1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‌সম্মেলন হলো, লগ্নি আসবে কি?‌

শীর্ষ বন্দ্যোপাধ্যায় কলকাতা
১৮ জানুয়ারি ২০১৮

পশ্চিমবঙ্গে বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন হলো৷ ‘‌সফল’, বলেছেন অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র, ‘‌ফলপ্রসূ’, বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি৷ কিন্তু লগ্নি আসবে কি?‌ সেটাই আসল প্রশ্ন৷

সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে তোলা ছবিছবি: picture alliance/NurPhoto/D. Chakrabort

চেষ্টার ত্রুটি রাখেননি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি৷ কলকাতার নতুন উপনগরী রাজারহাটে নবগঠিত যে কনভেনশন সেন্টারে দু'‌দিনের বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন হয়ে গেল, চোখ ধাঁধানো চাকচিক্যে, আধুনিক ব্যবস্থাপনায় এবং প্রযুক্তি সুবিধের বিচারে সেই কনভেনশন সেন্টার একেবারে আন্তর্জাতিক মানের৷ সারা ভারতে এরকম একটি সম্মেলন কেন্দ্র আর দুটি আছে কি না সন্দেহ৷ বিদেশ থেকে একাধিক বাণিজ্য প্রতিনিধিদল এসেছিল এই সভায়৷ ফ্রান্স, জার্মানি, ইটালি, পোল্যান্ড, জাপান এবং চীন থেকে শিল্পসংস্থার প্রতিনিধিরা এসেছিলেন৷ চীন বাড়তি আগ্রহ দেখিয়েছিল৷ তারা এই বাণিজ্য সম্মেলনের সহযোগী দেশ হতে চেয়েছিল৷ কিন্তু কেন্দ্র সরকারের কূটনৈতিক লাল ফিতের ফাঁসে সেই সদিচ্ছা আটকে যায়৷

অন্যদিকে ভারতের প্রথম সারির শিল্পপতিরা সবাই এসেছিলেন৷ দেশের শীর্ষ লগ্নিকার এঁরা সবাই৷ মুকেশ আম্বানি, লক্ষ্মীনিবাস মিত্তল, উদয় কোটক, নিরঞ্জন হীরানন্দানি, কিয়োর বিয়ানি, সজ্জন জিন্দল৷ শুধু ভারত নয়, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে অত্যন্ত উল্লেখযোগ্য নাম এঁরা৷ এঁদের পাশাপাশি ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের সঞ্জীব গোয়েঙ্কা, সঞ্জয় বুধিয়া'র মতো স্থানীয় শিল্পপতিরা, লগ্নির অঙ্কে যাঁরা ভারতেও প্রথম সারিতেই৷ এবং এঁরা যেভাবে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর কঠোর এবং দক্ষ প্রশাসনের প্রশংসা করলেন, তাতে ভেবে নিতে কোনও অসুবিধে নেই যে, পশ্চিমবঙ্গে বিনিয়োগ পরিস্থিতি সত্যিই বদলেছে৷ এক দশক আগেও যে রাজ্য শিল্প-বন্ধ্যা এবং বিনিয়োগবিরোধী হিসেবে স্থায়ী দুর্নাম পেয়েছিল, অবশেষে সেই কলঙ্ক দূর হয়েছে৷ এবারের বাণিজ্য সম্মেলনের যে স্লোগান ছিল— ‘‌বেঙ্গল মিন্‌স বিজনেস'‌, সত্যিই তার সততা প্রমাণিত হয়েছে৷

কিন্তু প্রশ্ন হলো, এর পরেও পশ্চিমবঙ্গে বড় অঙ্কের লগ্নি আসবে কি?‌ দু'‌দিনের বাণিজ্য সম্মেলন শেষে, স্বাক্ষরিত মেমোরেন্ডাম অফ আন্ডারস্ট্যান্ডিং বা ‌এমওইউ এবং প্রতিশ্রুতি বিনিময়ের ভিত্তিতে সরকার জানিয়েছে, ২ দশমিক ২০ লক্ষ কোটি টাকার লগ্নি আসবে৷ এর ফলে কর্মসংস্থান হবে ২০ লক্ষ লোকের৷ শিল্পপতিরাও নিজেদের লগ্নি-প্রতিশ্রুতির নবায়ণ করেছেন৷ এই মুহূর্তে দেশের সবথেকে বড় শিল্পপতি মুকেশ আম্বানি যেমন সম্মেলনের প্রথম দিনেই বললেন, দু'‌ বছর আগে বাণিজ্য সম্মেলনের মঞ্চে দাঁড়িয়ে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, ৪৫০০ কোটি টাকার লগ্নি করবেন৷ তাঁর সংস্থার আনা জিও মোবাইল নেটওয়ার্কের মাধ্যমে এই রাজ্যে দু'‌ বছরে লগ্নির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকা, অর্থাৎ প্রতিশ্রুত অর্থের তিন গুণেরও বেশি৷ ভারতের যেসব রাজ্যে রিলায়েন্স-জিও সবথেকে বেশি লগ্নি করেছে, পশ্চিমবঙ্গ তাদের অন্যতম, জানিয়েছেন মুকেশ আম্বানি৷

‘পোলট্রি ফার্মিংয়ের ক্ষেত্রে আমূল পরিবর্তন আসন্ন’

This browser does not support the audio element.

মোবাইল পরিষেবা, রাজ্য জুড়ে ফাইবার অপটিক কেব্‌ল নেটওয়ার্ক চালু করাকে পরিকাঠামো উন্নতি ধরলে, এই খাতেই সবথেকে বেশি লগ্নি প্রতিশ্রুতি এসেছে এবারের বাণিজ্য সম্মেলনে৷ পরিকাঠামো ও নতুন কারখানা গড়তে ১ লক্ষ ৫৬ হাজার ৮১১ কোটি টাকা৷ এর পর আছে ছোট ও মাঝারি শিল্পে ৫২ হাজার ৯৫২ কোটি, হোটেল, রেস্তোরাঁ ও পর্যটন শিল্পে ১৪৮৩ কোটি বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি৷

কলকাতার বিশিষ্ট বাজার-পর্যবেক্ষক এবং অর্থনীতি বিশেষজ্ঞ ধ্রুবজ্যোতি নন্দী শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত উপস্থিত ছিলেন এই বাণিজ্য সম্মেলনে৷ ডয়চে ভেলেকে এক দীর্ঘ সাক্ষাৎকারে তিনি জানালেন, এই বিনিয়োগের অঙ্ক বাস্তবের মাটিতে ঠিক কী কী সুবিধে এনে দিতে পারে নাগরিক জীবনে৷ যেমন, হোটেল শিল্পে এক বড় ধরনের কর্মসংস্থানের সম্ভাবনা তৈরি হতে চলেছে৷ এক ডাচ সংস্থার সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে কমিউনিটি নার্সিং ট্রেনিংয়ের এক কর্মসূচিতে কাজ পাবেন মেয়েরা৷ পোলট্রি ফার্মিংয়ের ক্ষেত্রেও এক আমূল পরিবর্তন আসন্ন, যা শুধু পশ্চিমবঙ্গকে স্বনির্ভরই করবে না, গুণগত পরিবর্তনও হবে ব্যাপক হারে৷ 

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