পশ্চিমা অস্ত্রের প্রশংসায় পঞ্চমুখ ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি। বিশেষ করে কামানের। সেগুলি নির্ভুল লক্ষ্যে গিয়ে আঘাত করছে বলে তার দাবি।
বিজ্ঞাপন
জেলেনস্কি তার দৈনিক ভিডিও-ভাষণে বলেছেন, পশ্চিমা দেশগুলি তাকে যে অস্ত্র দিচ্ছে, তার তুলনা নেই। সেগুলি নিখুঁতভাবে লক্ষ্যে আঘাত করতে পারে। জেলেনস্কির দাবি, এর ফলে রাশিয়ার বিপুল ক্ষতি হচ্ছে। বিশেষ করে তাদের অস্ত্রশস্ত্র ও যানবাহনে গিয়ে কামানের গোলা আঘাত করছে। প্রতি সপ্তাহে তাদের ক্ষতির পরিমাণ বাড়ছে। রাশিয়ার পক্ষে নতুন অস্ত্র নিয়ে আসাও খুব সহজ হবে না।
জেলেনস্কি স্বীকার করেছেন, রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে উত্তর-পূর্বের শহর খারকিভে বিশ্ববিদ্যালয় ধ্বংস হয়ে গেছে। ক্ষেপণাস্ত্র গিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ভবন, মিউজিয়াম এবং লাইব্রেরির উপর আঘাত করে। জেলেনস্কি বলেছেন, রাশিয়া নিখুঁতভাবে তাদের বর্বরোচিত কাজ করে যাচ্ছে।
ইউক্রেন ইস্যুতে মধ্যপ্রাচ্যকে কেন পাশে পাচ্ছে না যুক্তরাষ্ট্র?
ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর তেলের মূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখতে সৌদি আরবকে উৎপাদন বাড়ানোর অনুরোধ করেছিল যুক্তরাষ্ট্র৷ কিন্তু সফল হয়নি৷ সংযুক্ত আরব আমিরাতেরও সহায়তা চেয়ে পায়নি যুক্তরাষ্ট্র৷ কিন্তু কেন?
সৌদি যুবরাজ কথা বলতে চাননি?
ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর তেলের মূল্য বেড়ে গেলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলার চেষ্টা করেছিলেন বলে খবর প্রকাশিত হয়েছিল৷ কিন্তু সালমান তার সঙ্গে কথা বলতে চাননি বলে সেই সময় জানা গিয়েছিল৷ যদিও মার্কিন প্রশাসন এই খবর অস্বীকার করেছিল৷ এর কিছুদিন পরই রাশিয়া ও চীনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে কথা বলেন সালমান৷
আরব আমিরাতও কথা শোনেনি
রাশিয়ার ধনাঢ্য ব্যক্তিরা যেন সংযুক্ত আরব আমিরাতে তাদের সুপারইয়ট ও সম্পদ লুকাতে না পারেন সেই অনুরোধ করেছিল যুক্তরাষ্ট্র৷ কিন্তু সেই অনুরোধ শোনেনি আরব আমিরাত৷ ছবিতে সংযুক্ত আরব আমিরাতে এক রুশ ধনীর ইয়ট দেখা যাচ্ছে৷
ছবি: Kamran Jebreili/AP/picture alliance
জাতিসংঘে সহায়তা দিতে অনিচ্ছুক
ইউক্রেন দখলের বিরোধিতা ও রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা সংক্রান্ত জাতিসংঘের বিভিন্ন রেজুলেশন পাস করতে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সমর্থন প্রয়োজন৷ কিন্তু সেই সমর্থন দিতে মধ্যপ্রাচ্যকে অনিচ্ছুক দেখা গেছে৷
ছবি: Spencer Platt/Getty Images
কারণ কী?
