কীভাবে এলো পহেলা বৈশাখে বর্ষবরণের উৎসব? এর সঙ্গে পান্তা-ইলিশ বা অন্যান্য বিষয়ের সম্পর্ক কতটা আদি এবং অকৃত্রিম? এ নিয়েই ডয়চে ভেলের সঙ্গে খোলামেলা কথা বলেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক আবুল কাশেম ফজলুল হক৷
বিজ্ঞাপন
ডয়চে ভেলে: পহেলা বৈশাখ কীভাবে এলো?
অধ্যাপক আবুল কাশেম ফজলুল হক: পহেলা বৈশাখ ঢাকা শহরে আগে উদযাপন করা হতো না৷ গ্রামাঞ্চলে অনেক জায়গায় ছিল, যদিও সেগুলোর ইতিহাস খুঁজে পাওয়া মুশকিল৷ বাংলা সন যখন থেকে শুরু হয়, তখন থেকেই হয়ত গ্রামে কোথাও কোথাও এটা উদযাপন হতো৷ তবে তখন উদযাপনের ধরন ভিন্ন ছিল৷ গ্রামে তখন ছেলে-মেয়েরা খেলনা কিনতো৷ জিলাপি বিক্রি হতো৷ মেলার সঙ্গে কিছু খেলাধূলাও ছিল৷ অনেক জায়গায় জুয়া খেলা হতো৷ ঢাকা শহরে প্রথম পহেলা বৈশাখ শুরু হয় ১৯৬৮ বা ১৯৭০ সাল থেকে৷ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি প্রথম এটা উদযাপন করে৷ তখন ছ'দফার ধারাবাহিকতায় বাঙালি জাতীয়তাবাদ অত্যন্ত প্রবল ছিল৷ শিক্ষক সমিতির পাশাপাশি ছায়ানটেও প্রায় একই সময়ে পহেলা বৈশাখ উদযাপন শুরু হয়৷ তখন মূল কথা ছিল, আমরা পাকিস্তানি জাতীয়তাবাদে বিশ্বাসী নই, আমরা বাঙালি জাতীয়তাবাদে বিশ্বাসী৷ এ কারণে পহেলা বৈশাখে আলোচনাসভা, কোথাও কোথাও গানের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হতো৷ দেশ স্বাধীনের পর এটা ভিন্ন রূপ পায়৷ ছায়ানট রমনার বটমূলে অনুষ্ঠান শুরু করে৷ একই সঙ্গে ইলিশ মাছের তরকারি দিয়ে পান্তা ভাত খাওয়াসহ অনুষ্ঠানগুলো শুরু হয়ে যায়৷
বিভিন্ন দেশের নববর্ষ উৎসব
বাংলাদেশের মতো বিশ্বের আরো কয়েকটি দেশে এপ্রিলের মাঝামাঝি নববর্ষ উদযাপন করা হয়৷ এছাড়া চীন ও ইরানের নওরোজ উৎসবও বেশ ঘটা করে পালিত হয়৷
ছবি: picture-alliance/AA/R. Rehimov
চীনা নববর্ষ
বিশ্বের অন্যতম বিখ্যাত উৎসব৷ ঈদের মতোই এই উৎসব উপলক্ষ্যে শহরের মানুষ গ্রামে পরিবারের কাছে ফিরে যেতে চায়৷ কারণ ঐতিহ্য অনুযায়ী, নতুন বছর শুরুর আগের রাতে পরিবারের সদস্যরা একসঙ্গে মিলে রাতের খাবার খান৷ এই সময় ঘরবাড়ি পরিষ্কার করা হয়৷ লাল কাগজ দিয়ে বিভিন্ন জিনিস তৈরি করে দরজা, জানালা সাজানো হয়৷ আর আতশবাজি পুড়িয়ে ভূতপ্রেত তাড়ানোর ব্যবস্থা হয়৷ একেক বছরে একেক তারিখে (জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি) এটি পালিত হয়৷
ছবি: picture-alliance/dpa/L. Wei
নওরোজ
