1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

পাকিস্তানে কোমর দোলানো ফ্যাশন উইক, নাকাল তালেবান

৬ নভেম্বর ২০০৯

নগ্ন কাঁধ, পিঠ খোলা গাউনে লাস্যময়ী মডেলদের পদচারণায় ব়্যাম্প কাঁপিয়ে করাচি ফ্যাশন উইক-এ বিশ্ববাসীর কাছে তালেবানি সহিংসতা বিক্ষুব্ধ স্বদেশের ভিন্ন এক রূপ তুলে ধরল পাকিস্তানি ফ্যাশনমোদীরা৷

ছবি: picture alliance / landov

নিরাপত্তাজনিত জটিলতা এবং গত মাসে জঙ্গি হামলায় নিহত প্রায় ৩০০ মানুষের প্রতি শ্রদ্ধাস্বরূপ নির্ধারিত সময়ের তিন সপ্তাহ পরে বুধবার করাচির বিলাসবহুল ম্যারিয়ট হোটেলে জাঁকজমকপূর্ণ এই ফ্যাশন উইকের পর্দা ওঠে৷ পাকিস্তানের ৩২ জন ডিজাইনারের অংশগ্রহণে এই আয়োজন চলবে আগামী শনিবার পর্যন্ত৷তবে, নিরাপত্তাভীতির কারণেই শেষপর্যন্ত বিদেশি ডিজাইনাররা এখানে আসতে পারেননি৷

ছবি: picture alliance / landov

অবশ্য, সংঘাতময় উত্তর পশ্চিমাঞ্চলের আদিবাসী এলাকা থেকে বিমানে মাত্র দু'ঘণ্টার দূরত্বে হলেও নজরকাড়া শপিংমলের জন্য বিখ্যাত আর দ্রুত পসার লাভকরা ক্যাফে-সংস্কৃতিতে অভ্যস্ত প্রায় দেড়কোটি মানুষের মহানগরী করাচির ফ্যাশনমোদীরা অতোশত নিরাপত্তা ভাবনার থোড়াই পরোয়া করেন৷

পাকিস্তানের রক্ষণশীল মুসলিম নারীদের বেশিরভাগই সালোয়ার কামিজের ওপর ওড়না এমনকী বোরখা পরে চলাফেরাতেই স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করলেও দেশটির অর্থনৈতিক প্রাণকেন্দ্র করাচির এই ফ্যাশন উৎসবের চিত্র ছিল ভিন্ন৷ এখনকার ক্যাটওয়াকে ডিজাইনাররা অনাবৃত পেট আর বক্ষভাঁজ উন্মুক্ত রেখেই মডেলদের উপস্থাপনে সক্ষম হয়েছেন৷

ছবি: picture alliance / landov

উৎসবের আয়োজক ফ্যাশন পাকিস্তান এর মুখপাত্র তাহমিনা খালেদ বলছিলেন,‘‘পুরো জাতি যখন জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করছে, ইতিহাসের তেমন এক কঠিন সময়ে এই বর্ণিল উৎসবের আয়োজন করতে পেরে আমরা, ফ্যাশন পাকিস্তানের সদস্যরা দারুণ আনন্দিত বোধ করছি৷''

ফ্যাশন সপ্তাহের প্রথম দিনে যে আট ডিজাইনারের কাজ প্রদর্শিত হল তাদের সবারই নিরীক্ষা ছিল পাকিস্তানের ঐতিহ্যবাহী পোশাকের সঙ্গে পশ্চিমা ঢঙ্গের মিশেল দেওয়া৷ বাহারি রংএর কারুকার্যময় কাপড়ে জ্বলজ্বল করছিল ব়্যাম্প৷ পালকের কালো টুপি নিয়ে নগ্নকাঁধের গাউন পরে আবেদনময়ী মডেলরা যখন হাইহিলে ঝড় তুলে ক্যাটওয়াক করছিলেন তখন হলভর্তি দর্শক চন্দ্রাহতের মতো দেখেছে অন্য এক পাকিস্তানকে৷

ছবি: picture alliance / landov

তীক্ষ্ণ সব অ্যাক্সেসরিজ আর চমক লাগানো শিলোয়েট ব্যবহারের জন্য পরিচিত সম্ভাবনাময় তরুণ ডিজাইনার ফাহাদ হুসাইন বলেন, ‘‘আমার ডিজাইন ভাবনা আমার সম্ভারেরর মতোই বৈচিত্র্যময়, এতে পুব আর পশ্চিমের প্রেরণার মিশেল দেখা যাবে৷''

নারী ডিজাইনার সমর মেহেদী ব্রিটেনের ব্রিস্টল ইউনিভার্সিটি থেকে ফ্যাশন এবং অ্যাক্সেসরি ডিজাইনে একটি ডিগ্রি নিয়ে এসেছেন৷ বিশ্বের অন্যান্য স্থানের ডিজাইনারদের মতোই তিনিও বলছিলেন যে, আধুনিক নারীদের জন্য পরার উপযোগী কিন্তু আকর্ষণীয় পোশাক ডিজাইন করার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি৷ মেহেদী বলেন, ‘‘আমার ভাবনা এমন ক্লায়েন্টদের জন্য সৃষ্টিশীল কিছু করা যারা তাদের নারীত্বকে উদযাপন করতে চায় তবে তা অবশ্যই তার স্বাধীনতা এবং স্বাতন্ত্র্যকে বজায় রেখেই৷''

ছবি: picture alliance / landov

পাকিস্তানি নারীরা বহু ধরণের ইসলামি পোশাকে অভ্যস্ত, অনেকেই স্কার্ফ দিয়ে মাথা ঢেকে রাখেন৷ কিন্তু করাচির রাস্তাঘাটে অতিরক্ষণশীল বোরখার চেয়ে জিন্স এবং টি-শার্টই চোখে পড়ার সম্ভাবনা বেশি৷

দেশটির অন্যতম শীর্ষ মডেল নাদিয়া হুসাইন জানান, পাকিস্তানে অতিমাত্রায় খোলামেলা পোশাকের ওপর কিছু বিধিনিষেধ আরোপের বিরোধী নন তিনি৷ তবে একইসঙ্গে সৃষ্টিশীলতা বিকাশের প্রয়োজনীয়তার কথাও উল্লেখ করেন তিনি৷

নাদিয়া বলেন, ‘‘সেন্সরিশপ খারাপ কিছু না৷ এটা আমাদের মূল্যবোধ ও সংস্কৃতিকে অটুট রাখতে সহায়তা করে৷ তবে, আরেকটা উদার হতে পারলে তা আমাদের ফ্যাশন শিল্পের জন্য সত্যিই সহায়ক হবে৷'' তিনি আরও বলেন,‘‘আমাদের দেশে বহু বাধা বিঘ্ন ও বহু প্রতিকূলতা সত্ত্বেও আমাদের ডিজাইনাররা অনেক সৃষ্টিশীল এবং আমাদের মডেলরাও অন্যান্য অনেক দেশের তুলনায় অনেক সুন্দরী৷''

প্রতিবেদক: মুনীর উদ্দিন আহমেদ

সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