পাকিস্তানকে ছুড়ে ফেলে দিতে চায় তালেবান-আল কায়দা : হিলারি
২৪ এপ্রিল ২০০৯ইসলামাবাদ সোয়াত উপত্যকার নিয়ন্ত্রণ কার্যত তালেবানের হাতে তুলে দিয়েছে বলে মার্কিন সিনেটের পররাষ্ট্র বিষয়ক কমিটিকে অভিহিত করেন হিলারি৷ মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন : পাকিস্তান রাষ্ট্রের উপর এহেন একটা হুমকিকে আমরা কখনোই ছোট করে দেখতে পারিনা৷ জঙ্গিরা এখন ক্রমেই রাজধানী ইসলামাবাদের দিকে এগিয়ে আসছে৷ ইসলামাবাদ থেকে মাত্র এক ঘন্টার দূরত্বে অবস্থান করছে সন্ত্রাসীরা৷ অথচ এরপরও, দেশটির সুশিল সমাজের মধ্যে বা সেনাবাহিনীতে এমন কোন নেতৃত্ব চোখে পড়ছে না - যারা বিষয়টির বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে সক্ষম৷ প্রতিবাদ করতে সক্ষম৷
হিলারি বলেন, তালেবান ও আল কায়দা পাকিস্তানকে ছুড়ে ফেলতে চায়৷ আর সেখানেই সমস্যা৷ কারণ, আমরা সবাই জানি যে পাকিস্তান একটি পরমাণু শক্তিধর দেশ৷ উল্লেখ্য, পাকিস্তান জুড়ে ক্রমবর্ধমান সহিংসতা এবং উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে তালেবানদের প্রভাব বাড়তে থাকায়, দেশটির স্থিতিশীলতা নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে৷ তাই আফগানিস্তানকে স্থিতিশীল করতে পাকিস্তানের স্থিতিশীলতা যে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে - তা বলাই বাহুল্য !
এদিকে, তালেবান-নিয়ন্ত্রিত রাজধানীর ১০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত বুনার জেলায় আধাসামরিক বাহিনী মোতায়েন করেছে পাকিস্তান৷ জানা গেছে, যে ঐ অঞ্চলে ইসলামিক শরিয়া আইন চালু করতে রাজি হয়ে বৃহস্পতিবার জঙ্গিদের কাছে নতি স্বীকার করতে বাধ্য হয় ইসলামাবাদ৷ কেন না, পাকিস্তান সরকার সোয়াত উপত্যকায় ইসলামিক শরিয়া আইন অনুমোদন করার কয়েক দিনের মধ্যেই, অস্ত্রসমর্পণ করতে অস্বীকৃতি জানিয়ে দেশজুড়ে ইসলামিক শরিয়া আইন চালুর চেষ্টা করে চলেছে জঙ্গিরা৷
আধুনিক বিশ্বে এমন একটা ঘটনা কিভাবে ঘটা সম্ভব - সে সম্পর্কে পাকিস্তানের নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ আয়েষা সিদ্দিকি জানান : আমার মনে হয়, পুরো অবস্থাটাই বিভ্রান্তিকর৷ প্রত্যেকেই চাইছে ক্ষমতা কামড়ে থাকতে৷ পাকিস্তান পিপলস পার্টি কেন্দ্রে তাদের ক্ষমতা অটুট রাখতে চাইছে, সীমান্ত এলাকায় তাদের প্রতিপত্তি হারাতে চাইছে না এএনপি৷ এরকম একটা রাজনৈতিক অচলাবস্থাতেও সবাই ভান করছে - যেন কিছুই হয় নি৷ যা সত্যিই অভাবনীয়৷
দৃশ্যত, বল প্রয়োগ করে জঙ্গি তৎপরতা ঠেকাতে ব্যর্থ হয়ে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারি ব্যাপক সমালোচনার মুখেও তালেবানদের দাবি মেনে নেন এবং সোয়াত উপত্যকা ও তার আশেপাশের এলাকায় ইসলামিক শরিয়া আইন অনুমোদন করেন৷ এ ঘটনার তীব্র সমালোচনা করে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিন্টন বুধবার বলেন, যে সোয়াত চুক্তি অনুমোদন করে এক অর্থে তালেবানদের কাছে নতি স্বীকার করেছে পাকিস্তান সরকার৷ ফলে দেশটি এখন বিশ্বের জন্য 'ভয়াবহ হুমকি' হয়ে উঠেছে৷ এমনকি সাধারণ মানুষের কথাতেও পাকিস্তান বিচারবিভাগ হীন একটি দেশে পরিণত হয়েছে৷