পাকিস্তানে পেট্রোল, ডিজেল, গ্যাসের দাম রেকর্ড বাড়লো
১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
আবার পেট্রোল, ডিজেল ও গ্যাসের দাম বাড়ালো শাহবাজ শরীফ সরকার। মিনি বাজেট পাস করার পর দাম বাড়ানো হলো।
বিজ্ঞাপন
এক লিটার পেট্রোলের দাম ২২ রুপি ২০ পয়সা বেড়ে হলো ২৭২ রুপি। ডিজেলের দাম ১৭ রুপি ২০ পয়সা বেড়ে হয়েছে ২৮০ রুপি। কেরোসিনের দাম বাড়িয়ে করা হয়েছে লিটারপ্রতি ২০২ টাকা ৭৩ পয়সা।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, ডলারের তুলনায় রুপির দাম কমে যাওয়ায় এই দাম বাড়াতে হলো।
কিন্তু আইএমএফের কাছ থেকে ঋণ নিতে চাইছে পাকিস্তান। তাদের শর্তই হলো জ্বালানির দাম বাড়াতে হবে।
শুধু পেট্রোল-ডিজেল-কেরোসিনই নয়, গ্যাসের দামও বাড়ানো হয়েছে। জিও টিভি জানাচ্ছে, বৃহস্পতিবার সরকার জানিয়েছে, রান্নার গ্যাস ও শিল্পে ব্যবহৃত গ্যাসের মাসুল ১১২ শতাংশ বাড়ানো হলো।
অর্থনীতির ধাক্কায় বিপর্যস্ত কিছু দেশ
করোনা মহামারির ধাক্কা, ইউক্রেন যুদ্ধসহ নানা কারণে বিশ্বজুড়ে নানা দেশেই চলছে অর্থনৈতিক অস্থিরতা৷ শ্রীলঙ্কায় তা রূপ নিয়েছে রাজনৈতিক অস্থিরতায়৷ এমন আরো কিছু দেশের বর্তমান পরিস্থিতির কথা থাকছে ছবিঘরে৷
ছবি: Ali Khara/REUTERS
আফগানিস্তান
গত বছর মার্কিন সৈন্য প্রত্যাহার এবং তালেবান ক্ষমতা দখলের পর থেকে অর্থনৈতিক ও মানবিক বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে আফগানিস্তান৷ দেশজুড়ে খাদ্য সংকটের ফলে অপুষ্টি মহামারি আকার নিয়েছে৷ হিউম্যান রাইটস ওয়াচের তথ্যমতে, দেশটির ৫৫ শতাংশ মানুষ রয়েছেন খাদ্য নিরাপত্তার চরম হুমকিতে৷ দাতাদের নানা ধরনের অর্থ সহায়তা অবরুদ্ধ হওয়ায় এ সংকট দিনদিন আরো তীব্র রূপ নিচ্ছে৷
ছবি: Ali Khara/REUTERS
ভেনেজুয়েলা
ভেনেজুয়েলার অর্থনৈতিক সংকট কয়েক দশক ধরেই চলমান৷ বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি- ডাব্লিউএফপি-র মতে দেশটিতে প্রতি তিন জনে একজন ভুগছেন খাদ্য নিরাপত্তার অভাবে৷ করোনার কারণে অর্থনৈতিক ও মানবিক সংকট আরো তীব্র হয়েছে৷ ইউক্রেন যুদ্ধ বাড়িয়ে দিয়েছে জ্বালানি ও খাদ্য সংকট৷ এর ফলে বিদ্যুৎ এবং সুপেয় জলের অভাবও দেখা দিয়েছে৷
ছবি: Roman Camacho/ZUMA Press/imago images
মধ্যপ্রাচ্য
মধ্যপ্রাচ্যের বেশকিছু দেশে দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিক অস্থিরতা চলছে৷ এমনিতেই দেশগুলোর অর্থনীতি টালমাটাল৷ করোনা এবং ইউক্রেন যুদ্ধ এসব দেশকে নিয়ে যাচ্ছে বিপর্যয়ের দ্বারপ্রান্তে৷ সংকটে থাকা দেশগুলোর মধ্যে যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়া ও ইয়েমেন ছাড়াও রয়েছে লিবিয়া, ইরাক এবং লেবাননও৷ ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সংকট দেশগুলোর নাগরিকদের ঠেলে দিচ্ছে চরম দারিদ্র্যের দিকে৷
ছবি: Essa Ahmed/AFP/Getty Images
সুদান
