শিক্ষকদের নিয়োগ দুর্নীতির পর এবার পুরসভার চাকরি কেলেঙ্কারি। ৬০টি পুরসভায় পাঁচ হাজার চাকরি বিক্রির অভিযোগ।
বিজ্ঞাপন
পশ্চিমবঙ্গে এবার নতুন নিয়োগ কেলেঙ্কারি। শিক্ষক নিয়োগে ব্যাপক দুর্নীতির পর এবার পুরসভার চাকরি বিক্রির অভিযোগ করলো ইডি। অয়ন শীল নামে একজনকে ৩৭ ঘণ্টা ম্যারাথন জিজ্ঞাসাবাদ ও তল্লাশির পর তাকে সোমবার ভোরে গ্রেপ্তার করে ইডি।
অয়নকে আদালতে পেশ করে ইডির আইনজীবী দাবি করেছেন, তারা ‘সোনার খনি'র খোঁজ পেয়েছেন ধৃতের ল্যাপটপ, ডেস্কটপ, মোবাইল, হার্ড ডিস্ক ও ম্যাকবুকে! কলকাতার বিধাননগরে অয়নের বাসস্থানে তল্লাশি চালিয়ে প্রচুর ওএমআর শিট উদ্ধার হয়েছে। মিলেছে চাকরিপ্রার্থীদের নামের তালিকা, অ্যাডমিট কার্ড ও পুরসভার নথি। তদন্তকারীরা হানা দেন তার হুগলির বাড়িতেও।
কলকাতা পুরসভা-সহ লাগোয়া উত্তর ২৪ পরগনা ও অন্য জেলার ৬০টি পুরসভায় অয়নের মধ্যস্থতায় পাঁচ হাজার নিয়োগ হয়েছে বলে তদন্তকারীদের দাবি। এবিএস ইনফোজোন নামে অয়নের সংস্থা পুরসভার কাছ থেকে টেন্ডারের মাধ্যমে ওএমআর শিট সরবরাহের বরাত পেয়েছিল বলে জানিয়েছেন ধৃতের আইনজীবী।
এর মাধ্যমেই দুর্নীতির জাল ছড়িয়েছে পুরসভা, দমকলের মতো সরকারি দপ্তরেও। টাইপিস্ট থেকে মজদুর, বিভিন্ন পদের জন্য লক্ষ লক্ষ টাকা দিতে হয়েছে প্রার্থীদের। প্রত্যেক পদের জন্য ‘রেট' নির্ধারিত ছিল। সেই রেট ছিল বশ কয়েক লাখ টাকা। ২০১২ ও ২০১৪ সালের টেট পরীক্ষার সঙ্গে অয়নের যোগ রয়েছে বলে ইডি সূত্রের খবর।
‘'সরকার এটাকে ছোট ভুল বা দালালচক্রের কাজ বলে চালাতে চাইছে’
নিয়োগ দুর্নীতিতে ধৃতদের জেরা করে কেন্দ্রীয় সংস্থা নাগাল পেয়েছে অয়নের। হেফাজতে থাকা হুগলির বহিষ্কৃত তৃণমূল যুব নেতা শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ তিনি। অয়নের অ্যাকাউন্ট থেকে ৫০ কোটি টাকা লেনদেনের নথি মিলেছে যার সঙ্গে দুর্নীতির যোগ রয়েছে বলে ইডির। অয়নের স্ত্রী কাকলি শীল ও ধৃতের পরিচিত শ্বেতা চক্রবর্তীর নামও উঠে এসেছে।
তদন্তকারীদের দাবি, শান্তনুর সঙ্গে যোগাযোগ ছিল সাবেক শিক্ষামন্ত্রী, জেলবন্দি পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের। তাদের যোগসূত্র হিসেবে সক্রিয় ছিলেন হুগলির আর এক বহিষ্কৃত তৃণমূল যুব নেতা কুন্তল ঘোষ। এর পরিপ্রেক্ষিতে আদালতে কেন্দ্রীয় সংস্থার সওয়াল, দুর্নীতির সঙ্গে শাসক দলের শীর্ষ মহলের যোগ প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে।
