1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বিরক্ত জার্মান মুসলমানরা

১৬ সেপ্টেম্বর ২০১২

ইসলামবিরোধী ছবি প্রচারের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন জার্মানিতে বসবাসরত মুসলিমরা৷ তবে এই ইস্যুকে কেন্দ্র করে আরব বিশ্বে যেভাবে সহিংস প্রতিবাদ চলছে, তার সমালোচনা করেছেন তাঁরা৷

ছবি: AFP/Getty Images

ইসলামবিরোধী এক ছবিকে কেন্দ্র করে গত কয়েকদিন ধরেই উত্তেজিত আরব বিশ্ব৷ সর্বশেষ শুক্রবার সুদানে জার্মান দূতাবাসে হামলা চালিয়েছে প্রতিবাদকারীরা৷ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নির্মিত এই ছবিটির মাধ্যমে মুসলমানদের মহানবী মোহাম্মদ'এর মানহানির চেষ্টা করা হয়েছে৷

জার্মানিতে বসবাসরত মুসলমানরা এই ছবিটিকে এক ধরনের উস্কানি হিসেবে দেখছেন৷ বাভারিয়া রাজ্যের পেন্সবের্গ শহরের ইমাম এবং মুসলিম জনগোষ্ঠীর নেতা বেনইয়ামিন ইদ্রিস এই বিষয়ে বলেন, ‘‘মুসলমান হিসেবে ছবিটি দেখার সময় আমরা বিরক্ত হয়েছি৷ এটি একটি পরিষ্কার উস্কানি! মুসলমানদের সঙ্গে সমাজের অন্যান্য গোষ্ঠীর মধ্যে বিদ্বেষ ছড়ানোর লক্ষ্য নিয়ে এটা করা হয়েছে৷''

গত শুক্রবারের জুম্মার নামাজ পরিচালনার সময় খুতবায় এই ছবির বিষয়ে বক্তব্য প্রদান করেন ইদ্রিস৷ তাঁর মতে, মুসলামানরা এই গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা নিয়ে তাদের ইমামের বক্তব্য প্রত্যাশা করে৷ এজন্য খুতবায় এই বিষয়টি তুলে ধরেন ইদ্রিস৷ তিনি বলেন, ‘‘যদিও পৃথিবীর জন্য শান্তি এবং নিরাপত্তা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়, তবুও চরমপন্থীরা বিভিন্ন ধর্ম বিশ্বাসীদের মধ্যে বিদ্বেষ ছড়ানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে৷ তারা বারংবার এই চেষ্টা করছে৷''

পেন্সবের্গ শহরের ইমাম এবং মুসলিম জনগোষ্ঠীর নেতা বেনইয়ামিন ইদ্রিসছবি: Benjamin Idriz

ইদ্রিস মনে করেন, সাধারণ মানুষকে শান্ত রাখতে এবং বিজ্ঞতার সঙ্গে এধরনের উস্কানির জবাব দিতে রাজনীতিবিদ, বুদ্ধিজীবী এবং ধর্মীয় নেতাদের এগিয়ে আসা উচিত৷ তাদের উচিত, জনগণকে শান্ত থাকতে আহ্বান জানানো৷

জার্মানির অন্যান্য ইসলামি সংগঠনও ইসলামবিরোধী ছবিকে কেন্দ্র করে সহিংস প্রতিবাদের সমালোচনা করেছে৷ বাভারিয়ান বেতারকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জার্মানির মুসলমানদের কেন্দ্রীয় পরিষদের নেতা আইমান মাজেক এই বিষয়ে বলেন, ‘‘ চরমপন্থীরা এই পরিস্থিতির সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা করছে৷'' তিনি বিতর্কিত ছবিটি নিয়ে অযথা উত্তেজনার কোন কারণ খুঁজে পাচ্ছেন না৷ বরং তাঁর মতে, এটি অত্যন্ত দুর্বলভাবে তৈরি এবং বিরক্তিকরভাবে নোংরা একটি ছবি৷

জার্মানি, ইউরোপে বিপদের আশঙ্কা অত্যন্ত ক্ষীণ

বিতর্কিত এই ছবিটি নিয়ে জার্মানিতে কোন ধরনের সহিংস দাঙ্গার আশঙ্কা করছে না কোন পক্ষই৷ ইসলামি কমিউনিটি এবং সংগঠন কিংবা নিরাপত্তা সংস্থাগুলো - কোন পক্ষই এরকম কিছুর শঙ্কা করছে না৷ লোয়ার সাক্সোনি রাজ্যের অভ্যন্তরীণ গোয়েন্দা দপ্তরের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, সেখানকার পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে৷ নর্থ রাইন ওয়েস্টফেলিয়া রাজ্যের কর্মকর্তারাও জানিয়েছেন, ইসলামবিরোধী ছবিকে কেন্দ্র করে কোন ধরনের বিপদের আশঙ্কা নেই সেরাজ্যে৷

জার্মানির বাডেন-ভুর্টেমবার্গ রাজ্যের অভ্যন্তরীণ গোয়েন্দা দপ্তরের আন্তর্জাতিক চরমপন্থা এবং সন্ত্রাসবাদ বিভাগের প্রধান হের্বাট লান্ডোলিনও তাঁর সহর্কমীদের মূল্যায়নকে সমর্থন করেছেন৷ তিনি বলেন, ‘‘নিরাপত্তা ঝুঁকি বিষয়ক কোন সুস্পষ্ট ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি৷''

মালয়েশিয়ায় পশ্চিমা বিরোধী বিক্ষোভছবি: Reuters

সহিংসতা ছড়ানোর চেষ্টা হতে পারে

ইদ্রিস অবশ্য মনে করেন, উগ্র-রক্ষণশীলরা জার্মানি এবং ইউরোপের মুসলমানদেরকে সহিংসতার পথে যেতে উস্কানি দিতে পারে৷ তবে এই ইমাম বিশ্বাস করেন, তাঁর ধর্মের মানুষদেরকে সহজে বিভ্রান্ত করা যাবে না৷ তিনি বলেন, ‘‘আমি মনে করি, ইউরোপের মুসলমানরা ইসলামী বিশ্বের মুসলমানদের তুলনায় বেশি বিচারবুদ্ধিসম্পন্ন এবং ধর্মীয়ভাবে সহনশীল৷ ধর্মীয় নেতাদের ক্ষেত্রেও এটা প্রযোজ্য৷''

টেলিভিশনে সহিংসতার দৃশ্য দেখার পরও ইদ্রিস জোর দিয়ে বলেন, যারা সহিংসতায় সমর্থন জোগাচ্ছে তারা আসলে সংখ্যালঘু৷ তিনি বলেন, ‘‘এমনকি মুসলিম দেশগুলোতেও খুব অল্প সংখ্যক মানুষ সহিংস প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছে৷ কিন্তু সেটা গণমাধ্যমে এমনভাবে উপস্থাপন করা হচ্ছে যে, মনে হচ্ছে অধিকাংশ মুসলমানই এভাবে প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছে৷''

প্রতিবেদন: ক্রিস্টিনা রুটা / এআই

সম্পাদনা: হোসাইন আব্দুল হাই

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