পহেলা বৈশাখে গ্রামীণ অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড কমছে, বাড়ছে বৈষম্য
সমীর কুমার দে ঢাকা
১৪ এপ্রিল ২০২৪
বাংলাদেশে উৎসব কেন্দ্রিক অর্থনীতি দিন দিন বড় হচ্ছে। নানা ধরনের উৎসবে মানুষ আগের চেয়ে অনেক বেশি টাকা খরচ করেন। তবে উৎসবকেন্দ্রিক গ্রামীণ অর্থনীতি দুর্বল হচ্ছে।
বিজ্ঞাপন
এ কারণে বাড়ছে বৈষম্য। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, শহরের অর্থনীতিতে কিছু মানুষ ধনী হন। আর গ্রামের অর্থনীতিতে উপকৃত হন সবাই। গ্রামে বণ্টনের একটা নায্যতা আছে। বিশেষ করে পহেলা বৈশাখে আগে গ্রামে মেলা হতো। নানা ধরনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হতো। এখন সেগুলো প্রায় বন্ধ হওয়ার পথে। ওই মেলাগুলোতে প্রচুর মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ হতো। এক সময় পহেলা বৈখাখে এক হাজার কোটি টাকার লেনদেন হতো। এখন অনেকটাই কমে গেছে।
কৃষি ও গ্রামীণ অর্থনীতি নিয়ে কাজ করেন অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর আলম। ডয়চে ভেলেকে তিনি বলেন, "নগরায়নের ফলে গ্রামীণ কর্মকাণ্ড অনেক কমে গেছে। শহর কেন্দ্রিক সভ্যতার প্রসার ঘটছে। আগে ৮০ ভাগ মানুষ গ্রামে থাকতেন। এখন সেটা কমে এসেছে ৩০ ভাগে। পহেলা বৈশাখ বা বিভিন্ন উৎসবে গ্রামে যে মেলা হতো, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হতো এখন সেগুলো ওভাবে হচ্ছে না। এক সময় পহেলা বৈশাখে এক হাজার কোটি টাকার কেনাবেচা হতো গ্রামে। সেটা এখন তেমন আর নেই। পহেলা বৈশাখ এখন অনেকটাই শহরকেন্দ্রিক হয়ে গেছে। আধুনিক নগর সভ্যতা চারদিকে ছড়িয়ে পড়েছে। সেটাই আমরা দেখছি। এই সরকার বলেছে, গ্রামে শহরের সুবিধার ব্যবস্থা করবে। এর অর্থ এই নয় যে, গ্রামের সংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড বা এই ধরনের মেলা বন্ধ করে দিতে হবে। এটা অটুট রাখতে হলে সরকারের উচিত হবে নানা ধরনের প্রণোদনা দিয়ে হলেও গ্রামীণ সংস্কৃতি টিকিয়ে রাখা। অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড যদি শুধু শহরে হয় তাহলে সমাজে বৈষম্য বাড়ে। কিন্তু গ্রামের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে সমবণ্টন হয়। এতে উপকৃত হন সবাই।”
বর্তমান সরকারের সময়ে বিদ্যুৎ ও যোগাযোগ সুবিধা সম্প্রসারণের ফলে গ্রামে ক্ষুদ্র ব্যবসা ও কুটিরশিল্পের প্রসার ঘটেছে। কৃষির পাশাপাশি গ্রামাঞ্চলে হাঁস-মুরগি পালন, মংস্য চাষ, গবাদি পশু পালন ও নার্সারি স্থাপনে প্রচুর বিনিয়োগ করেছেন মানুষ। প্রত্যন্ত গ্রামে ব্রয়লার ও লেয়ার মুরগির খামার, শাকসবজি ও ফলের বাগান গড়ে তুলেছে সাহসী ও উদ্যমী যুবক-যুবতীরা। শহর থেকেও অনেকে গ্রামে গিয়ে নানা ধরনের কৃষি ফার্ম করছেন। কিন্তু গ্রামের মানুষের নিজেদের যে কাজগুলো সেগুলো দিন দিন কমে যাচ্ছে। প্লাস্টিকের আগ্রাসনে কমে যাচ্ছে মৃৎ শিল্প। নানা ধরনের কারুশিল্পী কাজ করতেন। এখন তারাও নিজেদের কাজ ছেড়ে অন্য পেশায় যাচ্ছেন।