যদিও শাসক শিবির আগের জমানার দিকে আঙুল তুলছে। তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষের মন্তব্য, ''২০০২ সাল থেকে অয়ন হুগলিতে ডেটা এন্ট্রি অপারেটরের কাজ করেছেন। সেই বাম আমল থেকে তিনি কাদের চাকরি পাইয়ে দিয়েছেন, তা তদন্তের আওতায় আসুক।''
গত এক বছর ধরে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে তোলপাড় রাজ্য। নিয়োগ দুর্নীতিতে নাম জড়িয়েছে শাসকদলের প্রভাবশালীদের। গ্রেফতার হয়েছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়, মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মত হেভিওয়েটরা। এই আবহে এবার শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির থিমেই তৈরি হলো সরস্বতী পুজোর মণ্ডপ।
ছবি: Subrata Goswami/DW
পার্থ-অর্পিতা
কয়েকমাস আগে ইডি তল্লাশিতে রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় ঘনিষ্ঠ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হয় বিপুল পরিমাণ টাকা। সেই ঘটনাকে তুলে ধরতে তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং তাঁর বান্ধবী অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের মূর্তি বসানো হয়েছে সরস্বতী পুজোর মণ্ডপে।
ছবি: Subrata Goswami/DW
এবং দাড়িপাল্লা
সেই দুই মূর্তির সামনে রাখা আছে দাড়িপাল্লা। একপ্রান্তে নোটের বান্ডিল আর সোনার গয়না। অপরপ্রান্তে দাড়িপাল্লার টাকা এবং গয়নার ভারে হালকা হয়েছেন দেবী সরস্বতী।
ছবি: Subrata Goswami/DW
বঙ্গে বিক্রি বিদ্যা
কাঁকুরগাছি রেল ব্রিজ লাগোয়া এই মণ্ডপের সরস্বতী পুজোর থিম হলো বঙ্গে বিক্রি বিদ্যা'। মণ্ডপের ফ্লেক্সে লেখা 'এখানে সুলভ মূল্যে ফেলু মাস্টারদের সরকারি শিক্ষক বানানো হয়। অপা এডুকেশন সেন্টার।'
ছবি: Subrata Goswami/DW
থিমে ধর্নামঞ্চ
মণ্ডপের অন্য পাশে তৈরি হয়েছে একটি ধর্না মঞ্চ। সেখানে বিভিন্ন দাবিদাওয়া লেখা প্ল্যাকার্ড হাতে ধরে ধর্না দিচ্ছেন যোগ্য চাকরিপ্রার্থীরা। চাকরিপ্রার্থীরা মঙ্গলবার সশরীরে উপস্থিত ছিলেন সেখানে।
ছবি: Subrata Goswami/DW
উদ্যোক্তাদের বক্তব্য
পুজোর মূল উদ্যোক্তা বিশ্বজিৎ সরকার জানালেন, একসময়ে এই পুজোর উদ্যোক্তা ছিলেন তারই ভাই কাঁকুরগাছির নিহত বিজেপি কর্মী অভিজিৎ সরকার। গত বিধানসভা ভোটের পর যাঁকে খুনের অভিযোগ উঠেছিল। ইতিমধ্যে সেই খুনের ঘটনায় বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত করছে সিবিআই। ভাইয়ের খুন ও দুর্নীতির প্রতিবাদেই এই থিম।
ছবি: Subrata Goswami/DW
আগেও হয়েছে এমন
এর আগে দুর্গাপুজোর সময়েও একাধিক রাজনৈতিক থিম দেখা গেছিল পুজো মণ্ডপে। অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, পুজোর মধ্যেও রাজনীতি ঢোকানো কতটা রুচিসম্মত?
