প্রায় পাঁচ হাজার রোহিঙ্গা ফেরত নিতে মিয়ানমার ও বাংলাদেশের মধ্যে গতমাসে একটি চুক্তি সই হয়েছিল৷ এর আওতায় প্রথম ব্যাচে বৃহস্পতিবার ২,২৫১ জন রোহিঙ্গাকে ফেরত নিতে প্রস্তুত মিয়ানমার৷
বিজ্ঞাপন
দেশটির সমাজকল্যাণমন্ত্রী উইন মিয়েট এ রবিবার এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, নৌকায় করে রোহিঙ্গাদের দু'টি ট্রানজিট ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হবে৷ পরবর্তীতে দ্বিতীয় ব্যাচে ২,০৯৫ জন রোহিঙ্গাকে সড়কপথে নিয়ে যাওয়া হবে বলেও জানান তিনি৷
এদিকে, প্রথম ব্যাচে ফেরত যাওয়াদের তালিকায় নাম থাকা ২০ জনের বেশি রোহিঙ্গা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, উত্তর রাখাইনের যে অঞ্চল থেকে তাঁরা পালিয়ে এসেছেন, সেখানে যেতে তাঁরা অস্বীকৃতি জানাবেন৷
জাতিসংঘও মনে করছে, রোহিঙ্গাদের ফিরে যাওয়া এখনও নিরাপদ নয়, কারণ দেশটির বৌদ্ধরা তাঁদের ফিরে আসার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করছে৷
জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর রবিবার এক বিবৃতিতে বলেছে, রোহিঙ্গাদের ফেরত যাওয়ার আগে তাঁদের মিয়ানমারের পরিস্থিতি দেখার সুযোগ দেয়া উচিত৷ এবং তারপর ফেরত যাওয়ার ব্যাপারে তাঁদেরই সিদ্ধান্ত নেয়ার সুযোগ দেয়া উচিত৷
বাংলাদেশের ত্রাণ ও প্রত্যাবর্তন বিষয়ক কমিশনার আবুল কালাম আশা করছেন, বৃহস্পতিবার প্রত্যাবর্তন শুরু হবে৷ তবে ‘‘কাউকে ফিরে যেতে বাধ্য করা হবে না,’’ বলে জানান তিনি৷
জেডএইচ/ডিজি (রয়টার্স)
কেমন আছে রোহিঙ্গারা?
মিয়ানমারে সেনা সদস্যদের নির্বিচার হত্যা-নির্যাতনের মুখে রোহিঙ্গাদের পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়ার এক বছর পূর্ণ হলো৷ কক্সবাজারে শরণার্থী শিবিরে কেমন চলছে অসহায় এসব মানুষের জীবন, সে চিত্রই তুলে আনার চেষ্টায় এই ছবিঘর৷
ছবি: Jibon Ahmed
এক ঘরে ১০ জনের বসবাস
আট সন্তান নিয়ে এক ঘরে গাদাগাদি করে থাকেন জোহার ও উম্মে কুলসুমা দম্পতি৷ তাঁদের দুই মেয়ে বড় হয়েছে৷ আর সবার ছোটটার বয়স দুই বছর৷ রাখাইনে কৃষি কাজ করতেন জোহার৷ এখন কাজ নেই, সাহায্যে চলছে তাঁদের জীবন৷
ছবি: Jibon Ahmed
এক টিউবওয়েলে চলে ৯৯ পরিবার
রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নিরাপদ পানি সরবরাহে ক্যাম্পে বসানো হয়েছে গভীর নলকূপ৷ একটি নলকূপের পানি নিয়ে চলছে তিন ব্লকের ৯৯টি পরিবার৷
ছবি: Jibon Ahmed
৩৩ পরিবারের জন্য চার টয়লেট
বাঁশ আর প্লাস্টিক দিয়ে পাহাড়ের ঢালে তৈরি করা হয়েছে টয়লেট৷ এক জায়গায় পাশাপাশি চারটি টয়লেট দিয়ে কাজ চালাতে হয় ৩৩টি পরিবারের সদস্যদের৷ আর দুটো গোসলখানা ব্যবহার করে ২০ থেকে ৩৫টি পরিবার৷
ছবি: Jibon Ahmed
নিউমোনিয়া
রোহিঙ্গা শিবিরের শিশুদের নানা রোগে আক্রান্ত হওয়ার হার এখনো বেশ৷ নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত আট মাসের জাইনুকা বিবিকে বালুখালীতে ভ্রাম্যমাণ মেডিকেল টিমের চিকিৎসকদের কাছে এনেছেন মা খালেদা বানু৷
ছবি: Jibon Ahmed
ভ্রাম্যমাণ মেডিকেল টিম
ভ্রাম্যমাণ মেডিকেল টিমের মাধ্যমে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে চিকিৎসাসেবা দিচ্ছে বেশ কয়েকটি সংস্থা ও সংগঠন৷ এ রকম একটি টিমের চিকিৎসক সোহেল জানান, প্রতি দিন ৪০-৫০ জন রোগী দেখেন৷ তাঁদের অধিকাংশ পানিবাহিত, ঠান্ডা ও ইনফেকশনের সমস্যা নিয়ে আসেন৷
ছবি: Jibon Ahmed
ঈদে জন্ম ‘কোরবান আলীর’
শরণার্থী শিবিরে ২১ সেপ্টেম্বর জন্ম হয়েছে এজাহার হোসেন ও রেনুর একমাত্র ছেলে সন্তানের৷ কোরবানির ঈদের দিন জন্ম হওয়ায় তার নাম রাখা হয়েছে কোরবান আলী৷ এনজিও পরিচালিত একটি স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে জন্ম নেওয়া এই শিশু ও তার মা সুস্থ আছে বলে জানান এজাহার হোসেন৷
ছবি: Jibon Ahmed
অপরিকল্পিত বসতি
স্বল্প সময়ের মধ্যে সাত লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা আসায় তাঁদের আশ্রয়ের জন্য সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা ছাড়াই গড়ে তোলা হয় ঘর৷ বাঁশ ও ত্রিপল দিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে ঘরগুলো৷
ছবি: Jibon Ahmed
ঝুঁকিপূর্ণ ঘর
কক্সবাজারের উখিয়ার কুতুপালংয়ের মধুরছড়ার এই বসতিতে আছে কয়েক লাখ রোহিঙ্গা৷ পাহাড়ের ঢালে তৈরি করা হয়েছে তাঁদের ঘর৷ ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় এসব ঘর থেকে তাঁদের সরিয়ে নেওয়া পরিকল্পনা করেছে সরকার৷ এরইমধ্যে কিছু পরিবারকে সরিয়েও নেওয়া হয়েছে৷