদলে দিলেন সুমন৷ বদলে দিলেন সুর, ছন্দ, কথা৷ চলন৷ ভঙ্গি৷ যাঁর পথ ধরে একে একে মঞ্চে উঠবেন নচিকেতা, অঞ্জন এবং আরো কিছুদিন পর শিলাজিৎ৷ বাঙালি শ্রোতা আবার বাংলা গানমুখী হলো৷
এবং ব্যান্ড
নতুন বাংলা গানের সেই ধারা আরো বদলে গেল একদল কলেজ পড়ুয়ার হাত ধরে৷ উপল, চন্দ্রিল, অনিন্দ্যরা তখন স্কটিশ চার্চ কলেজের ছাত্র৷ নতুন বাংলা গানের শরিক হয়ে তাঁরাও তখন লিখছেন নিজেদের গান৷ সুর করছেন৷ গাইছেন কলেজ ফেস্টে৷ সে গান যে একদিন অ্যালবামবন্দি হবে এবং ছড়িয়ে যাবে দেশ-বিদেশের বাঙালি শ্রোতার কাছে, তখনো বিশ্বাস করেননি তাঁরা৷ চন্দ্রবিন্দুর অনিন্দ্যর কথায়, ‘‘প্রথম অ্যালবামের নাম দিয়েছিলাম ‘আর জানি না’৷ কারণ, এর পর আর কিছু হবে কিনা, আদৌ আমরা গান গাইব কি না, জানতাম না৷’’
‘‘আমাদের গান যে এত লোক শুনবে, ভাবিনি কোনোদিন৷ প্রথম দিকে খুব সিরিয়াসও ছিলাম না৷ সে কারণেই প্রথম অ্যালবামের নাম রাখা হয়েছিল ‘আর জানি না’৷ এরপর আর অ্যালবাম হবে, ভাবিওনি কোনোদিন৷’’
ব্যান্ডের গান শ্রোতা নিল৷ শুধু নিল না, গিলল৷ একের পর এক অ্যালবাম বেরোতে শুরু করল চন্দ্রবিন্দুর৷ অন্যদিকে আরেক অনিন্দ্য, অনিন্দ্য বোসের কলমে তখন ‘পরশপাথর’৷ তাঁর লেখা গানের ডালি নিয়ে মঞ্চ দাপাতে শুরু করল ‘পরশপাথর’-এর বাকি সদস্যরা৷ অনিন্দ্যঅবশ্য একেবারে প্রথম পর্বেই ‘পরশপাথর’ ছেড়ে বেরিয়ে এসেছিলেন৷ অনেক পরে তাঁর কলম আবার শোনা যাবে ‘শহর’ ব্যান্ডের মাধ্যমে৷ এদিকে ‘অভিলাষা’ শোনাচ্ছে তখন রাস্তার গান৷ ক্যাকটাসের সিধু-পটা জুটি স্টেজ ছেড়ে ছবিতেও নেমে পড়েছে৷ ‘নীল নির্জনে’ গানের জন্যই হিট হয়ে গেল৷ পাড়ায় পাড়ায় প্রতিদিন তখন ব্যান্ডের শো৷ পার্ক স্ট্রিটের ‘সাম প্লেস এলস’ পাবের ইংরেজি ধারা থেকে বেরিয়ে এসে ‘ভূমি’ তৈরি করছেন সুরজিৎ, টুকি, সোমিত্ররা৷ গাইছেন লোকগান৷ গানের তালে তালে হেড ব্যাং হচ্ছে কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ফেস্টে৷ গিটার কাঁধে কলকাতার রাস্তা দাপাচ্ছে কলেজ পড়ুয়া তরুণেরা৷
ইউরোপের দশটি চোখ ধাঁধানো কনসার্ট হল
ইউরোপ কেন, দুনিয়া জুড়ে বড় বড় শহরের কনসার্ট হল শুধু গানবাজনা শোনার জায়গাই নয়, আধুনিক স্থাপত্যের নিদর্শনও বটে৷ তারা নিজেরাই পর্যটকদের টানে৷
ছবি: picture alliance/Arcaid/S. Ellingsen
কিলডেন পার্ফর্মিং আর্টস সেন্টার, নরওয়ে
