1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

স্নাতকদের ইন্টার্নশিপ কি কর্মসংস্থানের নতুন সুযোগ?

পায়েল সামন্ত কলকাতা
১২ ফেব্রুয়ারি ২০২২

উচ্চশিক্ষা দপ্তরের যৌথ উদ্যোগে গ্র্যাজুয়েট পড়ুয়াদের জন্য চালু হচ্ছে ইন্টার্নশিপের সুবিধা৷ কৃতী শিক্ষার্থীদের রাজ্যের বিভিন্ন ক্ষেত্রে মাসিক পাঁচ হাজার টাকা ভাতায় নিয়োগ করা হবে৷

Indien | Westbengalen Arbeitsmarkt
ছবি: Payel Samanta/DW

স্নাতক স্তরে পড়ুয়া, আইটিআই, পলিটেকনিক ও সমতুল্য পাঠ্যক্রমে পড়ুয়াদের সরকারি কাজে ইন্টার্ন হিসেবে নিয়োগ করবে রাজ্য সরকার৷

রাজ্যের মন্ত্রিসভায় অনুমোদিত ওয়েস্ট বেঙ্গল স্টুডেন্টস ইন্টার্নশিপ স্কিম ২০২২ অনুযায়ী, জেলা প্রশাসন, মহকুমা প্রশাসন ও ব্লক স্তরে তাদের কাজে লাগানো হবে৷

সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে প্রতিবছর এমন ছয় হাজার ইন্টার্ন নিয়োগ করা হবে৷ মূল্যায়নে কাজ ভাল হলে পরের বছরের জন্যও তাদেরকে নিয়োজিত পদে বহাল রাখা হবে৷

ইতিমধ্যে জানানো হয়েছে, ইন্টার্নশিপ প্রক্রিয়ার কাজ হবে অনলাইনে৷ রাজ্যের মুখ্যসচিব হরেকৃষ্ণ দ্বিবেদির নেতৃত্বে তৈরি হবে সিলেকশন বোর্ড৷ ইন্টার্নশিপ শেষ করার পর সফলদের হাতে সরকারি সার্টিফিকেট তুলে দেওয়া হবে৷ সরকারি এই সার্টিফিকেট রাজ্যের সরকারি প্রতিষ্ঠানে কার্যকর হবে৷

‘অন্য রাজ্য এরকম উদ্যোগ নিয়ে দেখাক’

This browser does not support the audio element.

সরকারের এই সিদ্ধান্তে সিঁদুরে মেঘ দেখছে বাম শ্রমিক সংগঠন সিটু৷ তাদের বক্তব্য, রাজ্যে বড় ধরনের শিল্প গড়ে ওঠেনি৷ ভারী শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ে না উঠায় বড় ধরনের কর্মসংস্থান তৈরি হচ্ছে না৷ বর্তমানে পৌরসভা ও কর্পোরেশনের শতকরা মাত্র ৪৬ ভাগ পদে কর্মী আছেন৷ অর্থাৎ এসব ক্ষেত্রে শূন্যপদ শতকরা ৫৪ ভাগ৷ এইরকম পরিস্থিতিতে ইন্টার্ন নিয়োগ হলে কর্মসংস্থান আরো সঙ্কুচিত হবে বলে মনে করা হচ্ছে৷ চাকরির পরীক্ষা দিয়ে স্থায়ী নিয়োগ না হলে লাখ লাখ শিক্ষিত যুবক-যুবতীর ভবিষ্যৎ কি মাসিক পাঁচ হাজার টাকায় থেমে থাকবে?

এ রাজ্যে স্কুলে নিয়োগ দীর্ঘদিন ধরে মামলার জেরে আটকে আছে৷ শিক্ষক নিয়োগে অস্বচ্ছতার অভিযোগে মামলা হয়েছে৷ নিয়োগের দাবিতে বিক্ষোভরত নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির মেধা তালিকাভুক্ত চাকরি প্রার্থীদের পক্ষে সুখেন সরকার জানান, ‘‘ইউনেস্কোর রিপোর্ট অনুযায়ী, রাজ্যে শিক্ষকের শূন্যপদের সংখ্যা এক লক্ষ ১০ হাজার৷ অথচ আমরা ২০১৬ সাল থেকে  যোগ্য হয়েও বঞ্চিত৷’’

স্কুল সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে চতুর্থ শ্রেণির কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রেও মামলা হয়েছে৷ বুধবার ৫৭৩ জন কর্মীর নিয়োগ খারিজ করে দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট৷ তাঁদের বেতন ফেরত দিতে বলেছে৷ এমন পরিস্থিতিতে সরকারি দপ্তরে নিয়োগের বিষয়টি কর্মসংস্থানের একটি উল্লেখযোগ্য পরিসর৷ রাজ্যের মেধাবী শিক্ষার্থীদের একাংশ পাবলিক সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে দপ্তরের কাজে যুক্ত হওয়ার লক্ষ্যে প্রস্তুতি নেয়৷