ইরানের নববর্ষ উৎসব৷ বিশ্বের সবচেয়ে পুরনো পরবগুলোর মধ্যে এটি একটি৷ শুরুটা ইরানে হলেও এখন বিভিন্ন দেশের প্রায় ৩০ কোটি মানুষ এই উৎসব উদযাপন করেন৷ এটি বাসন্তী উৎসবও বটে৷ ইউনেস্কো নওরোজকে বিশ্ব সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকারের তালিকায় তুলে নেয়৷ ২০ বা ২১ মার্চ, রাত আর দিন যখন সমান হয়, তখন নওরোজ উদযাপিত হয়৷ নওরোজের মানে নতুন ঘাস, প্রকৃতিতে নতুন পল্লবের ছোঁয়া৷ ছবিতে দুই নারীকে সেই প্রতীক তুলে ধরতে দেখা যাচ্ছে৷
ছবি: picture-alliance/AA/R. Rehimov
সংক্রান
প্রতিবছর এপ্রিলের ১৩ তারিখ থাইল্যান্ডে নববর্ষ উৎসব পালিত হয়৷ তবে ১৪ ও ১৫ তারিখেও ছুটি থাকে৷ পানি ছিটিয়ে একে-অপরকে ভিজিয়ে দেয়া এই উৎসবের একটি অংশ৷ অনেক থাই নাগরিক এই ছুটিতে গ্রামের বাড়িতে গিয়ে বয়স্কদের সঙ্গে দেখা করেন৷
ছবি: Reuters/C. Subprasom
রাঙ্গলি বিহু
আসামের নববর্ষ উৎসব এটি৷ ১৪ কিংবা ১৫ এপ্রিল এটি উদ্যাপিত হয়৷ রাঙ্গলি বিহুর একটি অংশ ‘গরু বিহু’৷ গরু যেহেতু কৃষকের জীবিকা আয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে তাই এই সময় গরুকে গোসল করিয়ে (ছবি) তার পূজা করা হয়৷ এছাড়া সেসময় রঙের খেলা আর নাচ-গানেরও আয়োজন থাকে৷
ছবি: picture alliance/ZUMAPRESS/L. Chaliha
বৈশাখী
শিখ ধর্মের অনুসারীরা প্রতিবছর ১৪ এপ্রিল নববর্ষ উদ্যাপন করে৷ এটি একটি ফসল তোলারও উৎসব৷ এদিন সকালে ভক্তরা ফুল নিয়ে গুরুদুয়ারায় হাজির হন৷ সেখানে গান-বাজনার ব্যবস্থা থাকে৷ এছাড়া ভক্তিমূলক অনুষ্ঠান ও মিছিল অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে৷
ছবি: Farooq Naeem/AFP/Getty Images
আলুথ অভুরুদ্দ
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অনেক দেশের মতো শ্রীলংকাতেও ১৩ কিংবা ১৪ এপ্রিল নববর্ষ উদযাপিত হয়৷ গরুর গাড়ির দৌড় (ছবি) এই উৎসবের একটি অংশ৷
ছবি: Getty Images/AFP/L. Wanniarachchi
থিনজান
মিয়ানমারের নববর্ষ উত্সব৷ এপ্রিলের মাঝামাঝি এটি পালিত হয়৷ পানি নিয়ে খেলা এই উৎসবের একটি বড় অংশ৷ চার-পাঁচদিন ধরে চলা এই উৎসবে তরুণ-তরুণীরা নাচে-গানে মেতে উঠেন৷
ছবি: DW/V. Hölzl
চউল চনাম থিমে
কম্বোডিয়ার নববর্ষ৷ সাধারণত ১৩ কিংবা ১৪ এপ্রিল এই উৎসব পালিত হয়৷ তবে ছুটি থাকে তিনদিন৷ সংক্রান আর থিনজানের মতো পানি খেলা এই উৎসবেরও মূল আকর্ষণ৷ এই সময় ঘরে ঘরে বিশেষ খাবারও রান্না করা হয়৷
ছবি: Getty Images/AFP/Tang Chhin Sothy
8 ছবি1 | 8
পহেলা বৈশাখ বাঙালির কাছে এত প্রিয় হলো কীভাবে?
