মাঠের কন্ডিশন বিবেচনায় এবারের বিশ্বকাপ ব্যাটসম্যানদের হবে বলে ধারণা করা হচ্ছিল৷ সেই ধারণা পালটে দিয়েছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের বোলাররা৷ পাকিস্তানকে মাত্র ১০৫ রানে গুটিয়ে দেন তাঁরা৷ সাত উইকেটে জিতে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ৷
বিজ্ঞাপন
১০৬ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে গিয়ে মাত্র ১৩ ওভার ৪ বলে ১০৮ রান তুলে নেয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ৷ পরিণতিতে ২১৮ বল বাকি রেখে ম্যাচ জিতে বিশ্বকাপ মিশন শুরু করেন ক্রিস গেইল আর নিকোলাস পুরানরা৷
টসে জিতে পাকিস্তানকে ব্যাটিংয়ে পাঠায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ৷ তৃতীয় ওভারে গিয়ে উদ্বোধনী জুটি ভাঙে পাকিস্তানের৷ দ্বিতীয় উইকেটে বাবর আজম আর ফখর জামান পাকিস্তানের ইনিংসের সর্বোচ্চ ১৮ রানের জুটি গড়লেও টিকতে পারেননি বেশিক্ষণ৷ এরপর ক্যারিবীয়দের পেস আক্রমণের মুখে একে একে বিদায় নিতে হয় পাকিস্তানি ব্যাটসম্যানদের৷
ইনিংস শেষে পাকিস্তানি ব্যাটসম্যানদের মধ্যে সর্বোচ্চ স্কোরও ছিল জামান আর আজমের নামের পাশে৷ দুজনই করেছেন ২২ রান করে৷
বিশ্বকাপের ১০ দল
ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় আয়োজন শুরু হতে যাচ্ছে চলতি মে মাসের শেষে৷ ক্রিকেট বিশ্বকাপের দ্বাদশ মহারণে অংশ নিচ্ছে ১০টি দেশ৷ এবারের অংশগ্রহণকারী দলগুলোর অতীত পারফর্মেন্স জেনে নিন ছবিঘরে৷
ছবি: Getty Images/AFP/S. Kodikara
অস্ট্রেলিয়া
আগের ১১টি আসরে পাঁচবার চ্যাম্পিয়ন এবং দুইবার রানার্স আপ হয়েছে অস্ট্রেলিয়া৷ ১৯৯৯ সাল থেকে ২০০৭ পর্যন্ত টানা তিনবার জয়ের রেকর্ডও তাদের৷ এবারও ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া৷
ছবি: Getty Images/AFP/M. Khaled
নিউজিল্যান্ড
২০১৫ সালের বিশ্বকাপে প্রথমবারের মতো ফাইনালে উঠলেও চ্যাম্পিয়ন হতে পারেনি নিউজিল্যান্ড৷ প্রতিবেশী অস্ট্রেলিয়ার কাছে হেরে বর্তমানে রানার্স আপ ব্ল্যাক ক্যাপসরা৷ ছয় আসরে সেমি ফাইনাল এবং এক আসরে কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে বিদায় নিয়েছে দেশটি৷
ছবি: Getty Images/K. Schwoerer
বাংলাদেশ
১৯৯৯ সালে থেকে বিশ্বকাপ ক্রিকেট খেলছে বাংলাদেশ৷ ২০০৭ সালে সুপার এইটে পৌঁছার পর ২০১৫ সালে কোয়ার্টার ফাইনাল পর্যন্ত খেলেছে টাইগাররা৷
ছবি: Getty Images/D. Manson
ভারত
তিনবার ফাইনাল খেলে দুই বার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ভারত৷ ১৯৮৩ সালের পর দীর্ঘ বিরতি দিয়ে ২০১১ বিশ্বকাপ নিজেদের করে নেয় দেশটি৷ এর মধ্যে ১৯৮৭, ১৯৯৬ ও ২০১৫ সালে সেমি ফাইনাল খেলেছে তারা৷ এবার আইসিসি ব়্যাংকিংয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে থেকে বিশ্বকাপে খেলছে ভারত৷
