ছবিটি পাকিস্তানের একমাত্র অস্কার এন্ট্রি। কিন্তু ধর্মীয় ভাবাবেগের কথা মাথায় রেখে ছবিটি দেশের সিনেমা হলে দেখানো বন্ধ করা হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
জয়ল্যান্ড এক প্রেমের গল্প। যেখানে মধ্যবিত্ত এক বিবাহিত পুরুষ প্রেমে পড়ে যায় এক ট্রান্সজেন্ডার নারীর। ছবিটি গোটা বিশ্বে সাড়া ফেলে দিয়েছে। পাকিস্তানের একমাত্র ছবি হিসেবে অস্কারে মনোনীত হয়েছে। টরেন্টো ফিল্ম উৎসবে দেখানো হয়েছে। জিতে নিয়েছে কুয়ার পাম পুরস্কার। কান চলচ্চিত্র উৎসবে যে পুরস্কার এলজিবিটিকিউ আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত ছবিকে দেওয়া হয়।
পাকিস্তানের এক অধিকারকর্মীর লিঙ্গ রুপান্তরের কাহিনি
02:48
ছবিটি সোমবার থেকে পাকিস্তানের বিভিন্ন প্রেক্ষাগৃহেও দেখানোর কথা ছিল। কিন্তু শেষ মুহূর্তে তা বাতিল হয়েছে। পাকিস্তান গণমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, ছবিটি প্রথমে দেশের সেন্সার বোর্ড হলে মুক্তির ছাড়পত্র দিয়েছিল। কিন্তু একাধিক ধর্মীয় দল এবং সম্প্রদায় আপত্তি জানায়। তাদের বক্তব্য, এই ছবি ইসলামের পরিপন্থী। এই ছবি দেখালে ধর্মের অবমাননা হবে। মানুষ ভুল পথে চালিত হবে। ধর্মীয় চাপ তৈরি হওয়ার পর প্রশাসন তাদের মত পরিবর্তন করে। তারা ছবিটি দেখানোর ছাড়পত্র ফিরিয়ে নেয়। ফলে ছবিটি প্রেক্ষাগৃহ থেকে তুলে নেওয়া হয়।
ভোটে জিতে ইতিহাসের পাতায় দুই ট্র্র্যান্সজেন্ডার নারী
মাঝে মাঝে দু-একটা ব্যতিক্রমী ঘটনা উঠে এলেও জার্মান সমাজ যে এখনো অনেক মানবিক, সব মানুষের জন্যই যথেষ্ট উদার তা আবার বোঝা গেল টেসা গানসারার এবং নাইকে স্লাভিকের জয়ে৷ ছবিঘরে বিজয়ী দুই ট্র্যান্সজেন্ডার নারীর গল্প...
জার্মানিতে সমকামী এবং অন্যদের অধিকার
জার্মানিতে সমকামিতা আইনি স্বীকৃতি পায় ১৯৬৯ সালে৷ সে বছরই সমকামিতাকে ‘অপরাধ’ বিবেচনা না করার পক্ষে রায় দেয় আদালত৷ এখন জার্মানিতে সম লিঙ্গের মানুষদের বিয়েও আইনসিদ্ধ৷ ২০১৭ সালে আদালত সম লিঙ্গের কাউকে জীবনসঙ্গী করতে আগ্রহীদের এ অধিকার দেয়৷
ছবি: imago images/S. Zeitz
উদারতায় ভাটা?