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক মূঈদ রহমান দীর্ঘদিন ধরে উৎসবের অর্থনীতি নিয়ে গবেষণা করছেন। ডয়চে ভেলেকে তিনি বলেন, "এখন তো আমাদের মনে হয় গ্রামের মানুষ ভালো আছেন। কিন্তু গ্রামে যদি আগের মতো মেলা হতো, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড চলত তাহলে আরও ভালো থাকত।গ্রামীণ অর্থনীতি চাঙ্গা থাকলে সামগ্রিক অর্থনীতিতে এর প্রভাব পড়ে। ৭০ এর দশকে কে হিন্দু, কে মুসলমান সেটা ভাবা হতো না। আসলে সার্বিকভাবেই আমাদের সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড কমে যাচ্ছে। এর ফলে আমাদের মধ্যে এক ধরনের সাম্প্রদায়িকতা বাড়ছে। আবার গত ১৫ বছরে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড নেই বললেই চলে। সবাই এখন কিছু একটা পাওয়ার আশায় থাকে। অথচ এরশাদের শাসনামলেও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড চলেছে। এই ধরনের প্রাপ্তির কথা আমরা চিন্তাই করতে পারতাম না। আমাদের পাঠ্যক্রমগুলোও বাঙালি সংস্কৃতির অনূকূল না। ফলে আমরা সাম্প্রদায়িক হয়ে যাচ্ছি। আমরা যদি গান না শুনি, নাটক না দেখি তাহলে আমরা রুক্ষ্ম হয়ে যাব। আমরা যান্ত্রিক হয়ে যাচ্ছি।”
'পহেলা বৈশাখ শহরকেন্দ্রিক হয়ে গেছে'
অধ্যাপক মূঈদ রহমান বলেন, "অর্থনীতি কী? কিছু উৎপাদন হবে, সেটা বিক্রি হবে। এটাকে বলে চলমান অর্থনীতি। এখন গ্রামে একটা মেলা হলে সেখানে কত কিছু উৎপাদন হয় এবং সেগুলো বিক্রি হয়। সেখানে কর্মসংস্থানও বাড়ে। এভাবেই অর্থনীতি সচল থাকে। শহর আর গ্রামের অর্থনীতির একটা পার্থক্য হল, শহরে মাথাপিছু আয় এক টাকা বাড়লে দারিদ্র কমে দশমিক ৭০ ভাগ। আর গ্রামে মাথাপিছু আয় এক টাকা বাড়লে দারিদ্র কমে দুই দশমিক ৪ শতাংশ। ফলে বোঝাই যাচ্ছে গ্রামের অর্থনীতিতে সমতা অনেক বেশি। শহরে একজন শিল্পপতির আয় যেভাবে বাড়ে শ্রমিকের সেভাবে বাড়ে না। সেটা সম্ভবও না। কিন্তু গ্রামের চিত্রটা পুরোপুরি ভিন্ন।”
বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী ও বিচিত্র কয়েকটি মেলা
বাংলাদেশের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ গ্রামীণ মেলা৷ বিভিন্ন পালা পার্বণকে কেন্দ্র করে বছরজুড়ে প্রায় দশ হাজারেরও বেশি ছোট-বড় গ্রামীণ লোকজ মেলা বসে বাংলাদেশের আনাচে কানাচে৷ কয়েকটি গ্রামীণ মেলা দেখুন ছবিঘরে৷
ছবি: DW/M. M. Rahman
লোক ও কারুশিল্প মেলা