ছবি: Getty Images/R. Cianflone
পাকিস্তান
দুইবার ফাইনালে খেলে একবার বিশ্বকাপ জেতে পাকিস্তান৷ ১৯৯২ সালে বিশ্বকাপ ঘরে তুললেও ১৯৯৯ সালে রানার্স আপ হয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে দেশটিকে৷ ১১ আসরের মধ্যে চারটিতে সেমি ফাইনাল এবং দুইবার কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে বিদায় নিতে হয়েছে তাদের৷
ছবি: Getty Images/AFP/M. Khaled
ইংল্যান্ড
তিনবার ফাইনাল খেললেও কোনোবার শিরোপা ছোঁয়া হয়নি ইংল্যান্ডের৷ প্রতিবারই রানার্স আপ থাকতে হয়েছে ক্রিকেটের ‘আঁতুড়ঘর’ দেশটিকে৷ বিগত তিন বছরের অসাধারণ খেলার ধারাবাহিকতায় আইসিসির এক নম্বর র্যাংকিংয়ে আছে দলটি৷
ছবি: Getty Images/AFP/R. Brooks
দক্ষিণ আফ্রিকা
বিশ শতকের বহু বড় বড় ক্রিকেট তারকার জন্ম দিলেও ১১ আসরের মধ্যে কোনোবার ফাইনালে উঠতে পারেনি দক্ষিণ আফ্রিকা৷ প্রায় প্রত্যেকবার ফেবারিট হয়ে বিশ্বকাপে এলেও চার বারই সেমিফাইনাল থেকে বিদায় নিতে হয় তাদের৷ ২০০৩ সালে ঘরের মাঠের বিশ্বকাপে গ্রুপ পর্যায় এবং ২০১১ সালে কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে বিদায় নেয় প্রোটিয়ারা৷
ছবি: Getty Images/Gallo Images/A. Vlotman
শ্রীলঙ্কা
তিনবার ফাইনাল খেলে একবার শিরোপা ঘরে তুলতে পেরেছে শ্রীলঙ্কা৷ ১৯৯৬ সালে জিতলেও ২০০৭ ও ২০১১ সালে রানার্সআপ হয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে তাদের৷
ছবি: Getty Images/Gallo Images/A. Vlotman
ওয়েস্ট ইন্ডিজ
ভারতের মতো তিনবার ফাইনাল খেলে দুইবার ট্রফি ঘরে তুলতে পেরেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ৷ ক্যারিবিয়ানরা দুই শিরোপা জিতেছে ১৯৭৫ ও ১৯৭৯ সালে বিশ্বকাপের প্রথম দুই আসরেই৷ এর পরেরবার ১৯৮৩ সালে রানার্সআপ হওয়ার পর আর ফাইনাল খেলতে পারেনি দেশটি৷
ছবি: Getty Images/AFP/R. Brooks
আফগানিস্তান
২০১৫ সালে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ খেলে যুদ্ধ-বিধ্বস্ত আফগানিস্তান৷ এবারও মোহাম্মদ নবীর মতো অলরাউন্ডার ও রশিদ খানের মতো স্পিনার নিয়ে ক্রিকেটের মহাযজ্ঞে অংশ নিচ্ছে দেশটি৷
ছবি: Getty Images/AFP/S. Kodikara
10 ছবি1 | 10
৫ ওভার ৪ বল বোলিং করে ৪ উইকেট তুলে নেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের পেস বোলার ওশেন টমাস৷ আর মিডিয়াম ফাস্ট বোলার জেসন হোল্ডার নিয়েছেন ৩ উইকেট৷