দেশ স্বাধীনের আগে ২-৩ বছর ধরে এটা হচ্ছিল৷ এমনকি ৫২ সাল থেকেই এই চেতনা কাজ করছিল৷ পাশাপাশি রমনার বটমূলে যখন অনুষ্ঠান শুরু হলো, তখন এটাতে লোক সমাগম বাড়তে থাকে৷ দেশের মানুষও তখন বাড়ছিলে৷ এটা তখন প্রদর্শনীয় মতো হয়ে গেল৷ বাঙালি জাতীয়তাবাদী চেতনা থেকে যেটা শুরু হয়েছিল, তখন এটা তেমন কি আর থাকলো? আওয়ামী লীগ ক্ষমতার থেকে যাওয়ার পর জিয়াউর রহমান বা তারপর এরশাদ যখন ক্ষমতায় এলো, তখন পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠানের উৎসাহ কমে গিয়েছিল৷ তখন আওয়ামী লীগ পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠানকে খুবই গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে নেয়৷ তারা তখন অনুষ্ঠান করতে থাকে৷ এরপর পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠান নিয়ে একটা অংশ বলছে, এটা একামাত্র ধর্মনিরপেক্ষ অনুষ্ঠান৷ আরেকটা অংশ বলছে, পহেলা বৈশাখ যেভাবে উদযাপন হচ্ছে, সেটা ঠিক নয়৷ গ্রামাঞ্চলে যেভাবে হতো, সেভাবে হলেই ঠিক হতো৷ ১৯৮০-র দশকে যখন এরশাদবিরোধী আন্দোলন চলছে, তখন পহেলা বৈশাখ বাঙালি জাতীয়তাবাদের প্রতীক হিসেবে আওয়ামী লীগ এটাকে সামনে আনতে চাইছিল৷ তখন চারুকলা বিভাগ থেকে মুখোশ পরা, মঙ্গল শোভাযাত্রার অনুষ্ঠান শুরু হয়৷ আওয়ামী লীগ ছাড়া অন্য কোনো দল তো পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠানে উৎসাহ বোধ করে না৷
মঙ্গল শোভাযাত্রা ইউনেস্কোর কর্তৃক স্বীকৃতি পেয়েছে...
এতে তেমন কোনো লাভ হয়নি৷ ইউনেস্কোকে আসলে এত বড় করে দেখা ঠিক নয়৷ তদবির করে ইউনেস্কো দ্বারা অনেক কিছুই করানো যায়৷ পহেলা বৈশাখ আমাদের জাতীয় ঐতিহ্য এটাকে রক্ষা করতে হবে – এই কথা তো ঠিক নয়৷ পহেলা বৈশাখ আমাদের জাতীয় ঐহিত্য কবে থেকে হলো? এক সময় গোলাম আযমের বিরুদ্ধে আন্দোলন হয়েছে৷
শিকড়ের সন্ধানে বাংলাদেশে বর্ষবরণ
পুরনো বছরের জরাজীর্ণতা আর পঙ্কিলতাকে মুছে দিয়ে বঙ্গাব্দ ১৪২৫ কে বরণ করে নিল বাংলাদেশের মানুষ৷ রাজধানী ঢাকায় বর্ষ বরণের নানা আয়োজন নিয়ে এই ছবিঘর৷
ছবি: DW/M. Mostafigur Rahman
‘আলোকের এই ঝর্ণাধারায় ধুইয়ে দাও...
রমনা বটমূলে প্রতি বছরের মতোই ভোরের আলো ফুটতেই গানে গানে নতুন বছরকে স্বাগত জানান ছায়ানটের শিল্পীরা৷ এ অনুষ্ঠানে শিল্পীদের সুরের মূর্ছনায় মুগ্ধ হন হাজারো শ্রোতা৷
ছবি: DW/M. Mostafigur Rahman
ছায়ানটের বর্ষ বরণের ৫১ বছর
রমনার বটেমূলে ছায়ানটের বর্ষ বরণের এ অনুষ্ঠান অর্ধশত বছর পার করেছে গত বছর৷ এবছর এ অনুষ্ঠানের ৫১তম বছর৷ ১৯৬৭ সাল থেকে রমনা বটমূলে ছায়নাট এ প্রভাতী অনুষ্ঠানের আয়োজন করে আসছে৷
ছবি: DW/M. Mostafigur Rahman
মুখে মুখে আলপনা
বর্ষ বরণের উৎসবে যোগ দিতে আসা অনেকেই শিল্পীদের দিয়ে মুখে এঁকে নেন বাহারি আলপনা৷
ছবি: DW/M. Mostafigur Rahman
খোঁপায় ফুল
বৈশাখ উদযাপনে অংশ নিতে আসা নারীদের মাথায় শোভা পাচ্ছিল ফুল৷
ছবি: DW/M. Mostafigur Rahman
‘মানুষ ভজলে সোনার মানুষ হবি’
বাংলাদেশে বর্ষ বরণ উৎসবের অন্যতম প্রধান অনুষঙ্গ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের আয়োজনে মঙ্গল শোভাযাত্রা৷ এবারের মঙ্গল শোভাযাত্রার প্রতিপাদ্য লালন সাঁইজির গান ‘মানুষ ভজলে সোনার মানুষ হবি’৷
ছবি: DW/M. Mostafigur Rahman
বর্ণিল শোভাযাত্রা