বাম শ্রমিক নেতা ও প্রাক্তন শ্রম মন্ত্রী অনাদি সাহু ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘রাজ্য সরকারের বিভিন্ন পদে প্রায় তিন লাখের বেশি শূন্যপদ রয়েছে৷ গত ১০ বছরে কোনো নতুন নিয়োগ হয়নি৷ এই সরকার এসএসসি, কলেজ সার্ভিস কমিশন, টেট এবং পিএসসি সব ক্ষেত্রেই নিয়োগ বন্ধ করে দিয়েছে৷ এখন ছাত্রছাত্রীদের স্থায়ী নিয়োগের বদলে ইন্টার্নশিপের টোপ দেয়া হচ্ছে৷ অবিলম্বে এই স্কিম প্রত্যাহার না করে নিলে বৃহত্তর আন্দোলনে নামব৷’’

‘রাজ্য সরকারের বিভিন্ন পদে তিন লাখের বেশি শূন্যপদ’

This browser does not support the audio element.

তবে ইন্টার্নশিপের জন্য নিয়োগ প্রক্রিয়া ব্যাহত হবে এমনটা মানতে নারাজ তৃণমূল মুখপাত্র বিশ্বজিৎ দেব৷ তিনি বলেন, ‘‘ইন্টার্নশিপের জন্য পড়ুয়াদের একটা ভাতা দেয়া হবে৷ এতে বিরোধীদের এত আপত্তি কেন? রাজ্য বেকার যুবক-যুবতীদের কাজের জন্য একটা প্রচেষ্টা নিয়েছে৷ অন্য রাজ্য এরকম উদ্যোগ নিয়ে দেখাক না৷ সময় এলে চাকরির নিয়োগও করা হবে৷ কোভিড পরিস্থিতিতে বহু মানুষ কাজ হারিয়ে বেকার হয়েছেন, কেন্দ্রীয় সরকার বা বিজেপি শাসিত রাজ্য তাদের জন্য কিছু করেনি বলে দাবি বিশ্বজিতের৷

শুধু পশ্চিমবঙ্গ নয়, সারাদেশের বেকারত্বের ছবিটা মোটামুটি একই৷ অতিমারি, মন্দার জেরে ভেঙে গিয়েছে অর্থনীতির মেরুদণ্ড৷ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, রাজ্যের প্রাপ্য বিপুল টাকা মেটায়নি কেন্দ্র৷ কী করে কর্মীদের বেতনসহ অন্যান্য খরচ চালাবে রাজ্য সরকার? এই পরিস্থিতিতে পশ্চিমবঙ্গ সরকার বেকারদের জন্য যথেষ্ট ভাল উদ্যোগ নিয়েছে বলে তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি৷

তবে বিজেপির মুখপাত্র অধ্যাপক বিমলশঙ্কর নন্দ বলেন, ‘‘এই প্রকল্পের লক্ষ্য দলীয় কর্মীদের সুবিধা পাইয়ে দেওয়া৷ বৃত্তির পরিবর্তে তাদের রাজনৈতিকভাবে কাজে লাগানো৷ প্রতিবছর কতজন স্নাতক হচ্ছেন কিংবা স্নাতকস্তরে পড়ছেন, তার কোনো হিসাব রাজ্য সরকারের কাছে আছে?’’

যদিও মুখ্যমন্ত্রী নিজেই ঘোষণা করেছেন, স্নাতক স্তরে ৬০ শতাংশ নম্বর থাকলে ও বয়স ৪০-এর নীচে হলে তবেই আবেদন করা যাবে৷ তবে সরকার ইন্টার্নশিপের ক্ষেত্রে মেধা ও বয়সের এই মাপকাঠি আদৌ মেনে চলবে কি না সে বিষয়ে বিরোধীরা সন্দিহান৷

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারে আসার পরপরই এমপ্লয়মেন্ট ব্যাংক তৈরি হয়েছিল৷ ঘোষণা করা হয়, সেই ব্যাংক থেকে নিয়োগ হবে৷ বিরোধীদের অভিযোগ, ‘যুবশ্রী’ প্রকল্পে মাসিক দেড় হাজার টাকার ভাতা প্রাপকরা সরকারি চাকরি পাননি৷ এমপ্লয়মেন্ট ব্যাংক থেকে নিয়োগ করা হয়নি তাদের৷ ইন্টার্নশিপ শুরু হলে তরুণদের হাতে-কলমে কাজ শেখার সুযোগ হবে ঠিকই, কিন্তু চাকরির অপেক্ষায় যারা বসে আছেন, তাদের কী হবে সে প্রশ্নটি থেকে যায়৷

বাংলাদেশে কর্মসংস্থান বিষয়ে ২০২০ সালের এই গ্যালারিটি দেখুন... 

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