কিলডেন পার্ফর্মিং আর্টস সেন্টার, নরওয়ে
কনসার্ট হলটি জলের ধারে৷ সামনেটা ১০০ মিটার লম্বা একটা কাচের দেয়াল, তার ওপর ঝুলছে ওক কাঠের সোনালি রঙের এক পর্দা, যেন থিয়েটারের যবনিকা৷ তৈরির কাজ শেষ হয় ২০১২ সালে৷ মোট এলাকা ১৬৫,০০০ বর্গমিটার৷ এখানে নাটক, অপেরা বা সিম্ফনি অর্কেস্ট্রা সব কিছুই অনুষ্ঠিত হয়৷
ছবি: picture alliance/Arcaid/S. Ellingsen
ফিলহার্মনি দ্য পারি, ফ্রান্স
এমন একটি কনসার্ট হলের আইডিয়া প্রথম এসেছিল নামকরা অর্কেস্ট্রা পরিচালক পিয়ের বুলে ও পুরস্কার বিজয়ী স্থপতি জঁ নুভেলের মাথায়৷ উদ্বোধন করা হয় ২০১৫ সালে৷ অ্যালুমিনিয়ামের সম্মুখভাগটি তিন লাখ চল্লিশ হাজার পাখি দিয়ে সাজানো, তাদের সাত ধরনের আকৃতি ও ধূসর থেকে কালো, এই চার ধরনের রঙ৷ দূর থেকে দেখলে মাছের আঁশের মতো ঝকঝক করে৷ ৩৭ মিটার উঁচু বাড়িটির ছাদে ওঠা যায় ও সেখান থেকে প্যারিসের দৃশ্য উপভোগ করা যায়৷
ছবি: picture-alliance/dpa/T. Muncke
সেজ গেটসহেড, ইংল্যান্ড
গেটসহেড আর নিউক্যাসলের মধ্যে টাইন নদীর ওপর সাতটা সেতু৷ তার মধ্যে মিলেনিয়াম ব্রিজটি সেজ গেটসহেড কনসার্ট হলের ওপর দিয়ে চলে গেছে৷ গোটা বাড়িটাতেই আলো জ্বলে৷ ডিজাইন প্রখ্যাত স্থপতি স্যার নর্মান ফস্টারের৷ উদ্বোধন করা হয় ২০০৪ সালে৷ কনসার্ট হলটি প্রতিদিন ১৬ ঘণ্টা করে বছরে ৩৬৪ দিন খোলা থাকে৷
ছবি: picture-alliance/robertharding/M. Sunderland
কাসা দা মুজিকা পোর্তো, পর্তুগাল
তেরশ’ দর্শকের বসার মতো এই কনসার্ট হলটিকে দেখতে যেন একটি সুবিশাল বাক্স৷ বাইরেটা সাদা কংক্রিট আর কাচের৷ ভেতরটায় নানা রঙ ও আকৃতির বিভিন্ন ফিচার, সেই সঙ্গে পর্তুগালের ‘আজুলেজস’ পাথরের টালি৷ কাচের ছাদটা খুলে দেওয়া যায়; তখন এখানে থেকে পোর্তো শহরের সব বাড়ির মাথা ছাড়িয়ে অতলান্তিক সমুদ্র অবধি দেখতে পাওয়া যায়৷
ছবি: picture-alliance/dpa/D. Karmann
পালাউ দে লেজার্ত রেইনা সোফিয়া, স্পেন
ভ্যালেন্সিয়া শহরে কুইন সোফিয়া প্যালেস অফ দ্য আর্টসের উদ্বোধন করা হয় ২০০৫ সালে৷ বিশ্বখ্যাত স্থপতি সান্তিয়াগো কালাত্রাভা যে সুবিশাল সিটি অফ আর্টস অ্যান্ড সায়েন্সেসের পরিকল্পনা করেছিলেন, এই কনসার্ট হলটি ছিল তার চূড়ান্ত অংশ৷ ৭৫ মিটার উঁচু ভবনটি বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু অপেরা হাউস বলে পরিচিত৷
