পাকিস্তানের বিশিষ্ট সাংবাদিক তাহা সিদ্দিকিকে অপরহরণের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে৷ অভিযোগের আঙুল সে দেশের সেনাবাহিনীর দিকে৷ তাহা সিদ্দিকি সেনাবাহিনীর সমালোচক হিসেবে সুপরিচিত৷ ভারতের একটি সংবাদসংস্থাতেও কাজ করেন তিনি৷
বিজ্ঞাপন
আবার অভিযোগ পাকিস্তান সেনার বিরুদ্ধে৷ এবার টার্গেট সাংবাদিক৷ পাকিস্তানের বিশিষ্ট সাংবাদিক তাহা সিদ্দিকি অভিযোগ করেছেন, রাওয়ালপিণ্ডি বিমানবন্দর থেকে ফেরার সময় তাঁর উপর হামলা চালায় বেশ কয়েকজন৷ তাহা'র ধারণা, তাঁকে অপহরণ করতে চেয়েছিল ওই হামলাকারীরা৷ অল্পের জন্য তাদের হাত থেকে রক্ষা পান তিনি৷ আপাতত তাহা পুলিশি নিরাপত্তার ঘেরাটোপে৷ তাঁর এক বন্ধু টুইটে জানান, তাহা এখন নিরাপদ৷
ভারতের একটি টেলিভিশন চ্যানেলের পাকিস্তান বিভাগীয় প্রধান তাহা৷ ফ্রান্স ২৪ চ্যানেলের জন্যও কাজ করেছেন তিনি৷ ২০১৪ সালে ফরাসি সরকার সাংবাদিকতায় ফ্রান্সের সেরা পুরস্কারটি দেয় তাঁকে৷ বরাবরই পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর সমালোচনা করেন তাহা৷ দেশে-বিদেশে সে বিষয়ে বিভিন্ন সময় নানারকম মন্তব্যও তিনি করেছেন৷ রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের ধারনা, সে কারণেই বহুদিন ধরে তাহা'র উপর আক্রোশ ছিল পাক সেনাবাহিনীর আর তারাই তাহা'কে অপহরণের চেষ্টা করেছে৷
বস্তুত, তাহা'র উপর এই আক্রমণের পর পাকিস্তানের সাংবাদিক অ্যাসোসিয়েশন এবং বেশ কয়েকটি এনজিও এর তীব্র প্রতিবাদ করে৷ ঘটনাটিকে কেন্দ্র করে ‘স্টপএনফোর্সডডিসঅ্যাপিয়ারেন্স' হ্যাশট্যাগ ছড়িয়ে পড়ে সোশ্যাল নেটওয়ার্কে৷ শুধু তাই নয়, রাওয়ালপিণ্ডি সাংবাদিক অ্যাসোসিয়েশন পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর কাছে ঘটনাটির পূর্ণাঙ্গ তদন্ত দাবি করেছে৷ মন্ত্রীও সুষ্ঠু তদন্তের আশ্বাস দিয়েছেন৷
তবে পাকিস্তানে এহেন হামলার ঘটনা প্রথম নয়৷ এর আগেও দেশের সাংবাদিকদের উপর আক্রমণ হয়েছে৷ বেলুচিস্তানে বেশকিছু সংবাদপত্রের বিরুদ্ধে ফরমান জারি করেছে কয়েকটি সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠী৷ কিছুদিন আগে দেশের আরেক সাংবাদিককে গাড়ি থেকে নামিয়ে ভয়ংকরভাবে আঘাত করা হয় বলে অভিযোগ উঠেছিল৷ অপহৃত হয়েছিলেন চারজন ব্লগার৷ পরে তাঁরা মুক্তি পেলেও কেউ সে বিষয়ে মুখ খুলতে চাননি৷ বিশেষজ্ঞদের ধারণা, সেই ঘটনাতেও সেনাবাহিনীর হাত ছিল৷
পাকিস্তানে সাধারণ মানুষের জীবন
আলোকচিত্রী মালোনো টে ২০১৪ সালে পাকিস্তানে গিয়ে সেখানকার সাধারণ মানুষদের জীবনযাত্রার ছবি তোলেন৷ ‘‘পাকিস্তানের প্রেমে পড়ে যেতে বেশি সময় লাগে না,’’ বলেছেন এই জার্মান শিল্পী৷
ছবি: Manolo Ty
‘আজকের পাকিস্তান’
জার্মান আলোকচিত্রী মালোনো টে পাকিস্তানে গিয়েছিলেন ছয় সপ্তাহের জন্য৷ সিন্ধ, বালুচিস্তান, পাঞ্জাব আর খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশ সফর করে ১৫ হাজারের বেশি ছবি তোলেন তিনি৷ তার মধ্যে ২৭৭টি ছবি বেছে নিয়ে তিনি তাঁর ‘পাকিস্তান নাও’ বইটি প্রকাশ করেছেন৷
ছবি: Manolo Ty
করাচির সন্ধ্যা
করাচি শহরে তাপমাত্রা যখন ৪৫ ছুঁয়েছে, তখন সন্ধ্যার দিকে মানুষজন পরিবারের সকলকে নিয়ে সাগরের তীরে বসে মুখরোচক খাবার খান আর অপেক্ষা করেন, পরের ঢেউটি কখন আবার খালি পায়ের নীচে শীতল আঁচল পেতে দিয়ে যাবে৷
ছবি: Manolo Ty
‘আজ আমি স্বাধীন...’
