1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

পাকিস্তানের ঈশ্বরনিন্দা আইন

গ্রেহেম লুকাস/এসি৭ নভেম্বর ২০১৪

পাকিস্তান থেকে আবার দুঃসংবাদ৷ দেশের কড়া ঈশ্বরনিন্দা আইন নিয়ে আবার বিতর্ক উঠেছে৷ তার কারণ: আরেক পর্যায় হত্যাকাণ্ড৷ জিয়া'র আমলে পেনাল কোড'এর সংস্কার যাবৎ ঈশ্বরনিন্দা আইনের অপব্যবহার হয়ে আসছে৷

Asia Bibi, in Pakistan für Blasphemie zum Tode verurteilt
ছবি: picture-alliance/dpa/Governor House Handout

সম্প্রতি তার আরো একটি দৃষ্টান্ত পাওয়া গেল৷ জেলহাজতে থাকা অবস্থায় এক ব্যক্তি মহানবি'র সাহাবিদের অপমান করেছেন, এই দায়ে এক পুলিশকর্মী তাকে কুপিয়ে হত্যা করেছে৷ ঘটনাটি ঘটেছে পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের গুজরাট শহরে৷ পুলিশ দাবি করছে, হত্যাকারীর নাকি মানসিক ভারসাম্যের অভাব ছিল৷ অপরদিকে ঘটনার বিচারবিভাগীয় তদন্ত থেকে বিশেষ কোনো লাভ হবে না, বলেই ধরে নেওয়া যায়৷

এর মাত্র কয়েক দিন আগের ঘটনা: স্থানীয় এক মসজিদ এক খ্রিস্টান শ্রমিক ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে কোরআন অপবিত্র করার অভিযোগ আনার পর, উত্তেজিত জনতা তাদের পিটিয়ে মারে এবং মৃতদেহগুলি ইটভাটায় পুড়িয়ে ফেলে৷ মহিলা আবার সন্তানসম্ভবা ছিলেন৷ নিহতদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ খুব সম্ভবত ভুয়া ছিল৷ পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট নওয়াজ শরিফ এই ঘটনার নিন্দা করলেও, ঈশ্বরনিন্দা আইন সংশোধন করার মতো ক্ষমতা বা অভিপ্রায়, দু'টোর কোনোটাই তাঁর নেই৷ সে ধরনের উচ্চাশা যে কতটা বিপজ্জনক হতে পারে, তা তিনি জানেন: ২০১১ সালে পাকিস্তানের সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রী শাহবাজ ভাট্টি'কে তালেবানের হাতে প্রাণ দিতে হয় ঠিক ঐ উচ্চাশার কারণে৷

পাকিস্তানের ঈশ্বরনিন্দা আইন চালু হয় ব্রিটিশ আমলে৷ আশির দশকে জেনারেল জিয়া-উল-হক সে আইনকে আরো জোরদার করেন৷ বলতে কি, জিয়ার সংস্কারের কারণেই পাকিস্তানে যে কোনো ধর্মীয় ইস্যুতে জনতাকে ক্ষেপিয়ে তোলা আজও এতোটা সহজ৷ জিয়ার পেনাল কোড অনুযায়ী যে কোনো ধর্মের বিরুদ্ধে ঈশ্বরনিন্দাই দণ্ডনীয়, কিন্তু বাস্তবে সেটা যারা ইসলাম ধর্মের অপমান করছে বলে মনে করা হচ্ছে, শুধু তাদের বিরুদ্ধেই ব্যবহার করা হয়৷ সেই সঙ্গে আছে বিচার পদ্ধতি: মাত্র একজন সাক্ষী থাকলেই চলে; সাক্ষ্য প্রকাশ করার নিয়ম নেই, কেননা তার ফলে আবার ঈশ্বরনিন্দা ঘটবে৷ উকিলরা আসামি পক্ষের মামলা নিতে ভয় পান, কেননা তাদের নিজেদের খুন হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে৷

ডয়চে ভেলে’র গ্রেহেম লুকাসছবি: DW/P. Henriksen

কাজেই এই ঈশ্বরনিন্দা আইন এখন ঘৃণা, প্রতিশোধ কিংবা সম্পত্তি দখলের মতলব, সব স্বার্থ হাসিল করার জন্যই ব্যবহৃত হয়ে থাকে - বিশেষ করে আহমদিয়া মুসলমান, খ্রিস্টান কিংবা হিন্দুদের বিরুদ্ধে৷ অতি সম্প্রতি পাঁচ সন্তানের জননী এক খ্রিস্টান মহিলা - যার ২০১০ সালে ফাঁসিতে ঝোলার কথা ছিল - সেই আসিয়া বিবি'র মৃত্যুদণ্ড রদের আপিল আবার প্রত্যাখ্যাত হয়েছে৷ বিবি'র ঘটনাটা ঈশ্বরনিন্দা আইনের কঠোরতার কথা স্মরণ করিয়ে দেয়: আসিয়া বিবি অন্যান্য মুসলিম মহিলাদের সঙ্গে ফল তোলার সময় একই পাত্র থেকে জল খেয়েছিলেন, যা কিনা ঈশ্বরনিন্দার সমতুল৷ পাঞ্জাব প্রদেশের রাজ্যপাল সালমান তাসির আসিয়া বিবি'র পক্ষ সমর্থন করার দায়ে তাঁর এক দেহরক্ষীর গুলিতে নিহত হন - সেটা ছিল ২০১১ সালের ঘটনা৷

মোট কথা, জিয়া-উল-হক পাকিস্তান'কে যে পথে নিয়ে গেছেন, সেখান থেকে ফেরা অতোটা সহজ হবে না৷ চরমপন্থি ধর্মীয় নেতা ও তাদের অনুগামীরা জনজীবনকে এমনভাবে নিজেদের কব্জায় নিয়ে এসেছে যে, তাদের ক্ষমতাকে সীমিত করার শক্তি বর্তমান প্রজন্মের রাজনৈতিক নেতাদের নেই৷ তবে পশ্চিমি দেশগুলি তাদের উষ্মা ও সমালোচনা জ্ঞাপন করতে পারে বৈকি: যেমন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ যখন একটি রাষ্ট্রীয় সফরে এই সপ্তাহান্তে বার্লিনে পদার্পণ করবেন৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