বাংলাদেশে কোটা নিয়ে আন্দোলনে সংঘর্ষে শতাধিক মানুষ নিহত হওয়ার পর বিরোধী নেতাসহ ৫০০ জনেরও বেশি মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে সোমবার জানিয়েছে পুলিশ৷
বিজ্ঞাপন
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের মুখপাত্র ফারুক হোসেন বার্তাসংস্থা এএফপিকে বলেছেন, ''সহিংসতার ঘটনায় অন্তত ৫৩২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে৷''
আটক হওয়াদের মধ্যে বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতা আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও মুখপাত্র রুহুল কবির রিজভী আহমেদ রয়েছেন বলেও জানিয়েছেন পুলিশের মুখপাত্র৷ জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক অধিনায়ক এবং বিএনপির আরেক জ্যেষ্ঠ নেতা আমিনুল হককেও আটক করা হয়েছে৷
জামায়াতে ইসলামীর সাধারণ সম্পাদক মিয়া গোলাম পরওয়ারকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে৷
পুলিশের মুখপাত্র জানিয়েছেন, রাজধানীতে অশান্তির সময় অন্তত তিনজন পুলিশ সদস্য নিহত হয়েছেন এবং আরো প্রায় এক হাজার আহত হয়েছেন৷ আহততদের মধ্যে ৬০ জনের অবস্থা গুরুতর৷
বিএনপির মুখপাত্র এ কে এম ওয়াহিদুজ্জামান অবশ্য তার দলের গ্রেপ্তার হওয়া নেতা-কর্মীদের প্রসঙ্গে এএফপিকে বলেন, ''গত কয়েক দিনে দেশব্যাপী কয়েক শতাধিক বিএনপি নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে৷''
পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে কূটনীতিকদের পাল্টা প্রশ্ন
কোটা আন্দোলন, বিক্ষোভ, সহিংসতা নিয়ে ঢাকায় নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকদের রোববার ব্রিফ করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়৷
এএফপি জানিয়েছে, বৈঠকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ রাষ্ট্রদূতদের একটি ১৫ মিনিটের ভিডিও দেখান, যেখানে বিক্ষোভকারীদের সহিংসতার বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে৷
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন জ্যেষ্ঠ কূটনৈতিক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে বার্তাসংস্থা এএফপি জানিয়েছেন, মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস ঘটনার একতরফা উপস্থাপন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন৷ পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদকে পিটার হাস বলেছেন, ''আমি আশ্চর্য হয়েছি যে আপনি নিরস্ত্র বিক্ষোভকারীদের ওপর পুলিশের গুলি চালানোর ফুটেজটি দেখাননি৷''
একই কূটনৈতিক সূত্র উদ্ধৃত করে এএফপি আরো জানিয়েছে, বিক্ষোভ দমন করার জন্য জাতিসংঘের লোগো চিহ্নিত সাঁজোয়া যান এবং হেলিকপ্টার ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে৷ এ নিয়ে জাতিসংঘের প্রতিনিধির করা প্রশ্নের জবাব দেননি পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ৷
কোটা আন্দোলনের প্রতি সংহতি, আর সহিংসতার প্রতিবাদ ইউরোপে
বাংলাদেশে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের প্রতি সংহতি জানানোর পাশাপাশি সহিংসতার প্রতিবাদে ইউরোপের বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন প্রবাসীরা৷ ছবিঘরে থাকছে এরকম কিছু কর্মসূচির কথা৷