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ২০১৯ সালে যুক্তরাষ্ট্র নিজে তেল উৎপাদন শুরুর পর তাদের কাছে মধ্যপ্রাচ্যের গুরুত্ব কিছুটা কমে গিয়েছিল৷ সে কারণে অন্যান্য দেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তোলে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ৷ মার্কিন সরকারের সাবেক পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক উপদেষ্টা অ্যারন ডি. মিলার বলেন, ‘‘মধ্যপ্রাচ্যের অংশীদাররা বুঝতে পেরেছিল যে তাদের এখন কম গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে৷ সে কারণে তারা অন্যদের সঙ্গে বন্ধুত্ব করতে চেয়েছে৷’’
ছবি: Kirill Kukhmar/TASS/dpa/picture alliance
চীনা বিনিয়োগ
বিশ্বের সবচেয়ে বড় তেল আমদানিকারক চীন৷ মোট তেল আমদানির ৪৭ শতাংশ করা হয় মধ্যপ্রাচ্য থেকে৷ এছাড়া সৌদি আরবের ব্যালিস্টিক মিসাইল কর্মসূচিতে সহায়তা করছে চীন৷ ইরাকের তেলক্ষেত্র কিনে নেয়া এবং অবকাঠামোতেও বিনিয়োগ করছে চীন৷ ছবিতে গতবছর বাগদাদে চালু হওয়া চীনা ভাষা শিক্ষার একটি ক্লাস দেখা যাচ্ছে৷
মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস মে মাসে সংযুক্ত আরব আমিরাত সফর করেন৷ আর প্রেসিডেন্ট বাইডেন জুলাই মাসে সৌদি আরব যাচ্ছেন৷
ছবি: REUTERS
6 ছবি1 | 6
দনেৎস্কের অবস্থা
দনেৎস্কের আঞ্চলিক গভর্নর বেসামরিক মানুষদের নিরাপদ জায়গায় চলে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। রাশিয়া এখন দনেৎস্ক দখলের চেষ্টা করছে। তারা সেখানে আক্রমণও শুরু করেছে। সেই পরিপ্রেক্ষিতে গভর্নর এই আবেদন করেছেন।
নির্দেশ প্রত্যাহার
ইউক্রেনের সেনাবাহিনী তাদের বিতর্কিত নির্দেশ প্রত্যাহার করে নিয়েছে। ওই নির্দেশে বলা হয়েছিল, ১৮ থেকে ৬০ বছর বয়সিরা তাদের বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র যেতে গেলে সেনার অনুমতি লাগবে। তারা এক জেলা থেকে অন্য জেলায় যেতে গেলেও অনুমতির দরকার হবে। এই নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে ক্ষোভের কথা জানান ইউক্রেনের মানুষ। তারপরই জেলেনস্কি জানান, তাকে না জানিয়ে সেনা যেন কোনো নির্দেশ না দেয়। সেনা কর্তাদের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি মিটিয়ে নেয়ার কথাও বলেন তিনি। তারপরই নির্দেশ প্রত্যাহার করে নেয় সেনাবাহিনী।
ইউক্রেনে রাশিয়ার বিধ্বস্ত ট্যাংক নিয়ে প্রদর্শনী
ইউক্রেনে হামলা করতে গিয়ে বেশ কিছু সামরিক যান হারিয়েছে রাশিয়া৷ বিধ্বস্ত কিছু ট্যাংক নিয়ে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটির রাজধানীতে আয়োজন করা হয়েছে একটি প্রদর্শনী৷
ছবি: GLEB GARANICH/REUTERS
কিয়েভের কেন্দ্রে প্রদর্শনী
ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর দেশটির রাজধানী কিয়েভে হামলার ঘটনা ঘটলেও বর্তমানে সেখানে আর নতুন হামলার কথা শোনা যাচ্ছে না৷ বরং রাজধানীর কেন্দ্রে এক প্রদর্শনী চলছে, যেখানে রাশিয়ার বিধ্বস্ত বিভিন্ন ট্যাংকসহ সামরিক যান জনসাধারণের দেখার জন্য রাখা হয়েছে৷ ছবিতে এক শিশু একটি ট্যাংক দেখছে৷
ছবি: GLEB GARANICH/REUTERS
রাস্তার পাশে বিধ্বস্ত ট্যাংক
কিয়েভের রাস্তার পাশে পড়ে থাকা এক বিধ্বস্ত রুশ ট্যাংকের পাশ দিয়ে হেঁটে যাচ্ছে একদল তরুণ৷
ছবি: GLEB GARANICH/REUTERS
বিধ্বস্ত ট্যাংকের সামনে শিশু
কিয়েভের কেন্দ্রে প্রদর্শিত একটি বিধ্বস্ত ট্যাংকের সামনে ছবির জন্য পোজ দিচ্ছে এক শিশু৷
ছবি: GLEB GARANICH/REUTERS
খুঁটিয়ে দেখা
কিয়েভে প্রদর্শিত একটি রুশ ট্যাংক খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখছেন একদল ইউক্রেনীয়৷
ছবি: GLEB GARANICH/REUTERS
স্বাভাবিক পরিস্থিতি
বার্তাসংস্থা রয়টার্সের ছবিগুলোতে প্রদর্শনীর স্থানে বেশ স্বাভাবিক পরিস্থিতি দেখা গেছে৷ ছবিতে বিধ্বস্ত ট্যাংকের পাশ দিয়ে সাইকেল চালিয়ে যাচ্ছেন এক ব্যক্তি৷
ছবি: GLEB GARANICH/REUTERS
যুদ্ধের পরিস্থিতি নিয়ে নানা বক্তব্য
ইউক্রেন যুদ্ধের পরিস্থিতি নিয়ে গণমাধ্যমগুলোতে নানা খবর পাওয়া যাচ্ছে৷ সেখানকার প্রকৃত অবস্থা বোঝা এখনো কঠিন৷ দেশটির উপর রাশিয়ার হামলার তিন মাস পর প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি আগামী কয়েক দিনে আরো জোরালো রুশ হামলার আশঙ্কা করছেন৷
ছবি: GLEB GARANICH/REUTERS
6 ছবি1 | 6
বিল পাস
রাশিয়ার পার্লামেন্টে দুইটি বিল পাস হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, রাশিয়ার ব্যবসায়ী ও শিল্পপতিরা সেনার জন্য প্রয়োজনীয় জিনিস সরবরাহ করতে ও পরিষেবা দিতে বাধ্য থাকবে। সেই সব জিনিস উৎপাদন করতে গিয়ে দরকার হলে কর্মীদের আরো বেশি ঘণ্টা ধরে কাজ করতে হবে।