ছবি: picture-alliance/Arco Images GmbH/J. Moreno
নর্স্কে অপেরা ও ব্যালে, নরওয়ে
অসলোর নরওয়েজিয়ান অপেরা ও ব্যালেট ভবনটির ছাদ ৩৬,০০০ কারারা শ্বেতপাথরের ব্লক দিয়ে তৈরি৷ এই ছাদের ওপর দিয়ে হেঁটে যাওয়া যায়৷ হলটির চারপাশে পাতলা কাচের দেয়াল৷ হলের ভেতরটা তেলে ‘সিজনড’ ওক কাঠ দিয়ে তৈরি, যার ফলে খুব ভালো শুনতে পাওয়া যায়৷ ইন্টারভ্যালের সময় ব্যালকনি থেকে বাইরে নরওয়ের ফিয়র্ডগুলির দৃশ্য দেখতে পারা যায়৷
কনসার্ট হলটির ধাঁচ কিছুটা আলাদা বলে গোড়ায় বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছিল৷ অর্কেস্ট্রার বাজনদাররা হলের মাঝখানে একটা পোডিয়ামের ওপর বসেন৷ স্থপতি হান্স শারুনের এই বিপ্লবী ডিজাইন পরে সারা বিশ্বে আধুনিক কনসার্ট হল তৈরির মডেল হয়ে ওঠে৷
ছবি: picture alliance/Arco Images/Schoening Berlin
আল্টো থিয়েটার, এসেন, জার্মানি
জার্মানির এসেন শহরের এই কনসার্ট হলটির বিশেষত্ব হলো, স্টেজের সামনে বসা দর্শকদের আসনগুলি অর্ধগোলাকৃতি করে অপ্রতিসমভাবে সাজানো৷ ফিনল্যান্ডের স্থপতি আলভার আল্টো জানিয়েছেন, তিনি ডেলফির প্রাচীন গ্রিক থিয়েটারগুলো থেকে এ ধরনের অডিটোরিয়াম সৃষ্টির প্রেরণা পেয়েছেন৷ আলভার থিয়েটারের নকশাটি করেন পঞ্চাশের দশকে, কিন্তু কাজ শুরু হয় ১৯৮৩ সালে৷ আজ এই ভবনটিকে আধুনিক ক্লাসিক্যাল ডিজাইনের একটি নিদর্শন বলে গণ্য করা হয়৷
ছবি: Bernadette Grimmenstein
হার্পা মিউজিক হল, রাইকজাভিক, আইসল্যান্ড
আংশিক রঙ করা কাচের বিল্ডিং ব্লকগুলোকে মৌমাছির চাকের মতো বসিয়ে আলোর জাদু সৃষ্টি করেছেন শিল্পী ওলাফুর এলিয়াসন৷ দিনের বেলায় বাইরে থেকে কাচের ওপর আলো পড়ে বর্ণালীর সৃষ্টি হয়; রাত্রে ভবনটির ভিতরের আলো জ্বললে গোটা বাড়িটা রঙ বদলায় যেন বহুরূপীর মতো৷
হামবুর্গের এই কনসার্ট হলটি তৈরি হতে যে পরিমাণ বিলম্ব হয়েছে আর বাজেট যে পরিমাণে বেড়েছে, তাতে কেউ প্রত্যাশাই করেননি যে, তার চূড়ান্ত আকার এত সুন্দর ও মনোমুগ্ধকর হবে৷ ফিলহার্মনিকের ছাদটা ঢেউ খেলানো, যেন একসঙ্গে সাগর আর সংগীতের ওঠা-নামা৷ হামবুর্গের বন্দর এলাকার একটি মালগুদামের উপর কাচের এই বাড়িটি যেন জলের ওপর ভাসছে৷ প্রথম কনসার্টের তারিখ হলো ১১ই জানুয়ারি, ২০১৭৷
ছবি: T. Rätzke
10 ছবি1 | 10
অন্য দেশের প্রভাব
