পশ্চিম ইথিওপিয়ায় সন্ত্রাসী হামলায় ৮০ জন মারা গেছেন বলে সে দেশের জাতীয় মানবাধিকার কমিশন জানিয়েছে।
বিজ্ঞাপন
গত মঙ্গলবার ভোর পাঁচটা থেকে সকাল সাতটার মধ্যে হামলা চালায় সন্ত্রাসীরা। পশ্চিম ইথিওপিয়ার বেনিসাঙ্গুল-গুমুজ এলাকায়। নির্বিচারে হত্যা করে ৮০ জনকে। নিহতদের বয়স দুই থেকে ৪৫ বছরের মধ্যে। বাচ্চা ও নারীদেরও রেয়াত করেনি সন্ত্রাসীরা। যে এলাকায় আক্রমণ হয়েছে, তা সুদান সীমান্তের কাছে।
ইথিওপিয়ার জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের মুখপাত্র অ্যারন ম্যাশো জানিয়েছেন, তাঁদের কাছে খবর এসেছে, মোট ৮০ জন মারা গেছেন। সন্ত্রাসীদের এখনো ধরা সম্ভব হয়নি। কোনো সংগঠন এই ঘটনার দায় স্বীকার করেনি।
গত কয়েক মাস ধরেই এই এলাকায় একের পর এক এই ধরনের ঘটনা ঘটছে। গত ২৩ ডিসেম্বর ২০৭ জনের মৃত্যু হয়েছিল। লাগাতার সহিংসতার কারণে বহু মানুষ ঘরছাড়া হয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী গত ডিসেম্বরে এই এলাকায় ঘুরে গেছেন। তিনি একটি কম্যান্ড পোস্টকে নিরাপত্তার দায়িত্ব দিয়েছিলেন। তারপরেও দেখা যাচ্ছে সহিংস হানা থামানো যাচ্ছে না।
বিরোধী নেতাদের দাবি, সন্ত্রাসীরা এই এলাকার কিছু জাতিগোষ্ঠীকে এই ভাবে আক্রমণ করছে।
টিগ্রে যুদ্ধে পালাচ্ছে মানুষ
টিগ্রেতে ইথিওপিয়া ও টিগ্রে পিপলস রেভলিউশনারি ফোর্স টিপিএলএফ এর লড়াইয়ের ফলে ইথিওপিয়া থেকে ৪৪ হাজার মানুষ সীমান্ত পেরিয়ে সুদানে পালিয়েছে৷ ঘরছাড়া ২০ লাখ মানুষ৷
ছবি: El Tayeb Siddig/REUTERS
খাবার সংকট
দেশের ভেতরে যুদ্ধ চলছে৷ ফলে খাবার সংকটের কারণে এসব মানুষ ইথিওপিয়া থেকে পালিয়ে আশ্রয় নিচ্ছে সুদানে৷
ছবি: Baz Ratner/REUTERS
বিচ্ছিন্ন টিগ্রে
এক মাস ধরে টিগ্রেতে কোন যানবাহন চলছে না৷ টেলি যোগাযোগ, ইন্টারনেট একেবারে বন্ধ৷ রোববার ইথিওপিয়ার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে বলা হয় টিগ্রের হুমেরা শহরে ৭০টি কবরের সন্ধান পেয়েছে, যেগুলোর কোনটিতে একজন, আবার কোনটিতে একাধিক মৃতদেহ রয়েছে৷ প্রতিবেদনে একজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, টিপিএলএফ এর যোদ্ধারা এদের হত্যা করেছে৷ কিন্তু যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ায় লড়াইয়ে আহত-নিহতের সঠিক সংখ্যা জানা সম্ভব হচ্ছে না৷
ছবি: Baz Ratner/REUTERS
খাবার পাহারা