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে প্রতি বছর মাসব্যাপী বসে লোককারুশিল্প মেলা ও লোকজ উৎসব৷ সোনারগাঁও লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন চত্বরে প্রতি বছর এ মেলা শুরু হয় জানুয়ারি মাসের মাঝামাঝি৷ বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় এ লোকজ মেলায় দেশের বিভিন্ন এলাকার সব রকম লোকজ সংস্কৃতি ও কুটির শিল্প সামগ্রী নিয়ে উপস্থিত হন শিল্পীরা৷
ছবি: DW/M. M. Rahman
বৈশাখী মেলা
এটি মূলত সার্বজনীন লোকজ মেলা৷ বাংলা নতুন বছরের শুরুতে বাংলাদেশের সর্বত্রই আয়োজন করা হয় বৈশাখী মেলার৷ নববর্ষকে উৎসবমুখর করে তোলে এ বৈশাখী মেলা৷ স্থানীয় কৃষিজাত দ্রব্য, কারুপণ্য, লোকশিল্পজাত পণ্য, কুটির শিল্পজাত সামগ্রী, সব প্রকার হস্তশিল্পজাত ও মৃৎশিল্পজাত সামগ্রী এই মেলার মূল আকর্ষণ৷
ছবি: DW/M. M. Rahman
রাস মেলা
পৃথিবীর সবচেয়ে বড় শ্বাসমূলীয় বন সুন্দরবনের দুবলার চরে প্রতিবছর কার্তিক-অগ্রহায়নের পূর্ণিমা তিথিতে বসে রাসমেলা৷ অনেক হিন্দু পুন্যার্থী আর পর্যটক এ উৎসবে শামিল হতে দেশ বিদেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে ছুটে আসেন৷ এ উপলক্ষ্যে পাঁচ দিনের একটি মেলাও মেলা বসে দুবলার চরে৷ মেলাটি চলে আসছে ১৯২৩ সাল থেকে৷
ছবি: DW/M. M. Rahman
লাঙ্গলবন্দের মেলা
নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার লাঙ্গলবন্দের ব্রহ্মপুত্র নদে সনাতন ধর্মাবলমম্বীরা চৈত্র মাসের শুক্লাষ্টমী বা অশোকাষ্টমী তিথিতে পুণ্যস্নানের জন্য সমবেত হন৷ এ উপলক্ষে তিন দিন ব্যাপী মেলা বসে ব্রহ্মপুত্রের দুই তীরে৷
ছবি: DW/M. M. Rahman
গুড়পুকুরের মেলা
বাংলাদেশের সাতক্ষীরা অঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী এ মেলাটি ৩০০ বছরেরও বেশি৷ বাংলা বর্ষপঞ্জি অনুযায়ী ভাদ্র মাসের শেষে অনুষ্ঠিত হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের মনসা পূজাকে কেন্দ্র করে এই মেলা অনুষ্ঠিত হয়৷ চলে একমাস৷
ছবি: DW/M. M. Rahman
পোড়াদহের মেলা
গাবতলী উপজেলার মহিষাবান ইউনিয়নের গোলাবাড়ি এলাকায় ইছামতি নদীর তীরে আড়াইশ বছর ধরে বসে ব্যতিক্রমী এক মেলা৷ প্রতিবছর মাঘ মাসের শেষ বুধবার বসে দুই দিনের এ মেলা৷ এ মেলার মূল আকর্ষণ বড় বড় আকৃতির নানা রকম মাছ৷
ছবি: DW/M. M. Rahman
রাশ লীলার মেলা
মৌলভীবাজার জেলার সীমান্তবর্তী দুই উপজেলা কমলগঞ্জ আর আদমপুরে কার্তিক অগ্রহায়ণ মাসের পূর্ণিমা তিথিতে পালিত হয় মনিপুরী সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব রাস লীলা৷ এ উপলক্ষে তিন দিনের মেলা বসে কমলগঞ্জের মাধবপুর ও আদমপুরের সনাঠাকুর মণ্ডপ এলাকায়৷
ছবি: DW/M. M. Rahman
রথের মেলা
সাধারণত বাংলা বছরের আষাঢ় মাসের শেষ সপ্তাহে বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের রথের মেলা বসে৷ সবচেয়ে বড় রথের মেলা বসে সাভারের ধামরাইয়ে৷ এছাড়া কুষ্টিয়ার রথখোলার মেলা, রাজশাহীর পুঠিয়ার রথের মেলা, সিলেটের লামাপাড়া রথযাত্রার মেলা উল্লেখযোগ্য৷