সে সময়ের কলেজ পড়ুয়া, অধুনা কলেজের শিক্ষিকা এবং বাংলা ব্যান্ডের গবেষক সংযুক্তা রায়ের কথায়, ‘‘ব্যান্ডের সেই রমরমা সময়ের কথা বলতে গেলে আমরা অনেক সময় আশপাশের কথা ভুলে যাই৷ শুধুমাত্র আটকে থাকি মহীনের ঘোড়া কিংবা সুমন-নচি-অঞ্জন-শিলাজিতের কথায়৷ আমরা ভুলে যাই, বাংলাদেশের ফিডব্যাক, আইয়ুব বাচ্চু, জেমস কিংবা পাকিস্তানের জুনুন কিংবা স্ট্রিংসের কথা৷ মনে থাকে না ইউফোরিয়ার কথা৷ আসলে উপমহাদেশে সেটা ব্যান্ড যুগ৷ বাংলাদেশের ব্যান্ড, পাকিস্তানের ব্যান্ড বিপুলভাবে প্রভাব ফেলেছিল ভারতীয় সংগীতে৷ পেশায় ডাক্তার পলাশ সেন দিল্লিতে তখন ‘ইউফোরিয়া’ নিয়ে মাতাচ্ছেন৷ সেই জোয়ারও কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে লেগেছিল৷ আমাদের ব্যান্ডগুলো ভীষণভাবে অনুপ্রাণিত হয়েছিল সেসব গানেও৷ আরও একটু পর ‘শহর’ কিংবা ‘ফসিলস’এর গানে সেই ধারণা পাওয়া যাবে৷’’
দোহার
আবার একেবারে অন্য এক ধারা তখন তৈরি করছেন কালিকাপ্রসাদ৷ কীর্তন, বাউলের দলের গান নতুন ফর্মে তিনি নিয়ে আসছেন বাংলা ব্যান্ডের বাজারে৷ ব্যান্ডের আলোচনায় কালিকার ‘দোহার’কে আনতেই হবে৷ বহুদিন পর যিনি বলবেন, লোকগানও তো আসলে একরকম ব্যান্ড সংগীতই!
ক্যাসেট থেকে এমপিথ্রি
এলপি থেকে ক্যাসেট আসতে সময় লেগেছিল অনেকটাই৷ ক্যাসেট থেকে সিডি আসতে সময় লেগেছে প্রায় একদশক৷ মধ্যবিত্ত তখনো পছন্দের গান অ্যালবামে কিনছেন৷ গানের বাজার তখনো অ্যালবাম বিক্রি ধরেই বিচার হচ্ছে৷ কিন্তু ওয়াইটুকে পরবর্তী বিশ্ব দ্রুত বদলাতে শুরু করলো৷ বাজারের দখল নিলো ইন্টারনেট এবং পাইরেসি, যুগপৎ৷ সিডি নয়, মানুষ কিনতে শুরু করলেন সস্তার এমপিথ্রি৷ দু’পিঠে চারটে চারটে করে গান নয়, একটা এমপিথ্রি’তে ধরে যাচ্ছে কয়েকশ’ গান৷ পাইরেসি গ্রাস করল গানের বাজার৷ বহু ব্যান্ড বন্ধ হয় সেই সময়ে৷ মানুষ গান শুনছেন তাঁদের, কিন্তু অ্যালবাম বিক্রি হচ্ছে না৷ সবটাই পাইরেসিতে হারিয়ে যাচ্ছে৷
অ্যালবাম থেকে ছবি
এদিকে ততদিনে বদলে গিয়েছে বাংলা ছবির বাজারও৷ ব্যান্ডের গায়কদের কম্পোজিশন জায়গা পেতে শুরু করলো ছায়াছবিতে৷ তাঁরাই হয়ে উঠতে শুরু করলেন সময়ের প্লে-ব্যাক সিংগার, কম্পোজার৷ একসময় যে গান ছিল বিপ্লব, দু’হাজার সাল পরবর্তী সময়ে সে গানই হয়ে যাচ্ছে মূলস্রোতের বাংলা গান৷ চন্দ্রবিন্দুর অনিন্দ্য খুব স্পষ্ট করেই বলেছেন, তাঁদের গানই এখন মূলস্রোতের বাংলা গান৷