ছবি: Nahid Hasan
দ্য হেগ-এ মিছিল
নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের প্রতি সংহতি জানিয়ে মিছিল করেছেন একদল বাংলাদেশি৷ এসময় তাদের একজনের হাতের প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল, ‘‘আমরা মুক্তিযোদ্ধাদের নাতি- নাতনি৷’’ আরেকজন বহন করছিলেন, ‘‘বাংলাদেশের জন্য মুক্তির মিছিল’’ লেখা প্ল্যাকার্ড৷
ছবি: Ayaz Ur Rahman
ভেনিসে প্রতিবাদ
ইটালির ভেনিস শহরে প্রতিবাদে অংশ নিয়েছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরাসহ বিভিন্ন দেশের শিক্ষার্থী, অধ্যাপক, সাংবাদিক, সাংস্কৃতিক কর্মী ও মানবাধিকার কর্মীরা৷ তারা বাংলাদেশে কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় শিক্ষার্থী হত্যা এবং যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করার প্রতিবাদ করেছেন৷
লাইপসিশ পৌরসভার সামনে প্রতিবাদ
কোটা সংস্কার ঘিরে সহিংসতার প্রতিবাদে লাইপসিশের রাথহাউসের সামনে সমবেত হন একদল বাংলাদেশি৷ বাংলাদেশে কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে যেসব প্রাণহানি হয়েছে, সেসবের বিচারের পাশাপাশি দেশটিতে বাকস্বাধীনতার পুনঃপ্রতিষ্ঠায় জার্মানির সহায়তা চেয়েছেন প্রতিবাদকারীরা৷
ছবি: Md Mahabur Rahman
পুলিশি বর্বরতা বন্ধের দাবি ড্যুসেলডর্ফে
জার্মানির ড্যুসেলডর্ফে প্রবাসী বাংলাদেশিদের প্রতিবাদ কর্মসূচি থেকে বাংলাদেশে পুলিশি বর্বরতা বন্ধের এবং বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের বাঁচানোর আহ্বান জানানো হয়েছে৷ জার্মানির নর্থ রাইন ওয়েস্টফালিয়া রাজ্যের বিভিন্ন শহর থেকে সেখানে গিয়ে প্রতিবাদ কর্মসূচিতে অংশ নেন অনেক বাংলাদেশি৷
ছবি: Musfiq Al Arafa
স্টুর্টগাটে প্রতিবাদ
স্টুর্টগাটে বাংলাদেশিদের প্রতিবাদ সভা থেকে কোটা সংস্কারে হতাহতদের জন্য ন্যায্য বিচার নিশ্চিত করার আহ্বান জানানো হয়েছে৷ সেখানে একজনের প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল, ‘‘আমরা বিচার চাই, আমরা পরিবর্তন চাই৷’’
ছবি: Minhaz Dipon
পাডারবনে সমাবেশ
কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে সহিংসতার প্রতিবাদে এবং প্রাণহানির বিচারের দাবিতে জার্মানির পাডারবন শহরে সমবেত হন একদল বাংলাদেশি৷ তাদের একজনের হাতে থাকা ব্যানারে লেখা ছিল, ‘‘বাংলাদেশ সরকার ব্যর্থ৷’’
ছবি: Joyonta Dey
হামবুর্গে প্রতিবাদ
কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন করা শিক্ষার্থীদের উপর হামলার প্রতিবাদে হামবুর্গে মানবন্ধনে অংশ নেয়াদের প্ল্যাকার্ডে নানারকম বক্তব্য ছিল৷ তাদের একজনের বার্তা ছিল, ‘‘সংলাপ নয়, পদত্যাগ চাই৷’’
ছবি: Nahid Hasan
বার্লিনে বাংলাদেশ দূতাবাসের সামনে প্রতিবাদ
‘‘বাংলাদেশে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের নির্মমভাবে হত্যা এবং হামলার প্রতিবাদে জার্মানির রাজধানী বার্লিনে বাংলাদেশ দূতাবাসের সামনে কয়েকশ বাংলাদেশি সমবেত হন’’ বলে জানিয়েছেন তাদের একজন মুহাম্মদ মুহিব্বুল হাসান৷ প্রতিবাদ সমাবেশ থেকে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতকে স্মারকলিপি প্রদান করে হামলাকারীদের শাস্তি, কোটা সংস্কার এবং সরকারের পক্ষ থেকে এর দায় স্বীকার করে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানানো হয়৷