ছবি: DW/M. M. Rahman
লালন মেলা
কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালি উপজেলার ছেঁউড়িয়া গ্রামে মরমী শিল্পী লালন সাঁইয়ের সামাধিকে কেন্দ্র করে প্রতিবছর দুইবার লালনমেলা অনুষ্ঠিত হয়৷ তার একটি হচ্ছে লালন সাঁইজির তিরোধান তিথি উপলক্ষে এবং অন্যটি দোলপূর্ণিমায় লালন প্রবর্তিত সাধুসঙ্গ উপলক্ষে৷
ছবি: DW/M. M. Rahman
মধু মেলা
যশোরজেলার কেশবপুর উপজেলার সাগরদাঁড়িতে প্রতি বছর বসে সপ্তাহব্যাপী মধু মেলা৷ বাংলা সাহিত্যে অমিত্রাক্ষর ছন্দের প্রবর্তক মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে হয় এ মেলার আয়োজন৷
ছবি: DW/M. M. Rahman
বটতলায় বৌমেলা
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে চারশ’বছরের পুরানো একটি বট গাছকে কেন্দ্র করে যুগ যুগ ধরে পালিত হচ্ছে বউ মেলা৷ বৈশাখ মাসের দ্বিতীয় দিনে হিন্দু ধর্মাবলম্বী নারীরা পরিবারের সুখ শান্তি ও সুস্বাস্থ্য কামনা করে এখানকার বট গাছকে পূজা করেন৷ এ উপলক্ষে পাঁচদিনের মেলাও বসে বট গাছের চারপাশে৷
ছবি: DW/M. M. Rahman
11 ছবি1 | 11
বাংলা নববর্ষ ও বৈশাখী মেলা গ্রামীণ অর্থনীতির চাকাকে সচল রাখতে সহায়তা করে। বাঙালির সবচেয়ে বড় উৎসব, প্রাণের উৎসব পহেলা বৈশাখ। এই উৎসবে ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সব সম্প্রদায়ের মানুষ অংশগ্রহণ করে। ফুটপাত থেকে বিপণিবিতান সবখানেই পণ্য বেচাকেনার ধুম পড়ে। তথ্যপ্রযুক্তির উন্নয়নের ফলে বেচাকেনা বেড়েছে অনলাইনেও। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, বৈশাখী উৎসব দেশের অর্থনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। সর্বজনীন এই উৎসবে বাড়ছে মানুষের অংশগ্রহণ। সেইসঙ্গে বাড়ছে বৈশাখ কেন্দ্রিক কেনাকাটাও। এতে উৎসবের পাশাপাশি পয়লা বৈশাখ পাচ্ছে বাণিজ্যিক গুরুত্ব। বৈশাখী উৎসব ঘিরে দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যে গতি এসেছে বলে মনে করেন অর্থনীতিবিদরা। তারা বলেন, এই উৎসব সর্বজনীন।
অধ্যাপক আবুল কাশেম ফজলুল হক ডয়চে ভেলেকে বলেন, "যুগের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে কিছু জিনিস হারিয়ে যাবে। তবে কিছু জিনিস আমাদের রক্ষাও করতে হবে। এটা শুধু আমাদের দেশে না, সারা বিশ্বেই এমন। আধুনিক সভ্যতার ফলে কিছু জিনিস হারিয়ে গেলেও বৈশাখী উৎসবটা আমাদের ধরে রাখতে হবে। কারণ এই পহেলা বৈশাখের সঙ্গে
আমাদের জাতীয় সংস্কৃতির একটা সম্পর্ক আছে। ফলে এটা আমাদের হারিয়ে ফেললে চলবে না।”
আনন্দ থেকে মঙ্গল: শুরু থেকে বর্তমান
বাঙালির সার্বজনীন লোকউৎসব পহেলা বৈশাখের উৎসবের অন্যতম আকর্ষণ মঙ্গল শোভাযাত্রা। ‘তিমির বিনাশের’ বার্তা দিয়ে বরণ করে নেয়া হলো বাংলা নববর্ষ ১৪৩১।