বৈশাখী সাজে রংবেরংএর নানান বাহারি মুখোশ, শোলার পাখি, টেপা পুতুল হাতে হাতে নিয়ে ঢাক-ঢোল-বাঁশি বাজিয়ে হাজরো মানুষ অংশ নেন মঙ্গল শোভাযাত্রায়৷
ছবি: DW/M. Mostafigur Rahman
মঙ্গল শোভাযাত্রা
বরাবরের মতই বৈশাখের প্রথম সকালে চারুকলা অনুষদের সামনে থেকে শোভাযাত্রা শুরু হয়৷ হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল (সাবেক রূপসী বাংলা) চত্বর ঘুরে টিএসসি হয়ে আবার চারুকলার সামনে এসে এই বর্ণিল যাত্রার শেষ হয়৷
ছবি: DW/M. Mostafigur Rahman
সার্বজনীন শোভাযাত্রা
ধর্ম, বর্ণ, জাতি, লিঙ্গ পরিচয় নির্বিশেষে সব পেশার, সব শ্রেণির মানুষ শামিল হন মঙ্গল শোভাযাত্রায়৷
ছবি: DW/M. Mostafigur Rahman
বিশ্ব ঐতিহ্য
১৯৮৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলার শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের উদ্যোগে পহেলা বৈশাখে এই মঙ্গল শোভাযাত্রার আয়োজন শুরু হয়৷ গত বছর ৩০ নভেম্বর ইউনেস্কো কর্তৃক ‘বিশ্ব সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের’ এর স্বীকৃতি পায়৷
ছবি: DW/M. Mostafigur Rahman
নিরাপত্তা
গত কয়েক বছরের ধারাবাহিকতায় এবারের মঙ্গল শোভাযাত্রাও হয়েছে নিরাপত্তার কড়াকড়ির মধ্যে৷ র্যাব ও পুলিশ সদস্যরা অস্ত্র হাতে সবার সামনে গড়ে তোলেন নিরাপত্তা বলয়৷ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএনসিসির সদস্যরাও ছিলেন৷ মাথার ওপর টহল দেয় র্যাবের হেলিকপ্টার৷
ছবি: DW/M. Mostafigur Rahman
শিল্পীগোষ্ঠীর ‘নব আনন্দে জাগো’
প্রতিবছরের মতো সকাল সাড়ে সাতটা থেকে শিশু পার্ক চত্বরে গানে গানে নতুন বছরকে স্বাগত জানায় ঋষিজ শিল্পীগোষ্ঠী৷
ছবি: DW/M. Mostafigur Rahman
সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের বিশেষ আয়োজন
বিকাল ৪টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত ধানমন্ডি রবীন্দ্র সরোবর মঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠান। দলীয় ও একক সঙ্গীত, আবৃত্তি ও নাচসহ নানা আয়োজন ছিল সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের বর্ষবরণের অনুষ্ঠানমালায়।
ছবি: DW/M. M.Rahman
12 ছবি1 | 12
তার প্রতিকৃতি তৈরি করে তার গায়ে ঢিল ছুঁড়েছে৷ কবি সুফিয়া কামাল, অধ্যাপক শওকত ওসমান, অধ্যাপক কবীর চৌধুরীসহ আরো অনেকে৷ এই ঢিল ছোঁড়া, এর মধ্যে কি জাতীয় চেতনা আছে? পক্ষ-বিপক্ষ তৈরি করা কি আমাদের ঐহিত্যের অন্তর্গত? পহেলা বৈশাখ নিয়ে ইউনেস্কো যা বলছে, সেটা ঠিক নয়৷ ইউনেস্কো সাম্রাজ্যবাদী একটা শক্তি হয়ে গেছে৷ একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ঘোষণা করা হয়েছে৷ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ঘোষণা করে বিলীয়মান মাতৃভাষা রক্ষার চেষ্টা করছে ইউনেস্কো৷ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ঘোষণা করে বিলীয়মান মাতৃভাষা রক্ষা করা যাবে না৷ যেগুলো বিকাশমান মাতৃভাষা, সেগুলোকে কীভাবে রক্ষা করা যায়, উন্নত করা যায়, সব জাতি সমানভাবে কীভাবে সভ্যতার দিকে যেতে পারে, সেদিকে মনোযোগী হওয়া দরকার৷
পহেলা বৈশাখের সঙ্গে ইলিশ ও পান্তা ভাতের সম্পর্কটা কী?
এটা তো ঢাকা শহরের ভদ্রলোকেরা '৭২ সাল থেকে করতে আরম্ভ করেছে৷ গ্রামাঞ্চলে ছোট ছোট ছেলে-মেয়েরা মেলা করেছে৷ সেখানে পান্তা ভাত বা ইলিশ মাছ খাওয়ার বিলাসিতা ছিল না৷
পহেলা বৈশাখের আয়োজনটা কেন মূলত রমনা বটমূলেই হয়?