বিপ্লব থেকে বাণিজ্যে
বাজার চিনতে ভুল হয়নি বাণিজ্যিক এফএম চ্যানেলগুলির৷ অ্যালবামের গান শোনানো বন্ধ করে তারা ঢুকে পড়লো বাংলা ছবির গানে৷ ফলে নতুন নতুন তৈরি হওয়া ব্যান্ডগুলো নিজেদের প্রমাণ করার জায়গা খুঁজে পেলো না৷ অনেকটাই স্তিমিত হলো ব্যান্ড জোয়ার৷ চন্দ্রবিন্দু, ফসিলসের মতো পরিচিত ব্যান্ডগুলো এখনো মাঠে ময়দানে দাপিয়ে বেড়ালেও নতুন ব্যান্ডের উত্থান আর ততটা চোখে পড়ে না ২০১৮ সালে৷ আবার একটা স্থিতাবস্থার মধ্যে পৌঁছে গিয়েছে বাংলা গান৷ বাংলা ব্যান্ড৷ এর শেষ কোথায়, জানা নেই অতি বড় সংগীত বোদ্ধারও৷
চুরি হয়ে গেছে বিলকুল
সুকুমার রায় লিখেছিলেন ‘গোফ গিয়েছে চুরি’৷ শিল্পজগতের মানুষেরা বলেন, শিল্পই চুরি হয়ে যাচ্ছে৷ সুর-কথা-গল্প চুরি হওয়ার কাহিনি নতুন কিছু নয়৷ গত কয়েকবছরের তেমনই কিছু যুগান্তকারী শিল্প চুরির দিকে নজর ফেরানো যাক৷
ছবি: jeffkoons.com
লানা ডেল রে বনাম রেডিওহেড বনাম দ্য হোলিস
অস্বীকার করার উপায় নেই যে, লানা ডেল রে’র বিখ্যাত গান ‘গে ফ্রি’ অনেকটাই রেডিওহেডের বিখ্যাত গান ‘ক্রিপ’এর মতো শুনতে৷ যে কারণে রেডিওহেড ব্যান্ডটি লানা হেডের সৌজন্য দাবি করেছে৷ অর্থাৎ, গানটি গাওয়ার সময় রেডিওহেডের কাছে সৌজন্য প্রকাশ করতে হবে৷ যদিও রেডিওহেডের ‘ক্রিপ’ গানটিও বিতর্কের ঊর্ধ্বে নয়৷ অনেকেরই দাবি, গানটি হোলিসের ‘দ্য এয়ার দ্যাট আই ব্রিদ’ গানটি থেকে কপি করা৷
ছবি: Imago/PA Images/D. Lawson
স্যাম স্মিথ বনাম টম পেটি
২০১৪ সালে স্যাম স্মিথ রেকর্ড করেন ‘স্টে উইথ মি’, যা প্রকাশ পাওয়ার পর থেকেই বিতর্ক শুরু হয়ে যায়৷ গানটি টম পেটির ‘আই ওন্ট ব্যাক ডাউন’এর অনুকরণ বলে অনেকে দাবি করেন৷ বিতর্কের অবসান ঘটাতে পেটি রয়্যালটি পেয়েছিলেন৷ তবে বিষয়টি নিয়ে ক্ষুব্ধ হননি পেটি৷ বলেছিলেন, অজান্তেই সম্ভবত দু’টি গান একরকম হয়ে গিয়েছে৷
ছবি: picture-allianc/empics/Y. Mok
রবিন থিকে ও ফ্যারেল উইলিয়ামস বনাম মারভিন গায়ে
রবিন উইলিয়াম এবং ফ্যারেল উইলিয়ামস ততটা ভাগ্যবান নন৷ গান চুরির অপরাধে তাদের রীতিমতো কাঠখড় পোড়াতে হয়েছিল৷ তাদের বিখ্যাত গান ‘ব্লার্ড লাইনস’৷ ২০১৩ সাল নাগাদ জানা যায়, গানটি মারভিন গায়ের ‘গট টু গিভ ইট আপ’এর কপি৷ এ কারণে মারভিন গায়েরকে তাঁদের ক্ষতিপূরণ দিতে হয়েছিল ৭মিলিয়ন ডলার৷ যদিও এখনও রবিন এবং ফ্যারেল স্বীকার করেন না যে, তাঁরা গায়ে’র গান কপি করেছিলেন৷