ছবি: Munir Uz Zaman/AFP/Getty Images
অসাম্প্রদায়িক উৎসবে দূর হোক অন্ধকার
ঈদ শেষে রঙিন বৈশাখ। ২০১৬ সালে ইউনেস্কো’র ঘোষিত সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের তালিকায় স্থান পাওয়া মঙ্গল শোভাযাত্রা পহেলা বৈশাখে দেশের সবচেয়ে বড় সাংস্কৃতিক আয়োজন। চারুকলা অনুষদের আয়োজনে এবারের মঙ্গল শোভাযাত্রায় অংশ নেয় হাজারো মানুষ। তাতে আহ্বান, অন্ধকার দূর করার। সকাল ৯ টা ১৮ মিনিটে চারুকলা থেকে যাত্রা শুরু করে শোভাযাত্রা ঘুরে আসে শাহবাগ, ঢাকা ক্লাব ও শিশু পার্ক।
ছবি: Munir Uz Zaman/AFP/Getty Images
‘আমরা তো তিমিরবিনাশী’
শিল্পী এবিএম শফিউল আলমে’র নকশা করা পোস্টারটি এবছর নির্বাচিত হয়েছে মঙ্গল শোভাযাত্রা’র পোস্টার হিসেবে। কবি জীবনানন্দ দাশের ‘তিমিরহননের গান’ কবিতা থেকে ‘আমরা তো তিমিরবিনাশী’ লাইনখানি বেছে নিয়ে তিনি নকশাটির প্রতিপাদ্য সাজিয়েছেন। এশিয়াটিক সোসাইটিতে দুই দিনের কর্মশালা শেষে বাছাই করা হয়েছে পোস্টারটি৷
ছবি: Fine Arts faculty, University of Dhaka
মুখোশের গল্প
চারুকলা অনুষদের পঁচিশতম ব্যাচের আয়োজনে এবারের মঙ্গল শোভাযাত্রায় মুখোশ তৈরির প্রস্তুতি শুরু হয় ২১ মার্চ থেকে। বাঘ-সিংহসহ নানা প্রাণীর মুখোশ তৈরির শুরুতে এমনই সাদামাটা ছিল। আর্ট পেপার কেটে তৈরি করা হয় নানা প্রাণীর মুখের আদল। এরপর রঙ তুলিতে রঙিন হয়ে ওঠে মুখোশ৷
ছবি: Partho Sanjay/DW
দেয়ালজুড়ে লোকজ অরণ্য
বর্ণিল স্কুল ঘরটার দেয়ালে বিন্যস্ত নানা লোকজ মোটিফ। তাতে রিকশা থেকে শুরু করে ফুল, হাতি, সিংহসহ কতকিছু। এক লহমায় হাজির দেশ, সংস্কৃতি আর ঐতিহ্য।
ছবি: Partho Sanjay/DW
রাজা-রানিতে মিশে থাকা ঐতিহ্য
মঙ্গল শোভাযাত্রার অন্যতম অনুষঙ্গ ‘রাজা-রানি’। এবছর তিন জোড়া ‘রাজা-রানি তৈরি করা হয়েছে। রঙিন এই ‘রাজা-রানি’ তৈরিতে বিশেষ মুন্সিয়ানার প্রয়োজন। শিক্ষার্থীর পাশাপাশি চারুকলার প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা তাই এই ‘রাজা-রাণী’ তৈরিতে অংশ নেন৷
ছবি: Partho Sanjay/DW
তৈরি পাখিতে মঙ্গলবার্তা
কাঁচা বাঁশের খাঁচা বদলে গেল পাখিতে। হয়ে উঠলো রঙিন। শোভাযাত্রায় নেতৃত্ব দেয়া পাঁচ মোটিফের একটি এই পাখি। উচ্চতা প্রায় বিশ ফুট।
ছবি: Partho Sanjay/DW
তিন যুগ আগে শুরুটা ‘আনন্দ উৎসবে’
সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে ১৯৮৯ সালে যাত্রা শুরু হওয়া শোভাযাত্রাটির শুরুতে শিরোনাম ছিল ‘আনন্দ শোভাযাত্রা’। পরের বছর ভাষাসৈনিক ইমদাদ হোসেন ও সংগীতজ্ঞ ওয়াহিদুল হকের পরার্মশে নাম পাল্টে রাখা হয় ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’। ছবিটি সিলেটের একটি স্কুল থেকে নেওয়া৷