তবে অতি সম্প্রতি জার্মানিতে এক শ্রেণির মানুষের মধ্যে উগ্রতা বাড়ছে৷
পুলিশের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০২০ সালে জার্মানিতে এলজিবিটি+-দের বিরুদ্ধে হেটক্রাইম, অর্থাৎ ঘৃণাসূচক অপরাধ শতকরা ৩৮ ভাগ বেড়েছে৷
ছবি: picture-alliance/empics/J. Brady
ভোটারদের ‘সবুজ সংকেত’
তবে বাভারিয়া এবং নর্থ রাইন ওয়েস্টফালিয়ার ভোটাররা সব মানুষের অধিকারের প্রতিই শ্রদ্ধাশীল৷ তাই বাভারিয়া থেকে টেজা গানসারার আর নর্থ রাইন ওয়েস্টফালিয়া থেকে নাইকে স্লাভিক সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন৷ দুজনই গ্রিন পার্টির সদস্য৷ জার্মানিতে এই প্রথম কোনো ট্র্যান্সজেন্ডার নারী সংসদ সদস্য হলেন৷ এর আগে ক্রিস্টিয়ান শেঙ্ক নামের একজন বুন্ডেসটাগের সদস্য হলেও সংসদের মেয়াদ শেষেই নিজেকে তিনি পুরুষ ‘ঘোষণা’ করেন৷
‘এটা ট্র্যান্সজেন্ডারদের জয়’
রোববারের নির্বাচনে গ্রিন পার্টি তৃতীয় সফল দল হিসেবে উঠে আসে৷ ২০১৭ সালে যারা মাত্র ৮.৯ ভাগ ভোট পেয়েছিল সেই দল কিনা এবার পেয়েছে ১৪.৯ ভাগ ভোট৷ দলের এবং নিজের সাফল্যে গানসারার খুব খুশি৷ রয়টার্সকে তিনি বলেন, ‘‘এটা সবুজদের জন্য এবং ট্র্যান্সজেন্ডারদের অধিকার আন্দোলনের জন্য বড় এক ঐতিহাসিক জয়৷’ ৪৪ বছর বয়সি এই রাজনীতিবিদ ভোটযুদ্ধে আগেও জিতেছেন৷ ২০১৩ সালে বাভারিয়ার আঞ্চলিক সংসদের সদস্য হয়েছিলেন তিনি৷
ছবি: JOHN MACDOUGALL/AFP
স্লাভিকের প্রতিক্রিয়া
নির্বাচনে জেতার আনন্দ ইন্সটাগ্রামে স্লাভিক প্রকাশ করেছেন এভাবে, ‘‘এ তো রীতিমতো পাগলামো! আমার তো বিশ্বাসই হচ্ছে না৷ তবে সত্যি কথা হলো, এক ঐতিহাসিক জয়ের মাধ্যমে আমি পরবর্তী বুন্ডেসটাগের সদস্য হতে চলেছি৷’’
ছবি: Dwi Anoraganingrum/Geisler/picture alliance
5 ছবি1 | 5
সাইম সাদিকের তৈরি এই ছবিতে দেখানো হয়েছে, এক বিবাহিত মধ্যবিত্ত ব্যক্তি একটি ইরোটিক থিয়েটারে যোগ দেয় এবং এক ট্রান্সজেন্ডারের প্রেমে পড়ে যায়। সেই প্রেম নিয়েই এগোতে থাকে গল্প।
২০১৮ সালে পাকিস্তানের পার্লামেন্ট সমকামীদের নিয়ে কিছু আইন প্রস্তাব করেছিল। সমকাম স্বীকার করে নেওয়া হয়েছিল সেখানে। কিন্তু পরবর্তীকালে পাকিস্তানের ধর্মীয় দলগুলি ওই আইন বাতিল করার জন্য চাপ দিতে থাকে। পাকিস্তানের একটি ধর্মীয় রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি সেনেটর মুস্তাক আহমেদ খান টুইটে লিখেছেন, ''ইসলামবিরোধী কোনো কিছুই হতে দেওয়া উচিত নয়।'' ছবিটি নিষিদ্ধ হওয়ায় তিনি খুশি। উল্লেখ্য, সমকামীতা এখনো পাকিস্তানে আইনত মেনে নেওয়া হয় না। বিষয়টিকে অপরাধ বলে চিহ্নিত করা হয়। সম্প্রতি সমকামীদের এক অনুষ্ঠান নিয়েও বিস্তর সমস্যা হয়ে পাকিস্তানে। তবে জয়ল্যান্ড নিয়ে বিতর্ক আন্তর্জাতিক মহলে সাড়া ফেলে দিয়েছে।