রমনার বটমূলে হওয়ার বিশেষ কোনো তাৎপর্য নেই৷ একটা অনুষ্ঠান করার জন্য প্রসারিত জায়গা দরকার হয়৷ এখানে যে পার্ক, সেটাকে বেছে নেয়া হয়েছে৷ অন্য কিছু না৷ পরবর্তীকালে বাংলা একাডেমিতেও এই অনুষ্ঠান হচ্ছে৷ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েও কোনো কোনো বিভাগ করছে৷
সামনের পহেলা বৈশাখ ঘিরে আপনার প্রত্যাশা কী?
আমি চাই পহেলা বৈশাখ জাতির বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী উদযাপিত হোক৷ গানের অনুষ্ঠান হতে পারে, বাড়িতে সাবাই ভালো খাওয়া-দাওয়া করতে পারে৷ আত্মীয়স্বজনকে নিমন্ত্রণ করে খাওয়ানো যেতে পারে৷ কোনো পার্কে বা মাঠে পহেলা বৈশাখ উৎযাপিত হতে পারে৷ কিন্তু যে উদযাপনের পেছনে পুলিশ বা র্যাব বা বিজিবি দরকার হয়, সে উদযাপন ঠিক হচ্ছে না৷
বাংলার প্রকৃতি ও মানুষের মধ্যে শুরু হয়েছে বর্ষ বিদায় এবং নতুন বাংলা বছরকে বরণ করে নেওয়ার প্রস্তুতি৷ গাছে-ফুলে গ্রীষ্মের আগমনীর বার্তা যেমন রঙিন, তেমনি মানুষের উদযাপনের প্রস্তুতিও৷
ছবি: bdnews24
প্রকৃতির বৈশাখ উদযাপন
বাংলার প্রকৃতিও যেন বৈশাখ উদযাপনের জন্য প্রস্তুত৷ ফুটেছে কৃষ্ণচূড়া৷ ছবিটি ঢাকার সংসদ ভবনের সামনে থেকে তোলা৷
ছবি: bdnews24
শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি
বাঙালির প্রাণের উৎসব পহেলা বৈশাখ উদযাপনের শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের শিক্ষার্থীরা৷
ছবি: bdnews24
শোভাযাত্রার মুখোশ
পহেলা বৈশাখের মূল আকর্ষণ মঙ্গল শোভাযাত্রার জন্য মুখোশ তৈরিতে ব্যস্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের এক শিক্ষার্থী৷
ছবি: bdnews24
সূর্যের প্রতিকৃতি
শোভাযাত্রার অন্যতম আকর্ষণ হতে যাচ্ছে বিশাল আকারের এই সূর্যের প্রতিকৃতি৷ যা নতুন ভোরের, নতুন আশার প্রতীক৷
ছবি: bdnews24
ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর বর্ষবিদায় ও বরণ
বৃহস্পতিবার রাজধানীতে উদযাপন করা হলো ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর বর্ষবিদায় ও বরণের উৎসব বৈসাবি৷ জাতীয় সংসদ ভবন এলাকায় বর্ণিল এ উৎসবের আয়োজন করে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়৷
ছবি: bdnews24
বৈসাবিতে শিশু ও নারী
বৈসাবি উপলক্ষ্যে বৃহস্পতিবার রাজধানীর ক্রিসেন্ট লেকে একটি শিশুকে নিয়ে ফুল ভাসান ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর এক নারী৷
ছবি: bdnews24
জলকেলি
বৈশাখি উৎসবের জলকেলিতে মেতেছেন ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠির নারীরা৷
ছবি: bdnews24
হাতপাখা
উৎসব মানেই কেনাকাটা৷ গ্রিষ্মের গরম তাড়াতে হাতপাখা ঐতিহ্যের প্রতীক৷ তাই অনেক কিছুর সাথে বৈশাখের প্রস্তুতি হিসেবে বিক্রি হচ্ছে রং-বেরঙের হাতপাখা৷
ছবি: bdnews24
বৈশাখের শিল্পী
পহেলা বৈশাখ উপলক্ষ্যে বিক্রির মাথাল রং করছে এক শিশু৷
ছবি: bdnews24
বৈশাখের বাহারি পণ্য
বাহারি পণ্যে বর্ণিল দোয়েল চত্বরের মৃৎশিল্পের দোকানগুলো৷ ছবিটি তোলা হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দোয়েল চত্বরের একটি দোকান থেকে৷