ছবি: Subrata Goswami/DW
অশান্তির আশঙ্কা
সরস্বতী পুজোর এমন থিম নিয়ে অশান্তির আশঙ্কা আছে। বৃহস্পতিবার দিনভর মণ্ডপের বাইরে ছিল পুলিশি প্রহরা। শুক্রবারও থাকবে পুলিশ।
ছবি: Subrata Goswami/DW
8 ছবি1 | 8
সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী ফের চ্যালেঞ্জ করে বলেছেন, ''গত ১২ বছরে তৃণমূল সরকার কেন সেই দুর্নীতি প্রকাশ করেনি? সাহস থাকলে এখনো করুক।'' বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের বক্তব্য, "পুরসভার নথি খতিয়ে দেখলে বোঝা যাবে, তৃণমূল ছাড়া আর অন্য কেউ চাকরি পেয়েছে কি না।”
এর আগে শান্তনু ও কুন্তলের সঙ্গে টলিউডের যোগাযোগ সামনে এসেছিল। সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য অনুসারে, অয়নের সঙ্গেও যোগ রয়েছে টলিপাড়ার। তিনি ‘কবাডি কবাডি' নামে একটি ছবির প্রযোজনার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। টলিপাড়ার সংগঠন ‘ইম্পা'-র সঙ্গে তার যোগাযোগ রয়েছে বলে ইডি সূত্রে খবর।
বিক্ষোভে রাস্তায় চাকরিপ্রার্থীরা, তাদের জীবনে উৎসব নেই
করোনার পর এবার শারদোৎসবে মেতেছে গোটা পশ্চিমবঙ্গ। তবে চাকরিপ্রার্থীরা উৎসবের মধ্যেও আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন।
ছবি: Subrata Goswami/DW
উৎসবের দিনেও প্রতিবাদ
এক বছর পরেও ছবিটা বদলালো না। ২০২১ সালের দুর্গোৎসবেও ঘরবাড়ি ছেড়ে এভাবেই আন্দোলনের মধ্যে কাটিয়েছিলেন চাকরিপ্রার্থীরা। এই বছরও কাটাচ্ছেন। তারা উৎসবে নেই, প্রতিবাদে আছেন। এসএসসি চাকরিপ্রার্থীদের কাছে উৎসবের আলাদা তাৎপর্য নেই। তাদের দাবি, পরীক্ষা দিয়ে পাস করার পরেও দুর্নীতির জন্য চাকরি পাননি। তাই সকলে যতদিন চাকরি না পাচ্ছেন, ততদিন প্রতিবাদ চলবে।
ছবি: Subrata Goswami/DW
তিন দফার প্রতিবাদ
এসএসসি চাকরিপ্রার্থীদের আন্দোলন শুরু হয়েছিল ২০১৯-এ। তিন দফায় এই আন্দোলনের বয়স আজ সাড়ে পাঁচশ দিন পেরিয়ে গেছে। কলকাতা হাইকোর্ট জানিয়েছে, এসএসসি চাকরিপ্রার্থীদের নিয়োগে দুর্নীতি ছিল। কতজন এইভাবে চাকরি পেয়েছেন তা জানানোর নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
ছবি: Subrata Goswami/DW
ঝড়-জল উপেক্ষা করে
