বিশ্বকাপে পাকিস্তানের সেমিফাইনালে ওঠার রাস্তাটা খুবই কঠিন করে দিল নিউজিল্যান্ড।
বিজ্ঞাপন
একদিনের বিশ্বকাপ ক্রিকেটে ভারতের বিরুদ্ধে কে খেলবে, পাকিস্তান কি পারবে, এই প্রশ্ন ঘিরেই এখন তোলপাড় ক্রিকেট বিশ্ব। আসলে পয়েন্টস তালিকায় চার নম্বর জায়গাটা নেয়ার দাবিদার তিনটি দেশ, নিউজিল্যান্ড, আফগানিস্তান ও পাকিস্তান। তবে নিউজিল্যান্ড রান রেটকে যে জায়গায় নিয়ে গেছে তাতে আফগানিস্তানের আশা নেই বললেই চলে। তাদের রান রেট মাইনাস শূন্য দশমিক ৩৩৮।
বৃহস্পতিবার বেঙ্গালুরুতে শ্রীলঙ্কাকে হরিয়েছে নিউজিল্যান্ড। আগে ব্যাট করে শ্রীলঙ্কা তোলে ১৭১ রান। তার জবাবে ২৩ দশমিক দুই ওভারে প্রয়োজনীয় ১৭২ রান তুলে নেয় নিউজিল্যান্ড। তারাই এখন চার নম্বরে আছে।
নিউজিল্যান্ডকে সরিয়ে চার নম্বর জায়গাটা দখল করতে গেলে পাকিস্তানকে কঠিন কাজ করতে হবে। যদি পাকিস্তান প্রথমে ব্যাট করে তাহলে ইংল্যান্ডকে ২৮৭ রানে হারাতে হবে। অর্থাৎ, পাকিস্তান যদি ৩০০ রান তোলে, তাহলে ইংল্যান্ডকে ১৩ রানে বেঁধে রাখতে হবে। চারশ তুললে ১১৩ রানে। প্রথম ব্যাট করতে পারলে তাও তাদের আশা কিছুটা হলেও আছে।
প্রথমে বল করলে সেই আশাটুকুও প্রায় থাকবে না। ইংল্যান্ডের রান মাত্র দুই দশমিক চার ওভারে করে ফেলতে হবে। নিউজিল্যান্ডের রান রেট এখন প্লাস শূন্য দশমিক ৭৪৩, আর পাকিস্তানের প্লাস শূন্য দশমিক ০৩৬।
ফলে নিউজিল্যান্ডের জয়ের খবর পেয়ে অধিনায়ক বাবর আজম যদি টস প্র্যাকটিস করতে শুরু করেন, তাহলে অবাক হওয়ার কিছু নেই। টসে জিততে না পারলে তাদের সেমিফাইনালে যাওয়ার আশা আরো কমবে।
নিউজিল্যান্ডের জয়
সোমিফাইনালে যাওয়ার আশা বাঁচিয়ে রাখতে শ্রীলঙ্কাকে হারাতেই হত নিউজিল্যান্ডকে, সেটাও দ্রুত রান তুলে বা বড় ব্যবধানে।
বেঙ্গালুরুতে বৃহস্পতিবার বৃষ্টির সম্ভাবনা ছিল প্রবল। কিন্তু নিউজিল্যান্ড বল করা শুরু করতেই রোদ উঠে গেল। তাতে বাবর আজমরা যতই উদ্বিগ্ন হোন না কেন, নিউজিল্যান্ডের সমর্থকদের মুখে হাসি ফুটল। আর সেই সুয়োগের সদ্ব্যবহার করলেন বোল্ট, রবীন্দ্র, স্যান্টনার, ফার্গুসনরা। বোল্ট তিন উইকেট নিলেন। বাকিরা দুইটি করে।
এমনিতেই একের পর এক হেরে শ্রীলঙ্কার এই টিমের মোটিভেশন বিশেষ নেই। তার উপর নিউজিল্য়ান্ড একেবারে পরিকল্পনামাফিক খেললো। ব্যাট করতে এসে দ্রুত রান তোলায় মন দিল। মাত্র ২৩ দশমিক দুই ওভারে জয়ের জন্য প্রয়োজনীয় রান তুলে নেয় তারা।
এবার তাদের অপেক্ষা করার পালা। ইডেনে পাকিস্তান ও ইংল্যান্ডের ম্যাচের ফলের অপেক্ষা। পাকিস্তান অতিমানবীয় পারফরম্যান্স করতে পারে কিনা তা দেখার অপেক্ষা।
ওয়ানডেতে ডাবল সেঞ্চুরি : বেলিন্ডা থেকে ম্যাক্সওয়েল
ওডিআই ডাবল সেঞ্চুরি মানেই এক জনের অবিশ্বাস্য ব্যাটিং৷ তারই চূড়ান্ত রূপ দেখালেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল৷ এমন ব্যাটিং প্রথম করেছিলেন একজন নারী৷ ছবিঘরে থাকছে সেই নারীর হাত ধরে শুরু হওয়া ওডিআই ডাবল সেঞ্চুরির বিস্তারিত ইতিহাস.....