সুদানের কাসালা রাজ্যের একটি শরণার্থী শিবিরে ত্রাণের খাবারের বস্তাগুলো পাহারা দিচ্ছে সেনারা৷ বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি ডাব্লিউএফপি এসব শিবিরে খাদ্য সহায়তা দিচ্ছে৷
ছবি: Mohamed Nureldin Abdallah/REUTERS
সেটিট নদীর তীরে হাজারো মানুষ
ইথিওপিয়া থেকে পালিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ নদী পার হয়ে আসছে সুদানে৷
ছবি: El Tayeb Siddig/REUTERS
গৃহহীন ২০ লাখ
ট্রিগ্রেতে লড়াইয়ের কারণে গৃহহীন হয়েছেন ২০ লাখ মানুষ৷ সুদানের আল কাদারিফ রাজ্যের একটি শরণার্থী শিবিরে খাবারের জন্য অপেক্ষা করছেন অনেক মানুষ৷
ছবি: Mohamed Nureldin Abdallah/REUTERS
সম্বলহীন যাত্রা
এই শরণার্থী সুদানে যেতে সাঁতরে সেটিট নদী পার হচ্ছে৷ উঁচু করে রাখা হাতে গায়ের জামাটা ছাড়া আর কিছু নেই৷
ছবি: Mohamed Nureldin Abdallah/REUTERS
টিপিএলএফের শাসন
উত্তর ইথিওপিয়ার ইরিত্রিয়া ও সুদান ঘেঁষা এলাকায় এতদিন টিপিএলএফের শাসন চলতো৷ এই এলাকায় সুদান ও ইরিত্রিয়ার প্রভাব ছিলো বেশি৷
ছবি: Mohamed Nureldin Abdallah/REUTERS
টিপিএলএফকে কোণঠাসা
শান্তিতে নোবেল জয়ী ইথিওপিয়ার প্রধানমন্ত্রী আবি আহমেদ ক্ষমতায় আসার পর রাজনৈতিক সংস্কারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন৷ আর সেজন্যই টিপিএলএফকে কোণঠাসা করার পরিকল্পনা করেন তিনি৷ টিগ্রেতে ৬০ লাখ মানুষের বাস৷
ছবি: Mohamed Nureldin Abdallah/REUTERS
এক মাস ধরে যুদ্ধ
টিগ্রেতে ইথিওপিয়া ও টিগ্রে পিপলস রেভলিউশনারি ফোর্স টিপিএলএফ এর লড়াইয় চলছে এক মাস ধরে৷ নভেম্বরের ৪ তারিখে শুরু হয় এই লড়াই৷ টিগ্রের লড়াইয়ে তাদের জয় হয়েছে বলে শনিবার দাবি করেছে সরকার৷ জানিয়েছে, রাজধানী মেকেলে এখন সেনার দখলে৷
ছবি: Mohamed Nureldin Abdallah/REUTERS
9 ছবি1 | 9
মঙ্গলবারের আক্রমণের হাত থেকে বেঁচে যাওয়া আহমেদ জানিয়েছেন, তিনি ৮২টি মৃতদেহ দেখেছেন। ২২ জন আহত হয়েছেন। আক্রমণকারীরা ছুরির আঘাতেই মানুষকে মেরেছে। তবে তাদের সঙ্গে বন্দুকও ছিল। অন্তত একশ জন আক্রমণকারী ছিল। কেউ কেউ ইউনিফর্ম পরে ছিল। তবে সেই ইউনিফর্ম তিনি চিনতে পারেননি। তারা গরু, ছাগল সহ আহমেদের বাড়ি পুড়িয়ে দিয়েছে।
ইথিওপিয়া জুড়েই অশান্তি চলছে। টিগ্রেতে সেনাবাহিনীর সঙ্গে টিগ্রে পিপলস লিবারেশন ফোর্সের লড়াই চলছে। পশ্চিম ইথিওপিয়ায় একের পর এক সহিংস হানা হচ্ছে। কখনও জাতিগত কারণে, কখনো জমিদখলের জন্য, কখনো ক্ষমতার লড়াই, কখনো বা তা প্রাকৃতিক সম্পদ দখলের চেষ্টায়।