১০৬ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ঝড়ো ব্যাটিংয়ে ফিফটি তুলে নেন ক্রিস গেইল৷ ৩৪ বলে ৩ ছক্কা আর ৬ চারে ঠিক ৫০ রান করেই আউট হন এই হার্ড-হিটিং ব্যাটসম্যান৷
ওয়েস্ট ইন্ডিজের ইনিংসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩৪ রান করেন নিকোলাস পুরান৷ এই রান তুলতে তিনি খরচ করেন ১৯ বল৷ ছক্কা মেরে তিনিই দলকে পৌঁছে দেন জয়ের বন্দরে৷
পাকিস্তানি বোলারদের মধ্যে শুধু মোহাম্মদ আমিরই সফল৷ ২৬ রানে ৩ উইকেট তুলে নিয়েছেন তিনি৷
চার উইকেট নিয়ে পাকিস্তানের সবচেয়ে বড় সর্বনাশ করায় ম্যাচ সেরার স্বীকৃতি পেয়েছেন ওশেন টমাস৷
ক্রিকেট বিশ্বকাপের দলীয় যত রেকর্ড
১৯৭৫ সালে প্রথম বিশ্বকাপ ক্রিকেট অনুষ্ঠিত হয়৷ সেই থেকে এখন পর্যন্ত ১১টি প্রতিযোগিতা আয়োজিত হয়েছে৷ ছবিঘরে থাকছে দলীয় কিছু রেকর্ডের কথা৷
ছবি: Getty Images/R. Pierse
সবচেয়ে বেশি চ্যাম্পিয়ন
এখন পর্যন্ত বিশ্বকাপ হয়েছে ১১টি৷ এর মধ্যে অস্ট্রেলিয়া সবচেয়ে বেশি পাঁচবার চ্যাম্পিয়ন (১৯৮৭, ১৯৯৯, ২০০৩, ২০০৭ ও ২০১৫) হয়েছে৷ এছাড়া ভারত (১৯৮৩, ২০১১) এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজ (১৯৭৫, ১৯৭৯) দু’বার করে সেরা হয়েছে৷ পাকিস্তান (১৯৯২) আর শ্রীলঙ্কা (১৯৯৬) চ্যাম্পিয়ন হয়েছে একবার করে৷ এবার কি নতুন কেউ সেরার মুকুট পরতে পারবে? ছবিতে ২০১৫ সালের ট্রফি হাতে অসিদের দেখা যাচ্ছে৷
ছবি: Getty Images/R. Pierse
দলীয় সর্বোচ্চ রান
২০১৫ সালে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ছয় উইকেটে ৪১৭ রান করেছিল অস্ট্রেলিয়া৷ উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান ডেভিড ওয়ার্নার (ছবি) ১৩৩ বলে ১৭৮ রান করেছিলেন৷ জবাবে আফগানিস্তান ১৪২ রানে অলআউট হয়ে যায়৷ অর্থাৎ, অসিরা জেতে ২৭৫ রানে৷ বিশ্বকাপে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রান ছিল স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে, চার উইকেটে ৩২২ রান৷ স্কটল্যান্ডের ৩১৮ রানের জবাবে টাইগাররা ঐ রান তুলেছিল৷
ছবি: Getty Images/Paul Kane
দলীয় সর্বনিম্ন সংগ্রহ
প্রথম দুটি রেকর্ডেরই মালিক ক্যানাডা৷ ২০০৩ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে মাত্র ৩৬ রানে অলআউট হয়ে গিয়েছিল তারা৷ ছবিতে শ্রীলঙ্কাকে ঐ রান তাড়া করতে দেখছেন৷ এর আগে ১৯৭৯ সালে ইংলিশদের বিপক্ষে ৪৫ রান করেছিল ক্যানাডা৷ এদিকে, বিশ্বকাপে বাংলাদেশের সর্বনিম্ন সংগ্রহ ছিল ৫৮ রান৷ ২০১১ সালে ঢাকায় অনুষ্ঠিত ঐ ম্যাচে প্রতিপক্ষ ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ৷
ছবি: Getty Images/C. Mason
রানের ব্যবধানে সবচেয়ে বড় হার
বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ রান হয়েছিল যে ম্যাচে সেই ম্যাচেই সবচেয়ে বড় হারের ঘটনাটি ঘটে৷ ২০১৫ সালে অস্ট্রেলিয়া ও আফগানিস্তানের ঐ ম্যাচে আফগানরা হারে ২৭৫ রানে৷
ছবি: Getty Images/GREG WOOD
উইকেটের ব্যবধানে সবচেয়ে বড় হার
বিশ্বকাপে ১০ উইকেটে হারের ঘটনা আছে ১১টি৷ এর মধ্যে বাংলাদেশ সর্বোচ্চ তিনবার এমন হারের লজ্জায় পড়েছিল৷ এছাড়া কেনিয়া ও জিম্বাবোয়ে দু’বার করে ১০ উইকেটে হেরেছে৷
ছবি: Getty Images/AFP/M. U. Zaman
সবচেয়ে কম রানের ব্যবধানে জয়
বিশ্বকাপে সবচেয়ে কম, অর্থাৎ এক রানে হারের ঘটনা আছে দুটি৷ দুটিতেই ভারতকে হারিয়েছে অস্ট্রেলিয়া৷ প্রথমটি ১৯৮৭ সালে৷ সেবার ২৭১ রানের টার্গেট ছিল৷ পরের হারটি এসেছিল ১৯৯২ সালে৷ সেই সময় ২৩৬ রানের টার্গেট পেয়েও জিততে পারেনি ভারত৷
ছবি: Getty Images
সবচেয়ে কম ব্যবধানে জয় (উইকেট)
বিশ্বকাপে মাত্র এক উইকেটের ব্যবধানে হার আছে ছয়টি৷ এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য একটি হচ্ছে, ১৯৮৭ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে পাকিস্তানের জয়টি৷ ইন্ডিজদের করা ২১৬ রান পেরোতে পাকিস্তানকে শেষ বলটিও খেলতে হয়েছিল৷
ছবি: DW/T. Saeed
সবচেয়ে বেশি এক্সট্রা
১৯৯৯ সালে স্কটল্যান্ডের সঙ্গে খেলায় (ছবি) ৫৯টি অতিরিক্ত রান দিয়েছিল পাকিস্তান৷ এদিকে, বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি অতিরিক্ত রান দেয়ার ঘটনাটিও স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে, ১৯৯৯ সালে৷ প্রথমে ব্যাট করতে নেমে টাইগাররা ১৮৫ রান তুলেছিল৷ কিন্তু অতিরিক্ত হিসেবে ৪৪ রান পেয়েও ১৬৩ রানে শেষ হয়ে গিয়েছিল স্কটিশদের ইনিংস৷
ছবি: Getty Images/M. Thpompson
টানা সবচেয়ে বেশি জয়
১৯৯৯ সাল থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত অপ্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠেছিল অস্ট্রেলিয়া৷ ১৯৯৯ সালের ফাইনাল থেকে শুরু করে ২০১১ সালে শ্রীলঙ্কার সঙ্গে ম্যাচটি বৃষ্টিতে পরিত্যক্ত হওয়ার আগ পর্যন্ত ২৫ ম্যাচ জিতেছিল তারা৷ তবে অসিরা অপরাজিত ছিল ৩৪ ম্যাচে৷ কারণ, ১৯৯৯ সালে সেমিফাইনালে টাই হওয়া ম্যাচের আগেও কয়েকটি ম্যাচ জিতেছিল অস্ট্রেলিয়া৷ আর ২০১১ সালে শ্রীলঙ্কার সঙ্গে ম্যাচ পরিত্যক্ত হওয়ার পর আরো দুটি ম্যাচ জেতে তারা৷
ছবি: AP
টানা সবচেয়ে বেশি হার
১৯৮৩ সালে প্রথমবার বিশ্বকাপ খেলতে নেমে শক্তিশালী অস্ট্রেলিয়াকে ১৩ রানে হারিয়ে দিয়েছিল জিম্বাবোয়ে৷ কিন্তু এর পরের জয়টি পেতে নয় বছর অপেক্ষা করতে হয় তাদের৷ এই সময় ১৮টি ম্যাচ খেলেছিল তারা৷