ছবি: Rajanish Kakade/AP/picture alliance
সব মিলিয়ে ১৩টি
নারী এবং পুরুষদের একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচে সব মিলিয়ে ডাবল সেঞ্চুরি হয়েছে ১৩টি৷ নারীদের ২টি, বাকিগুলো পুরুষ ব্যাটারদের৷
ছবি: DIBYANGSHU SARKAR/AFP/Getty Images
পথ দেখিয়েছেন বেলিন্ডা
ওয়াইড, নো বল না হলে ওডিআই- তো মাত্র ৩০০ বলের খেলা৷ সেখানে কেউ একাই ২০০ রান করবেন- এক সময় এ ছিল একেবারে অকল্পনীয়৷ সেই কাজই সবার আগে বাস্তবে করে দেখিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার সাবেক নারী ক্রিকেটার বেলিন্ডা ক্লার্ক৷ ১৯৯৭ সালে ডেনমার্কের বিপক্ষে এ ইতিহাস গড়েছিলেন তিনি ১৫৫ বলে হার-না-মানা ২২৯ রানের ইনিংস খেলে৷
ছবি: Jason McCawley/Getty Images
শচীন ছাড়া আবার কে!
একটা সময় শচীন টেন্ডুলকারের ২২ গজে পা রাখা মানেই ছিল নতুন কোনো রেকর্ড৷ ভারতের জীবন্ত কিংবদন্তির অনেক রেকর্ডের একটি ওয়ানডেতে পুরুষ ব্যাটারদের প্রথম ডাবল সেঞ্চুরি৷ ২০১০ সালে গোয়ালিয়রে সাউথ আফ্রিকার বিপক্ষে ঠিক ২০০ রান করে অপরাজিত ছিলেন তিনি৷
ছবি: Rebecca Naden/empics/picture alliance
কোন দেশের কয়টি
পুরুষদের ওযানডের ১১ ডাবল সেঞ্চুরির মধ্যে সাতটিই ভারতীয় ব্যাটারদের, বাকি চারটি ভাগ করে নিয়েছেন নিউজিল্যান্ড, পাকিস্তান, ওয়েস্ট ইন্ডিজ আর অস্ট্রেলিয়ার চার ব্যাটার৷
ছবি: Getty Images/H. Peters
রোহিত শর্মার জুড়ি মেলা ভারত
ভারতের রোহিত শর্মার জন্য ওয়ানডেতে ডাবল সেঞ্চুরি করা যেন খুব সহজ কাজ, নইলে একবার এমন কীর্তির দেখা পেতেই যেখানে অনেকের ক্যারিয়ার শেষ হয়ে যায়, সেখানে তিনি একাই সর্বোচ্চ তিনটি ডাবল সেঞ্চুরি করতে পারেন! ওয়ানডের সর্বোচ্চ ২৬৪ রানের ইনিংসটিও রোহিতের৷ ২০১৪ সালে কলকাতার ইডেন গার্ডেন্সে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে এমন বিধ্বংসী ইনিংসটি খেলেছিলেন তিনি৷ ১৭৩ বলের সেই ইনিংসে চার ছিল ৩৩টি আর ছক্কা ৯টি৷
ছবি: Getty Images/D. Sarkar
নারীদের সর্বোচ্চ ইনিংস
নারীদের ক্রিকেটে ডাবল সেঞ্চুরি হয়েছে দুটি৷ বেলিন্ডা ক্লার্কের দেখানো পথ ধরে দ্বিতীয়টি করেছিলেন নিউজিল্যান্ডের অ্যামেলিয়া কার৷ ২০১৮ সালে আযারল্যান্ডের বিপক্ষে তার খেলা অপরাজিত ২৩২ রানের ইনিংসটি এখনো নারীদের ওডিআইর সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংস৷
ছবি: Darren Stewart/Gallo Images/Getty Images
সবচেয়ে কম বয়সি ডাবল সেঞ্চুরিয়ান
চলতি বছরের জানুয়ারিতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ডাবল সেঞ্চুরি (২০৮) করার দিনে শুভমন গিলের বয়স ছিল ২৩ বছর ১৩২ দিন৷ আর কেউ এত কম বয়সে ওডিআই ডাবল সেঞ্চুরি করেননি৷
ছবি: Noah Seelam/AFP
সবচেয়ে বেশি ছক্কা
ডাবল সেঞ্চুরি করতে সবচেয়ে বেশি ১৬টি ছক্কা মেরেছেন ক্রিস গেইল৷ ১৪৭ বলে ২১৫ রান করার পথে গেইল ৯৬-ই করেছিলেন ছক্কা মেরে, ভাবা যায়!
ছবি: Getty Images/AFP/I. Mukherjee
অস্ট্রেলিয়ার প্রথম
ভারতের টেন্ডুলকার, শেবাগ, রোহিত শর্মা, ইশান কিষান এবং শুভমন গিল আর পাকিস্তানের ফখর জামান , নিউজিল্যান্ডের মার্টিন গাপটিল এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজের ক্রিস গেইল ডাবল সেঞ্চুরি করলেও এতদিন অস্ট্রেলিয়ার কেউ তা করতে পারেননি৷ বিশ্বকাপে এসে প্রথম তা করেছেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল৷ ১২৮ বলে অপরাজিত ২০১ রানের অতিমানবীয় এক ইনিংস খেলে আফগানিস্তানকে বলতে গেলে একাই হারিয়ে দিয়েছেন তিনি৷