এই কয়েকবছরে গান্ধীমূর্তির পাদদেশের এই ধর্নামঞ্চ রাজ্যের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা এই মানুষগুলোর কাছে অভ্যেসে পরিণত হয়েছে। নেই পানীয় জলের ব্যবস্থা, নেই শৌচাগারও। ঝড়-বৃষ্টি-রোদ উপেক্ষা করে দিনের পর দিন অবস্থান করে চলেছেন এরা। কেউ অসুস্থ বাবা-মাকে বাড়িতে রেখে কেউ বা কোলের শিশুকে সঙ্গে নিয়ে। আন্দোলন এখন এদের জীবনের অঙ্গ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ছবি: Subrata Goswami/DW
উৎসবের দিনেও
গত দুইবছর ধরে ধর্না মঞ্চেই কেটেছে উৎসবের দিনগুলি। দুইটি ঈদ, দুইটি দুর্গাপুজার মত বড় উৎসব এভাবে কেটেছে চাকরিপ্রার্থীদের। বস্তুত তাদের জীবনে উৎসব নেই, আনন্দ নেই, আছে কেবল অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে চাকরি পাওয়ার লড়াই।
ছবি: Subrata Goswami/DW
অর্পিতার কাহিনি
পশ্চিম মেদিনীপুরের পিংলার অর্পিতা হাজরা। ধর্নামঞ্চে উপস্থিত থাকার জন্য যাতায়াত মিলিয়ে সাতঘণ্টা লাগে অর্পিতার। ভোর পাঁচটায় উঠে রান্না করে তারপর আসেন, আবার বাড়ি ফিরে ১০ বছরের মেয়েকে নিয়ে পড়াতে বসেন।
ছবি: Subrata Goswami/DW
আনন্দ নয়, লড়াই
অর্পিতা জানালেন, ''ছোট্টো মেয়েটাকে নিয়ে যখন জামাকাপড়ের দোকানে গিয়ে শপিং করার কথা, পুজোর চারদিন কীভাবে কাটাব সেই পরিকল্পনা করার কথা, সেই সময় বসে রয়েছি রাস্তার ধারে। পুজোটা আমাদের কাছে প্রবল যন্ত্রণার। সকলকে আনন্দ করতে দেখে আরও যন্ত্রণা পাই ভেতরে ভেতরে।''
ছবি: Subrata Goswami/DW
ঈদও কেটেছে এখানেই
সরকারিভাবে বসতে নিষেধ ছিল, তাও এইবছর দুপুরের পরে এখানে বসেই ঈদ পালন করেছে কামরুজ্জামান, বাড়ির লোকেদের সঙ্গে দেখা করাও হয়ে ওঠেনি। অন্যান্যবার দুর্গাপুজোতেও মুর্শিদাবাদের বাড়ির সামনের পুজোতেই হাজির থাকে কামরুজ্জামান। এইবছর ধর্নামঞ্চেই কাটবে।
ছবি: Subrata Goswami/DW
নিরানন্দ পিঙ্কি
হুগলির পিঙ্কি সাধুখাঁ জানালেন, ''আমাদের এবারের পুজোর দিনগুলো এভাবে কাটার কথা ছিল না। চাকরির নিয়োগপত্র হাতে পেয়ে বাচ্চার হাত ধরে মণ্ডপে মণ্ডপে অনন্দ করে বেড়ানোর কথা ছিল। যেদিন থেকে জানতে পেরেছি আমরা দুর্নীতির শিকার, সেদিন থেকে আমাদের জীবনের আনন্দ চলে গিয়েছে।''
ছবি: Subrata Goswami/DW
সীমার প্রশ্ন
পুজোমণ্ডপে না গিয়ে কোলের বাচ্চা নিয়ে ধর্নামঞ্চে অবস্থান করছেন সীমা। তিনি বললেন, ''নিজের মনেই যদি আনন্দ না থাকে বাচ্চাকে কীভাবে আনন্দ দেব বলতে পারেন?''