ছবি: Muhib Hasan
প্যারিসে মানববন্ধন
বাংলাদেশের চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্রতি সমর্থন জানিয়ে বৃহস্পতিবার ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত ‘ন্যাশন’ চত্ত্বরে মানববন্ধন ও সমাবেশ করেছে ফ্রান্সে উচ্চশিক্ষার জন্য আসা বাংলাদেশি শিক্ষার্থী এবং স্থানীয় বাংলাদেশি কমিউনিটির সদস্যরা৷ ‘‘দুই শতাধিক মানুষ বাংলাদেশে চলমান আন্দোলনে ছাত্রছাত্রীদের প্রতি সংহতি জানান,’’ বলে জানিয়েছেন প্যারিসে বসবাসরত সাংবাদিক মোহাম্মদ আরিফ উল্লাহ৷
ছবি: Mohammad Arif Ullah
নুরেমবার্গে প্রতিবাদ
কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতার প্রতিবাদে জার্মানির নুরেমবার্গ শহরে মানববন্ধন করেন একদল প্রবাসী বাংলাদেশি৷
ছবি: Samsuzzaman Uday
ড্রেসডেনে প্রতিবাদ
জার্মানির ড্রেসডেনে প্রতিবাদ কর্মসূচিতে অংশ নেন একদল বাংলাদেশি৷ তাদের একজনের প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল, ‘‘নিরীহ শিক্ষার্থীদের হত্যা বন্ধ করুন৷’’
ছবি: Md Imtiaz
নর্দান সাইপ্রাসে অবস্থান কর্মসূচি
কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সংঘাত, সংঘর্ষের প্রতিবাদে নর্দান সাইপ্রাসেও বাংলাদেশিদের সমবেত হতে দেখা গিয়েছে৷ সেখানকার ব্যবসায়ী ইমাম হোসেন বলেন, ‘‘আমরা বাংলাদেশিরা কোটা আন্দোলনে শহিদদের মাগফিরাত এবং আহত ও আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের পক্ষে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছি৷ আমরা চাই ছাত্র হত্যা বন্ধ হোক, দেশে শান্তি ফিরে আসুক৷’’
ছবি: Emam Uddin
পোর্টসমাউথে প্রতিবাদ
যুক্তরাজ্যের পোর্টসমাউথেও প্রবাসী বাংলাদেশিরা কোটা আন্দোলনের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেছেন৷ সেখানে একজনের প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল, ‘‘শিক্ষায় রাজনীতি নয়৷’’
ছবি: Md. Rubayeth Islam
মাগডের্বুগে শিক্ষার্থীদের প্রতি একাত্মতা প্রকাশ
বাংলাদেশে শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে সহিংসতায় যে প্রাণহানি হয়েছি তার নিন্দা জানানোর পাশাপাশি কোটা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেছে জার্মানির মাগডের্বুগের বাংলাদেশি কমিউনিটি৷
ছবি: Shehab Uddin
ব্রেমেনে একাত্মতা প্রকাশ
বাংলাদেশে চলমান কোটা আন্দোলনের সঙ্গে একাত্বতা প্রকাশ করে জার্মানির ব্রেমেন বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের একাংশ অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন৷ সেখানে একজনের প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল, ‘‘শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে আমরা তাদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করছি৷’’
ছবি: Hasibul Hasan Shanto
এসেনে প্রতিবাদ
বাংলাদেশে কোটা সংস্কারের আন্দোলনের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে জার্মানির এসেন শহরে অনেক প্রবাসী বাংলাদেশি মানববন্ধন করেন৷ মানববন্ধনে অংশ নেয়াদের মধ্যে অন্যতম রাজনৈতিক বিশ্লেষক জিয়া হাসান বলেন, ‘‘সবাই একমত হোন যে এটা আর কোটা সংস্কার নয়, বরং রাষ্ট্রীয় সংস্কার দরকার৷ হাসিনার পদত্যাগ ছাড়া রাষ্ট্রীয় সংস্কার সম্ভব নয় বলে [এখানে] সবাই শেখ হাসিনার পতন চান৷’’
