পাকিস্তানের মাদ্রাসায় শিকল পরা শিক্ষার্থী
১৭ ডিসেম্বর ২০১১করাচির একটি মাদ্রাসা৷ নাম জাকারিয়া৷ সেখানে থেকে পায়ে শিকল লাগানো অবস্থায় প্রায় ৭০ জন শিক্ষার্থীকে উদ্ধার করেছে পুলিশ৷ এদের কারও কারও বয়স ১২, আবার কারও বা ৫০ এর ঘরে৷
ধারণা করা হচ্ছে, জোর করে তাদেরকে জিহাদের জন্য তৈরি করা হচ্ছিল৷ পরবর্তীতে হয়তো পাকিস্তানি তালেবানে তাদেরকে নিয়োগ দেয়া হতো৷ প্রশিক্ষণে যারা একটু অমনোযোগী ছিল তাদের উপর চালানো হতো অমানুসিক নির্যাতন৷
যেমন মুক্ত হওয়া এক ছেলে ডয়চে ভেলেকে বলছে, ‘‘প্রচন্ড ঠান্ডার মধ্যে আমাদের ঘুম থেকে উঠতে বাধ্য করা হতো৷ এরপর আগের দিন যা শেখোনা হয়েছে সেটা বলতে বলা হতো৷ ঠিকমতো মনে করতে না পারলে লাঠি দিয়ে পেটানো হতো আমাদের৷ আর কেউ যদি সময়মতো উঠতে না পারতো, তার শরীরে ঠান্ডা পানি ঢেলে দেয়া হতো এবং এরপর পাইপ দিয়ে পেটানো হতো৷''
পুলিশ বলছে, কোনো কোনো মা-বাবা মানসিকভাবে অসুস্থ তাদের সন্তানদের মঙ্গলের জন্য সেখানে ভর্তি করিয়েছিল৷ কেউবা মাদকাসক্ত সন্তানকে সুপথে ফিরিয়ে আনার আশায় মাদ্রাসায় পাঠিয়েছিল৷
তবে জিহাদের জন্য শিশুদের প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছিল বলে অনেকে যে ধারণা করছে সেটা সত্য নয় বলে জানিয়েছে মুক্ত হওয়া শিশুদের অনেক বাবামা৷ বরং এই ধারণা ইসলামকে অসম্মানিত করার একটা প্রচেষ্টা বলে মনে করেন তারা৷
উল্লেখ্য, পাকিস্তানে ঠিক কতগুলো মাদ্রাসা রয়েছে সে সম্পর্কে সঠিক তথ্য পাওয়া যায়না৷ সরকারের হিসেবে সংখ্যাটা ১৫ হাজার৷ তবে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, এই সংখ্যাটা প্রায় ২৪ হাজার৷
মাদ্রাসার শিক্ষা ব্যবস্থা উন্নয়নে পাকিস্তান সরকার বেশ কিছু প্রকল্প চালু করেছে৷ কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের অনাগ্রহের কারণে সেগুলো সফল হচ্ছেনা৷ দাতারাও এসব প্রকল্পে অর্থ দিতে আগ্রহ দেখান না৷ কারণ তাদের ধারণা এই অর্থ ঠিক জায়গায় ব্যবহৃত হবেনা৷
পাকিস্তানের সাবেক প্রেসিডেন্ট পারভেজ মুশাররফ মাদ্রাসা সংস্কারের চেষ্টা করেছিলেন৷ কিন্তু সফল হন নি৷
প্রতিবেদন: জাহিদুল হক
সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক