1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

পশ্চিমবঙ্গে মুসলিম ভোট ধরতে আসরে আব্বাস

১২ জানুয়ারি ২০২১

পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে মুসলিম ভোট গুরুত্বপূর্ণ। সেখানে নতুন দল তৈরির কথা জানালেন ফুরফুরা শরিফের পিরজাদা আব্বাস সিদ্দিকি।

আব্বাস সিদ্দিকি
ছবি: Naushad Bhai

ভোটের আগে পশ্চিমবঙ্গ রাজনীতিতে নতুন সমীকরণ তৈরির সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। ফুরফুরা শরিফের পিরজাদা আব্বাস সিদ্দিকি ডয়চে ভেলেকে দেওয়া এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, আগামী ২১ জানুয়ারি নতুন রাজনৈতিক দল প্রকাশ্যে আসবে। পিছন থেকে সেই দলের পৃষ্ঠপোষকতা করবেন তিনি।

পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে মুসলিম ভোট গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। প্রায় ৩০ শতাংশ মুসলিম ভোট আছে রাজ্যে। মুসলিমরা কোন দলকে ভোট দিচ্ছেন, তার উপর নির্বাচনের ফলাফল অনেকটাই নির্ভর করে। ২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গে ধর্মীয় মেরুকরণ তীব্র হয়েছে। যার সুযোগ পেয়েছে বিজেপি। প্রায় ৪০ শতাংশ ভোট পেয়েছে গেরুয়া শিবির। বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, মুসলিম ভোটের বড় অংশ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিকে ছিল বলেই তিনি বিজেপির থেকে কয়েক শতাংশ ভোট বেশি টানতে পেরেছিলেন। আর এখানেই গুরুত্বপূর্ণ ফুরফুরা শরিফের প্রসঙ্গে।

পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে ফুরফুরা শরিফ বরাবরই নানা ভাবে অংশ নেয়। ভোটের আগে এখানকার পিরজাদারা মুসলিমদের কাকে ভোট দেওয়া উচিত, এই মর্মে নানা মন্তব্য করেন। মুসলিম জনগোষ্ঠীর একটি অংশ ফুরফুরা শরিফকে বিশ্বাসও করে। ফুরফুরা শরিফের আরেক পিরজাদা ত্বহা সিদ্দিকি বরাবরই মমতাপন্থি বলে পরিচিত। এবারও তিনি মমতা বিরোধী কথা বিশেষ বলেননি। কিন্তু আব্বাস সিদ্দিকি বেশ কিছুদিন ধরেই মমতাবিরোধী মন্তব্য করছেন। মাঝে তাঁর সঙ্গে এসে দেখা করেছেন এমআইএম প্রধান আসাউদ্দিন ওয়েইসি। আসাউদ্দিন ভারতে মুসলিম রাজনীতির জন্য জনপ্রিয়। বিহারে সাফল্য পাওয়ার পরে হায়দরাবাদের এই রাজনীতিক পশ্চিমবঙ্গেও ভোটে লড়তে চাইছেন। সে কারণেই পশ্চিমবঙ্গে এসেছিলেন তিনি আব্বাস সিদ্দিকির সঙ্গে কথা বলতে।

ডয়চে ভেলেকে আব্বাস জানিয়েছেন, ''শুধু এমআইএম নয়, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গেই আমাদের কথা চলছে। কারা আমাদের সমর্থন করছেন, সে বিষয়ে ২১ তারিখ বিশদে জানাতে পারবো। পশ্চিমবঙ্গে বেশ কয়েকটি আসনে আমরা আসন দিতে চাইছি।'' বিশেষজ্ঞদের একাংশের বক্তব্য, আব্বাস সিদ্দিকির পৃষ্ঠপোষকতায় দল তৈরি হলে মুসলিম ভোটব্যাঙ্কের একটি অংশ তৃণমূলের থেকে সরে যাবে। যা বিজেপির জন্য সুবিধাজনক হবে। মেরুকরণের পরিবেশে তৃণমূলের ভোট কাটবে। কোনো কোনো রাজনৈতিক বিশ্লেষকের বক্তব্য, পিছন থেকে আব্বাসকে উসকে দিচ্ছে বিজেপি।

‘‘কারা আমাদের সমর্থন করছেন, সে বিষয়ে ২১ তারিখ বিশদে জানাতে পারব’’: আব্বাস সিদ্দিকী

This browser does not support the audio element.

বস্তুত, আব্বাস সিদ্দিকির সঙ্গে এক সময় মুকুল রায়ের ঘনিষ্ঠ যোগায়োগ ছিল। মুকুল তখন তৃণমূলে। এখন তিনি বিজেপিতে এসে আব্বাসকে ব্যবহার করার চেষ্টা করছেন। আব্বাস অবশ্য সে কথা মানতে নারাজ। তাঁর বক্তব্য, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গেই তাঁর যোগাযোগ আছে। এবং তাঁর রাজনীতি যতটা তৃণমূলবিরোধী, ঠিক ততটাই বিজেপিবিরোধী। ২১ তারিখ তা স্পষ্ট হয়ে যাবে। আব্বাস বলেছেন, ''ফুরফুরা শরিফে মমতা এসেছেন, কংগ্রেস-সিপিএম সবাই আসে। মুসলিম দল বলেও কিছু হয় না। আমরা যে দল তৈরি করতে চাইছি, তা মূলত পিছিয়ে পড়া সম্প্রদায়কে নিয়ে। সেখানে খ্রিশ্চানও আছে, আদিবাসী, দলিত সকলেই আছে। ফলে ধর্মের ভিত্তিতে আমরা কোনো দল তৈরি করতে চাইছি না।''

কংগ্রেসের একটি সূত্রের দাবি, আব্বাস সিদ্দিকির সঙ্গে তাদেরও কথা হয়েছে। ধর্মের সঙ্গে যদি সম্পর্ক না থাকে, তাহলে রাজ্যের কয়েকটি পকেটে বাম-কংগ্রেস জোটের কাছাকাছি আসতে পারে আব্বাসের দল। তবে সবটাই নির্ভর করছে আব্বাসের দলের সমীকরণ কী হবে, তার উপর। কারণ, ধর্মের সঙ্গে সংযুক্ত থাকলে বিশেষ করে বামেদের পক্ষে সেই দলের সঙ্গে প্রকাশঅযে জোট তৈরি করা অসম্ভব।

সমীকরণ যা-ই হোক, পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচনে আব্বাস সিদ্দিকি যে নতুন অঙ্ক তৈরি করতে চলেছেন, তা মোটামুটি স্পষ্ট। আব্বাস জানিয়েছেন, পঞ্চাশেরও বেশি আসনে প্রার্থী দিতে চান তিনি। ধরে নেওয়া যায়, মুসলিম পকেটকেই তিনি টার্গেট করছেন। যদি তাই হয়, তা হলে সেখানে ত্রিমুখী লড়াইয়ের সম্ভাবনা তৈরি হবে। বিজেপি যার সুযোগ পেতে পারে।

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