ছবি: Niaz Muhit
বনে প্রতিবাদ
বাংলাদেশে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উপর হামলার প্রতিবাদে জার্মানির বন শহরে জাতিসংঘের কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন করেন একদল প্রবাসী বাংলাদেশি৷ সেখানে একজন বীর বিক্রম খেতাবপ্রাপ্ত একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান মো: কবির আহমেদ বলেন, ‘‘মুক্তিযোদ্ধাদের সরকারের কাছ থেকে আর কি-ইবা পাওয়ার আছে৷ তারা তো সম্পূর্ণ দেশটাই পেয়েছে স্বাধীন হিসেবে৷’’
ছবি: Md Shafaat Ullah
ছাত্র হত্যার অবসান দাবি মিউনিখে
জার্মানির মিউনিখ শহরে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের একাংশ মানববন্ধন কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন৷ এই কর্মসূচির সঙ্গে সম্পৃক্ত হোসাইন মোঃ তালিবুল ইসলাম বলেন, ‘‘আমরা মিউনিখে বাংলাদেশে সংগঠিত সংঘাতের এবং ছাত্র হত্যার অবসান এবং বিচার চেয়ে মানববন্ধন করেছি৷’’
ছবি: Hossain Islam
ব্রান্ডেনবুর্গে শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদ
জার্মানির কটবুস শহরে ব্রান্ডেনবুর্গ টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটিতে অধ্যয়নরত প্রায় ১০০ এর মতো শিক্ষার্থী চলমান কোটা সংস্কার ‘‘আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের হত্যা ও হামলার প্রতিবাদে’’ সমবেত হন৷ তাদের অনেকের হাতে প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল, ‘‘সহিংসতা বন্ধ হোক৷’’
ছবি: Muhib Hasan
ম্যনশেনগ্লাডবাখে মানববন্ধন
জার্মানির ম্যনশেনগ্লাডবাখের হকশুলে নিধেরেইন বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা তাদের দেশে চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলনের পক্ষে সংহতি জানিয়ে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন৷
ছবি: Rayhan Jilani
ওয়ারশতে বাংলাদেশের দূতাবাসের সামনে প্রতিবাদ
পোল্যান্ডের রাজধানী ওয়ারশতে দেশটিতে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের একাংশ তাদের দেশে কোটা সংস্কার আন্দোলনে আন্দোলরত শিক্ষার্থীদের ওপর ‘‘আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও ছাত্রলীগের হামলা এবং শিক্ষার্থীদের হত্যার প্রতিবাদে’’ বাংলাদেশ দূতাবাসের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন৷
ছবি: Sadiya Azim Onima
21 ছবি1 | 21
আরব আমিরাতে বিচারের মুখোমুখি বাংলাদেশি বিক্ষোভকারীরা
সংযুক্ত আরব আমিরাতে বাংলাদেশ সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে অংশ নিয়ে গ্রেপ্তার হওয়া বাংলাদেশি কর্মীদের বিচারের নির্দেশ দিয়েছে দেশটির কর্তৃপক্ষ৷ দেশটির রাষ্ট্রীয় বার্তাসংস্থা ডাব্লিউএএম এ তথ্য জানিয়েছে৷
আরব আমিরাতের অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয় শনিবার গ্রেপ্তার হওয়া বাংলাদেশিদের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি অভিযোগ এনেছে৷ অভিযোগগুলোর মধ্যে রয়েছে, জনসমক্ষে জড়ো হয়ে নিজ দেশের সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করার মাধ্যমে অশান্তি উসকে দেয়া, আইন প্রয়োগে বাধা দেয়া, অন্যের ক্ষতি করা এবং সম্পদের ক্ষতি করা৷