ছবি: Subrata Goswami/DW
উৎসব আর নেই
আশিকুল ইসলাম জানালেন, ''যোগ্য হয়েও চাকরি পাইনি। এই আনন্দে এখন আর কোনও উৎসাহ পাই না। দিনলিপি থেকে মুছে গেছে উৎসব।''
ছবি: Subrata Goswami/DW
দুর্গারা পথে
মুর্শিদাবাদের রহুল বিশ্বাস বললেন, ''একদিকে দেবী দুর্গা পুজিত হচ্ছেন আর এখানে দুর্গারা বঞ্চিত হয়ে পথের ধারে পড়ে আছে। সরকার চাইলে যেকোনও সময় আমাদের এই অবস্থা থেকে মুক্তি দিতে পারে।''
ছবি: Subrata Goswami/DW
নিরুপায় তপতী
বাড়িতে সন্তানকে রেখে চুঁচুড়া থেকে প্রতিদিন এই ধর্নামঞ্চে আসেন তপতী দাস। পুজোমণ্ডপে গেলেও মন পড়ে থাকবে এই ধর্নামঞ্চে। তিনি জানালেন, ''আমরা নিরুপায়। বাধ্য হয়ে একটা আশা নিয়েই দিনের পর দিন বসে রয়েছি এখানে।''
ছবি: Subrata Goswami/DW
চোখে জল জয়ন্তের
সাড়ে তিন বছরের বাচ্চা ফোনে তাকে বার বার বাড়িতে আসতে বলছে। বাবার কোলে চড়ে ঠাকুর দেখার বায়না ছোট্ট ছেলেটার। কথাগুলো বলতে বলতে চোখ মুছতে থাকে বীরভূমের জয়ন্ত। ''যখন সারা কলকাতা আলোর রোশনাইতে মেতে উঠেছে, আমরা গান্ধীমূর্তির পাদদেশে, অন্ধকারেই পড়ে আছি। দুইটি পুজো এভাবেই কেটেছে, চাকরির নিয়োগপত্র হাতে না পেলে জীবনের সব পুজো এখানেই কাটাতে পারি।''
ছবি: Subrata Goswami/DW
নিয়োগপত্র চাই
বনগাঁর সোমা মালাকার বললেন, ''দুর্নীতি করে যারা চাকরি পেয়েছে, তারা আজ পরিবার পরিজন নিয়ে আনন্দে পুজো কাটাচ্ছে। অথচ আমরা যোগ্য হয়েও পথে পড়ে রয়েছি। চাকরির নিয়োগপত্রই আমাদের কাছে পূজার প্রসাদ। যেদিন হাতে পাব সেদিনই আমাদের সত্যিকারের পুজো।'' বললেন, বনগাঁর সোমা মালাকার।
ছবি: Subrata Goswami/DW
14 ছবি1 | 14
রাজনৈতিক বিশ্লেষক, অধ্যাপক রাজাগোপাল ধর চক্রবর্তী ডয়চে ভেলেকে বলেন, ''সরকার এটাকে ছোট ভুল বা দালালচক্রের কাজ বলে চালাতে চাইছে। কিন্তু স্কুলে বা দপ্তরে হাজার হাজার চাকরি বিক্রি হলে বোঝা যায় সরকার যথেষ্ট কঠোরতা দেখায়নি। এর দায় তারা ঝেড়ে ফেলতে পারবে না।''
টাকার বিনিময়ে চাকরিকে বেকারত্বের সঙ্গে জুড়ে দেখতে চাইছেন প্রবীণ সাংবাদিক শিখা মুখোপাধ্যায়। তিনি ডয়চে ভেলেকে বলেন, ''সারা দেশে চাকরি নেই। পশ্চিমবঙ্গেও নেই। তাই অর্থবান মানুষরা চাকরি কিনতে চাইছে। একদল লোভী মানুষ চাকরি বিক্রি করছে। কেন্দ্র বা রাজ্য সরকারগুলি কর্মসংস্থান তৈরি করতে না পারলে এই চক্র থেকে বেরোনো যাবে না।''
প্রথমে শিক্ষক এবং এখন পুরসভায় নিয়োগ দুর্নীতির পর এই প্রশ্নও উঠেছে, সব সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে কি হয় স্বজনপোষণ হয়েছে বা বিক্রি করা হয়েছে?