গত বছরের শেষ দিকে আফ্রিকার এই দেশটিতে সামরিক অভ্যুত্থান হয়৷ এরপর থেকেই ধস নেমেছে দেশটির অর্থনীতিতে ৷ জানুয়ারিতে দেশটির রপ্তানি কমে যায় ৮৫ শতাংশ৷ জাতিসংঘের তথ্য বলছে, রাজনৈতিক অস্থিরতা, বিশ্বজুড়ে খাদ্যের মূল্যবৃদ্ধি ইত্যাদি কারণে দেশটির ৩০ শতাংশের বেশি মানুষ আছেন খাদ্য সংকটে৷ দেশটির ১৮টি প্রদেশে দেড় কোটি মানুষ খাদ্য নিরাপত্তার ঝুঁকিতে রয়েছেন৷
ছবি: Ashraf Shazly/AFP/Getty Images
নেপাল
ব্যাপক আমদানি-নির্ভরতার ফলে নেপালের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে টান পড়েছে৷ দেশটির বাণিজ্য ঘাটতি বাজেটের প্রায় সমান হয়ে দাঁড়িয়েছে৷ নেপালের মোট আমদানির দুই-তৃতীয়াংশই আসে ভারত থেকে৷ অন্যদিকে, ভারতের মুদ্রার সঙ্গে একই দর নির্ধারিত থাকায় ভারতীয় টাকার পতনের সঙ্গে নেপালি মুদ্রারও স্বয়ংক্রিয় পতন ঘটছে৷ ইউক্রেন থেকে তেল ও নানা খাদ্যদ্রব্যের আমদানি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় দেশটির অর্থনীতিতে ধসের লক্ষণ দেখা যাচ্ছে৷
ছবি: Diego Azubel/dpa/picture alliance
পাকিস্তান
বিশ্ব ব্যাংকের তথ্যমতে, মে-জুন মাসের মূল্যস্ফীতিতে দক্ষিণ এশিয়ায় শ্রীলঙ্কার পরই রয়েছে পাকিস্তান৷ দক্ষিণ এশিয়ার অন্য দেশগুলোতে মূল্যস্ফীতি এক অংকের ঘরে থাকলেও শ্রীলঙ্কায় ৫৬.৬% এবং পাকিস্তানে মূল্যস্ফীতি পৌঁছে গেছে ২১.৩ শতাংশে৷ বিদেশি ঋণ পরিশোধ নিয়ে জটিলতা এবং দ্রুত খালি হয়ে যাওয়া বৈদেশিক মুদ্রার মজুদ দেশটিকে দ্রুতই অস্থিরতার দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যাচ্ছে৷
ছবি: KARIM ULLAH AFP via Getty Images
তুরস্ক
তুরস্কের পরিসংখ্যান সংস্থা জানিয়েছে, জুন মাসে দেশটির বার্ষিক মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৭৮.৬২%৷ দেশটির মূল্যস্ফীতির এ হার গত ২৪ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ৷ ইউক্রেন যুদ্ধ, পণ্য়ের মূল্যবৃদ্ধি এবং টার্কিশ মুদ্রা লিরার দর কমতে থাকায় এই মূল্যস্ফীতি আরো বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে৷ দেশটির সরকারি তথ্য অনুযায়ী, আগের বছরের তুলনায় এ বছর পরিবহণের খরচ বেড়েছে ১২৩.৩৭ শতাংশ, খাদ্য ও পানীয়ের মূল্য বেড়েছে ৯৩,৯৩ শতাংশ৷
ছবি: Sha Dati/Xinhua/imago images
7 ছবি1 | 7
পাকিস্তানের সংবাদপত্র ডন জানাচ্ছে, এমনিতেই সব নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম সম্প্রতি বেড়েছে এবং সরকারের সিদ্ধান্তের ফলে তা আরো বাড়বে। তার উপর বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলি এখনো ভোজ্য তেল আমদানি করার জন্য লেটার অফ ক্রেডিট(এলসি) দিচ্ছে না। এলসি পেলে তেল আনতে ৪৫ থেকে ৬০ দিন লাগে। ফলে রমজানের সময় ঘি ও ভোজ্য তেলের চাহিদা মেটানো সম্ভব নাও হতে পারে।
বুধবার মিনি বাজেটে ভোজ্য তেল, বিস্কিট, জ্যাম, জেলি, টকোলেট, প্রসাধনী, কফি, ক্রিম, শ্যাম্পু, নুডলস, খেলনা, হেয়ার জেল, হেয়ার রিমুভিং ক্রিম, শেভিং জেল, ক্রিম, কম্পিউটার, ল্য়াপটপ, ইলেকট্রনিক জিনিস সহ একগুচ্ছ জিনিসের উপর জিএসটির পরিমাণ বাড়িয়ে দিয়েছে। ফলে এই সব জিনিসের দাম বাড়বে।
তার উপর পেট্রোল, ডিজেল, গ্যাসের দাম বাড়ানোয় সব নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বেড়ে যাবে।