ডাব্লিউএএম জানিয়েছে, ''প্রাথমিক তদন্তের ফলাফলের ভিত্তিতে বিচারের আগ পর্যন্ত আরো তদন্তের স্বার্থে তাদের আটক রাখার নির্দেশ দিয়েছে পাবলিক প্রসিকিউশন৷''
তবে আরব আমিরাতে বাংলাদেশ সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করার ঘটনায় মোট কতজন বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তা প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়নি৷
আন্দোলনে বিরতি, ড. ইউনূসের বিবৃতি
সরকারকে ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়ে আন্দোলনে সাময়িক বিরতির ঘোষণা দিয়েছেন কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের এক সমন্বয়ক৷
নাহিদ ইসলাম বলেছেন, এই ৪৮ ঘণ্টায় কারফিউ প্রত্যাহার, ইন্টারনেট চালু করা এবং শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা, নিপীড়ণ বন্ধের দাবি জানানো হয়েছে সরকারের কাছে৷
পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে অন্য সমন্বয়কদের সঙ্গে কথা বলে পরবর্তী সিদ্ধান্ত জানানো হবে বলেও জানিয়েছেন কোটা আন্দোলনের এই সমন্বয়কারী৷
এদিকে, বাংলাদেশে ভয়াবহ সহিংসতা বন্ধে পদক্ষেপ নিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আহ্বান জানিয়েছেন নোবেলবিজয়ী বাংলাদেশি ড. মুহাম্মদ ইউনূস৷
এক বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, ''প্রতিবাদের অধিকার আদায় করতে গিয়ে যারা সহিংসতার শিকার হয়েছেন, সেই সহিংসতা থামাতে সামর্থ্যের সবটুকু করার জন্য আমি জরুরি ভিত্তিতে জাতিসংঘ এবং বিশ্বনেতাদের আহ্বান জানাচ্ছি৷''
তিনি আরো বলেছেন, ''যেসব হত্যাকাণ্ড ঘটেছে, সেগুলোর তদন্ত হতে হবে৷''
থমথমে বেনাপোল-পেট্রাপোল সীমান্ত
সারি সারি ট্রাক দাঁড়িয়ে, বন্ধ রেল, বাসও যাচ্ছে না। থমথমে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের ছবি ডয়চে ভেলের ক্য়ামেরায়।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
চিন্তিত যাত্রীরা
ভারতের দিকে পেট্রাপোল সীমান্তে এসে পৌঁছেছেন এই যাত্রীরা। পায়ে হেঁটে সীমান্ত পার করে তারা বাংলাদেশে ঢুকবেন। ভারত থেকে কোনো বাস এখন সীমান্ত পার করে বাংলাদেশে ঢুকছে না। বাংলাদেশ সীমান্তে প্রাইভেট গাড়ি ভাড়া করার কথা ভেবেছেন এই যাত্রীরা।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
বাড়ছে উদ্বেগ
সীমান্ত পার করে ভারতে আসছেন এই ব্য়ক্তিরা। বাংলাদেশে তারা কাজে গেছিলেন। কার্ফিউ শুরু হওয়ার পর একটি গাড়ি ভাড়া করে তারা সীমান্তে এসে পৌঁছান। দুই দিন আগেই তাদের ভারতে আসার কথা ছিল। বস্তুত, ভারতীয় এবং নেপালি ছাত্রদের সীমান্ত পার করানোর জন্য় শনিবার সারা রাত সীমান্ত খোলা রেখে ছিল বিএসএফ। একদল ছাত্রকে ভোরবেলা সীমান্ত পার করানো হয়।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
চলছে না বাস
দু’দেশের পর্যটকেরা বিপাকে পড়েছেন। বাড়ি ফেরা নিয়ে বেড়েছে উদ্বেগ। সীমান্ত পার করে বাস চলাচল বন্ধ। সীমান্তে দাঁড়িয়ে তেমনই একটি বাস। রবিবার সীমান্তে বিটিং রিট্রিট বন্ধ রাখা হয়। সোমবারও তা বন্ধ থাকতে পারে।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
খালি পেট্রাপোল বাজার