ছবি: picture-alliance/AP
মোজেস পেলহাম এবং সাবরিনা সেটলার বনাম ক্রাফটভ্যার্ক
দু’সেকেন্ডের সুর ২০বছরের মামলা যে টেনে নিয়ে যেতে পারে এ ঘটনা না ঘটলে তা জানাই যেতো না৷ মোজেস পেলহাম একজন সংগীত প্রযোজক৷ জার্মান ব্যান্ড ক্রাফটভ্যার্কের বিখ্যাত গান ‘মেটাল আউফ মেটাল’ গানটি থেকে ২সেকেন্ডের মিউজিক স্যাম্পল নিয়েছিলেন মোজেস, যা তিনি ব্যবহার করেছিলেন ব়্যাপার সাবরিনা সেটলু’র গান ‘নুর মির’এ৷ তার জেরেই হয় মামলা৷ মামলা গড়িয়েছিল ইউরোপিয়ান কোর্ট অফ জাস্টিস পর্যন্ত৷
ছবি: picture-alliance/dpa/RMV via ZUMA Press/Mike Tudor
লেড জেপ্পেলিন বনাম স্পিরিট
‘স্টেয়ারওয়ে টু হেভেন’ রক মিউজিকের ইতিহাসে অন্যতম গান৷ কিন্তু গানটি কি সত্যিই জিমি পেজ ও রবার্ট প্লান্টের লেখা? স্পিরিট ব্যান্ডের জনপ্রিয় গায়ক ও গিটারিস্ট বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক উসকে দেন৷ লস এঞ্জেলেসের আদালত অবশ্য রায় দেয় গানটি অন্য কোনও গান থেকে কপি করা হয়নি৷ তবে বিতর্কটি রয়েই গিয়েছে৷
শাকিরা বনাম রামোন এরিয়াস ভাসকোয়েজ
গান চুরির অভিযোগ আছে শাকিরার বিরুদ্ধেও৷ ২০১৪ সালে অ্যামেরিকার ফেডারেল কোর্ট জানায় যে, শাকিরার ‘লোকা’ গানটি রামোনের ‘লোকা কন সু টাইগিয়ার’ গানটির অবৈধ কপি৷ যদিও ততদিনে শাকিরার লোকা পৃথিবীময় বিক্রি হয়ে গিয়েছে৷
ছবি: Getty Images/R.Juergens
বব ডিলানের নোবেল প্রাইজ স্পিচ
মার্কিন সাংবাদিক অ্যান্ড্রিয়া পিৎজার প্রথম অভিযোগ করেন যে, বব ডিলানের নোবেল বক্তৃতার ২০টির মতো বাক্য অন্য লেখা থেকে কপি করা৷ অভিযোগ, ডিলান মেলভিলের ক্লাসিক্যাল উপন্যাস ‘মবি ডিক’ থেকে তাঁর লেখায় উদ্ধৃত করেছেন৷ কিন্তু সৌজন্যপ্রকাশ করেননি৷
ছবি: picture alliance/dpa/J.Lo Scalzo
জেফ কুনস বনাম জঁ ফ্রাঙ্কোইস বোউরেট
ছবি-ভাস্কর্যের দুনিয়াতেও চুরির অভিযোগ কম নয়৷ পপ আর্টের বিখ্যাত মার্কিন শিল্পী জেফ কুনস সম্প্রতি ২০হাজার ইউরো ক্ষতিপূরণ দিতে বাধ্য হয়েছেন৷ প্যারিসের একটি কোর্ট জানিয়েছে কুনসের ‘নেকেড’ মূর্তিটি ফরাসি শিল্পী জঁ ফ্রাঙ্কোইস বোউরেটের একটি মূর্তির অনুকরণ৷
ছবি: jeffkoons.com
8 ছবি1 | 8
পশ্চিমবঙ্গের ব্যান্ড সংগীত নিয়ে আপনার ভাবনার কথা লিখুন নীচের মন্তব্যের ঘরে৷