মালোনো টে-র বক্তব্য হলো, পশ্চিমি মিডিয়ায় পাকিস্তানের মহিলাদের সারাক্ষণ পারিবারিক সহিংসতার শিকার হিসেবে দেখানো হয়৷ এই ছবিতে যে শিক্ষিতা তরুণীকে দেখা যাচ্ছে, তিনি কিন্তু কোনো বাধা-বাঁধন মানতে রাজি নন৷
ছবি: Manolo Ty
কনের সাজে...
পাকিস্তানে অনেক বিবাহবাসরে যাবার আমন্ত্রণ পেয়েছেন মালোনো টে৷ এত অতিথির ভিড়, এত খাওয়াদাওয়া, নাচগান - বিয়ে তো নয়, যেন উৎসব বলে মনে হয়েছে মালোনোর!
ছবি: Manolo Ty
ঐতিহাসিক স্মৃতিসৌধ...
...যদিও তাঁদের অনেকেরই ভগ্নদশা৷ নয়তো মকলি কবরখানার আয়তন হলো ১০ বর্গকিলোমিটার; এখানে পাঁচ লাখ কবর ও স্মৃতিসৌধ আছে৷ ১৯৮১ সালে এই গোরস্তানটিকে বিশ্ব সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য হিসেবে ঘোষণা করা হয়৷ এখানে চতুর্দ্দশ থেকে অষ্টাদশ শতাব্দীর স্থাপত্যের বিভিন্ন নিদর্শন রক্ষিত আছে৷
ছবি: Manolo Ty
জাহাজ ভাঙা
বালুচিস্তানের গড়ানিতে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম জাহাজ ভাঙার ইয়ার্ড আছে৷ একটা জাহাজ ভাঙতে এখানকার কর্মীদের তিন মাস সময় লেগে যায়৷
ছবি: Manolo Ty
তুলোর মতো হালকা!
কাপাস তুলো নিয়ে যাওয়ার ট্রাকগুলোকে যেভাবে বোঝাই করা হয়, তাতে তারা হাইওয়ের একটা লেনের বদলে প্রায় দুটো লেন জুড়ে চলে!
ছবি: Manolo Ty
পাকিস্তানের সংখ্যালঘু
মানোলো টে-র বইতে পাকিস্তানে সংখ্যালঘুদের জীবনও দেখানো হয়েছে৷ এই ছবিতে সিন্ধ প্রদেশের কিছু হিন্দু মহিলাদের দেখা যাচ্ছে৷ এরা বাস করেন সিন্ধু নদীর তীরে সক্কর শহরে৷ মানোলো এদের অতিথি হয়েছিলেন৷
ছবি: Manolo Ty
তুলে আছাড়
পাকিস্তানের গ্রামাঞ্চলে কুস্তি খেলা খুব জনপ্রিয়৷ বাৎসরিক মেলা কি পরবে কুস্তি প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়৷
ছবি: Manolo Ty
ইমামের সঙ্গে সাক্ষাৎ
মানোলো টে ইসলামাবাদের প্রখ্যাত শাহ ফয়সাল মসজিদের ইমামের সঙ্গে সাক্ষাৎ করার সুযোগ পান৷ ইমাম তাঁকে বিশ্বের বিভিন্ন ধর্মের মধ্যে সম্প্রীতির কথা বলেন৷
ছবি: Manolo Ty
সুফি সংস্কৃতির ঝলক
লাহোরে প্রতি বৃহস্পতিবার বাবা শাহ জামালের মাজারে সুফি সংগীতের অনুষ্ঠান হয়ে থাকে, যা শোনার জন্য বহু মানুষ ভিড় করেন৷