পেট্রাপোল আন্তর্জাতিক সীমান্তে এই বাজার গমগম করে। বাংলাদেশে আন্দোলন এবং তার জেরে কার্ফিউ শুরু হওয়ার পর এই বাজারও থমথম করছে। বেশি মানুষ পারাপার করছেন না, তা-ই বাজারেও লোক নেই।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
বন্ধ ট্রেন পরিষেবা
বন্ধ রয়েছে বন্ধন, মৈত্রী এবং মিতালি এক্সপ্রেস।আপাতত অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে মৈত্রী এক্সপ্রেস। রেলট্র্যাক বন্ধ থাকার কারণে লাল কাপড় নিশান হিসেবে বেঁধে রাখা হয়েছে।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
অনলাইন চালান বন্ধ
অনলাইনে চালান বন্ধ। পণ্যবোঝাই গাড়ি পেট্রাপোল সীমান্তে দাঁড়িয়ে। ছাত্র আন্দোলনের প্রভাব পড়েছে বাণিজ্যে। ভারত থেকে বহু জিনিস বাংলাদেশে যায়। সেই ট্রাকগুলি সীমান্তে দাঁড়িয়ে। কারণ সীমান্ত পার করার চালান মিলছে না।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
বন্ধ রপ্তানি
শনিবার থেকে সমস্ত আমদানি-রপ্তানি বন্ধ হয়ে গেছে বেনাপোল-পেট্রাপোল সীমান্তে।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
পচছে মাছ, সবজি
পেট্রাপোলের ব্য়বসায়ী কার্তিক চক্রবর্তী ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন, ''সাড়ে আটশ থেকে নয়শ ট্রাক সীমান্তে দাঁড়িয়ে আছে।'' এই ট্রাকগুলির ভিতর ওড়িশার মাছ আছে, সবজি আছে। এছাড়াও আছে ওষুধ। কাঁচা সবজি এবং মাছ নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা আছে।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
বাংলাদেশ সীমান্তেও দাঁড়িয়ে ট্রাক
বাংলাদেশ সীমান্তের দিকেও একই ছবি। সেখানেও চালান মিলছে না বলে দাঁড়িয়ে বহু ভারতীয় ট্রাক। বাংলাদেশে ইন্টারনেট বন্ধ বলে চালান পাওয়া যাচ্ছে না।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
চিন্তিত ব্য়বসায়ীরা
পাঞ্জাব থেকে আসা এই ব্যক্তি দুই দিন ধরে পেট্রাপোল সীমান্তে ট্রাক নিয়ে অপেক্ষায়। বাংলাদেশে পণ্য পৌঁছে কবে তিনি বাড়ি ফিরতে পারবেন, জানেন না। আদৌ যেতে পারবেন কি না, তা-ও বুঝতে পারছেন না। বহু টাকার ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কায় ভুগছেন ব্য়বসায়ীরা।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
চলছে কার্ফিউ
গত দুই দিন বাণিজ্য সম্পূর্ণ বন্ধ ছিল। রোববার আদালতের রায়ের পর সোমবার থেকে পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে বলে মনে করছেন কেউ কেউ। কোভিডের সময়েও পরিস্থিতি এমন হয়নি বলে জানালেন পেট্রাপোলের ক্লিয়ারিং এজেন্ট।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
অশান্তির বাতাবরণ
অশান্তির বাতাবরণে ল্যান্ড পোর্ট অথরিটির সঙ্গে কথা বলে রফতানি বন্ধ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পেট্রাপোল ক্লিয়ারিং এজেন্ট। যতক্ষণ পর্যন্ত অবস্থার পরিবর্তন হচ্ছে, ততক্ষণ রপ্তানি বন্ধ থাকবে। ভারতীয় ট্রাক সীমান্ত পার করে যাতে যথেষ্ট নিরাপত্তা পায়, সে বিষয়ে নিশ্চিত হতে চাইছেন কর্তৃপক্ষ।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
মুদ্রা বিনিময়ে প্রভাব
পেট্রাপোল সীমান্ত দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার যাত্রী দুই দেশে যাতায়াত করেন। এখন তা কমে যাওয়ায় প্রভাব পড়েছে মুদ্রা বিনিময় ব্য়বস্থায়। কার্যত মাছি তাড়াচ্ছে এই দোকানগুলি।